What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other একজন ও অনেক পূর্ণিমার গল্প (1 Viewer)

Starling

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 7, 2018
Threads
775
Messages
12,015
Credits
220,609
Recipe wine
Kaaba
Profile Music
Birthday Cake
NSQLbWL.jpg


জোছনা, চাঁদনী, পূর্ণিমা শব্দগুলো সৌন্দর্যের দিক থেকে কাছাকাছি। চাঁদের আলোয় পৃথিবী ঝলমল করলে তাকে এ নামমগুলোতে ডাকা হয়। আমাদের চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা তারকার মধ্যে পূর্ণিমা নামে একজন আছে। তার কাজের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র ঝলমল করেছে অনেকটা সময়। সেই আলো ঝলমলে গল্পটা শোনাব আজ।

একজন পূর্ণিমা চলচ্চিত্রে আসার আগে বা চলচ্চিত্রের পাশাপাশি অন্যান্য মাধ্যমেও কাজ করে নিজের যোগ্যতা বা দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছে। প্রসঙ্গক্রমে সবগুলো আসবে।

চলচ্চিত্র নাম পূর্ণিমা। মূল নাম দিলারা হানিফ রীতা। জন্ম ১১ জুলাই, ১৯৮১ সাল। চট্টগ্রামে। বাবা মোহাম্মদ হানিফ, মা সুফিয়া বেগম। বিয়ে হয় ২০০৭ সালে। স্বামীর নাম আহমেদ ফাহাদ জামাল। তাদের মেয়ের নাম আরিশা।

টিভি প্রোডাকশনে প্রচুর কাজ করেছে পূর্ণিমা। ছোটবেলায় নাচগানের অনেক অনুষ্ঠানে অংশ নিত। চলচ্চিত্রে আসার পরও টিভি মাধ্যমে কাজ করেছে। তার বিজ্ঞাপনের মধ্যে ছিল- গ্রামীণফোন, সিটিসেল, সানক্রেস্ট কোলা, বার্জার ঝিলিক, রাঙাপরী মেহেদি, মেরিল বেবি লোশন, কোহিনূর ডিটারজেন্ট, সুরেশ সরিষার তেল।

জনপ্রিয় উপস্থাপক হানিফ সংকেত-এর 'ইত্যাদি' থেকে উঠে আসা শিল্পী আকবর-এর জনপ্রিয় গান 'হাত পাখার বাতাসে'-র মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় পূর্ণিমা। মিউজিক ভিডিওর মধ্যে এটা সেসময় সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল।

অসংখ্য টিভি নাটক/টেলিফিল্মে অভিনয় করেছে পূর্ণিমা। নায়িকাদের মধ্যে তার সময়ে চলচ্চিত্রের পাশাপাশি নাটক/টেলিফিল্মে দাপটের সাথে তাকে দেখা গেছে। এটিএন বাংলা-র এক সময়ের জনপ্রিয় ধারাবাহিক 'লাল নীল বেগুনী'-তে অভিনয় করে খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছিল পূর্ণিমা। এটা তার টিভি মাধ্যমের জনপ্রিয়তার নতুনত্ব ছিল ক্যারিয়ারে। উল্লেখযোগ্য কাজ – ল্যাবরেটরি, নীলিমার প্রান্তে, অমানিশা, ঐখানে যেও নাকো তুমি, এখনো ভালোবাসি, দুর্ঘট, যদি ভালো না লাগে তো দিও না মন, প্রেম অথবা দুঃস্বপ্নের রাতদিন, প্রতিহরণ, ম্যানিকুইন, রংবেরং, জলে ভাসা পদ্ম, ঘরের খবর পরের খবর, শঙ্খচিল, লাভ অ্যান্ড কোং, হলুদ রঙের বায়না, ১০১ লাভ ইমার্জেন্সি।

nQ7kfeg.jpg


পূর্ণিমার চলচ্চিত্রজীবন সমৃদ্ধ। বাণিজ্যিক, সাহিত্যনির্ভর ছবির অসাধারণ প্রতিভা। 'শত্রু ঘায়েল' ছবিতে শিশুশিল্পী হিশাবে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু পূর্ণিমার। ১৯৯৭ সালে রিয়াজের বিপরীতে 'এ জীবন তোমার আমার' ছবির মাধ্যমে নায়িকা পূর্ণিমার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। জুটিপ্রথাকে কেন্দ্র করে তার ছবিগুলোর কথা বলা যায় : রিয়াজ-পূর্ণিমা, শাকিব খান-পূর্ণিমা, মান্না-পূর্ণিমা, ফেরদৌস-পূর্ণিমা।

