What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review আকাশ ও ছোঁয়ার ভালোবাসার গল্প (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
NQFgwmf.jpg


আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা
পরিচালক : এস এ হক অলিক
শ্রেষ্ঠাংশে : রিয়াজ, পূর্ণিমা, দিতি, রাজ্জাক, শর্মিলী আহমেদ, আফজাল শরীফ প্রমুখ।
উল্লেখযোগ্য গান : হাওয়ায় হাওয়ায় দোলনা দোলে, হৃদয়ে লিখেছি তোমারই নাম, আদরে আদরে দেবো ভালোবাসা, কাঞ্চা কাঞ্চা বাঁশের বেড়া।
মুক্তি : ২৪ অক্টোবর ২০০৮

– দেখো দেখো, আমাদের প্রেম দেখে পানির রং নীল হয়ে গেছে।
– কোথায় নীল! পানি তো পানিই আছে।
– তুমি তাকালে পানি লজ্জা পেল তাই আগের রূপে ফিরে এলো।
– দেখো দেখো গাছটা কেমন নীল হয়ে গেল।
– কোথায়! গাছ তো সবুজই আছে
– তুমি তাকালে গাছ লজ্জা পেল তাই আগের রূপে ফিরে এলো।

………

ধরো, আমাদের এই সুখ দেখে সূর্যটা তোমার হাতের মুঠোয় চলে এলো। মন খারাপ করে তাকিয়ে থাকল তোমার দিকে। অবাক হয়ে তুমি জিজ্ঞেস করলে- 'এই সূর্য কী হয়েছে তোমার?' সূর্য তখন বলল- 'তোমাদের মতো করে আমি কেন চাঁদকে ভালোবাসতে পারি না?' সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের দু'চোখ বেয়ে পানি ঝরে পড়ল। আর সমস্ত পৃথিবীটা পানিতে ভেসে গেল। তার সঙ্গে আমিও। কোথাও খুঁজে পেলে না তুমি আমাকে।

………

শুনতে ভালো লাগে সংলাপগুলো তাই না! লাগবেই তো। ভালোবাসার কথা শুনতে সবারই ভালো লাগে, কেননা ভালোবাসা সবার মধ্যে বসতি গড়ে। একজোড়া প্রেমিক-প্রেমিকার ভালোবাসার কথামালায় এভাবেই রোমান্টিকতা থাকে। 'আকাশ' ও 'ছোঁয়া'র মধ্যে এমনি করে ভালোবাসা এসেছিল।

শাবনূর-রিয়াজের ক্রেজের পর ঢালিউড পায় আরো একটি নতুন ক্রেজ রিয়াজ-পূর্ণিমা। বড়পর্দায় তাদের ক্রেজ দেখে দর্শক বলত 'মেড ফর ইচ আদার'। এ জুটির জনপ্রিয় ছবি অনেক। তাদের রসায়ন তখনকার সময়ের জন্য সেরা ছিল। 'আকাশছোঁয়া ভালোবাসা' ছবিটি সেই ক্রেজ ও রসায়নের ছবি।

শুধু আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে নয় বাইরের ইন্ডাস্ট্রিতেও নায়ক-নায়িকার নাম দিয়ে রোমান্টিক ছবির নামকরণ হয়ে থাকে এরকম অনেক দেখা যায়। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে 'ময়নামতি, সুজন সখি, আশিক প্রিয়া' এ ছবিগুলো তারই উদাহরণ। 'আকাশছোঁয়া ভালোবাসা' ছবির নামকরণেও 'আকাশ' ও 'ছোঁয়া' ছিল নায়ক-নায়িকার নামে। সুন্দর নামকরণে রোমান্টিক ফ্যামিলি ড্রামার অসাধারণ ছবি। 'মনের মাঝে তুমি' মুক্তির পর রিয়াজ-পূর্ণিমা' জুটির নতুন ক্রেজ শুরু হয়। দর্শকের কাছে এ জুটির রোমান্টিক ছবির চাহিদা বেড়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের নিয়ে এ ধরনের ছবি নির্মিত হতে থাকে। 'হৃদয়ের কথা' ছবিটি ছিল দর্শকের কাছে স্বস্তির মতো এবং তারপরই 'আকাশছোঁয়া ভালোবাসা'ও দর্শক সাদরে গ্রহণ করে। সবগুলোই দর্শকনন্দিত সফল ছবি।

