What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other সব মাধ্যমে সফল নাম চঞ্চল চৌধুরী (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
UyYZ0rv.jpg


২০০৫ সাল, টিভি স্ক্রিনে ভেসে উঠা একটা বিজ্ঞাপন 'আমি বুঝি মায়ের কাছে আমি কী, মায়ের কাছে আমি মানে ছোঁয়া, আমার গন্ধ, আমার মুখে মা ডাক!'

গ্রামীণ ফোনের এই বিজ্ঞাপনে প্রতিভার আলোয় বিমুগ্ধতায় ছড়ালেন একজন নবীন মডেল। দর্শকমহলে সুপরিচিতি, পুরস্কার সবই পেলেন এই বিজ্ঞাপন দিয়েই। পরবর্তী প্রায় এক দশক ধরে তিনি নাট্যঙ্গনে নিজের নাম সমুজ্জ্বল করলেন, আর চলচ্চিত্রে গত এক দশকে দর্শকদের বিমোহিত করে হয়েছেন সবচেয়ে নন্দিত অভিনেতা।

তিনি পথের ক্লান্তি ভুলে আসা এক মাতৃভক্ত ছেলে, সাকিন সারিসুরি গ্রামে তাঁর বসবাস, মনের মানুষের আয়নায় তিনি রুপকথার গল্পের নায়ক, আদর করে সবাই তাকে ডাকে সোনাই, রহস্যের ধ্রমুজালে তিনিই আবার আইকনিক মিসির আলী। নাম তাহার 'চঞ্চল চৌধুরী'।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার ছাত্র তিনি, পড়াশোনাকালীন যুক্ত হন মঞ্চ নাটকে। নাট্যগুরু মামুনুর রশীদের দল আরণ্যকের হয়ে অভিনয় করেন ওরা কদম আলী, ময়ুর সিংহাসন, রাঢ়াঙ-এর মত বিখ্যাত মঞ্চ নাটকে। টিভি নাটকে অভিষেক মোস্তফা সারোয়ার ফারুকীর 'তালপাতার সেপাই'-এর মাধ্যমে, তাঁরই নির্দেশনায় গ্রামীনফোনের বিজ্ঞাপনে অভিনয় করে দর্শক মহলে পরিচিতি, একই বছর গিয়াসউদ্দিন সেলিমের 'এনেছি সূর্যের হাসি' ধারাবাহিকটি পরিচিতি আরো বাড়িয়ে দেন। এরপর শুধু এগিয়ে চলা, সালাউদ্দিন লাভলুর নাটকগুলিকে এক এক করে পূর্ণতা দিতে থাকেন, বিপরীতধর্মী ছবিয়ালেও কাজ করতে থাকেন।

xiWz5e5.jpg


ভবের হাটের ফিজা মাস্টার থেকে সাকিন সারিসুরির জাপান ডাক্তার কিংবা সার্ভিস হোল্ডারের সরকারী চাকুরিজীবী অহংকারী মোজা সব চরিত্রেই তিনি আলো ছড়িয়েছে। পাত্রী চাই, ওয়ারেন, নিখোঁজ সংবাদ, পত্র মিতালি, বউ, সোনার ডিম, আলতা সুন্দরী, জামাই মেলা থেকে খেলা, লাল খাম বনাম নীল খাম, ইডিয়ট, দ্য ইজম লিমিটেডসহ আরো দর্শকপ্রিয় নাটকে অভিনয় করে নিজেকে নন্দিত করেছেন। টিভি নাটকে গত এক দশকের অন্যতম সেরা জনপ্রিয় অভিনেতা হয়েছেন এ সফল কাজগুলোর মাধ্যমে। তবে নাটকের জন্য বেশ কয়েকবার মনোনয়ন পেয়েও পুরস্কার না পাওয়াটা একটা আফসোসই থেকে যাবে। গায়কীতেও রয়েছে বেশ সুপরিচিতি। সেটা নিধুয়া পাথারে হউক কিংবা বকুল ফুল বকুল ফুল গানটি।

