What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other ছবি কথা বলে : সেই রুনা লায়লা এই… (1 Viewer)

Starling

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 7, 2018
Threads
775
Messages
12,015
Credits
220,609
Recipe wine
Kaaba
Profile Music
Birthday Cake
runa001.webp


রুনা লায়লার গানে কোনো অলৌকিকত্ব নেই। নেই কোনো অলীক বিষয়। তার গান বরং আমাদের রূপ-রস; গন্ধ-স্পর্শের জগতেই তীব্রভাবে আকৃষ্ট করে। তার গানের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত এই জগতেরই উপাদান— যৌবধর্মের সহজ সুস্থ ও স্বাভাবিকত্ব। এক সময় রুনার গানকে বলা হত— ‌'শরীরী সংগীত'- অর্থাৎ তার গান শুধু শোনার জন্য নয়, দেখারও বিষয়। রুনার কৈশোর, যৌবন ও যৌবনের লাস্য তার গানকে যেমন মোহাবিষ্ট করেছে, পরিণত বয়সে তাকে তেমনি রূপান্তর করেছে একক মহিমায় অনন্য উচ্চতার সংগীতশিল্পীতে।

runa002.webp


এ সবের বাইরেও পুরনো দিনের গান নতুন করে শুনলে যে কেউ সুরের যে মূর্ছনা অনুভব করবেন, সেটা যে রুনা লায়লার কণ্ঠ নিঃসৃত সাবলীল ইন্দ্রজালেই অনুভূত হবে!

runa003.webp


সঙ্গীতের জীবন্ত এ কিংবদন্তীর তারকা দিনগুলো সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশি জানি। বরং রুনা লায়লার জন্মদিনে তার শৈশব, কৈশোর ও যৌবনের দিনগুলোর কথা আরেকবার জেনে নিতে পারি; নিজেদের জানার সঙ্গে মিলিয়েও নিতে পারি!

runa004.webp


রাজশাহীর ছেলে সৈয়দ মোহাম্মদ এমদাদ আলী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাসে এম এ পাস করেন। এরপর তিনি কলকাতাতেই কাস্টমস এ্যান্ড এক্সাইজ ডিপার্টমেন্টে চাকরি জীবন শুরু করেন ১৯৪৫ সালে। আশৈশব সংগীতানুরাগী এমদাদ আলীকে আকৃষ্ট করেছিলেন বিদ্যাসাগর স্ট্রিটের গায়িকা অমিতা সেন। তিনি চট্টগ্রামের বিশিষ্ট জমিদার পরিবারের মেয়ে। ১৯৪৭ সালের জুলাই মাসে এই অমিতা সেন— আমিনা লায়লা হয়ে এলেন এমদাদ আলীর ঘরে। তাদের দাম্পত্যজীবনের এক বছর পর ১৯৪৮ সালে ঘর আলো করে এলো দীনা লায়লা।

runa005.webp


দীনার মধ্যে যেন পিতা-মাতার সংগীতানুরাগ একেবারে মূর্ত হয়ে দেখা দিল। বিস্ময়কর প্রতিভার প্রমাণ দিলেন তিনি। ওস্তাদও রেখে দেওয়া হলো তার জন্য। মাত্র সাড়ে চার বছর বয়সে হারমোনিয়াম বাজিয়ে গান করে দীনা লায়লা বিচিত্রানুষ্ঠানের সব দর্শকদের বিস্মিত করে দেন।

runa006.webp


১৯৫২ এর ১৭ নভেম্বরে জন্ম হলো রুনা লায়লার। রুনার যখন আড়াই বছর বয়স, তখন তার বাবা বদলি হয়ে গেলেন পশ্চিম পাকিস্তানের মুলতানে, ১৯৫৫ সালের মার্চ মাসে। রুনার বড় বোন দীনা লায়লার সংগীত চর্চা তখন অব্যাহত গতিতে চলছে। শিশু রুনা লায়লা তখন বড় বোনের আশপাশে ঘুরঘুর করে। চর্চার সময় দীনার পাশে বসে থাকে। আর সাথে সাথে গান গাইতে চায়।

runa007.webp


দু'বছর পর, ১৯৫৭ সালে মুলতান থেকে করাচি বদলি হয়ে আসার পর সৈয়দ এমদাদ আলী দীনা লায়লার সংগীত চর্চার সুযোগ করে দেন। ওস্তাদ আব্দুল কাদের ভূপালী দায়িত্ব নিলেন দীনা লায়লার। রুনার সম্ভাবনার কথা তখনো মনে হয়নি কারোর। এর আগে নাচের স্কুলে নাচ শেখার জন্য ভর্তি করানো হয়েছিল রুনাকে। সম্ভবত ওই শাখাতেই সিদ্ধি লাভ করুক রুনা, এই ছিল বাবা-মার ইচ্ছা।

