What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other অসাধারণ ও আফসোসের নায়ক (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
C4i9cWk.jpg


আমিন খান বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা সুদর্শন নায়ক। দেশীয় চলচ্চিত্রের নায়ক ইতিহাসে যাদের নাম আনাটা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে সে তাদের একজন। পুরো নাম আমিনুল ইসলাম খান। ৬ ফিট উচ্চতার দীর্ঘকায় নায়ক। জন্ম ২৪ ডিসেম্বর, ১৯৭২। বাবা লোকমান আলি খান, মা আরজুদা খান। স্ত্রী স্নিগ্ধা। দুই ছেলে রায়ান ও আজমাইন।

আমিন খানের আগমন ঘটে ১৯৯০ সালে এফডিসি-র চলচ্চিত্র প্রতিভা অন্বেষণ কার্যক্রম 'নতুন মুখের সন্ধানে'-র মাধ্যমে। সে বছর হাজার হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে আমিন হয়ে ওঠে সফল প্রতিযোগী।

ZWlJvif.jpg


প্রথম ছবিতেই সুপারহিট তকমা পাবার সৌভাগ্য সবার ভাগ্যে জোটে না। আমিন খান পেরেছিল সেটা। প্রথম ছবি 'অবুঝ দুটি মন' ১৯৯৩ সালে মুক্তি পায়। ছবিটি সুপারহিট হয়েছিল। নতুন নায়ককে দর্শক লুফে নিয়েছিল এবং তার মধ্যে প্রতিভা দেখতে পেয়েছিল নির্মাতারা। পরে একের পর এক ছবি হতে থাকে তাকে নিয়ে। নব্বই দশকে কোনো এক বছরের সালতামামিতে আমিন খান ছিল ব্যবসাসফল ছবির নায়কের কাতারে প্রথম।

আমিন খানের লুকে একটা ইনোসেন্ট ইমেজ আছে। কিউটনেস অসাধারণ স্পেশালি প্রথমদিকের ছবিগুলোতে। এটা ছিল তার আকর্ষণীয় গুণ পাশাপাশি অভিনয়গুণ তো ছিলই।

প্রায় দুই শতাধিক ছবির নায়ক আমিন খানের উল্লেখযোগ্য কিছু ছবি : অবুঝ দুটি মন, হৃদয় থেকে হৃদয়, দুনিয়ার বাদশা, হৃদয় আমার, দোলন চাঁপা, চিরদিনের সাথী, শয়তান মানুষ, জনম জনম, কুলি, স্বপ্নের নায়ক, বিশ্বনেত্রী, বাংলার কমান্ডো, বীর সন্তান, আমার মা, মনের মতো মন, আজ গায়ে হলুদ, সাগরিকা, তোমার আমার প্রেম, তোমার জন্য ভালোবাসা, রাঙা বউ, মহা ভূমিকম্প, টারজান কন্যা, শেষ রক্ষা, লাভ লেটার, জনতার বাদশা, আম্মাজান, হৃদয়ের বন্ধন, ফুল নেব না অশ্রু নেব, সমাধি, আগুন জ্বলবেই, বধূবরণ, সমাধি, লাল দরিয়া, বধূবরণ, মৃত্যুর মুখে, মরণ কামড়, আমার স্বপ্ন আমার সংসার, পিতার আসন, স্ত্রীর মর্যাদা, মগের মুল্লুক, ঠেকাও আন্দোলন, পৃথিবী টাকার গোলাম, মায়ের চোখ, শুভ বিবাহ, দোস্ত আমার দুশমন, ভুল সবই ভুল, ও আমার দেশের মাটি, লোভে পাপ পাপে মৃত্যু। সর্বশেষ মুক্তি প্রতীক্ষিত ছবি 'দুদু মিয়া' এবং 'অবতার' নামে নতুন ছবিতে কাজ করছে।

