What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other হুমায়ুন ফরীদি কেন্দ্রিক যত ছবি (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
bYw3FuL.jpg


হুমায়ুন ফরীদি অভিনীত ছবিগুলোর মধ্যে কিছু ছবি আছে যেগুলো তাঁকে কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছে। তিনি সেন্ট্রাল ক্যারেক্টার মানে গল্পের মূলটা তাঁকে ঘিরেই এগিয়েছে এমন কিছু ছবি নিয়ে এই আয়োজন। এ ছবিগুলোকে বলা যায় 'ফরীদিকেন্দ্রিক ছবি।' অনেক ছবির ভিড়ে বাছাইকৃত কেন্দ্রীয় ভূমিকার ছবি থেকে এ লেখাটি তৈরি হলো। তো শুরু করা যাক।

e9FijIl.jpg


১. পালাবি কোথায় (১৯৯৭)
শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত এ ছবিটি মূলত কমেডি ছবি। কমেডির ভেতর পোশাক শ্রমিকদের বাস্তবতা, তাদের উপর হওয়া নির্যাতনের প্রতিবাদ, অসৎ মালিকের শাস্তি এসবই ছবির বিষয়ের মধ্যে আছে। ছবির গল্পে যে চরিত্রটি অন্যান্য চরিত্রগুলোকে প্রভাবিত করেছে সেটাই ছিল হুমায়ুন ফরীদির চরিত্র। তিনি ছবিতে একজন নারীলোভী, সুবিধাবাদী, অসৎ মালিকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। তাঁর লোলুপদৃষ্টি থেকে শাবানা, সুবর্ণা মুস্তাফা, চম্পা কেউ বাদ যায় না। একসময় তাঁর বিরুদ্ধে তারা সংগঠিত হয় এবং ছবির শেষে ফরীদির শাস্তি হয়। এ ছবিটির কেন্দ্রবিন্দু হুমায়ুন ফরীদিই ছিলেন নেগেটিভ রোলে।

২. একাত্তরের যীশু (১৯৯৩)
নাসির উদ্দিন ইউসুফ পরিচালিত এ ছবিটি ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত। ছবিতে হুমায়ুন ফরীদি ছিলেন প্রধান চরিত্র। গির্জার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে তিনি নিয়োজিত থাকেন। মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। কিন্তু দেশ স্বাধীনের আগে অ্যামবুশে পড়ে পাকিস্তানি হানাদারদের একটি দলের সামনে পড়তে হয় ঐ মুক্তিযোদ্ধাদের। হানাদাররা মুক্তিযোদ্ধাদের কঠিনভাবে অত্যাচার করে। ফরীদি জীবনের ভয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয় বলেন। তাদের হাতে পায়ে পেরেক ঠুকে টাঙিয়ে দেয়া হয় ক্রুশবিদ্ধ যীশুর মতো করে। চোখের সামনে এ ভয়াবহতা দেখেন ফরীদি এবং অপরাধবোধে ভোগেন। অসাধারণ এ ছবিতে তিনি ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা অভিনয় করেন।

৩. অপহরণ (১৯৯৩)
শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত এ ছবিটি ছিল চমৎকার কমেডি ছবি। একজন খলনায়ককে শুধু হিংস্রতা, বীভৎসতা দিয়েই তুলে ধরা যায় তা নয়। তিনি কমেডিতে তুলে ধরেন হুমায়ুন ফরীদিকে কেন্দ্রীয় চরিত্র করে। ফরীদি ছবিতে অপহরণ করে খলিলের ছেলেকে। ধরা পড়ে জেল খাটার পর বের হয়ে প্রতিশোধ নেয় এবং ঘটনাচক্রে নিজে হয়ে ওঠে আরো বড় কিছু। রুবেল ও নায়িকাকে নিয়ে নতুন একটা খেলায় মেতে ওঠেন ফরীদি। খলনায়ক হয়েও পুরো ছবিতে তাঁর উপস্থিতি ছিল হিউমারাস। ছবিতে তাঁর জনপ্রিয় সংলাপ ছিল 'আই আই ও।' এটি তাঁর মাস্টওয়াচ ছবি।

