What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other অন্তরা : এক নায়িকা ছিল (1 Viewer)

Starling

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 7, 2018
Threads
775
Messages
12,015
Credits
220,609
Recipe wine
Kaaba
Profile Music
Birthday Cake
vK4hQge.jpg


খুব খুব প্রিয় নায়িকা অন্তরা…♥

১৯৯৩ সাল। 'বেদের মেয়ে জোসনা' ছবির মাধ্যমে দেশের সর্বোচ্চ ব্যবসাসফল পরিচালক তোজাম্মেল হক বকুল বাজি ধরলেন নতুন জুটি দিয়ে ছবি করার। নিয়ে এলেন নতুন মুখ অন্তরাকে মেহেদির বিপরীতে 'পাগল মন' ছবিতে। নতুন এ জুটি স্মরণীয় হয়ে গেল দর্শকের কাছে মিউজিক্যাল রোমান্টিক ছবির গুণে। ছবি হয়ে গেল সুপারহিট। বহুল জনপ্রিয় গানটি ছিল –

'পাগল মন মন রে
মন কেন এত কথা বলে'

দিলরুবা খান ও আগুনের কণ্ঠে গানটি মানুষের মুখে মুখে ছিল এমনকি আজ পর্যন্ত গানটি জনপ্রিয়। প্রথম লাইনটি বললে পরের লাইন বলে দিতে পারবে। গানের মধ্যে শুধুই রোমান্টিকতা আছে তা নয়, গানে একটা দর্শনও আছে। এ লাইনগুলো –

'আমি বা কে আমার মনটা বা কে
আজও পারলাম না আমার মনকে চিনিতে!'

নিজের সাথে নিজের মানসিক দ্বন্দ্ব নিয়ে গানটি ভাবাতে পারে যে কাউকে। গানটি রোমান্টিক ও স্যাড দুই ভার্সনেই ছিল ছবিতে।

অন্তরা-মেহেদি জুটির পরবর্তী ছবি ছিল 'বালিকা হলো বধূ।' এ ছবিটিও আলোচিত ছিল। ছবিতে মানসিক বিকাশ না হওয়া অন্তরার চঞ্চল অভিনয় অনবদ্য ছিল। তার ক্যারিয়ারের উল্লেখযোগ্য ছবি এটি। অন্তরা-মেহেদি একটা জুটি গড়ে উঠেছিল। তাদের 'গরিবের অহংকার' নামে আরেকটি ছবি ছিল।

মূলনাম পারভীন আক্তার লাকী। এই অন্তরা সরাসরি নায়িকা হিশাবে ঢালিউডে আসেনি। তার আরেকটা চমৎকার অধ্যায় ছিল। নামকরা শিশুশিল্পীও ছিল সে। 'রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা' ছবিতে শিশুশিল্পী হিশাবে তার অভিষেক ঘটে। নবাব চরিত্রে থাকা প্রবীরমিত্রের মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিল অন্তরা। শিশুশিল্পী অন্তরাও জাত শিশুশিল্পী ছিল। প্রশংসিত হয়েছিল তার অভিনয়। 'স্বামীর আদেশ' ছবিটি যারা দেখেছে তারা জানবে অন্তরার অভিনয় কী অসাধারণ ছিল! শাবানার মেয়ের ভূমিকায় ছিল। শাবানা তার দেবর জসিমের জন্য নিজের মেয়ের জীবন উৎসর্গ করে। নিজের মেয়েকে না বাঁচিয়ে জসিমের ছেলেকে বাঁচায়। খুকি অন্তরা মারা যায় যাকে নিয়ে আহাজারি করে শাবানা। 'বোনের মতো বোন' ছবিতেও সুনাম কুড়িয়েছিল শিশুশিল্পীর। 'অবুঝ হৃদয়' ছবিতে ববিতা-চম্পা দুই বান্ধবীর একজনের ছোটবেলার ভূমিকায় দেখা গেছে।

অন্তরা তার সময়ের প্রথম সারির নায়কদের সাথেই ছবি করেছে। অমর নায়ক সালমান শাহ-র সাথে 'প্রেমসন্ধি' নামে একটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন। ছবিটির মহরতও হয়েছিল। সালমানের অকালমৃত্যুর জন্য ছবিটি আর হয়নি। ছবিটি হলে তার ক্যারিয়ারে আরেকটি উল্লেখযোগ্য কাজ যোগ হত।

