What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other সেই শাকিব খান (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
jhLXC6P.jpg


যে শাকিব খানের কথা বলছি তখন তাকে পছন্দই ছিল। সময়ের সাথে শাকিবের পরিবর্তনে পছন্দটাও আর থাকেনি। এ অনুভূতির সাথে অনেকের অনুভূতিই মিলে যেতে পারে যারা শাকিবকে একসময় পছন্দ করত। শাকিবের অসচেতন কিছু কারণে একসময়ের সচেতন দর্শকের মন থেকে সে জায়গা হারিয়েছে। কেন সেকালে পছন্দ ছিল শাকিব বলা যাক।

সেকালের শাকিব খান অভিনয়টা ন্যাচারালি করত। তার মধ্যে একটা কাজ শেখার একটা আগ্রহ ছিল। যে ছবিগুলো দিয়ে শাকিবকে তখনকার ন্যাচারাল অভিনয় করা একজন নায়ককে চিনতে পারা গিয়েছিল সেগুলোই বলা হবে।

2VsECkv.jpg


শুরুটা যখন হলো 'অনন্ত ভালোবাসা' দিয়ে দর্শক নতুন নায়ককে নিয়ে খুশিই ছিল। ছোট্ট একটা ছেলে নায়িকা ইরিন জামানের সাথে রোমান্স করছে। এ ছবির 'তোমার ঐ মিষ্টি হাসি' গানটা জনপ্রিয় হয়ে গেল। সবাই বলত 'পিচ্চি শাকিব' নামে। 'সবাইতো সুখী হতে চায়' ছবিতে শাকিবের চরিত্রটি ভালো হবার কারণে দর্শক পছন্দ করেছিল। অভিনয় ভালো ছিল। প্রশংসাও হয়েছিল পত্র-পত্রিকায়। প্রথমদিকের চারটি ছবির কথা বলা জরুরি যে ছবিগুলোতে শাকিবকে অসাধারণ লেগেছে। ছবিগুলো 'খুনি শিকদার, আজকের সমাজ, ভাড়াটে খুনি, সাহসী মানুষ চাই।' একদম ম্যানলি অভিনয় ছিল। 'খুনি শিকদার' ছিল কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদারের জীবনের ছায়ায় নির্মিত ছবি। এ ছবিতে চোর থেকে পাতি মাস্তান এরপর সন্ত্রাসী হয়ে ওঠার অভিনয় করেছে শাকিব। প্রথমদিকের সন্ত্রাসী অপারেশন আর শেষে ফাঁসিতে ঝোলার আগে শাকিবের ন্যাচারাল অভিনয় চোখে লেগে থাকে।

dM8PAkJ.jpg


'আজকের সমাজ' ছবিতে ছাত্র রাজনীতির বলি একজন সাধারণ ছাত্র থেকে প্রতিবাদী ছাত্র হয়ে ওঠার অসাধারণ অভিনয় ছিল। 'ভাড়াটে খুনি' ছবিতে প্রথমে গোরখোদক থাকে শাকিব। নিজের ভাই খুন হবার পর সেই লাশই কবর দেয় শাকিব কিন্তু কবর দেয়ার পর লকেট থেকে পরিচয় জানতে পারে। এরপর শহরে গেলে খুনিদের দেখে ফেলে। খুনি ইলিয়াস কোবরাকে মারার সময় শাকিবের ভয়ঙ্কর কিছু এক্সপ্রেশন থাকে তলোয়ার উঁচু করে ধরে। গেটআপও ছিল চমৎকার। 'সাহসী মানুষ চাই' ছবিতেও বিপ্লবী ছাত্রের ভূমিকায় দারুণ ছিল। প্রথমদিকে তার অভিনয়ের প্রতি যে ভালো মনোযোগ ছিল এ ছবি তিনটি তার একটা দলিল।