uIVPeH3.jpg


৪. সতর্ক শয়তান (১৯৯৩)
শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ছবি। ভয়ঙ্কর এক চরিত্রে প্রথমদিকে দেখা যাবে ফরীদিকে। খলিল তাঁর কাজে ফরীদিকে ব্যবহার করেন বিনিময়ে দেন নেশাদ্রব্য। কিন্তু ফরীদি একদমই নেশা করতেন না সেগুলো জমাতেন আর খলিলের সামনে অভিনয় করতেন। একসময় খলিলকেই নাস্তানাবুদ করে ফরীদি চলে যান শীর্ষে। 'ইয়া হিয়া হিয়া' নামের অদ্ভুত এক সংলাপে আর ভয়ঙ্কর গেটআপে তাঁর অভিনয় অসাধারণ।

৫. শত্রু ভয়ঙ্কর (১৯৯৩)
শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ছবি।ডাবল রোলের অসাধারণ খলনায়ক এবং ভয়ঙ্কর শত্রু তিনি। চোয়ালের অবয়ব দিয়ে ফাঁসির আসামী হয়েও আইনকে বোকা বানিয়ে নিজে ফাঁসি থেকে বেঁচে যায়। তারপর খুন করে হয়ে যায় অপরাধ জগতের গডফাদার। পুরো ছবিতে একাধিক গেটআপে দেখা গেছে তাঁকে। জমজমাট ছবি।

৬. ঘাতক (১৯৯৪)
শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ছবি। মুক্তিযুদ্ধের পরের প্রেক্ষাপটে দেশে চলমান অরাজকতা নিয়ে ছবির গল্প। ফরীদি ছিলেন রাজাকারের চরিত্রে। গোলাম আযমের একটা বলয়কে তিনি চরিত্রে ধারণ করে পর্দায় তুলে ধরেন। কথায় কথায় 'টু দ্য পয়েন্টে' সংলাপে মস্ত বড় দাড়ি আর মাথায় পরা টুপিতে সম্পূর্ণ নতুন অবয়বে নিজেকে তুলে ধরেন। শাবানা, আলমগীর, রুবেল তিনজনের মধ্যে বিভিন্ন দ্বন্দ্ব তৈরি করে ছবিতে তিনি হয়ে ওঠেন কেন্দ্রবিন্দু। রুবেল ফরীদির গায়ের চামড়া দিয়েই তাঁকে ট্রেস করে ছবির শেষে। পরিচালক খোকনের সাহসী বিষয় নির্বাচন আর ফরীদির সাহসী চরিত্রায়ণ মিলে এটাও মাস্টওয়াচ ছবি।

৭. দুনিয়ার বাদশা (১৯৯৪)
বাদল খন্দকার পরিচালিত ছবি। ভণ্ড হুজুর সেজে ধর্মব্যবসা করে আড়ালে অসৎ উপায়ের ব্যবসা করা ভয়ঙ্কর আরেক চরিত্র ছিল ফরীদির এ ছবিতে। এ ছবিতেও প্রথমদিকের ফরীদি আর মাঝখানের ফরীদি টোটালি আলাদা। সাধারণ মানুষকে বোকা বানানো আর তলে তলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার সাফল্যে ফরীদি নিজেকে বলতেন দুনিয়ার বাদশা।

৮. ঘরের শত্রু (১৯৯৪)
শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ছবি। 'ঘরের শত্রু বিভীষণ' বাগধারার মতো হুমায়ুন ফরীদি এ ছবিতে সুঁচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বের হন। শাবানা, সোহেল রানা-র সংসারে দ্বন্দ্ব তৈরির প্রধান কারিগর তিনি। এ ছবিতেও তাঁর গেটআপ ছিল আকর্ষণীয়। জমজমাট ছবি।

