What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review কাটপিস কালচারঃ একটি দুঃস্বপ্নের পর্যবেক্ষণ (1 Viewer)

Placebo

Mega Poster
Elite Leader
Joined
Jul 31, 2018
Threads
847
Messages
16,671
Credits
181,489
Recipe soup
Onion
rBh0t8G.jpg


'কাটপিস' নিয়ে একটা লেখার অনুরোধ ছিল তাই লিখছি। এ কালচারটি নিয়ে ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। আমার কাছে একটা বই আছে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সেন্সর ব্যবস্থা নিয়ে। বিবেকানন্দ রায়ের লেখা একটা থিসিস। এ বইতে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের পাশাপাশি অশ্লীলতা বিষয়ে একটি বিস্তারিত ধারণা আছে। সেখান থেকে কিছু এবং নিজের স্টাডি থেকে কিছু অবজারভেশন নিয়ে লেখাটি লিখছি। আশা করি ধারণা ক্লিয়ার হবে।

'কাটপিস' শব্দটি সিনেমা সম্পর্কিত বিষয় হিশেবে পরিচিতি পাবার পেছনে অবাক করা সত্য হিশেবে সেন্সরবোর্ডের-ই একটি বিশেষ আবিষ্কার। এর পেছনে তাদের সম্মিলিত 'সিন্ডিকেট' বাণিজ্য তো দিনের অালোর মতোই সাধারণ ঘটনা। সেন্সরের কর্মকর্তা বা মুনাফাখোর সেসব সেন্সর সদস্যরাই নব্বই দশকের শেষের দিকে মূলত সালমান শাহর মৃত্যুর পরে এবং রিয়াজ, ফেরদৌস, শাকিল খান-দের আগমনের সময়টি থেকে সংগঠিত একটি সিন্ডিকেট উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ কালচার শুরু করে।

'কাটপিস' একটি অনুমোদনহীন ব্যবস্থা। সেন্সরবোর্ডের সদস্যরা একদিকে যেমন পর্ণ উপাদান সংবলিত সিনেমা অনুমোদন করেছে তেমনি অনুমোদনহীন দৃশ্য বাণিজ্যিক সুবিধা বা ব্যবসার জন্য প্রদর্শনের উপায় হিশেবে ব্যবহার করা কৌশলটিকে 'কাটপিস' বলে। সংজ্ঞার দিক থেকে এটা হল – 'সিনেমার মূল প্রিন্টের সাথে যুক্ত নয় এমন কোনো ফুটেজই কাটপিস।'এর ব্যবহারেরও সুনির্দিষ্ট নীতিমালা আছে।

যেমন –

  • সিনেসার মাঝামাঝি
  • গানের আবেদনময় মুহূর্তে
  • বিরতির আগে বা বিরতির সময়
  • বিরতির পরে, তবে মাঝামাঝি সময়ে ব্যবহারের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।
'কাটপিস'-এর ধরণ –
  • চুম্বনদৃশ্য
  • গোসল দৃশ্য
  • সঙ্গমদৃশ্য
'কাটপিস'-এর সাথে যেসব নায়িকাদের জড়িত থাকার অভিযোগ মিলেছিল সেগুলোর বেশিরভাগই পরিস্থিতির শিকার। এদেরকে জোর করে এসব করানো হয়েছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের বদলে ডামি বা এডিটিং এর অাশ্রয় নেয়া হত। সেটাই ছিল ভরসা।

uwUjeS4.jpg


'কাটপিস' কালচার ব্যাখ্যার আগে 'অশ্লীলতা'-র মোক্ষম পয়েন্ট বিশ্লেষণের দাবি রাখে। যে সময় 'রাঙা বউ' সিনেমার মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হয় সেটাই ছিল গ্রিন সিগন্যাল অশ্লীলতার জন্য এবং অাশ্চর্যের বিষয় সেটার শুরুটা ঢালিউডের কোনো শিল্পী নয়, টলিউডের ঋতুপর্ণার মাধ্যমে। এ সিনেমার সবচেয়ে স্পর্শকাতর কামজ দৃশ্য হিশেবে মেনশন করা হয়েছে স্বামীর মাধ্যমে স্ত্রীকে ধর্ষণ। এ সিনেমার কিছু সংলাপ শুনুন –

জমিদার: তোকে নিয়ে শহরে গিয়েছিলাম হোটেলে খাব, মজা করব, আনন্দ করব। কেন হল না? শুধু তোর জন্য। এই সুন্দর ঠোঁটের জন্য, এই সুন্দর চোখের জন্য।