রিয়াজ-পূর্ণিমা জুটি ঢালিউডের অন্যতম সেরা জনপ্রিয় জুটি। তাদের উল্লেখযোগ্য ছবি – মনের মাঝে তুমি, হৃদয়ের কথা, আবাশছোঁয়া ভালোবাসা, নিঃশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি, শাস্তি, মেঘের পরে মেঘ, জামাই শ্বশুর, সাথী তুমি কার, মায়ের সম্মান, লাল দরিয়া, ছোট্ট একটু ভালোবাসা, জীবনের চেয়ে দামী, বাধা, টাকা, খবরদার, মনে রেখ আমায়, চিরদিন আমি তোমার, তোমাকেই খুঁজছি, জমিদার, তুমি কত সুন্দর, ধনী গরিবের প্রেম, বন্ধু তুমি আমার, কে আমি। রিয়াজের বিপরীতে ছবিগুলোর মধ্যে 'মনের মাঝে তুমি' বাণিজ্যিক ছবির মধ্যে দেশের অন্যতম সেরা ব্যবসাসফল ছবি। জনপ্রিয় তো বটেই। 'হৃদয়ের কথা, আকাশছোঁয়া ভালোবাসা' এ দুটি ছবিও বহুল জনপ্রিয়।

সাহিত্যনির্ভর ছবি 'শাস্তি, মেঘের পরে মেঘ' পূর্ণিমার অসাধারণ দুটি ছবি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্প থেকে চাষী নজরুল ইসলামের ছবি 'শাস্তি।' চন্দরা চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেছে পূর্ণিমা। 'মেঘের পরে মেঘ'-এও অসাধারণ। পূর্ণিমার সেরা রসায়ন ছিল রিয়াজের সাথেই।

শাকিব খানের বিপরীতে পূর্ণিমার উল্লেখযোগ্য ছবি – সুভা, আজকের সমাজ, মা আমার স্বর্গ, দুশমন দরদী, বিয়ের প্রস্তাব, মাটির ঠিকানা, আই লাভ ইউ, পরাণ যায় জ্বলিয়া, ভালোবাসার লাল গোলাপ, হিংসার পতন, জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার। শাকিব খানের বিপরীতে সেরা ছবি 'সুভা'। রবীন্দ্রনাথের গল্প থেকে এ ছবিটিও চাষী নজরুল ইসলামের। ছবিতে বাঙালি হিন্দু সমাজের প্রচলিত সমাজব্যবস্থার বলি হয় বোবা মেয়ে সুভা। ছবির ফিনিশিং-এ 'আমার সকল দুখের প্রদীপ' রবীন্দ্রসঙ্গীতে পূর্ণিমার অসহায় স্যাড এক্সপ্রেশন যে কারো মনকে কাঁদাবে।

মান্না-পূর্ণিমা জুটি বেশ শক্ত অবস্থান গড়েছিল মান্নার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। মান্না বেঁচে থাকলে হয়তো আরো দীর্ঘ হত। এ জুটির উল্লেখযোগ্য ছবি – বাপবেটার যুদ্ধ, মনের সাথে যুদ্ধ, নায়ক, ভিলেন, বাস্তব, উল্টাপাল্টা ৬৯, ক্ষমতার গরম, ক্ষত বিক্ষত, স্বামী-স্ত্রীর যুদ্ধ, ধোঁকা, বাবা, ধ্বংস, পিতামাতার আমানত, ধ্বংস, আরমান, সুলতান, মাস্তানের উপর মাস্তান, গাদ্দারি, বিদ্রোহী সালাউদ্দিন। 'বাপবেটার যুদ্ধ, মনের সাথে যুদ্ধ, নায়ক, বাস্তব, উল্টপাল্টা ৬৯' এগুলো বেশ আলোচিত ছিল। দর্শক সাদরে গ্রহণ করেছিল এ জুটিকে।

ফেরদৌস-পূর্ণিমা জুটির কম ছবি ছিল। যেমন – মধু পূর্ণিমা, বলো না ভালোবাসি, বিপ্লবী জনতা। এর মধ্যে 'বিপ্লবী জনতা' রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 'মধু পূর্ণিমা' ফোক ছবির ক্ষেত্রে অনবদ্য।

