What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other পপি : একজন উজ্জ্বল ব্যতিক্রম (1 Viewer)

Placebo

Mega Poster
Elite Leader
Joined
Jul 31, 2018
Threads
847
Messages
16,671
Credits
181,489
Recipe soup
Onion
JGV7uUP.jpg


'পপি একজনই' শুরুটা এরকম হওয়াই ভালো।কথায় কথায় অনেক কথা বলা যাবে তবে মোটকথা এমনটা হলে থৈ মেলে।

পপি একটা অধ্যায় ঢালিউডে। এদেশের কমার্শিয়াল ও এক্সপেরিমেন্টাল সিনেমার জগতে পপিকে বাদ রেখে কোনো সম্পূর্ণ কথাবার্তা হতেই পারে না। ঢালিউডে রত্নের অভাব নেই, পপি তার মধ্যে অন্যতম রত্ন। তার সমস্ত যোগ্যতা দিয়েই সে সম্পূর্ণ তারকা। যে স্টারডম অধুনা ঢালিউডে পানির দরে মেলে সে তথাকথিত স্টারডমে যারা গা ভাসায়নি পপি তাদের একজন। সম্পূর্ণ ফিট থাকার পরেও যে ভার্সেটাইল অভিনেত্রীকে ঢালিউডে বসিয়ে রাখা হয় সেখানে টু শব্দটি করে না পপি। এ তারকাকে হালকা চালে নিলে তথাকথিত এযুগের নির্মাতারা বেজায় বড় ভুল ভাববেন। পপিকে কাজে লাগাবার ঢের সময় আছে এখনও। নির্মাতারা তাই ঘুম থেকে জাগলে লাভটা জুটবে ঢালিউডেরই।

আজ এ লেখায় পপিকে নিয়ে যা কিছু বলব তার মধ্যে তথ্যের সুবিধার জন্য ইন্টারনেট মশাইয়ের কাছে একান্তভাবে কৃতজ্ঞ। তার সাথে কৃতজ্ঞতা নিজের স্মৃতির কাছেও যেখানে পপি আছে নানা অভিজ্ঞতা ও অনুভবের যোগফল হিশেবে। আর তার পাশাপাশি কিছু পর্যবেক্ষণ আছে, যার লক্ষ্য সমালোচনার ধরাবাঁধা কিছু বুলি যা গড়ে উঠেছে প্রচলিত ভুল ধারণা থেকে যেসব পপিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে সেসবের একটা জবাব বা হককথা জাতীয় শক্ত চিন্তা।

তো শুরু করা যাক শেষের কথা ভেবে..

** ব্যক্তি আলোয় পপি **
মূলনাম– সাদিকা পারভীন পপি
ডাকনাম – পপি
জন্ম – ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৭৯, খুলনা
শোবিজ আগমন – ১৯৯৫ সালে 'লাক্স আনন্দ বিচিত্রা সুন্দরী প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন।
সিনেমায় আগমন – ১৯৯৭
প্রথম সিনেমা – 'আমার ঘর আমার বেহেস্ত', এ সিনেমার স্যুটিং আগে শুরু হয়।
মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম সিনেমা – আমার ঘর আমার বেহেস্ত।
ব্যবসাসফল ব্লকবাস্টার সিনেমা – কুলি।
প্রথম নায়ক – শাকিল খান
সিনেমায় ব্যবহৃত সর্বাধিক নাম – রিয়া, নুরি, রোদেলা, সুধা।
নিজ নামে সিনেমা – কুলি
উল্লেখযোগ্য নির্মাতা – সোহানুর রহমান সোহান, মনতাজুর রহমান আকবর, দিলীপ সোম, কমল সরকার, বাদল খন্দকার, কালাম কায়সার, আব্দুল্লাহ আল মামুন, নার্গিস আক্তার, সামিয়া জামান, সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড।
উল্লেখযোগ্য নায়ক – মান্না, ইলিয়াস কাঞ্চন, রুবেল, বাপ্পারাজ, ওমর সানী, অমিত হাসান, আমিন খান, রিয়াজ, ফেরদৌস, শাকিল খান, শাকিব খান।
উল্লেখযোগ্য জুটি – পপি- শাকিল খান, পপি-রুবেল, পপি-ফেরদৌস।
উল্লেখযোগ্য সিনেমা –
জাতীয় পুরস্কার – তিনবার।কারাগার (২০০৩) , মেঘের কোলে রোদ (২০০৮), গঙ্গাযাত্রা ( ২০০৯)
সিনেমাসংখ্যা – প্রায় ২৫০টি
উল্লেখযোগ্য সিনেমা – (১৯৯৭ – ২০১৪)
আমার ঘর আমার বেহেস্ত, কুলি, আমার বৌ, বিদ্রোহ চারিদিকে, অগ্নিসাক্ষী, দুজন দুজনার, জানের জান, ক্ষ্যাপা বাসু, বিশ্ব বাটপার, লাল বাদশা, মা যখন বিচারক, প্রাণের প্রিয়তমা, ভালোবাসার ঘর, তোমার জন্য ভালোবাসা, মনের মিলন, এই মন তোমাকে দিলাম, শ্রেষ্ঠ সন্তান, সিটি টেরর, বস্তির রাণী সুরিয়া, জমজ, ক্ষমতার দাপট, কারাগার, বিদ্রোহী পদ্মা, রাণী কুঠির বাকি ইতিহাস, কি জাদু করিলা, মেঘের কোলে রোদ, গঙ্গাযাত্রা, গার্মেন্টস কন্যা, দরিয়া পাড়ের দৌলতী, ওপারে আকাশ, চার অক্ষরের ভালোবাসা, দুই বেয়াইয়ের কীর্তি….
আপকামিং সিনেমা –
পৌষ মাসের পিরিতি, লীলামন্থন, আদরের ভাই, দি ডিরেক্টর।
*******************

