What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review শয়তান মানুষ : উপভোগ্য অ্যাকশন ছবি (1 Viewer)

Starling

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 7, 2018
Threads
775
Messages
12,015
Credits
220,609
Recipe wine
Kaaba
Profile Music
Birthday Cake
2HmrDQ5.jpg


নব্বই দশকে বাংলাদেশী চলচ্চিত্রে বাণিজ্যিক ছবির একটা জোয়ার বয়ে গেছে। রোমান্টিক, অ্যাকশন, ফ্যামিলি ড্রামা সব ধরনের ছবির একটা স্বর্ণসময় ছিল তখন। অ্যাকশন ছবির মধ্যে যে ছবিগুলো হিট হয়েছিল তার মধ্যে ৯৬-এর 'শয়তান মানুষ' অন্যতম।

তখন অামাদের বাণিজ্যিক ছবিতে এমন একটা সময় ছিল রোমান্টিক ছবির নায়করাও অ্যাকশনে ভালো দক্ষতা দেখাতে শুরু করেছিল। ওমর সানী, অামিন খানের মতো নায়করা তখন রোমান্টিক ছবি করত অাবার তাদেরকেই অ্যাকশনে খাপ খাওয়াতেন পরিচালকরা। 'শয়তান মানুষ' ছবিতে এ দুজন নায়ককে অ্যাকশনে বেশ ভালো পারফর্ম করেছে।

মানুষ কখন শয়তানের অাকার ধারণ করে! যখন সে তার নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে অন্যায় কাজ করতে থাকে। হুমায়ুন ফরীদি ও রাজিব চট্টগ্রামের পাহাড়পুরে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন লুট করতে গেলে একটি দামি মূর্তি ভাগ্যক্রমে রাজিবের বদলে ফরীদির হাতে যায়। রাজিব বন্দুকের মুখে সেটা চাইলে ফরীদি তার ভাই প্রতিবন্ধী তুষার খানের চিকিৎসার জন্য খরচ করবে বলে জানায়। রাজিব তাকে যেতে দিলেও পরে তুষার খানকে খুন করে সোা নিয়ে অাসে। ভাইয়ের রক্ত দিয়ে গোসল করে কসম খায় ফরীদি প্রতিশোধ নেবে। রাজিবের পরিবারকে তার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফরীদি। রাজিবের স্ত্রী ডলি জহুরকে অসম্মান করতে চায়। দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলে হারিয়ে যায়। বড় ছেলে অামির সিরাজীর হাতে পড়লে তাকে মাস্তান বানায়। অামিন খান হয় পুলিশ ইন্সপেক্টর। তাদের দ্বন্দ্বের পর ঘটনাক্রমে হয় বন্ধুত্ব। মৌসুমীর সাথে সানীর প্রেম অার অন্তরার সাথে অামিনের প্রেম হয়। ফরীদি ও রাজিব দ্বন্দ্ব জমে ওঠে। মানুষের অাড়ালে তাদের শয়তানের মতো রিপুগুলো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।

ছবিটির নির্মাণে অ্যাকশনের ব্যবহার বলতে গেলে ৯৫ ভাগ। অ্যাকশন ছবি তো অবশ্যই তবে রোমান্স বা স্যাড মোমেন্টও অাছে। অ্যাকশনে বেশকিছু সিকোয়েন্স খুব যত্নের এবং মনতাজুর রহমান অাকবরের কাজের বৈশিষ্ট্যে সেটা ধরা পড়ে। যেমন-

fXNDZP4.jpg


* হুমায়ুন ফরীদি কবির খাঁ-র মাধ্যমে খোঁজ পায় রাজিবের যাকে সে হন্যে হয়ে খুঁজছে। রাজিব রাজনৈতিক বক্তৃতা দেবার সময় ফরীদি সেখানে হাজির হয়। মানব প্রাচীর তৈরি হলে সবার কাঁধে পা ফেলতে ফেলতে এগিয়ে অাসে ফরীদি। ঐসময় তার বডি ল্যাংগুয়েজ জাস্ট ম্যাজিক্যাল ছিল। এক্সপ্রেশনের তুলনা হয় না। তখন ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকও শরীরের রক্ত গরম করার মতো। এগিয়ে অাসতে অাসতে ফরীদি চাকু ছুঁড়ে মারে অার রাজিব সরে গেলে লাগে অার এক নেতার বুকে। নেতা মারা যায়।

* ওমর সানী চাঁদা তোলে বেঞ্চে শুয়ে। পুলিশ ইন্সপেক্টর অামিন খান সেখানে হাজির। সানীর সাথে চ্যালেন্জ ছুঁড়ে দেবার সময় দুজনের ফাইট হয়। সানীর কাঁধ পর্যন্ত চুল অার অামিন খানের পুলিশের পোশাকে দুজনের লুক ছিল সুপার।

