What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review আন্টোনিয়া: পিতৃপ্রধান সমাজের মাতৃপ্রধান হয়ে ওঠার গল্প (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
a8MdAeB.jpg


ডাচ নারীবাদী চলচ্চিত্র 'আন্টোনিয়া' বা আন্টোনিয়া'স লাইন মুক্তি পায় ১৯৯৫ সালে। সেই বছর অস্কারে ভিনদেশী চলচ্চিত্র ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠছবির খেতাব পায় চলচ্চিত্রটি। ছবিটির গল্প স্বাধীনচেতা নারী আন্টোনিয়া ও তার উত্তরসূরী নারীদের নিয়ে। আন্টোনিয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তার জন্মস্থান গ্রামে মেয়েসহ ফিরে আসে। এরপর সে আস্তে আস্তে সেখানকার পিতৃপ্রধান সমাজকে মাতৃপ্রধান করে তোলে। ছবিতে সমকামিতা, যৌনতার প্রতি ধর্মীয়নীতিকে কটাক্ষ করার মতো বেশ কিছু সাহসী বিষয় উপস্থাপিত হয়েছে। উঠে এসেছে ভালবাসা ও বন্ধুত্বের মতো মানবিক বিষয়টিও।

ছবির গল্পে, আন্টোনিয়াকে ভালোবেসে বিয়ের প্রস্তাব দেয় কৃষক বাস। কিন্তু আন্টোনিয়া তা গ্রহণ না করলেও তার সঙ্গে আমৃত্যু রোমান্স চালিয়ে যায়। মেয়ে ডেনিয়েল বিয়ে না করেই মা হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে। তার কোনো প্রেমিকপুরুষও ছিল না। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারী ভাড়া করে পিতা হওয়ার নিয়ম চালু আছে। সারোগেসি ব্যবসার কথা আমরা জানি। মেয়ের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিয়ে এক রাতের জন্য ভাড়া করে পুরুষ আনার ব্যবস্থা করে মা আন্টোনিয়া। ডেনিয়েল পিতৃপরিচয়হীন জন্ম দেয় তেরেস নামের শিশুকন্যাকে। তেরেস অত্যান্ত মেধাবি শিশু। পরে তেরেসের গৃহশিক্ষিকার প্রেমে পড়ে ডেনিয়েল। জড়িয়ে পড়ে সমকামী সম্পর্কে। আন্টোনিয়া এই সম্পর্ককে খুব স্বাভাবিক ভাবে নেয়।

পিট নামের এক গ্রাম্য-বখাটে যুবক ধর্ষণ করে শিশু তেরেসকে। এর আগে সে তার মানসিক প্রতিবন্ধী বোন ডিডিকে ধর্ষণ করার সময় ডেনিয়েল দেখে ফেলে এবং তাকে আহত করে ডিডিকে তার হাত থেকে বাঁচায়। সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই সে ডেনিয়েলের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় প্রচ- আহত হয় সকলেই। কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করে না, যেমন ডিডির বেলায়ও করেনি। আন্টোনিয়া বন্দুক হাতে বেরিয়ে পড়ে পিটকে মারতে। আন্টোনিয়ার সাহসী আচরণে গ্রামবাসী পুরুষদের চোখ খুলে যায়, তারা চড়াও হয় পিটের ওপর।

বড় হয়ে বন্ধুর সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে তেরেস। সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। আবারও খুশির হিড়িক পড়ে সকলের মাঝে। জন্ম হয় শিশুকন্যা সারার। এভাবেই আন্টোনিয়ার নেতৃত্বে আস্তে আস্তে গ্রামে পরিবর্তন আসে। মানবিক ও পেমময় সম্পর্ক গড়ে ওঠে মানুষে মানুষেÑ নারীতে ও পুরুষে। চলচ্চিত্র সমালোচক এনেক স্মেলিক ছবিটি সম্পর্কে বলেন, "Female desire is represented in all of its diverse manifestations: Antonia's wish for independence, Danielle's quest for artistic creativity, Therèse's pursuit of knowledge, and Sarah's curiosity about life in general."

ছবি শুরু হয় জন্মোৎসব, শেষ হয় মৃত্যুশোক দিয়ে। জীবনের প্রতি নৈরাশ্যবোদ থেকে আত্মহত্যা করে আন্টোনিয়া পরিবারের কাছের মানুষ যুদ্ধফেরত যোদ্ধা ক্রকড ফিঙ্গান, যিনি শিশু তেসেককে নিৎসে, প্লেটো ও কোপেনহেগেন-এর মতো দার্শনিকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যায় ছবির ন্যারেটর ও কেন্দ্রিয় চরিত্র আন্টোনিয়াও।

সমস্ত ছবিতেই পুরুষ চরিত্রের তেমন প্রাধান্য নেই। নারীরা পুরুষ ছাড়াই নিজেদের সহযোগিতায় কৃষিকাজ থেকে শুরু করে পড়াশুনা ও ক্যারিয়ারে প্রতিষ্ঠিত হয়। আন্টোনিয়া ও তার পরিবারে উত্তরসূরী নারীরা বুদ্ধিমতী ও অস্তিত্ব সচেতন। তারা পূর্বনারী আন্টোনিয়ার পরিচয়ে পরিচিত হতে থাকে। পিতৃপরিচয় এখানে মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায় না বলেই এক রাতের জন্য পুরুষ ভাড়া করে মা হওয়ার সখ পূরণ করতে পারে ডেনিয়েল। আন্টোনিয়ার প্রভাবে প্রভাবান্বিত হয়ে পার্দ্রী পর্যন্ত ধর্মজাযক পেশা ছেড়ে সাধারণ মানুষের কাতারে নেমে পড়ে। পিতৃপরিচয়হীন তিন সন্তানের মাকে বিয়ে করে।

পরিচালক মারলিন গোরিস ১৯৮৮ সালে ছবির পান্ডুলিপি প্রস্তুত করে মোক্ষম সময়ের অপেক্ষা করছিলেন। পরে তিনি শুটিংয়ের আদর্শ স্থান পেয়ে যান বেলজিয়ামে। সেখানেই শুরু করেন ছবিটির কাজ। ছবির গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন উইলেক ভ্যান আমেলরুই, ডটারমানস, জান ডিকলের, ভিক্টর লো প্রমুখ অভিনেত্রী-অভিনেতা।

ছবিটি অস্কারসহ, টরেন্টো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, নেদারল্যান্ডস ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, হ্যামটন ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ও শিকাগো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পুরস্কৃত হয়।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top