What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review বেশ উপভোগ্য ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’ (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
bYJW6yv.jpg


আমার প্রেম আমার প্রিয়া
ধরন : রোম্যান্টিক-কমেডি-ড্রামা
পরিচালক : শামীমুল ইসলাম শামীম
প্রযোজনা : ওয়ান স্টার মুভিজ ইন্টারন্যাশনাল লি.
কাস্ট : কায়েস আরজু (মানিক), পরী মনি (জান্নাত), মিশা সওদাগর (জব্বার চেয়ারম্যান), আলীরাজ (মধু), রেবেকা রউফ (জান্নাতের মা), বাদল (ডেঙ্গু), ডন (পাতিগুন্ডা), সীমান্ত (মানিকের বন্ধু) প্রমুখ।
শুভমুক্তি : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

নামকরণ : ছবিতে একটা পর্যায়ে এসে নায়ককে দেখা যায়, প্রেমিকা অর্থাৎ প্রিয়ার কাছে তার ভালোবাসা খাঁটি কিনা তার প্রমাণ দিতে হয়। হিরো তার প্রেম এবং প্রিয়াকে পাওয়ার জন্যে যেকোনো অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে, তাই সে প্রমাণ দিতে দিতে সদা প্রস্তুত; যদিও এটি ছবি কিংবা গল্পের মূল বিষয়বস্তু নয়।

তবে মূল বিষয়বস্তু ফুটিয়ে না তুললেও 'আমার প্রেম আমার প্রিয়া' নামটি বেশ খানিকটা শ্রুতিমধুর এবং মানানসই।

কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপ : ছবির গল্প লিখেছেন আব্দুল্লাহ জহির বাবু। অতীতে তিনি যে হারে নকল গল্প দিয়েছেন তাতে আমার বিশ্বাস করতে অনেক কষ্ট হচ্ছিল এই ভেবে যে, এ ছবিটি মৌলিক গল্পের। তবে কিছুটা তেলেগু ছবি 'বাম্পার অফার' (২০০৯) এর সাথে মিল পাওয়া যায়, তবে সেটা খুবই সামান্য। অনুপ্রাণিত বলা যায়।

ytJ8zGW.jpg


গল্প মূলত মধুপুর গ্রামে বাস করা 'মানিক' নামে এক চতুর ডানপিটে ছেলে এবং সেই গ্রামের অসৎ চেয়ারম্যানকে ঘিরে। গ্রামের চেয়ারম্যান কাবিখা (কাজের বিনিময়ে খাদ্য), সরকারের পাঠানো গম, দূর্যোগের ত্রাণসহ বিভিন্ন তহবিলের মাধ্যমে সরকারি টাকা লুটে খায়; উপরন্তু গ্রামের লোকজন সেরকম সাহায্য-সহযোগিতা পাওয়া তো দূর, তারা চেয়ারম্যানের চালাকি ধরতেই পারে না। এই দুষ্টু চেয়ারম্যানকে শায়েস্তা করার জন্যই তার পেছনে উঠেপড়ে লাগে মানিক, সাথে তার বন্ধুরা। তারা টার্গেট করে চেয়ারম্যানকে বাঁশ দেওয়ার জন্যে, কিন্তু একসময় এসে তারা নিজেরাই ফাঁদে পড়ে যায়।

এভাবেই বিচিত্র ধরনের হাস্যরসাত্মক কর্মকাণ্ডে এগিয়ে যায় গল্প।

ছবির গল্প আব্দুল্লাহ জহির বাবু লিখলেও চিত্রনাট্য এবং সংলাপ লিখেছেন পরিচালক শামীমুল ইসলাম শামীম। ছবির প্রথমার্ধ অনেক দ্রুত এগিয়ে যায়, হাস্যরসে ভরপুর কমেডি সিক্যুয়েন্স থাকার কারণে বোরিং লাগার একদমই সুযোগ নেই। দ্বিতৗয়ার্ধেও যথেষ্ট রোমান্স-কমেডি রয়েছে।