s08LEaD.jpg


আমিন খানের অসাধারণ অভিনয়ের কিছু ছবি আছে। যেমন – হৃদয় থেকে হৃদয়, বীর সন্তান, হৃদয়ের বন্ধন, বধূবরণ, সমাধি, হৃদয় আমার, দোলন চাঁপা, আজ গায়ে হলুদ। 'হৃদয় থেকে হৃদয়' ছবিতে ভালোবাসার মানুষকে হারাবার পর কবরে গিয়ে শেষ অনুভূতি প্রকাশের সময়ে তার অভিনয় অসাধারণ। 'বীর সন্তান' তার পুরো ক্যারিয়ারে গেটআপের দিক থেকে অন্যতম সেরা স্টাইলিশ ছবি। তার রাজতান্ত্রিক ঐতিহ্যের কস্টিউম পরা অ্যাকশন দেখতে দারুণ লাগে এ ছবিতে। 'হৃদয়ের বন্ধন' ছবিতে শাবনূর ও রিয়াজের মতো দুজন পরীক্ষিত বিগেস্ট সুপারস্টার থাকার পরেও তার অভিনয় ছিল সবচেয়ে অসাধারণ। ডমিনেট করতে পেরেছিল অন্য চরিত্রকে। ব্যর্থ প্রেমিকের অভিনয়ে তার আকুতি টাচি ছিল। 'বধূবরণ' ছবিতেও মৌসুমীর প্রেমে পড়া আমিন খান ফেরদৌসের থেকে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে অভিনয়গুণে। 'সমাধি' ছবিতে মুহূর্তে রোমান্টিক আবার মুহূর্তে ভিলেন ইমেজ ফুটিয়ে তোলার অভিনয় দুর্দান্ত ছিল। 'হৃদয় আমার' ছবিতে একজন সাধারণ গ্রাম্য গায়েন থেকে প্রতিষ্ঠিত জনপ্রিয় গায়ক হতে আমিন খানের পরিশ্রমী অভিনয় প্রশংসনীয়। ফোক ছবি 'দোলন চাঁপা'-তে গ্রাম্য যুবকের ভালোবাসার গল্পে অসাধারণ অভিনয় ছিল। 'আজ গায়ে হলুদ' ছবিতে গ্রাম্য ডাক্তারের ভূমিকায় আমিন খান সাধারণ মানুষের সেবক চরিত্রের পাশাপাশি নিজের প্রেমকে জয় করতে ধর্মীয় বাধা অতিক্রমের অভিনয়ে অসাধারণ ছিল।

pdfjrWD.jpg


অমর নায়ক সালমান শাহ-র অকালমৃত্যুর পর তাঁর অসমাপ্ত ছবি 'স্বপ্নের নায়ক'-এ অভিনয় করেছে আমিন খান।

আমিন খান সব ধরনের চরিত্রে পারফেক্ট ছিল। রোমান্টিক, ফ্যামিলি ড্রামা, অ্যাকশন, প্যাথেটিক সব ধরনের গল্পের ছবিতে নিজেকে প্রমাণ করেছে।

তার নায়িকা সংখ্যা বেশ আছে। প্রিয়া, অন্তরা, শাবনূর, সঙ্গীতা, ঋতুপর্ণা, শাহনাজ, শিল্পী, মৌসুমী, কেয়া, পপি, পূর্ণিমা, অপু বিশ্বাস, মুনমুন, ময়ূরী।

যৌথ প্রযোজনার ছবিতেও কাজ করেছে আমিন খান। 'আগুন জ্বলবেই, তোমার আমার প্রেম, মনের মতো মন' এগুলো যৌথ প্রযোজনার ছবি তার।

আমিন খানের ছবিতেই পশ্চিমবঙ্গের তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী নচিকেতা প্রথম ঢালিউডে প্লেব্যাক করেন। ছবির নাম 'তোমার জন্য ভালোবাসা।' এ ছবির 'আমি চিঠি লেখার ঠিকানা চাই' গানটি নচিকেতার গাওয়া। স্টেজ পারফরম্যান্সে ঠোঁট মেলায় আমিন খান।

খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছে 'লোভে পাপ পাপে মৃত্যু' ছবিতে। তার খলনায়কের অভিনয় এত চমৎকার ছিল যে তাকে এ ভূমিকায় আরো কাজে লাগানো যেত।

আমিন খানের ছবির জনপ্রিয় গান থেকে কিছু গান না বললেই নয় :
* স্বর্গ থেকে এই জগতে – অবুঝ দুটি মন
* যত ভুলে যেতে চাই – হৃদয় থেকে হৃদয়
* আমার ভালোবাসা সত্যি যদি হয় – জনম জনম
* একটা মন চাই – স্বপ্নের নায়ক
* হৃদয়ের মাঝে তুমি আছো তবু – সাগরিকা
* কখনো কি আয়নাতে মুখ দেখো না – তোমার আমার প্রেম
* তুমি আমার হৃদয়ে যদি থাকো – হৃদয় আমার
* পৃথিবীতে ভালোবেসে সুরে সুরে – হৃদয় আমার
* তোমাকে আমি রাখব ধরে – হৃদয় আমার
* জানো না জানো না তুমি তো জানো না – কুলি
* চোখ যে মনের কথা বলে – আজ গায়ে হলুদ
* আমি চিঠি লেখার ঠিকানা চাই – তোমার জন্য ভালোবাসা
* দেবো উজাড় করে সারাজীবন ধরে – তোমার জন্য ভালোবাসা
* প্রেম কোরো না প্রেম কোরো না – কঠিন বাস্তব
* বিধি তুমি বলে দাও – ফুল নেবো না অশ্রু নেবো
* তুমি আমার ভালোবাসা – হৃদয়ের বন্ধন
* মাগো মা ওগো মা (রিমেক) – সমাধি
* আমার আশার বাসা বাইন্ধা দিও – আমার স্বপ্ন আমার সংসার
* সবাই মিলে বলো শুভ বিবাহ – শুভ বিবাহ

bmbwKmg.jpg


টেলিভিশন প্রোডাকশনেও কাজ করছে আমিন খান। বিজ্ঞাপন, নাটক, টেলিফিল্মে অভিনয় করেছে। উল্লেখযোগ্য নাটক/টেলিফিল্ম – তবুও ভালোবাসি, সময়ের ভালোবাসা অসময়ে কেন, আমি তুমি সে, কখনো মেঘ কখনো রৌদ্র, বৃষ্টি থামার পর, ফাইন জামাই, সেই তুমি এলে। সহশিল্পীদের মধ্যে ছিল নওশীন, বাঁধন প্রমুখ।

এত কিছু থাকার পরেও আমিন খান একটা আফসোসের নাম। তার যত প্রতিভা ছিল অন্যরা বোঝার আগে তার নিজের বোঝা সবচেয়ে জরুরি ছিল। আজকের ঢালিউডে নায়ক সংকটের সময়ে আমিন খান নিজে অন্যতম নির্ভরতা হতে পারত। তার দেয়ার মতো আরো অনেক সম্ভাবনা ছিল। লুক, ফিটনেস ভালো থাকার পরেও শুধুমাত্র ভুল ছবি সিলেকশনে হারিয়ে যেতে হয়েছে নিজের পজিশন থেকে। অশ্লীল ছবি অনেক করেছে যার জন্য পরে আর আস্থা রাখতে পারেনি নির্মাতাদের কাছে।

আমিন খান দেশীয় চলচ্চিত্রে উল্লেখযোগ্য নাম। তার নিজের অর্জন যতটুকু সেটুকু দিয়েই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তার সাথে একজন লং টার্ম সুপারস্টার হওয়ার মতো গুণ থাকাতেও সেটা না পাওয়ার কষ্টটা তাকে ঘিরে দর্শক মনে করবে এটাও চরম সত্য।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top