runa008.webp


সংগীতে পিতৃসূত্রে রুনা লায়লার উত্তরাধিকার বেশ সমৃদ্ধ। আত্মীয়স্বজনের মধ্যেও ছিল সহজ সাঙ্গীতিক পরিবেশ। দুজন খ্যাতিমান গায়িকা- আঞ্জুমান আরা ও জিনাত রেহানা, যথাক্রমে সৈয়দ এমদাদ আলী ভাগিনী ও নাতিনী। গীতিকার জেবুন্নেসা জামাল, জিনাত রেহানার মা, তিনিও এমদাদ আলীর ভাগিনী।

runa009.webp


করাচিতে ওস্তাদ আব্দুল কাদের ভূপালীকে শিক্ষাগুরু হিসেবে পাওয়া অবশ্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা রুনার জন্য। তার প্রাণ, এ জন্যই নিজেকে কখনো পেশাদার শিক্ষকে পরিণত করতে পারেননি। সংগীতের সুধা ছিল তার মাঝে। অকাতরে তা তিনি বিলিয়ে দিতেও জানতেন। তার অসাধারণ নিষ্ঠা ও রুনার সংগীতভিত্তি রচনা করে।

runa010.webp


বিশিষ্ট তবলাবাদক ওস্তাদ হাবিবুদ্দীনকে ওস্তাদ ভূপালী নিজেই খুঁজে এনেছিলেন— দীনার মধ্যে তিনি দেখেছিলেন এক উজ্জ্বল সম্ভাবনা। সময়সূচির বাইরেও এসে গান শেখাতেন, পথে ঘাটে ঘুরে বেড়াবার সময় হঠাৎ যদি একটা কিছু খেয়াল হয়েছে, মনে করেছেন ছাত্রীর এটা শেখা উচিত। অমনি অসময়ে হলেও ছুটে এসেছেন।

runa011.webp


দীনাকে গান শেখাতেন ওস্তাদ আর খেয়াল করতেন বড় বোনের পাশে নিশ্চুপ বসে থাকা ছোট বোন রুনা। কৌতূহল আর আগ্রহ তার চোখে মুখে। 'ঐটুকু মেয়ে কিন্তু অনুকরণের ক্ষমতা বড় বিস্ময়ের। আর দীনার গান শেখানোর সময় তাকে দূরে সরিয়ে রাখা যায় না।' ওস্তাদ এ স্বীকারোক্তির পাশাপাশি রুনার বাবাকে বললেন, 'এমদাদ সাহেব, আপনার এ মেয়েটিকেও আমি গান শেখাবো।'

runa012.webp


রুনা লায়লার শিল্পীসত্ত্বাকে উন্মোচনের ক্ষেত্রে সে ছিল ওস্তাদের এক নির্ভুল সিদ্ধান্ত। এক মাস ধরে চললো চর্চা। সে চর্চা শিশু রুনার জন্যে হলো প্রাণান্তকর। কিন্তু মনজুর হোসেনও ছাড়বেন না।

runa013.webp


তারপর একদিন গান রেকর্ড করলেন বারো বছরের রুনা। সেই মুহূর্তে একটি অনুভূতিই শুধু সক্রিয় ছিল তার মনে, গানটি যেন ভাল হয়, সকলের প্রত্যাশা যেন পূরণ করতে পারি। এভাবে ১৯৬৪ সালে লাহোরে 'জুগনু' ছবিতে 'মুন্নি মেরি' গানের মাধ্যমে প্লেব্যাকে পা রাখেন রুনা। গানটি ছিল তার বয়সী শিশুর জন্য। এর কিছুদিন পরেই এলেন সংগীত পরিচালক নাশাদ। এবার আর শিশু শিল্পীর জন্যে শিশুশিল্পীর গান নয়। 'হাম দোনো' ছবির নায়িকার জন্যে গান।

runa014.webp


শৈশবের বৃত্ত অতিক্রম করে অগ্রসর হলেন রুনা লায়লা। তারপর প্রায় এক দশক ধরে পাকিস্তানী গানের জগতে রুনা লায়লা ছিলেন এক লাস্যময়ী ঝংকার। এক জাদুকরী শিহরণ। ছায়াছবির গানের জন্যে অপরিহার্য হয়ে উঠলেন তিনি। এই প্রতিষ্ঠা এতো দূর পর্যন্ত পৌঁছালো যে দ্বন্দ্বে অবতীর্ণ হতে হলো নূরজাহানকেও। শেষ পর্যন্ত পরাজয়ও তার স্বীকার করে নিতে হলো- বাড়িয়ে দিতে হলো আপসের হাত।

runa015.webp


এই জয়যাত্রা শুরু হলো ১৯৬৮ সাল থেকে। 'কমান্ডার' ছবির 'জানে মান ইতনা বাতা দো' গানের জন্য রুনা লায়লা পেলেন দুইটি পুরস্কার- গ্র্যাজুয়েট ও নিগার। ১৯৭০ সালে পেলেন ৩টি পুরস্কার- গ্র্যাজুয়েট, নিগার ও ফিল্ম ক্রিটিকস এ্যাওয়ার্ড। 'আঞ্জুমান' ছবির গানের জন্য এই পুরস্কার তিনি পান।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top