** বিজ্ঞাপনে পপি **

বিটিভির ৩:২০ এর সিনেমার ফাঁকে যে বিজ্ঞাপন দেখাত সেখানে পপির বিজ্ঞাপনও ছিল। লাক্সের বিজ্ঞাপন তখন একটা ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড কাজ ছিল। শমী, মিমি, বিপাশার পাশাপাশি পপির লাক্সের বিজ্ঞাপনও ছিল গর্জিয়াস। বার্জার পেইন্টস এর বিজ্ঞাপনে পপির অপরূপ রূপ দেখে মুগ্ধ হতাম। জিঙ্গেলটা ছিল এমন – 'সাজিয়ে তোলো ঘরের প্রতিটি দেয়াল, উজ্জ্বল সিল্কি মসৃণতায়'। পপি তার শাড়ির আঁচল হালকা হাওয়ায় ঘরের মাঝে ওড়াত। আয়নার সামনে বসে একটা টিপ পরে কপালে তার সাথে টোল পড়া হাসি।অপূর্ব অনুভূতি হত। জনি প্রিন্ট শাড়ির বিজ্ঞাপনেও দারুণ উজ্জ্বল পপি। মোশাররফ করিমের সাথে এয়ারটেলের বিজ্ঞাপনটা বেশ মজার।

** পপি ও ছেলেমানুষি **

ছেলেবেলায় অন্য তারকাদের পাশাপাশি পপিকে নিয়েও ছেলেমানুষি ছিল। আমরা বন্ধুরা ভাবতাম পপি হচ্ছে শাবনূরের বোন। এর পেছনে যুক্তি ছিল পপি শাবনূরের মতোই দেখতে, অভিনয়ের স্টাইলেও মিল আছে। অনেকদিন এ ধারণা ছিল। পপির ভিউ কার্ড সংগ্রহ করে বন্ধুরা বইতে রাখত।একবার হাইস্কুলে অংক ক্লাসের সময় টিচার বইয়ের মধ্যে পপির ভিউ কার্ড পেল। বন্ধুটিকে কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হল। আরো ভয়াবহ রকমের ছেলেমানুষি করল এক বড়ভাই। জেদ ধরল লাইফে পপিকেই বিয়ে করবে। পপির নাম হাতে মেহেদি দিয়ে লিখল। গাছের মধ্যে, দেয়ালে দেয়ালে নিজের নাম রাজুর সাথে পপির নাম জুড়ে দিয়ে লিখল r+p..

