What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other হিট-ফ্লপ মালেক আফসারী (1 Viewer)

Starling

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 7, 2018
Threads
775
Messages
12,015
Credits
220,609
Recipe wine
Kaaba
Profile Music
Birthday Cake
mQ0nIRh.jpg


বাংলা চলচ্চিত্রের বাণিজ্যিক ধারায় অন্যতম সেরা পরিচালকদের নাম নিলেন প্রথম সারিতেই তিনি থাকবেন, তার পরিচালিত একাধিক ছবি দর্শকদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়, বেশিরভাগ ছবিই নকলের দোষে দুষ্টু, তবে উনার নির্মাণগুণ, প্রচারণা, অভিনয়শিল্পী নির্বাচন সব মিলিয়ে ছবিগুলো আলোচনায় থাকতো, বাণিজ্যিক দিক দিয়ে সফলও হতো। তিনি স্বনামধন্য পরিচালক 'মালেক আফসারী'।

১৯৮৩ সালে পরিচালকরূপে আত্বপ্রকাশ করেন তিনি, সিনেমার নাম 'ঘরের বউ'। অভিনয় করেছিলেন শাবানা, আলমগীর, জসিমসহ আরো অনেকে। প্রথম ছবিতেই তিনি বাণিজ্যিক সফলতা পান। দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর কাহিনীতে এই ছবি পরবর্তীতে কলকাতায় রিমেক হয়।

১৯৮৫ সালে নির্মাণ করেন দ্বিতীয় ছবি 'গীত', ফোক-ফ্যান্টাসি ধারার এই ছবি আরো বাণিজ্যিক সফল। যে নায়িকা তাকে চোরের মত দেখতে বলেছিলেন, সেই নায়িকা সুচরিতাকেই এই ছবিতে নিয়েছিলেন, এছাড়া আরো ছিলেন আলমগীর, আজিম, রোজী আফসারী। মূলত এই ছবির পর থেকেই রোজী আফসারীর সঙ্গে উনার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়।

vDRIRSP.jpg


১৯৮৬ সালে নির্মাণ করেন দুইটি ছবি। একটি 'রাস্তার রাজা', বাণিজ্যিক সফল এই ছবিটি অভিনয় করেছিলেন রোজীনা, অলিভিয়া, মাহমুদ কলি, জনি, রোজী আফসারীসহ আরো অনেকে। অন্যটি মাহমুদ কলি-অঞ্জু ঘোষ অভিনীত 'গোলমাল', ছবিটি বাণিজ্যিকভাবে ফ্লপের শিকার হয়। এছাড়া উনার কাহিনী, চিত্রনাট্যে ও রোজী আফসারীর নির্মিত একমাত্র ছবি 'আশা নিরাশা' মুক্তি পায় এই বছর। অভিনয় করেছিলেন রোজীনা, জনি, দিলারা'সহ আরো অনেকে।

১৯৮৭ সালেও নির্মাণ করেন দুটি ছবি। প্রথম ছবি জনি, অঞ্জু ঘোষ অভিনীত 'সোনার সংসার', এই ছবিটিও ফ্লপের তকমা পায়। এই বছরেই তিনি স্ত্রী রোজী আফসারীর প্রযোজনা সংস্থা রোজী ফিল্মসের সঙ্গে যুক্ত হন। নির্মাণ করেন 'ধনী গরীব', মাহমুদ কলি, রোজীনা অভিনীত এই ছবিটি উনার ক্যারিয়ারে অন্যতম হিট ছবি।

১৯৮৯ সালে নির্মাণ করেন ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ছবি 'ক্ষতিপূরণ', বিদেশি গল্পের অনুকরনে নির্মিত দুর্দান্ত থ্রিলার এই ছবিটি দর্শকদের অত্যন্ত প্রিয়। ছবিটি নির্মিত হয় রোজী ফিল্মসের ব্যানারে, মাঝপথে অর্থ সংকট হলে এগিয়ে আসেন নায়ক আলমগীর। মুক্তির পর বেশ সাড়া ফেলে ছবিটি, আর প্রথমবারের মত উনার কোনো ছবি জাতীয় পুরস্কার জিতে নেয়। পুরস্কারগুলো হলো সেরা অভিনেতা (আলমগীর) ও সেরা গায়ক (এন্ড্রু কিশোর)।