* অামিন খান পার্কে বাদাম খাচ্ছিল। তখন সে অন্ধ ছবির মাঝের গল্পে। গুন্ডারা তাকে অাক্রমণ করে ফরীদির কথায়। অামিন শব্দ শুনে হাতের ছড়িটা ব্যবহার করে ফাইট করে। মাঝখানে গুন্ডারা জুতা খুলে এগিয়ে যায় যাতে শব্দ না হয় অার তারা অামিনকে কুপোকাত করতে পারে। জুতা ছুঁড়তে থাকে। তখনও সে সবাইকে মারে। এরপর টেপরেকর্ডারে গান ছাড়ে তখন অার অামিন শব্দ বুঝতে পারে না এবং মার খেতে থাকে। সানী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাকে বাঁচায়। ঐ ফাইট সিকোয়েন্সটা ছবির সবচেয়ে অাকর্ষণীয় ফাইট ছিল।

ছবির প্রধান অাকর্ষণ বা স্ক্রিনে সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি ছিল হুমায়ুন ফরীদি-র। ভাইয়ের হত্যার প্রতিশোধের জন্য মরিয়া। 'ভাইরে ভাই' বলে মৃত ভাইকে ডাকে অার প্রতিশোধ নেবে বলে জানায় বারবার। এ সংলাপটির সাথে তাঁর 'অাত্ম অহংকার' ছবির ছবিতে মায়ের মৃত্যুর প্রতিশোধের জন্য বারবার 'মা রে মা' বলার সাথে মিল অাছে। ফরীদির প্রধান টার্গেট রাজিব এরপর তার ছেলেরা। শেষের দিকে তার লম্বা হাসির একটা সিকোয়েন্স অাছে সেটা অসাধারণ। ফরীদি মৌসুমীকে হাত করে। মৌসুমী স্টেজে ডান্স করত তাকে ঘটনাক্রমে ফাঁসিয়ে দেয় ফরীদি। মৌসুমী এরপর তার অপরাধ জগতের একজন হয়ে যায়। তার বোন থাকে অন্তরা। ফরীদি অামিন খানকে গুলি করার জন্য সানীকে নিয়োগ করে অার সেটা রাজিবকে জানায় যে তার ছেলেকে গুলি করা হবে। রাজিব অপরাধী হলেও ছেলের জন্য কাঁদতে থাকে কিন্তু অামিন খান গুলি খেয়ে অন্ধ হয়ে যায়। সানীর সাথে দূরত্ব বাড়ে। পরে অাবার ঠিকও হয়। সবই ঘটে ফরীদির মাধ্যমে। ছবির অ্যাকশন মোমেন্টগুলো সবই ফরীদির দখলে ছিল। রাজিবও দুর্দান্ত অভিনয় করেছে। মৌসুমী, সানী, অামিন খান, অন্তরা সবাই ডেডিকেটেড ছিল তাদের চরিত্রে।

মৌসুমীর গ্ল্যামার অার ফাইট সিকোয়েন্সগুলো জোস। সাথে অন্তরাও। সানীর সাথে মৌসুমীর 'মনে মনে যারে অামি খুঁজি' গানটি এ জুটির অন্যতম জনপ্রিয় গান। সানী মৌসুমীকে প্রেম নিবেদন করে তার স্টেজ ডান্সে মুগ্ধ হয়ে। মৌসুমী প্রথমে ফিরিয়ে দিলেও পরে অ্যাকসেপ্ট করে। অন্তরা অামিন খানকে অন্ধ হবার পর মানসিক শক্তি যোগায় এবং এভাবে তাদেরও প্রেম হয়ে যায়। মৌসুমীর স্টেজ ডান্সে ফরীদি দর্শকসারিতে বসে দেখে সেখানে 'অামি যার নূপুরের ছন্দ' এ নজরুল সঙ্গীতটি ছিল। গানের কস্টিউমে মৌসুমী ছিল গ্ল্যামারাস।

GZy53cP.jpg


ছবিতে ওমর সানী শেষের দিকে স্পেশাল ব্রাঞ্চে পুলিশের চাকরি পায়। হুমায়ুন ফরীদিকে ধরতে তারই পুরনো চালে তাকে অাটকায়। রাজিব-ফরীদির ফাইটে প্রথমে রাজিব গুলি খেলেও পরে ফরীদিকে গুলি করে। মারা যাবার অাগে হাতটা বাড়িয়ে ফরীদির সংলাপ-'ভাইরে অামি তোর প্রতিশোধ নিছি রে ভাই, অামি অাইতাছি তোর কাছে রে ভাই' অসাধারণ ছিল।

ওমর সানীর কাঁধ পর্যন্ত চুলের স্টাইল তখনকার সময়ে একটা অাকর্ষণ ছিল তরুণ প্রজন্মের কাছে। তবে ছবিতে সানীর থেকে অামিন খানকে স্মার্ট লেগেছে বেশি। অন্ধ হবার পর তার সানগ্লাস পরে থাকা ফ্রেশ লুক দেখতে অসাধারণ লেগেছে। পার্কের ঐ ফাইট সিকোয়েন্সটিতে অামিন খানকে জোস দেখায়।

অামাদের অ্যাকশন ছবির অভাবটা এখন নানাভাবে অাছে। হচ্ছে অ্যাকশন ছবি এখনো তবে মেকানিজমের অভাব অাছে। নব্বই দশকের এ ছবিটি অ্যাকশন ছবির জন্য উদাহরণ। অাজকের নির্মাতাদের অভিনয়সমৃদ্ধ ও নির্মাণকৌশলে দারুণ এ ছবি থেকে শেখার অাছে।
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top