** পপির অভিনয় পারফেকশন **

পপিকে দেখে স্পষ্ট বোঝা যায় ক্যারিয়ারে চ্যালেন্জ নিতে জানত মেয়েটি। তার অভিনয় ১০০% নিখুঁত। পপি যখন যে মাধ্যমে কাজ করেছে নিজের সেরাটা দিয়েছে। বিজ্ঞাপনে, নাটকে, টেলিফিল্মে, সিনেমায়।বিজ্ঞাপন, নাটক, সিনেমা সবকিছুই শক্ত মাধ্যম। অনেকে সোজা ভাবে।একদম না।বিজ্ঞাপনে অল্প সময়ে যেমন ২০, ৩০ সেকেন্ডে পিওর এক্সপ্রেশন এবং বডি ল্যাংগুয়েজ দিয়ে পারফেকশন প্রমাণ করতে হয়। পপির লাক্সের বিজ্ঞাপনে তার এক্সপ্রেশন অসাধারণ। বার্জারের অল্প সময়ের বিজ্ঞাপনটিতে তার গ্ল্যামার দেখার মতো।নাটকে রিয়াজের সাথে 'মেমসাহেব, তবুও তুমি আমার, নায়িকার বিয়ে' এ কাজগুলো মনের রাখার মতো। সিনেমার পপিই সবচেয়ে ডিফারেন্ট। কেননা সিনেমাই তার আসল প্ল্যাটফর্ম। কমার্শিয়াল ও এক্সপেরিমেন্টাল সিনেমায় তার আলাদা পারফেকশন আছে। ক্যারেক্টার লিড দিতে সর্বোচ্চ পরিশ্রম করে। পাল্টে ফেলতে পারে নিজেকে। আপনি কোনোভাবেই 'কুলি, মনের মিলন, ভালোবাসার ঘর' এ সিনেমাগুলোর সাথে 'কারাগার' বা 'মেঘের কোলে রোদ'-কে এক পাল্লায় আনতে পারবেন না। অথচ এটাও কমার্শিয়াল সিনেমা। কিন্তু প্রেজেন্টেশনে পরিবার, বাস্তবতা, প্রতিশোধ, প্রেম, পরনির্ভরশীল থাকার কষ্ট, প্রতিবাদ, নারীবাদী প্রয়োগ এসবে এ সিনেমা স্রোতের বিপরীতের কমার্শিয়াল কাজ। এক্সপেরিমেন্টালে এলে 'রাণী কুঠির বাকি ইতিহাস, বিদ্রোহী পদ্মা, গঙ্গাযাত্রা, কি জাদু করিলা' এ সিনেমাগুলোতে পপি নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে। তখন ক্যারেক্টার লিড করতে শহুরে মেয়ে, গ্রামের মেয়ে, ভারী ব্যক্তিত্বের মেয়ে এসবের সাথে মিশে যায় সে। সেখানে রোমাঞ্চ, স্যাড, ফোক এরকম ভিন্ন ভিন্ন পারফেকশনের মধ্যে পপিকে পাওয়া যায়। আর সম্পূর্ণভাবে এসবই একজন পূর্ণাঙ্গ অভিনেত্রীকে স্বাভাবিকভাবে সাফল্য এনে দেয়।

** কমার্শিয়াল পপি **

BZyL3YX.jpg


পপির ক্যারিয়ারে কমার্শিয়াল সিনেমার সংখ্যাই বেশি। সেগুলোতে ক্যারেক্টারের ভেরিয়েশন আছে। তবে তাকে বদমেজাজী, অহংকারী ক্যারেক্টারগুলোতে অনবদ্য লাগে। কমার্শিয়াল সিনেমায় গুডলুকিং, গ্ল্যামারাস, গুড ভয়েস, গুড অ্যাকটিং এসবের যে সমাবেশ দরকার তার সবকটিই পপির মধ্যে আছে। 'আমার ঘর আমার বেহেস্ত' সিনেমায় পপির প্রথম অভিনয় অসাধারণ। তার এক্সপ্রেশনে তখনই পেশাদারিত্বের ভাব চলে এসেছিল।স্ট্রং দিক হিশেবে সেটাই তাকে পরের দিনগুলোতে এগিয়ে নিয়েছিল। পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।শাকিল খানের সাথে জুটির তকমাটা তখনই জোরেসোরে দানা বাঁধে। 'ভালোবাসার ঘর' সিনেমার পপি গ্ল্যামারাস অনেক। অমিত হাসানের সাথে জুটিটা দেখার মতোই ছিল। তাদের প্রেমের সময়গুলো সিনেমার অনন্যকম সেরা মুহূর্ত। 'তোমার জন্য ভালোবাসা' পপির সাথে আমিন খানের সেরা সিনেমা। 'কুলি' তো একাই একশো। ওমর সানীর সাথে জুটি বেঁধে পপি তার সামর্থ্যের প্রমাণ দেয়। ইলিয়াস কাঞ্চনের সাথে 'মনের মিলন' সিনেমাটি গ্রামের গল্পকে বড় আকারে প্রেজেন্ট করেছে। রিয়াজের সাথে যেমন 'ক্ষ্যাপা বাসু, মেঘের কোলে রোদ' এ দুটো দু'রকম গল্পের যেজন্য তফাতটা যেমন ধরা যায় তার সাথে সহজে বেছে নেয়া যায় কোনটা কত গুরুত্বপূর্ণ। মান্নার সাথে অ্যাকশন সিনেমাগুলোতে পপির উপস্থিতি ভিন্ন। সেখানে তাকে গল্পের প্রয়োজনে কখনো অসহায় দেখা গেছে আবার ফাইটিং করতে হয়েছে। রুবেলের সিনেমাতেও তাই।