৯. বিশ্বপ্রেমিক (১৯৯৫)
শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত মাস্টারপিস ছবি। খলনায়কের মধ্যে দেখানো হিরোইজমে গোটা ঢালিউডে এ ধরণের ছবি খুব কম হয়েছে। হুমায়ুন ফরীদি এ ছবিতে একজন সাইকো চরিত্রের অভিনেতা। মেয়েদের তিল নিয়ে তাঁর একটা মানসিক সমস্যা কাজ করে। তিল কেটে ফেলে ভয়ঙ্করভাবে। এভাবে মৌসুমীর প্রেমে পড়ে যায় এবং মৌসুমীর প্রেমিক রুবেলের সাথে বন্ধু থেকে শত্রুতায় গড়ায়। এ ছবির 'তোমরা কাউকে বোলো না' গানটি পুরো ঢালিউডে মাইলফলক। এটা ছাড়াও 'একই কথা শুনাইলি রে' গানটিতেও তার রকিং পারফরম্যান্স ছিল। পুরো ছবিতেই তাঁর গেটআপে খলনায়কের হিরোইজম ছিল। এটাও কেন্দ্রীয় চরিত্রে মাস্টারপিস।

১০. পলাতক আসামী (১৯৯৬)
গাজী জাহাঙ্গীর পরিচালিত ছবি। এ ছবিতে ডাবল রোলে অভিনয় করেন হুমায়ুন ফরীদি। তাঁর মতো দেখতে আরেকজনকে খুন করে পরিচয় পাল্টে হয়ে ওঠে অপরাধ জগতের রাজা। পলাতক আসামী হয়েও থাকে রাজার বেশে। এ ছবিতে তাঁর অভিনয় ভয়ঙ্কর ছিল।

xIqrTqu.jpg


১১. রাক্ষস (১৯৯৬)
শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ছবি। মানুষ হয়েও মানুষ কখন রাক্ষস হয়ে ওঠে? যখন নিজের স্বার্থের জন্য একের পর এক অন্যায়, জুলুম করতে থাকে। ফরীদি এ ছবিতে সুবর্ণা মুস্তাফাকে পাওয়ার জন্য ফরীদি একটার পর একটা খুন করতে থাকে। ফতোয়া দিয়ে সুবর্ণাকে ঘরছাড়া করে। শেষ পর্যন্ত সুবর্ণাকে পাওয়ার জন্য নিজের কুটিল বুদ্ধি চালিয়ে যান তিনি। গেটআপ অন্যরকম ছিল।

১২. লম্পট (১৯৯৬)
শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ছবি। চরিত্র নষ্ট হওয়া একজন লম্পটের ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। গোপনে বাসর রাতে স্বামী-স্ত্রীর একান্ত মুহূর্তের সাক্ষী হতে বদ মতলব আঁটেন। এভাবে নিজের চরিত্র একসময় নষ্ট হয়ে যায় তাঁর। তারপর খলিলের সংসারে কথিত বাবা সেজে ঢোকেন। সেখানে শুরু হয় তাঁর নতুন লাম্পট্যের গল্প। ভেরিয়েশনের দিক থেকে দারুণ চরিত্র ছিল এ ছবিতে।

১৩. আজকের হিটলার (১৯৯৬)
এ জে রানা পরিচালিত ছবি। হিটলারি বুদ্ধি দিয়ে নিজেকে এমন এক জায়গায় নিয়ে যান ফরীদি যে নিজের ছেলে ও পুত্রবধূকেও খুন করতে দ্বিধা করেন না। সোহেল রানা, সুবর্ণা মুস্তাফার ছেলেকেও মেরে ফেলেন নিজের স্বার্থে। এভাবে দয়ামায়াহীন এক পাষণ্ডের চরিত্রে দুর্দান্ত তিনি এ ছবিতে। দিলদারের সাথে তাঁর বন্ধুত্বটা ছিল ছবির সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার।

১৪. শয়তান মানুষ (১৯৯৬)
মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ছবি। অসুস্থ ভাই তুষার খানের আবদার মেটাতে তাকে পুতুল এনে দেয় কিন্তু তার মধ্যে ছিল মূল্যবান জিনিস। এটার জন্য রাজিব খুন করে তুষারকে। তুষারের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে ফরীদি হয়ে যায় অপরাধী। রাজিবের চরিত্রে পজেটিভ ও নেগেটিভ দুটোই ছিল কিন্তু ফরীদি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত নেগেটিভ ছিল এবং ছবির নামে মানুষরূপী শয়তানের বেশে তাকেই দেখা যায়। মৌসুমীকে জোর করে নিজের অপরাধী কাজের সাথে রাখে, ওমর সানীকে কাজে লাগায়, রাজিবকে পদে পদে বাধা দেয়। রাজিবের জনসভার একটা সিকোয়েন্সে ফরীদির আগমন ছিল দুর্দান্ত। ছুরি ছুঁড়ে মারে তাঁকে মারার জন্য। পুরো ছবিতে নামভূমিকায় অনবদ্য তিনি।