১৯৯২ সালে নির্মাণ করেন সুপারহিট ছবি 'ক্ষমা', রোজী ফিল্মস ও খোশনূর আলমগীরের যৌথ প্রয়াসে নির্মিত এই ছবিতে অভিনয় করেন শাবানা, আলমগীর, মান্না, অরুনা বিশ্বাস, রাজিব, রোজী আফসারীসহ আরো অনেকে। ছবিটি সেরা গায়ক (সৈয়দ আব্দুল হাদী) শাখায় জাতীয় পুরস্কার পায়।

১৯৯৪ সালে মো. রফিকুজ্জামানের কাহিনীতে নির্মাণ করেন আরেক দুর্দান্ত গল্পের ছবি 'ঘৃণা'। এই অভিনয় করেছিলেন রুবেল, চম্পা, হুমায়ূন ফরিদী, খলিলসহ আরো অনেকে। রোজী ফিল্মসের ব্যানারে নির্মিত এই ছবিটি বাণিজ্যিক সফলতার পাশাপাশি সেরা চিত্রগ্রাহক (কাজী বশির) শাখায় জাতীয় পুরস্কার অর্জন করে।

১৯৯৬ সালে নির্মাণ করেন দুটি ছবি। শক্তিমান অভিনেতা খলিলের প্রযোজনায় নির্মাণ করেন মৌলিক ছবি 'এই ঘর এই সংসার'। পারিবারিক গল্পের ছবিটি উনার ক্যারিয়ারের সেরা ছবি হিসেবে বিবেচিত হয়, যদিও সেভাবে বাণিজ্যিক সফলতা আসেনি। এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন সালমান শাহ, আলীরাজ,রোজী আফসারী, বৃষ্টি, বুলবুল আহমেদ, তমালিকাসহ আরক অনেকে। পরবর্তীতে এই ছবি কলকাতায় রিমেক হয়। এছাড়া শাবানা, আলমগীর, ইলিয়াস কাঞ্চন, দিতি, হুমায়ূন ফরিদী অভিনীত 'দূর্জয়' ছবিটিও মুক্তি পায় এই বছর।

১৯৯৮ সালে নির্মাণ করেন উনার ক্যারিয়ারের অন্যতম বাণিজ্যিক সফল ছবি 'মৃত্যুর মুখে'। এই ছবিটি ইলিয়াস কাঞ্চনের সর্বশেষ সুপারহিট ছবি হিসেবে বিবেচিত, এছাড়া আরো অভিনয় করেছিলেন মুনমুন, আমিন খান, ময়ুরী, গোলাম মুস্তাফাসহ আরো অনেকে।

Sbkert9.jpg


১৯৯৯ সালে তিনি নির্মাণ করেন তিনটি ছবি, প্রতিটা ছবিই ছিল ব্যবসাসফল। সবচেয়ে বেশি ব্যবসা করে মান্না-মুনমুন অভিনীত 'রাজা' ছবিটি, অশ্লীলতার দায়ে ছবিটি অভিযুক্ত ছিল। অনেকের মতে মালেক আফসারীর অবনমন শুরু এই ছবি থেকেই। এই বছর উনার নির্মিত আরেকটি মুক্তি পাওয়া ছবি 'মরণ কামড়'ও অশ্লীলতার দোষে সমালোচিত ছিল। এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন মান্না, আমিন খান, মুনমুন, ময়ুরীসহ আরো অনেকে। এছাড়া নায়ক মান্না প্রযোজিত দ্বিতীয় ছবি 'লাল বাদশা'ও উনি নির্মাণ করেন। এই ছবিতে মান্নার বিপরীতে ছিলেন পপি ও শাহনাজ।

২০০০ সালে নির্মাণ করেন ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ব্যবসা করা সিনেমা 'হীরা চুন্নি পান্না', ছবিটি প্রচুর ব্যবসার পাশাপাশি অশ্লীলতার জন্য বেশ সমালোচিত হয়েছিল। বিশেষ করে ডিপজলের চরিত্রটি খুব বিতর্কের সৃষ্টি করেছ, এছাড়া এই ছবিতে অভিনয় করেন আমিন খান,পপি ও শাকিব খান।