অন্তরা-র অন্য উল্লেখযোগ্য ছবি – দোলন চাঁপা, শয়তান মানুষ, সুখের আশায়, লাঠি, প্রেমের কসম, পাগলা বাবুল, হাঙর নদী গ্রেনেড, আলিফ লায়লা, ফজর আলি আসছে, আমার মা, নাগ-নাগনীর প্রেম, আমার মা, নিষ্পাপ বধূ।

6zj2UkV.jpg


আমিন খানের 'দোলন চাঁপা' ছবিটি রোমান্টিক ড্রামা ছিল। অনেকের মতে এটিও তার খুব উল্লেখযোগ্য ছবি। আমিন খানের সাথে 'শয়তান মানুষ' ছবিতেও ছিল। মাহফুজ আহমেদের সাথে ছিল 'প্রেমের কসম' ছবিতে। হাসিবুল ইসলাম মিজান পরিচালিত এ ছবিটি মাহফুজের ক্যারিয়ারেও উল্লেখযোগ্য বাণিজ্যিক ছবি ছিল। সিজারের বিপরীতে ছিল 'লাঠি' ছবিতে। ফোক-ফ্যান্টাসি ছবি 'আলিফ লায়লা'তে রাজকীয় পোশাকে দেখা গেছে অন্তরাকে। ফোক-ফ্যান্টাসির আরেকটি ছবি 'নাগ-নাগিনীর প্রেম'। অন্তরা এক্সপেরিমেন্টও করেছে 'হাঙর নদী গ্রেনেড' ছবিতে। মুক্তিযোদ্ধা সলিম চরিত্রে থাকা দোদুলের বিপরীতে অভিনয় করেছিল। বাঙালি বধূর সহজ-সরল ভঙ্গিতে তাকে দেখা গিয়েছিল। বলা যায় নিজের চরিত্রে মিশে গিয়ে অভিনয় করেছে সে। নিজের ক্যারিয়ারে নিজেকে বিভিন্ন চরিত্রে প্রমাণ করেছে।

অন্তরা-র বিশেষ একটি বৈশিষ্ট্য ছিল স্টাইলিশ নায়িকা সে। তার স্টিল পিকগুলো কিংবা ছবিতে কস্টিউম সিলেকশন পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় খুব স্টাইলিশ তার পর্দা উপস্থিতি। বাহারি সাজের টুপি, ব্যান্ডেনা, ওয়েস্টার্ন ড্রেস তার কমন বৈশিষ্ট্য ছিল। তাকে নব্বই দশকীয় নায়িকাদের মধ্যে অন্যতম ফ্যাশন আইকন বলা যায়। এছাড়া ভালো নৃত্যশিল্পীও।

বিয়ে করেছিল ভালোবেসে। দাম্পত্য জীবন সুখের হয়নি। ২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে মৃত্যু হয় অন্তরার। কিন্তু পরে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার বড় মেয়ে স্টেটমেন্ট দিয়েছে – 'বাবার সাথে তার মায়ের শেষের দিকে খুব ঝগড়া হত। মায়ের সাথে কারো যোগাযোগের সুযোগ ছিল না। অসুস্থ হবার পর হাসপাতালে কাউকে দেখা করতে দিত না।' এগুলো সন্দেহ বাড়ায় তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিয়ে। কবর থেকে লাশও তোলা হয়েছিল ডিএনএ টেস্ট ও অন্যান্য পরীক্ষার জন্য। অভিনেতা মাহফুজও বলেছিল- 'তার শেষ দিনগুলো এমন কষ্টের হবে কল্পনাও করা যায় না।' একজন ভালো চলচ্চিত্র অভিনেত্রীর জীবনের নিরাপত্তাও শেষ পর্যন্ত হয়নি যা প্রচণ্ড দুঃখজনক। তার আত্মা শান্তি পাক।

অন্তরা তার শিশুশিল্পী-নায়িকা-অভিনেত্রী হয়ে আলোচনার টেবিলে না আসা একজন উদাহরণ তৈরি করা শিল্পী। আজকের প্রথম সারির নায়িকারাও একজন অন্তরার যোগ্যতার সামনে দাঁড়াতে পারে না। তাকে দেখেও শেখার আছে। আমরা তাকে ভুলিনি।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top