আমিন খান, শাকিল খান তাদের বিপরীতে সেভাবে জুটি গড়ে ওঠেনি পূর্ণিমার। আমিন খানের সাথে 'আমার স্বপ্ন আমার সংসার, বিপদজনক' ছবিগুলো উপভোগ্য। শাকিল খানের সাথে 'মেঘলা আকাশ' উল্লেখযোগ্য ছবি। এছাড়া 'তুমি যে আমার' ভালো ছবি।

পূর্ণিমার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ছবি – যোদ্ধা, প্রেমের নাম বেদনা, ওরা আমাকে ভালো হতে দিল না, রাজা সূর্য খাঁ, মিস ডায়না, ছায়াছবি, টু বি কন্টিনিউড।

ভেরিয়েশন দিয়ে চলচ্চিত্রে কাজ করে দেশের অন্যতম সেরা নায়িকা/অভিনেত্রীতে পরিণত হয়েছে।

পূর্ণিমা শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিশাবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে 'ওরা আমাকে ভালো হতে দিল না' ছবিতে। সেরা অভিনেত্রী হিশাবে মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছে দুইবার – মনের মাঝে তুমি (২০০৩), হৃদয়ের কথা (২০০৬)।

tiK9Q4A.png


অনেক ছবির মধ্য থেকে পূর্ণিমার জনপ্রিয় কিছু গান –
প্রেমী ও প্রেমী (স্যাড/রোমান্টিক) – মনের মাঝে তুমি
চুপি চুপি কিছু কথা – মনের মাঝে তুমি
শতবার পৃথিবীতে আসব আমি – এ জীবন তোমার আমার
ভালোবাসব বাসব বাসব রে বন্ধু – হৃদয়ের কথা
যায় দিন যায় একাকী – হৃদয়ের কথা
তোমার কারণে আমি উচ্ছল – হৃদয়ের কথা
পৃথিবীর যত সুখ – আকাশছোঁয়া ভালোবাসা
জীবনে মরণে তুমি আমারই – নিঃশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি
আমার সকল দুখের প্রদীপ – সুভা
তুই ছাড়া আমার কোনো – শাস্তি
ভালোবাসি সকালে – মেঘের পরে মেঘ
সে আমার ভালোবাসার আয়না – লাল দরিয়া
বুকের ভিতরে প্রেমেরই ঘণ্টা – লাল দরিয়া
তোমার প্রেমে পড়েছি আমি – বলো না ভালোবাসি
ও প্রিয় ও প্রিয় ভুল বুঝে যাবো কোথায় – জামাই শ্বশুর
কখনো কি চেয়েছিলে জানতে – বাপবেটার যুদ্ধ
আসবার কালে আসলাম একা – মনের সাথে যুদ্ধ
আমার আশার বাসা – আমার স্বপ্ন আমার সংসার
যদি থেমে যায় পৃথিবীর সব কোলাহল – মিস ডায়না
হিজিবিজি – ছায়াছবি
দ্বিতীয় ভালোবাসা – ছায়াছবি
আমার ভিতরে বাহিরে – ছায়াছবি

পূর্ণিমার সাম্প্রতিক প্রতিভা উপস্থাপনা ও মিমিক্রি। মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার ২০১৬ ও ২০১৭ পর্বের উপস্থাপনার দায়িত্বে ছিল। ২০১৬ সালের পর্বটিতে বহুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র তারকাদের মিমিক্রি করে দর্শকের মাঝে নতুন করে সাড়া ফেলেছিল। এমনকি বিভিন্ন চলচ্চিত্র তারকাদের স্টাইল হুবহু কপি করে দেখিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। সঙ্গীতশিল্পীদের কণ্ঠ নকল করে গেয়ে দেখিয়েছে। এগুলো ছিল তার এক্সট্রা ট্যালেন্ট। এমনকি সাম্প্রতিক পূর্ণিমা প্রথমদিকের পূর্ণিমার থেকে অনেক বেশি ফ্যাশনেবল ও গর্জিয়াস।

পূর্ণিমার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের প্রথমদিকে একটি চলচ্চিত্র পত্রিকায় তাকে 'বিউটি অফ বাংলা সিনেমা' বলা হয়েছিল। কথায় কথায় পূর্ণিমা অধ্যায় যতদূর গড়িয়েছে তাতে করে একজন পূর্ণিমা শুধু চলচ্চিত্র নয় বরং চলচ্চিত্রকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি আরো অনেক সাফল্য দেখিয়েছে। আর এমনি করে গল্পটি হয়ে গেছে একজন ও অনেক পূর্ণিমার গল্প।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top