ZxAl7JS.jpg


'ফুল নেবো না অশ্রু নেবো' ছবিতে সমীকরণ পাল্টাতে শুরু করল। এ ছবির 'আমার হৃদয় একটা আয়না' গানটি এত জনপ্রিয় হয়ে গেল যে তখন এ গানই বাজানো হত সবখানে। 'বিয়ের ফুল' ছবির 'তোমায় দেখলে মনে হয়, ঐ চাঁদ মুখে যেন' গানগুলোর তুমুল জনপ্রিয়তার পরে শাকিবের এ গানটিও তুমুল জনপ্রিয়তা পেলো। শাবনূরের সাথে জুটি এগিয়ে যেতে লাগল। তার সাথে 'নয়ন ভরা জল' ছবিতেও শাকিবকে অসাধারণ লেগেছে। 'সবকিছুরই শুরু আছে শেষও হয়ে যায়' গানটিও জনপ্রিয়তা পেলো। শাবনূরের সাথে 'সবার উপরে প্রেম, স্বপ্নের বাসর, কঠিন প্রেম, ও প্রিয়া তুমি কোথায়, সমাধি, প্রাণের মানুষ' ছবিগুলো শাকিবের সিরিয়াসনেস আরো বাড়িয়ে দিয়েছিল। সেই সিরিয়াসনেসটি 'আমার স্বপ্ন তুমি'-র টার্নিং পয়েন্টে সবচেয়ে বেশি কাজে লেগেছিল। কারণটি হচ্ছে শাকিবের নায়িকাদের মধ্যে শাবনূর ছিল সেরা। শাবনূর শাকিবের আগের প্রজন্মের নায়কদের সাথেও দাপটের সাথে কাজ করে এসেছে তাই শাকিবকে অভিনয়টা মন দিয়ে করেই শাবনূরের সাথে ছবি করতে হয়েছে। নয়তো জুটিটা জনপ্রিয় হত না। শাকিব নিজের কাজের প্রতি সিনসিয়ারিটি নিজের চেয়ে সিনিয়রদের থেকেই শিখেছিল। রিয়াজ তখন শাকিবের অপেক্ষাকৃত সিনিয়র নায়ক ছিল এবং কোয়ালিটির দিক থেকে এগিয়ে তাই ত্রিভুজ প্রেমের ছবিগুলোতে নিজের দিকে মনোযোগ নেয়ার মতো ছবিগুলোও সে করেছিল যেমন – 'বাধা।' মূলত সিনিয়র নায়ক-নায়িকাদের ভালো কাজ করার প্রতি আগ্রহ দেখে শাকিব নিজের পারফেম্যান্স নিয়ে ভাবত তাই তখন ফলাফল ভালো আসত।

অভিনয়ের দিক থেকে উল্লেখ করার মতো ছবি যেগুলো মাঝামাঝি সময়ে হয়েছিল এমন কয়েকটি ছবির কথা বলা যায়। এগুলোতে শাকিবের অভিনয়ের মধ্যে দাগ কাটার একটা ব্যাপার ছিল। দর্শক পছন্দ করেছিল। যেমন – সুভা, আমার স্বপ্ন তুমি, ডাক্তারবাড়ি, সিটি টেরর, মা আমার স্বর্গ, তুমি স্বপ্ন তুমি সাধনা, ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না, ভালোবাসার লাল গোলাপ। সাহিত্যভিত্তিক ছবি 'সুভা'-তে শাকিব প্রতাপ চরিত্রে অভিনয় করেছিল। নারীকেন্দ্রিক ছবি হবার পরেও শাকিব নিজের অন্যতম সেরা অভিনয়টা করেছে। সুভা বা পূর্ণিমার কলকাতায় বিয়ের পর প্রতাপ বা শাকিবের কান্নার অভিনয় অনবদ্য। এ ছবিতে 'চাঁদের হাসিতে বাঁধ ভেঙে যাবে' গানটিতে পূর্ণিমার সাথে শাকিবের রসায়ন অনেক ছবি থেকে এগিয়ে থাকবে মূলত সাহিত্যভিত্তিক ছবির গুণাগুণের জন্য। 'আমার স্বপ্ন তুমি' ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্টে ছবির ফিনিশিং-এ অনবদ্য অভিনয়ের জন্য নামকরা। 'ডাক্তারবাড়ি' মাল্টিস্টারার ছবি হবার পরেও শাকিবের চরিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং নিজের কাজটা ঠিকঠাক করেছিল। 'সিটি টেরর' ছবিতেও মান্না-র মতো বিগস্টার থাকার পরেও ছবির ফিনিশিং-এ শাকিব ছিল আকর্ষণীয়। মান্নাকে পেছন থেকে গুলি করার পর শাকিবের সাইকো টাইপের এক্সপ্রেশনটি ছিল অসাধারণ। অভিনয়ের প্রতি মনোযোগ থাকলেই এটা করা যায়। মাতৃভক্তির বেশ কয়েকটি ছবি শাকিব করেছে তার মধ্যে 'মা আমার স্বর্গ' সবচেয়ে উজ্জ্বল। এ ছবিটিও ফিনিশিং-এ শাকিবের চমৎকার অভিনয়ের পাশাপাশি গল্পে মায়ের জন্য শাকিবের ত্যাগের অভিনয় ছিল দেখার মতো।