তবে পপিকে কমার্শিয়ালে সহজে বেছে নিতে ভেরিয়েশনে একদম আলাদা রিয়াজের সাথে 'বিদ্রোহ চারিদিকে' আর ফেরদৌসের সাথে 'কারাগার'।অ্যাকশন সিনেমা হলেও রিয়েলিটি বেইসড গল্প ছিল। গল্পের প্রয়োজনে পপিকে প্রথমটিতে গোঁফওয়ালা ছেলের বেশে মাস্তান হতে হয়েছে। পরেরটিতে হতে হয়েছে কাজের মেয়ে আবার প্রতিবাদী। ভেরিয়েশন এভাবেই ছিল।

** এক্সপেরিমেন্টাল পপি **

OteHthE.jpg


এই পপি নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী। এক্সপেরিমেন্ট কিন্তু কমার্শিয়ালেও করা যায়। 'কারাগার, মেঘের কোলে রোদ' এ দুটো যেমন। দুটোতেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে পপি। এগুলো ছাড়া অফট্র্যাকে 'গঙ্গাযাত্রা' সিনেমাতে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। এ ধরনের টাফ জব পপির আরো আছে। 'বিদ্রোহী পদ্মা, রাণী কুঠির বাকি ইতিহাস, কি জাদু করিলা, দরিয়া পাড়ের দৌলতী, ওপারে আকাশ। 'অসাধারণ সব কাজ।পপি প্রত্যেকটা সিনেমার জন্য যা করেছে তাকে এককথায় বলা যায়, বারবার ভেঙেছে আর গড়েছে নিজেকে। 'গঙ্গাযাত্রা'-য় পপির কস্টিউম, গেটআপ দেখলেই বোঝা যায় বাংলার নারী এভাবেই রোদে পোড়া, বৃষ্টিতে ভেজা হয়। 'রাণী কুঠির বাকি ইতিহাস' টাফ ছিল। ভারী ক্যারেক্টার। নিজের মায়ের হত্যাকারীকে খুঁজতে রাণী কুঠিটি তাকে অলৌকিকভাবে সাহায্য করে। মায়ের লাশ সিঁড়ির ধারে দেখে হত্যাকারী আলমগীরের অস্পষ্ট চেহারাটা শেষে স্পষ্ট হয়। পপিকে এ সিনেমায় সবচেয়ে টাফ কাজটা করতে হয়েছে লিজেন্ড আলমগীরের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাপুটে অভিনয় করা। সে তা পেরেছে।ফোক সিনেমায় 'কি জাদু করিলা' মনের মতো একটা সিনেমা।

** সিকোয়েন্সে সিকোয়েন্সে পপি **

১. আমার ঘর আমার বেহেস্ত
শাকিল খান পপিকে কিডন্যাপ করার পর তাকে সম্মানহানি না করে বুঝিয়ে বলে মেয়দের পাশাপাশি ছেলেদেরও সম্মান আছে। পরদিন শাকিল যখন বন্ধুদের সাথে দাঁড়িয়ে আছে হঠাৎ পপি এসে শাকিলকে জড়িয়ে চুমু দেয়। ঐ সময় তার রোমান্টিক এক্সপ্রেশন ছিল অনবদ্য।