১৫. নরপিশাচ (১৯৯৭)
শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ছবি। গ্রামের ফতোয়াবাজ, নারীলোভী থেকে ঘটনাচক্রে আন্ডারওয়ার্ল্ডের বাদশা হয়ে যান। নরপিশাচ হয়ে ওঠেন চারিত্রিক দিক থেকে। রুবেলের সাথে একটা দারুণ বন্ধুত্ব এবং শেষে শত্রুতা ঘটে তাঁর। ছবিতে তাঁর চুলের গেটআপ অসাধারণ ছিল।

১৬. চিরশত্রু (১৯৯৭)
রায়হান মুজিব পরিচালিত ছবি। ছবির গল্পটি টিপিক্যাল হলেও ফরীদি ছিল প্রধান চরিত্র। জসিম, শাবানা, বাপ্পারাজের মাঝে দ্বন্দ্ব তৈরি করে নিজের সুবিধা আদায় করতে থাকেন তিনি। নিজের পোষা গুণ্ডাকে নিজেই হত্যা করেন বীভৎসভাবে। ঐ সিকোয়েন্সে ভয়ঙ্কর অভিনয় ছিল।

Da7IRzr.jpg


১৭. সেয়ানা পাগল (১৯৯৯)
এ জে রানা পরিচালিত ছবি। এ ছবিতেও নিজের অপকর্ম ঢাকার জন্য কথিত বাবা হয়ে ওঠেন। নিজেকে সেয়ানা মনে করেন ফরীদি কিন্তু পাগলামি রাখতে পছন্দ করেন যাতে লোকে তাঁর অপরাধ ধরতে না পারে।

১৮. পাহারাদার (১৯৯৯)
শিবলি সাদিক পরিচালিত ছবি। এ ছবিতে ফরীদির চরিত্রটি ছিল পজেটিভ ও নেগেটিভ মিলিয়ে। একদম অন্যরকম গল্পের অসাধারণ ছবি। আলীরাজের গোলামি করা ফরীদির কাজ। আলীরাজ তাঁকে যখন যা করতে বলেন তাই করেন তিনি। 'সাহেব' বলে ডাকেন আলীরাজকে এবং তিনিই আলীরাজের পাহারাদার। নারীলোভী, অত্যাচারী আলীরাজ একসময় পপিকে পছন্দ করে ফেলে যে ছিল ফরীদির ছেলে শাকিল খানের প্রেমিকা। দ্বন্দ্ব বাঁধলে পপিকে রক্ষিতা করতে চাওয়া আলীরাজের প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠেন ফরীদি। শেষ সিকোয়েন্সে তাঁদের দুজনের অভিনয় ছিল অসাধারণ। ছবিতে ধর্ষককে সরাসরি মৃত্যুদণ্ড দেন ফরীদি এটা ছিল অসাধারণ মেসেজ।

১৯. পাগলা বাবা (২০০২)
আনোয়ার চৌধুরী জীবন পরিচালিত ছবি। এ ছবিতে প্রধান চরিত্রে ভণ্ড এক বাবার চরিত্রে ছিলেন যাকে লোকে পাগলা বাবা নামে চেনে। মুশকিল আসান করতে আসে অনেকে এবং সে সুযোগে ফরীদি তাদের ব্যবহার করেন। এভাবে তাঁর অপরাধ বাড়তে থাকে এবং শেষে পতন ঘটে।


হুমায়ুন ফরীদি তাঁর কেন্দ্রীয় চরিত্রের ছবিগুলোতে নায়ক থাকার পরেও নিজের অভিনয়শক্তির গুণে মনোযোগ আকর্ষণ করতেন। তাঁর অনবদ্য অভিনয়শৈলীতে ছবিগুলোতে দর্শক তাঁকেই মনে রেখেছে ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রের ডিমান্ডে। এভাবে তিনি হয়ে উঠেছেন কিংবদন্তি অভিনেতা।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top