মঞ্চকর্মী, মডেল, গায়ক টিভি অভিনেতা, সাফল্যের পর আরেকটি মাধ্যমে তিনি বেশ নন্দিত, প্রশংসিত। সবচেয়ে বড় মাধ্যম 'চলচ্চিত্র'। এই মাধ্যমে তিনি পরিণত, নিজেকে ভেঙ্গেছেন, হাজির হয়েছেন ভিন্নভাবে। কাজ কম, কিন্তু চলচ্চিত্রের গত এক যুগের সবচেয়ে নন্দিত অভিনেতা তিনি।শুরুটা ২০০৬ সালে তৌকির আহমেদের 'রূপকথার গল্প' দিয়ে। ভিন্নধর্মী এই ছবি দিয়ে সিনেমাপ্রেমীদের কাছে বেশ প্রশংসিত হয়েছিলেন। তিন বছর বিরতি দিয়ে ২০০৯ সালে গিয়াসউদ্দিন সেলিম তাঁর 'মনপুরা'য় সোনাই রুপে আবিষ্কার করান চঞ্চল চৌধুরীকে। এই সিনেমা বাংলা চলচ্চিত্রের জগতে এক ইতিহাস। মুক্তির পর ছবিটি যেমন হয়েছে গত এক দশকের সবচেয়ে বাণিজ্যিক সফল, তেমন হয়েছে সমালোচক প্রিয়, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত। চলচ্চিত্র মহলে চঞ্চল চৌধুরীর এক আলাদা পরিচিতি ঘটে, বছরের সব আলোচিত পুরস্কারের আসরে পুরস্কৃত তিনি। সেই ধারাবাহিতায় গড্ডালিকা প্রবাহে নিজেকে না ভাসিয়ে করেন মনের মানুষ, টেলিভিশনের মত সিনেমা। ভারতের বিখ্যাত চিত্রনির্মাতা গৌতম ঘোষের পরিচালনায় প্রসেনজিতের সাথে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছিলেন 'মনের মানুষ' সিনেমায়, অনেকের মতে তিনি সবাইকে ছাপিয়েও গিয়েছিলেন।

LU7th5i.jpg


চলচ্চিত্র মহলে আবার তিনি সাড়া জাগান ২০১৬ সালে অমিতাভ রেজার 'আয়নাবাজি' দিয়ে। দর্শক মহলে ব্যাপক সাড়া জাগায় ছবিটি, মনপুরার পর সর্বজনভাবে মধ্যবিত্তদের তিনিই আবার প্রেক্ষাগৃহে নিয়ে আসেন, পাশাপাশি হয়েছে সমালোচক প্রিয়। এমনকি ২০১৮ সালের সবচেয়ে ব্যবসাসফল সিনেমা 'দেবী'তে হুমায়ূন আহমেদের মিসির আলী হয়ে সর্বালোচিত হয়েছেন। শুধুমাত্র 'টেলিভিশন' ছাড়া আর সবকটি সিনেমার জন্য তিনি মেরিল প্রথমআলো পুরস্কারসহ নানা বেসরকারি স্বীকৃতি পেয়েছে। 'মনপুরা' ও 'আয়নাবাজি'র জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। মুক্তির অপেক্ষায় আছে মেজবাউর রহমান সুমনের 'হাওয়া', যেখানে তাকে দেখা যাবে সম্পূর্ণ ভিন্ন রুপে, 'মনপুরা'র পর দীর্ঘ বিরতি দিয়ে আবার আসছেন গিয়াসউদ্দিন সেলিমের সঙ্গে 'পাপ পুণ্য'তে। দুইটিই রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়।

এত সাফল্য আর গ্রহণযোগ্যতার মাঝেও উনাকে নিয়ে আফসোস আছে। আজকাল যে ধারার নাটকে অভিনয় করছেন সেগুলো একেবারেই সন্তোষজনক হচ্ছে না, উনাকে ঠিক মানাচ্ছেও না। অস্বীকার করার উপায় নেই, তিনি এই ধারার নাটক করেই ভীষণ জনপ্রিয় হয়েছেন। তবে এখনো নাটকে ভালো চিত্রনাট্য ও নির্মাতা পেলে যে তিনি মহীরুহ হয়ে উঠেন তার প্রমান ইফতেখার আহমেদ ফাহমির 'কিংকর্তব্যবিমূঢ়'। চলচ্চিত্রের মত নাটক নির্বাচনেও আরো সুচিন্তিত মনোভাব একজন শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে প্রত্যাশা করি।

azRgJ8Q.jpg


সংস্কৃতি অঙ্গনে নানাভাবে নিজেকে সফল করেছেন, ব্যক্তিজীবনে ২০০৭ সালে বিয়ে করে ডা. শান্তনা সাহাকে। তাদের কোলজুড়ে আছে এক পুত্র সন্তান। ছেলের সাফল্যে মা পেয়েছেন 'গরবিনী মা'র সম্মান। শিল্পজীবন বা ব্যক্তিজীবন সব ধারাই তিনি একজন আদর্শ মডেল। খুব সহজ ভঙ্গিতে সরলভাবে কথা বলেন সব জায়গায়, এটা চঞ্চল চৌধুরীর এক বিশেষ গুন। তাঁর হাসিমুখ খানা যেন সব জায়গায় সমুজ্জ্বল থাকে। ১৯৭৪ সালের ১ জুন পাবনায় জন্ম নেওয়া মানুষটি ভবিষ্যতে নিজেকে আরো বর্ণিল থেকে বর্ণিলতর করবেন এটাই প্রত্যাশা।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top