Z3ALjGC.jpg


তবে ছবি শেষ ক্লাইম্যাক্সে এসে কিছুটা ঝুলে গেছে। শেষের ১৫/২০ মিনিট গল্প ধীরগতিতে এগোয়, এছাড়া পরিচিত দৃশ্যপটের কারণে শেষ ক্লাইম্যাক্সে বেশ ভালোই বোঝা যাচ্ছিল এরপরে কী হতে যাচ্ছে। তাই এই জায়গাটি একটু দূর্বল লেগেছে। ছবির সংলাপ বেশ ভালো লেগেছে। কায়েস আরজু, পরি মনি, আলীরাজ, মিশা সওদাগর, বাদলদের মুখে সংলাপগুলি বেশ উপভোগ করেছি।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ৭০

পরিচালনা ও অভিনয় : পরিচালক শামীমুল ইসলাম শামীমের প্রথম কাজ এটি। তার পূর্ববর্তী কাজ সম্পর্কে আমার তেমন ধারণা নেই, তবে এ ছবিতে তার ডিরেকশন মোটামুটি লেগেছে। খুব বেশি খারাপও না, আবার আহামরি ভালোও না। তবে তিনি চিত্রনাট্যটি খুব সুন্দর লিখেছেন, একথা স্বৗকার করতেই হবে।

শুনেছিলাম নব্বই দশকের জনপ্রিয় ছবি 'চাঁদনী'র রিমেক পরিচালনার দায়িত্বে তিনি থাকবেন। সে ছবির বর্তমান কী অবস্থা জানি না, তবে প্রত্যাশা থাকবে তার আগামীদিনের ছবিগুলো তৈরি হতে যেন কম সময় নেয়।

দীর্ঘ ৪ বছর পর কায়েস আরজু আবারো বড়পর্দায় ফিরলেন, তাও আবার এমন একটা ছবি দিয়ে যার কাজ শুরু হয়েছে ২০১৫ সালে। আবার তার পূর্বের কোনো কাজও আমি দেখিনি, যদিও এটি তার মুক্তিপ্রাপ্ত নবম ছবি। স্বাভাবিকভাবেই তার প্রতি আমার তেমন এক্সপেক্টেশন ছিল না। তবে তার অভিনয় আমার কাছে দারুণ লেগেছে; বিশেষকরে, কমেডি টাইমিং এবং ডায়ালগ ডেলিভারিতে তিনি দারুণ! ফাইটে একটু দূর্বল, তবে নেচে-গেয়ে সেটাও পুষিয়ে দিয়েছেন। এবছরই তিনি তার ক্যারিয়ারের এক দশক পূর্ণ করবেন, অথচ এই ১০ বছরে তার ছবি মুক্তি পেয়েছে মাত্র নয়টি! অন্যান্যদের তুলনায় বেশ আন্ডাররেটেড বলা যায়। আশা করবো ভবিষ্যতে তার আরো কিছু ছবি বড়পর্দায় উপভোগ করতে পারবো।

কায়েস আরজুর তুলনায় পরি মনির অভিনয় আমার কাছে কিছুটা দূর্বল ঠেকেছে। অবশ্য সেটা হওয়ার কারণও আছে, এটি তার ক্যারিয়ারের প্রথম দিককার ছবি। সৌন্দর্যের দিক থেকে তো তিনি তুলনাহীন, বাংলা ছবির ইতিহাসে যদি ১০ জন সুন্দরী এবং গ্ল্যামারাস নায়িকার লিস্ট করা হয়, আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি সেখানে পরি মনির নাম অবশ্যই আসবে।

কমেডিতে আলীরাজ এবং মিশা সওদাগর যে কতটা তুঁখোড় সেটা এ ছবি না দেখলে বোঝা দায়। ছবিতে তেমন বিশেষায়িত কোনো ভিলেন নেই, তবে মিশা সওদাগরের জব্বার চেয়ারম্যানের চরিত্রটি কিছুটা নেগেটিভই বলা যায়। অনেক উপভোগ করেছি তার অভিনয়। আর আলীরাজের কথা আর কি বলবো! ভার্সেটাইল এই অভিনেতা একইসাথে যেমনি হাসিয়েছেন, তেমনি ইমোশনালও করেছেন।