SMiGrK4.jpg


'প্রিয়া আমার প্রিয়া' ছবিটির ব্যাপক সাফল্যের পাশাপাশি ছবিটিতে শাকিবের গেটআপ ও অভিনয় উল্লেখ করার মতো। অপু বিশ্বাসের সাথে জুটি প্রতিষ্ঠিত হবার সময় 'ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না' ছবিটিতে কাজের মেয়ে অপুর জন্য মার্কেট করে বাড়িতে আনার পর সমস্যার সৃষ্টি হলে শাকিবের কিছু সংলাপ অসাধারণ ছিল। ছবিতে শাকিবের চরিত্রটি ছিল ঘরে-বাইরে যে কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করা একটি তরুণের। প্রেমের গল্পে 'তুমি স্বপ্ন তুমি সাধনা' ছবিতে শাকিব একজন প্রেমিক যে ভাগ্যের দোষে আসামী হয় এবং নিজের ভালোবাসা অপু বিশ্বাসের বাড়িতেই কাজের লোক হয়। অপুর বিয়ের খবর সে জানত না। সিঁড়িতে অপু বিশ্বাসের সাথে যখন তার প্রথম দেখা হয় সে বাড়িতে নাম ধরে ডাকার পর অপু বলে 'বেগম সাহেবা' বলো ঐ সময় শাকিবের বিস্মিত হবার এক্সপ্রেশন জাস্ট অসাম ছিল। এভাবে এ ছবিটি টাচি অভিনয়ে স্মরণীয়। 'ভালোবাসার লাল গোলাপ' ছবিটি ত্রিভুজ প্রেমের এবং পূর্ণিমার চরিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও শাকিবের চরিত্রটি ছিল মোটিভেশনাল। এ ছবিতে 'শাকালাকা বুমবুম জীবনের জোয়ারে জাগো রে' গানটি অসাধারণ।

শাকিব খান এভাবে একটা সময়ের সমীকরণে অভিনয়ের প্রতি ডেডিকেশন রেখে কাজ করে গেছে। সেকালের শাকিব খানের প্রতি সেই ডেডিকেশন থাকার কারণ হচ্ছে প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ ছিল ইন্ডাস্ট্রিতে তাই নিজেকে ধরে রাখতে যেই চরিত্রই পেয়েছে সেটাতে নিজের সেরাটা দেখাতে চেষ্টা করেছে এবং সফলও হয়েছে। সেই ক্রমটা নষ্ট হবার পেছনে কারণ হচ্ছে তখনকার মান্না, আমিন খান, রিয়াজ, শাকিল খান, ফেরদৌস, শাবনূর, মৌসুমী, পপি, পূর্ণিমা এরকম যারা তার অপেক্ষাকৃত সিনিয়র ও একটা সময় সহকর্মী ছিল তাদের সাথে প্রতিযোগিতা করে আসতে হয়েছে। অপু বিশ্বাসের সাথে যখন জুটিটা পাকা হয়ে গেল ততদিনে মান্নার মৃত্যু এবং আমিন খান, রিয়াজ, ফেরদৌস, শাকিল, শাবনূর, পূর্ণিমা-দের অনিয়মিত হবার পরে প্রতিযোগিতা আর থাকল না। তাই শাকিব একক একটা আধিপত্য পেয়ে অভিনয়ের প্রতি মনোযোগ কমিয়ে দিলো এবং ব্যক্তিগত অহমবোধ, সুপারস্টার বলার অতিরিক্ত ব্যবহার, একঘেয়েমি গল্পের ছবি সিলেকশন করতে লাগল এভাবে একটা সময় তার দর্শক নির্দিষ্ট হতে থাকল এবং সচেতন দর্শকের পছন্দ থেকে বাদ পড়তে থাকল। যদি সিনিয়ররা নিয়মিত থাকত তাহলে শাকিবের অবস্থান সেকালের মতোই থাকত।

সারাংশে যা দাঁড়ায়, এই শাকিব খান সেই শাকিব খানের এক প্রকার শত্রু।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top