সংলাপে যৌন ইঙ্গিত আছে। সংলাপ তো গেল, এবার গানের মুখ অংশ শুনুন –

'চারা গাছে ফুল ফুইটাছে
ডাল ভাঙিস না রে মালি
ডাল ভাঙিস না।'

ফ্রয়েড যাকে 'Eros' বা কামবাসনা বলেছেন তার বাজে সিনেমাটিক ঢালিউড যাত্রা এ সিনেমার মাধ্যমেই শুরু হয়।

তারপর ডিপজলের হাত ধরে 'সিন্ডিকেট' বাণিজ্য এবং টাকা দিয়ে কিনে নেয়া তথাকথিত সেন্সরবোর্ডকে দিয়ে 'কাটপিস' বাণিজ্য মহা সমারোহে শুরু হয়।

তখনকার অনেককেই বাধ্য করা হত আর বাধ্য না হলে যা করা হত সেটাই 'কাটপিস'-এর চূড়ান্ত ব্যবহার ছিল। শুনুন দুই নায়িকার কথা –

মুনমুন – নির্মাতা যদি আমাকে খোলামেলা করায় তাতে কি আমার দোষ? ক্যামেরা কোথায় ধরা আছে সেটা কি আমি জানি? এটা তো চিত্রগ্রাহকের জানার কথা। আর যদি অশ্লীল মনে হয় তার জন্য তো দেশে সেন্সরবোর্ড আছে।

ময়ূরী – যে অশ্লীল দৃশ্য দেখানো হয় হলের ভেতর তার পুরোটাই বানানো। এক্সট্রা মেয়েদের নগ্ন ছবি আমাদের চেহারার সাথে মিল রেখে জুড়ে দেয়া হয়।

মুনমুন, ময়ূরীর কথায় দুটি পয়েন্ট প্রধান। সেন্সরবোর্ডের অশ্লীলতায় অাগ্রহ এবং এক্সট্রা মেয়েদের এডিটেড ব্যবহার। তাহলে ঘটনা যা দাঁড়াল সেই সিন্ডিকেট বাণিজ্যের অংশ হিশেবে সেন্সরবোর্ডের লোকজনরা উদ্দেশ্য নিয়ে 'কাটপিস' কালচার চালু করে। কোনোরকমে এডিটেড ভিডিও ছেড়ে দিলেই তাদের টার্গেট করা নিম্নশ্রেণির দর্শক যেমন- রিকশাওয়ালা তারা আসবে। এমনকি স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা নারীর শরীরের লোভনীয় অংশ দেখার জন্য পড়া ফাঁকি দিয়ে আসত।

টাস্কফোর্সের মাধ্যমে লোক দেখানো অভিযান চালানো হয়েছিল একবার। কাজ হয়নি। এখনও দেশের অনেক সিনেমাহলে 'কাটপিস' দেখানো হয়।যেমন – গাবতলীর 'পর্বত', সাভারের 'শিউলি' ইত্যাদি।সিন্ডিকেট বাণিজ্যের দৌরাত্ম্য আজকের পরিবর্তন হওয়া ঢালিউডেও থেকে গেছে হতাশাজনকভাবে। অথচ এসব নিয়ন্ত্রণ করা হলে বেশকিছু সিনেমাহল বর্তমান ইন্ডাস্ট্রিতে যোগ হতে পারত এবং বর্তমান সিনেমা চালাতে পারত।কিন্তু সেসব করবে টা কে? সর্ষের ভেতরেই ভূত। দেখা যাবে বর্তমান ইন্ডাস্ট্রির কোনো না কোনো রুই-কাতলা এর সুযোগ নিয়ে টাকা কামাচ্ছে।

'কাটপিস' কোনোভাবেই ইন্ডাস্ট্রিতে থাকা উচিত নয়। কিন্তু, যারা এসব নিয়ন্ত্রণ করে তাদের নিয়ন্ত্রণের শক্ত কোনো প্রশাসন নেই। সিনেমাহলের সব তালিকা এবং তদারকি সরকারিভাবে খুব কঠোরভাবে সুস্থ সিনেমার জন্য হলে 'কাটপিস' এখনও যা আছে সেসব থাকবে না। নয়তো পুরনো শক্তির নতুন অাগমন যদি ঘটে তবে তা বর্তমান struggle period এ থাকা ঢালিউডকে সমূলে ধ্বংস করে দেবে। কেননা মুনমুন, মেহেদি এবং কাটপিস আমলের শিল্পীদের আগমন সেই অশনি সংকেত দেয়..

সময় থাকতে কবি সৈয়দ শামসুল হকের মতোই বলতে হয় –

'জাগো বাহে কোনঠে সবায়'
 

Users who are viewing this thread

Back
Top