LL8eBgA.jpg


ভালোবাসার সম্পর্ক মেনে না নেয়া বা পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে সম্পর্কের অবনতি হওয়া চিরন্তন বিষয়। ছবির গল্পে নায়করাজ রাজ্জাক তার বোন দিতির প্রতি সেভাবেই অবিচার করে। দিতির ছেলে রিয়াজ পারিবারিক আবহ থেকে বঞ্চিত হয় এবং সে কারণেই নানু শর্মিলী আহমেদের জন্মদিনে ড্রামা তৈরি করে ঢুকে পড়ে তার পূর্বপুরুষের সংসারে। সেখানেই শুরু হয় রিয়াজ বা আকাশের নতুন প্রেমের গল্প। ছোঁয়া নামে পূর্ণিমা আসে তার জীবনে যে ছিল রাজ্জাকের মেয়ে। তাদের প্রেম নিয়ে নতুন জটিলতা তৈরি হয়।

সমবয়সীদের মধ্যে খুনসুটি সাধারণ ব্যাপার। রিয়াজ-পূর্ণিমার মধ্যে একের পর এক ঘটতে থাকে। একে অন্যকে জব্দ করে। পূর্ণিমা তো একেবারে ঘরের আলমারিতে উঠে বালতিতে দড়িতে বেঁধে পানি দিয়ে রিয়াজকে ভিজিয়ে দেয়। রিয়াজও সুযোগ বুঝে মই কেড়ে নেয়। খুনসুটিগুলো দারুণ। মন খারাপের পর্ব চলে আসলে একজন আরেকজনের প্রতি খেয়াল রাখতে থাকে। রিয়াজ বুঝতে পারে পূর্ণিমা তার খেয়াল রাখতে শুরু করেছে। বুদ্ধিমান প্রেমিকের মতো সে বলে দেয়- 'তুমি কি কাউকে ভালোবেসেছ কখনো? তবে আমি সিওর দুই একদিনের মধ্যে তুমি প্রেমে পড়বে।' ঘটেও তাই।

প্রথম ধাপ : একটু কথা আছে সিঁড়ির কাছে আসো (রিয়াজ এগিয়ে গেল)

দ্বিতীয় ধাপ : একটু ছাদে আসো না

(রিয়াজ সিঁড়ি বেয়ে উঠতে গেল)

তৃতীয় ধাপ : 'সুন্দর সকাল তারও চেয়ে সুন্দর তুমি
তিরিশ কদম এগিয়ে দেখো
দাঁড়িয়ে আছি আমি'

তিরিশ কদম এগিয়ে গেলেই উপর থেকে হাটে হাঁড়ি ভাঙার মতো করে হাঁড়ি ভেঙে রিয়াজ হলো কুপোকাত। ভূতের মতো দেখালো তাকে। তাতে কি! ভালোবাসা সেখানেই শুরু। পায়ে ব্যথা পাওয়া পূর্ণিমাই রিয়াজের খেয়াল রাখা দেখে নিজে এগিয়ে আসে তখন তার কণ্ঠে এ গান –

'পৃথিবীর যত সুখ যত ভালোবাসা
সবই যে তোমায় দেবো একটাই এই আশা
তুমি ভুলে যেও না আমাকে
আমি ভালোবাসি তোমাকে'

অতঃপর একজোড়া কপোত-কপোতীর ভালোবাসা শুরু। রিয়াজ নূপুর পরিয়ে দেয়া পূর্ণিমাকে অন্যরূপে সাহসী দেখে যখন সে বলে- 'সারা পৃথিবীকে জানিয়ে দিলাম আকাশ ও ছোঁয়ার ভালোবাসার কথা।' বান্দরবান জেলার স্বর্ণমন্দিরের সেই দৃশ্য অসাধারণ। রোমান্সের এখানেই শেষ নয়। যে রাতে পূর্ণিমা মনে মনে রিয়াজের কথাই ভাবছিল সে কি জানত রিয়াজ স্বয়ং তার বিছানার উপর ঝুলন্ত দোলনায় নূপুর নিয়ে হাজির! নূপুরের নিক্বণে চোখ মেললে তার বিস্ময় কাটে না। রাশি রাশি ফুল ঝরে পড়ে তার মুখে। তারপর আরেকটি অসাধারণ ভালোবাসার গান- 'হাওয়ায় হাওয়ায় দোলনা দোলে।'