২. কুলি
ওমর সানী পপিকে বোকা বানায় বারবার। সানী স্টেশনে কুলিগিরি করতে যায় আবার স্যুট টাই পরা ভদ্রলোক সেজে পপির সামনে আসে। একবার টেম্পু করে আসার সময় পপি বাসায় ঢোকার আগেই সানী কৌশলে ঢোকে আগে। পপি তার চালাকি ধরতে পারে। পপির প্রথমদিকের কাজ হিশেবে এক্সপ্রেশন ঐ মুহূর্তে ম্যাচিউর ছিল।

DWrsV3A.jpg


৩. ভালোবাসার ঘর
অমিত হাসান তার প্রেমিমকা পপিকে দেখার জন্য মাঝরাতে ওঠে। ভুল করে পপির বদলে ভাবী শাবানাকে জাগায়। ওদিকে পপি কপাল ঠুকছে। গানে গানে চলে খুনসুটি।

৪. বিদ্রোহ চারিদিকে
পপি ছেলেদের মতো গোঁফ রেখে মাস্তান সেজে থাকে। নাম দেয় মোহাম্মদ আলি। একটা সিকোয়েন্সে দোলনায় বসা পপিকে বস্তির একটা মেয়ে তার সমস্যার কথা বলতে আসে। তখন পপির পায়ের ওপর পা তুলে মাস্তানির মুভমেন্ট দুর্দান্ত। আর একটা সিকোয়েন্সে রিয়াজ পপিকে ঘুষি দিলে পপির চুল খসে যায়, গোঁফও যায় খসে। রিয়াজ অপূর্ব এক সুন্দরীকে দেখতে পায়। আর পপি অশ্রুভেজা চোখে যে এক্সপ্রেশন দেয় ওটা ভোলার মতো না।

৫.কারাগার
পপিকে প্রবীরমিত্র আশ্রয় দেয় তার বাড়িতে। পরে ভুল বুঝে পু্লিশে দিতে চাইলে পপি তার বাস্তবতার কথা শোনায়। ঐ অভিনয় না দেখলেই মিস।

৬. রাণী কুঠির বাকি ইতিহাস
পপি শেষবারের মতো তার মায়ের হত্যাকারীকে দেখে। সিঁড়ির ধারে দাঁড়িয়ে সে দেখতে পায় আলমগীর সেই ঘাতক। সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় আলমগীরের সাথে সংলাপ বিনিময়ে ফেস টু ফেস অভিনয়ে পপির অভিনয় অতু্লনীয়।

৭. মেঘের কোলে রোদ
আদালতে টনি ডায়েস ও রিয়াজের ভিন্ন ভিন্ন উদ্দেশ্য বোঝার পর পপি শেষপর্যন্ত দেশসেবার সিদ্ধান্ত নেয়। অ্যাডাল্ট আচরণে এমন শক্ত সিদ্ধান্ত নেবার সময় পপির ব্যক্তিত্বে ভারিক্কি ভাবটা খুব বড় দিক হয়ে ওঠে তখন।

৮. গঙ্গাযাত্রা
বাড়ির উঠোনে পপি-ফেরদৌস রোমান্সের সিকোয়েন্সগুলো দারুণ উপভোগ্য। আত্মহত্যার আগে নিজের সাথে নিজের মানসিক যুদ্ধ অ্যামেজিং।

৯. ওপারে আকাশ
মামুন পপি-ফেরদৌসের ছেলে। মামুন বাড়ি ছেড়ে যাবার পরে ফেরদৌস বোবার মতো হয়ে যায়। ফেরদৌস বারান্দায় বোবার মত বসে কাঁদে। তখন পপি এসে বলে 'অরে আমি প্যাটে ধরি নাই তয় ও আমার নিজের পোলা। অর লাইগা পরানডা পোড়ে।'

১০. অগ্নিসাক্ষী
শাবানা স্টেজে যখন 'মনে আগুন জ্বলে' গানটা গায় পপির দর্শকসারি থেকে একবার শাবানা ও একবার আলমগীরের দিকে তাকিয়ে দুজনের মুভমেন্ট পরীক্ষা করার অংশটি চমৎকার।

** গানে গানে পপি **

১. আকাশেতে লক্ষ তারা (কুলি)
এ গান রিলিজ হবার পরে গ্রামে, গণ্জে, শহরে, চায়ের দোকানে, বিয়েবাড়িতে সবখানে জাতীয় গান হয়ে গিয়েছিল। ছেলবুড়ো সবার মুখে মুখে, ছিল।গানটার রাতারাতি তুমুল জনপ্রিয়তাই সিনেমাকে হিট করে।

২. জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি (কুলি)
এ গানটি রেডিওতে শোনাতে বাধ্য হত প্রতিদিন। শ্রোতারা এতবেশি শুনতে চাইত যে না শুনিয়ে উপায় ছিল না। বিশেষ করে বাংলাদেশ বেতারের সকাল ১০টার 'অনুরোধের আসর গানের ডালি' অনুষ্ঠানে বাজাত প্রতিদিনই।

৩. 'চিঠি লেখার ঠিকানা চাই (তোমার জন্য ভালোবাসা)
আমিন খানের লিপে স্টেজ পারফরম্যান্সে এ গানটি সুপার রোমান্টিক। পপি ছিল দর্শক সারিতে। এ গানের মাধ্যমেই ঢালিউডে প্লেব্যাকে অভিষেক ঘটে নচিকেতার।

৪. দেব উজাড় করে সারাজীবন ধরে (তোমার জন্য ভালোবাসা)
এ গানটি আমাদের বন্ধুমহলে ভীষণ জনপ্রিয় ছিল।

৫. তোমায় নিয়ে বাঁধব ভালবাসার ঘর (ভালোবাসার ঘর)
শাবানা-জসিম, পপি-অমিত হাসান জুটির সমবেত গানে পারিবারিক বন্ধন এবং মনের মানুষকে ভালোবাসার অনবদ্য গান।

৬. এই প্রশ্নের সোজা উত্তর (বিদ্রোহ চারিদিকে)
সমাজ ও রাষ্ট্রে অপরাধ ও বৈষম্যের বাস্তবতায় পপি, রাজিব স্যার ও সহশিল্পীদের নিয়ে কালজয়ী একটা গান। গানের বিশেষত্ব পপির নিরাপত্তার জন্য ছেলের বেশে থাকা।

৭. বলো না কেন ঐ (মেঘের কোলে রোদ)
অসাধারণ রোমান্টিক গান। পপি, রিয়াজ ও টনি ডায়েসের ত্রিভুজ প্রেমের গান।

৮. আমি প্রেম কি জানি না, প্রতিদিনই ভালোবাসা চাই বন্ধু (আমার ঘর আমার বেহেস্ত)
দুটো গানই অনবদ্য কথা ও সুরে। তবে পরেরটাতে মজার ব্যাপার আছে কিন্তু। হাজতের ভিতরে পপি-শাকিলের রোমান্স আর বাইরে আহমেদ শরীফ, তারিক আনাম ও সুজা খন্দকারের তিন ধরনের অভিনয় গানটিকে এনজয়অ্যাবল করে।

৯. বড় সাধ জাগে (অগ্নিসাক্ষী)
শাকিল খান পিয়ানোতে এ গান ধরে তার সাথে ছন্দে ছন্দে নৃত্য করে পপি। আড়াল থেকে দেখে যায় শাবানা।

১০. আমার মাঝে নেই এখন আমি, স্বপ্ন তুমি সত্য তুমি (রাণী কুঠির বাকি ইতিহাস)
সত্যি কথা বলতে প্রকৃতি থেকে আহরিত প্রেমে একজোড়া কপোত-কপোতীর এমন স্নিগ্ধ রোমান্টিক গান খুব কমই হয়। স্রেফ অসাধারণ।

** পপি নকল করে না **

এক ধরনের ছেলেমানুষি সমালোচক ধুয়া ধরে যে পপি নাকি শাবনূরকে নকল করে অভিনয় করে। একদম ভুল ধারণা। শাবনূরকে নকল করা কি আদৌ সম্ভব! কাউকে নকল করে কেউ বড় আর্টিস্ট হতে পারে না। পপি তার নিজের স্টাইলে অভিনয় করেই আর পাঁচজনের মতো উদাহরণ হয়েছে আগামী প্রজন্মের জন্য।

অনেক কথা হল। কমার্শিয়াল ও এক্সপেরিমেন্টাল কাজে ভার্সেটাইল এবং সমান পারদর্শী পূর্ণাঙ্গ একজন অভিনেত্রীকে আজকের ঢালিউড কাজে লাগাচ্ছে না। এই মুহূর্তে পপি সম্পর্কে এটাই বড় আক্ষেপ।তাকে কাজে লাগানো হোক।

আগামী প্রজন্ম শিখুক, জানুক যে একজন গর্বিত পপি ছিল তাদের।
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top