২০০১ সালে আমিন খান, শাকিব খান, মুনমুন, ডিপজলকে নিয়ে নির্মাণ করেন হিট ছবি 'ঠেকাও মাস্তান'। নিজেকে স্টার ডিরেক্টর দাবি করে প্রথমবারের মতো পোস্টারে আসেন কোনো পরিচালক।

২০০২ সালে আবার ফিরে আসে মান্না-মালেক আফসারী জুটি। বাংলাদেশের তখন সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ে নির্মাণ করেন বাণিজ্যিক সফল ছবি 'বোমা হামলা', এই ছবিতে দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেন মান্না, বিপরীতে ছিলেন সিমলা ও ময়ুরী।

২০০৫ সালে নায়ক মান্নার প্রযোজনায় নির্মাণ করেন 'আমি জেল থেকে বলছি'। বাণিজ্যিক সফলতা পাওয়া এই ছবিতে মান্না ছাড়াও অভিনয় করেছিলেন মৌসুমী, ওমর সানী, নদীসহ আরো অনেকে।

২০০৭ সালে মান্না-পূর্ণিমা-ইরিন জামানকে নিয়ে নির্মাণ করেন বাণিজ্যিক সফল ছবি 'উল্টাপাল্টা ৬৯'। মান্নার অকালপ্রয়াণের কারনে এই জুটিকে আর দেখা যায়নি।

স্ত্রী রোজী আফসারীর মৃত্যুর পর ২০১১ সালে আবার ফিরে আসেন ছবি নির্মাণে। হার্টবিট প্রোডাকশনের প্রযোজনায় শাকিব খান, অপু বিশ্বাস, ববিতা নিয়ে নির্মাণ করেন বছরের অন্যতম সফল ছবি 'মনের জ্বালা'। এই ছবিতে প্রথমবারের মত শাকিব খান গায়ক রুপে আবির্ভূত হন।

একই প্রযোজনা সংস্থার 'খোদার পরে মা' ছেড়ে দেওয়ার পর ২০১৩ সালে নির্মাণ করেন 'ফুল অ্যান্ড ফাইনাল', অভিনয় করেছিলেন শাকিব খান, ববি, অমিত হাসান। এই ছবিটি বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়নি।

kwFLXc6.jpg


২০১৭ সাল। এর আগে বেশিরভাগ ছবিতে জনপ্রিয় তারকাদের নিয়ে কাজ করলেও এইবার এসেছেন অপেক্ষাকৃত কম জনপ্রিয় তারকা জায়েদ খান-পরী মনি নিয়ে। সিনেমার নাম 'অন্তরজ্বালা', মুক্তি পাচ্ছে ১৫ ডিসেম্বর, প্রযোজক জায়েদ খান নিজেই। তিনি ছবিটির গল্প এক মান্নার ভক্তের করুণ কাহিনীর মৌলিক ছবি দাবি করলেও ইতিমধ্যে নকলের আভাস পাওয়া গেছে, যদিও তিনি নিজেও এইবার কথা পাল্টিয়েছেন। মৌলিক ধারার ছবিকে বলতে গেলে ছোট করেছেন, তারপরেও ছবিটি নিয়ে রয়েছে বেশ আলোচনা-সমালোচনা। আশা করা হচ্ছে, ছবিটি বাণিজ্যিক সফলতা পাবে। নকল ছবি তিনি বরাবরই বানান, নির্মাণে তিনি পুষিয়েও দেন। কিন্তু উনার মিথ্যাচার, চাপাবাজিতার জন্য দর্শকদের কাছে সমালোচিত হন, এমনকি এক সময় তিনি অশ্লীল ছবি বানিয়েছেন এই নিয়েও উনার কোনো পীড়া নেই।

মালেক আফসারীর কোনো সিনেমাই হলে গিয়ে দেখা হয়নি, এইবার সেটা পূর্ণ করার চেষ্টা করবো। 'অন্তর জ্বালা'র জন্য শুভকামনা, আর প্রত্যাশা রইলো ভবিষ্যতে মালেক আফসারী সাহেব নিজেকে শুদ্ধরুপে দর্শকদের সামনে আনবেন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top