ভালোবাসার উপহারের সেই নূপুর পরে পূর্ণিমা যখন বাড়িতে নেচে বেড়ায় বাবার কাছে ধরা পড়তে হয় কেননা এ শব্দ তার পছন্দ নয়। লুকিয়ে রাখে জামার আবরণে কিন্তু বাবা নাছোড়বান্দা। সামনে এগোতে বললে পেছনে রিয়াজ ঝুনঝুনি বাজিয়ে নূপুরের তালের শব্দকে হারিয়ে দেয়। এই ছোট্ট সিকোয়েন্সটিও ভালো লাগা আনে। 'আদরে আদরে দেবো ভালোবাসা' এ গানটিও ভোলা যায় না। স্যাড ভার্সনের গান 'বহুপথ খুঁজে নদী সাগরে হারায়' অর্থবহ হয়ে ওঠে।

rsWaSMk.jpg


আকাশ আর ছোঁয়া কি শেষ পর্যন্ত তাদের ভালোবাসাকে সফল করতে পেরেছিল! যে ভালোবাসা আকাশ ছুঁতে চায় তাকে হারাবার সাধ্য কার! অনেক ঘটনা ঘটে আরো। দিতি শেষ দৃশ্যে বিশেষ চরিত্র হয়ে ওঠে। 'কাঞ্চা কাঞ্চা বাঁশের বেড়া' গানটি অ্যারাবিয়ান ঢঙে ট্রেনের ছাদে ও কামরায় অন্যরকম বিনোদন দেয়। গানে গানে রোমান্স, ফাইট জমে ওঠে। রিয়াজ-পূর্ণিমার অ্যারাবিয়ান গেটআপ ভিন্নতা দেয়। গানে ট্রেনের ছাদে, কামরায় নাসরিনের সাথে কোরিওগ্রাফার আজিজ রেজার নাচ আকর্ষণীয়। ভালো ছিল আফজাল শরীফের কমেডি।

অনেকের ধারণা ঢালিউডে ডিজিটাল বাণিজ্যিক ছবির যাত্রা ২০১০ পরবর্তী সময়ে হয়েছে কিংবা জাজ মাল্টিমিডিয়ার হাত ধরেই হয়েছে। এটা সত্য নয়। জাজ মাল্টিমিডিয়া ডিজিটাল ছবির অন্যতম প্রবক্তা এবং তারা জোরেসোরে ধারাবাহিকভাবে নির্মাণ করেছে এ ঘরানার ছবি। শুরুটা ২০০০ পরবর্তী সময়েই হয়েছিল। ২০০৬ সালে এসএ হক অলিক পরিচালিত জনপ্রিয় 'হৃদয়ের কথা' ছবিটি ডিজিটাল ফরম্যাটে নির্মিত এবং ২০০৮ সালে তার আরেকটি জনপ্রিয় ছবি 'আকাশছোঁয়া ভালোবাসা'ও ডিজিটাল ছবি। রিয়াজ-পূর্ণিমা জুটির ক্রেজ ঘটানো অন্যতম প্রধান ছবি।

'আকাশছোঁয়া ভালোবাসা' সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা ছবি। ডিজিটাল ফরম্যাটের সাথে পাহাড়ি লোকেশন, সুন্দর সব গান, নতুন আইডিয়ার রোমান্টিক সিকোয়েন্স, রিয়াজ-পূর্ণিমার ক্রেজকে সফলভাবে কাজে লাগানো সবকিছু মিলিয়ে টোটাল প্যাকেজ ছবি।

ভালোবাসার ছবি যারা দেখতে ভালোবাসে তাদের পছন্দের মধ্যে এ ছবি আছে এটুকু হলপ করে বলা যায়।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top