অন্য দশটা ছবির মতো এখানেও মা'য়ের ভূমিকায় ছিলেন রেবেকা রউফ; তার সাথে মিশা সওদাগরের রসায়নও খুবই সুন্দর ও সাবলীলভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এছাড়াও বহুদিন পর বিখ্যাত সেই 'বরিশালের বাদল'কে খুজেঁ পেলাম এ ছবিতে, সাথে আরেক কমেডিয়ান সীমান্তও রয়েছেন। তবে তাদের পর্দায় খুবই কম সময় দেখা গেছে।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ৭০

কারিগরি : ছবির কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালে, গত দুবছর ধরেই আসি-আসি করেও প্রেক্ষাগৃহে আসছিল না। অবশেষে সেই ছবি মুক্তি পেলো ২০১৯ এ এসে। স্বাভাবিকভাবেই কারিগরি দৈন্যতা বেশ চোখে লেগেছে।

ভালো দিকগুলি আগে বলি, সেটের লাইটিং সেটআপ ভালো লেগেছে। আজকাল কম বাজেটের ছবিগুলোতে তো দিন-রাতের পার্থক্য বোঝাই যায় না; এখানে যা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। এছাড়াও লোকেশন ভালো ছিল। খুব সম্ভবত গাজীপুরে পুরো ছবিটি শ্যুট করা হয়েছে।

সিনেমাটোগ্রাফি মোটামুটি চলনসই। এডিটিংও মোটামুটি। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের কাজ করেছেন ইমন সাহা, তিনি তো দীর্ঘসময় ভালো করে আসছেন। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। তবে ছবিতে সবার ডাবিং কেমন যেন এনালগ টাইপ মনে হলো, মানে কেমন যেন পরিষ্কার না। এখন এটি হলের সিস্টেমের সমস্যা, নাকি সত্যিই এনালগ সিস্টেমেই ডাবিং সম্পন্ন করা হয়েছে এটা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ৫০

NSWu3F1.jpg


বিনোদন : গান রয়েছে ৬টি। এর মধ্যে শফিক তুহিন এবং লাবণ্য'র গাওয়া 'জোসনা পড়ে গলে গলে' গানটি এ ছবির সেরা গান। এছাড়া সালমান শাহ-শাবনূর জুটির বিখ্যাত একটি গান 'পৃথিবীতে সুখ বলে' নতুন করে সংযোজন করা হয়েছে। ইমরান ও খেয়ার গলায় গানটি মোটামুটি ভালোই লেগেছে, আরজু-পরি'র পারফরমেন্সও ভালো ছিল; যদিও সালমান-শাবনূর লেভেলের হয়নি। এ ছাড়া 'ট্যারাম ট্যারাম' গানটি এর কথা এবং চিত্রায়ন নিয়ে বিতর্কিত থাকলেও সিচ্যুয়েশনের সাথে মিল রেখেই পরি মনিকে একটু খোলামেলাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তবে আমার মতে, ড্রেসআপের দিক থেকে শালীনতা বজায় রেখে চিত্রায়ন করা যেতো। এছাড়া, সেই সিক্যুয়েন্সে পরি মনির দেওয়া ডায়ালগগুলি নিয়েও আমার যথেষ্ট আপত্তি আছে।

ছবির শেষের গানটিও বেশ ভালো ছিল, ইউটিউবে এখনো গানটি আসেনি তাই নাম সঠিক জানি না। প্রতীক হাসানের গাওয়া টাইটেল ট্র্যাকটি ভালো লাগলেও গানের কোরিওগ্রাফি ভালো লাগেনি। আর ছবির শুরুতে যে গানটি দেওয়া হয়েছে তার কথা/সুরের আগা-মাথা কিছুই বুঝিনি। মৌমিতা মৌ একটি বিশেষ চরিত্র আছেন সে গানে।

কায়েস আরজু –পরি মনি জুটির প্রথম ছবি এটি। আমার কাছে এইজুটি অনেক ভালো লেগেছে। তারা একদম মানানসই, তাদের মধ্যকার কেমিস্ট্রিও বেশ ভালো। ছবিতে বেশকিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তে দেখা গেছে তাদের, পরিচালক এবং তারা দুজন এদিক থেকে বেশ সাহস দেখিয়েছেন বটে।

ছবিতে বিনোদনের একটি মূখ্য উপাদান হলো এর কমেডি। আগেই বলেছি, কমেডিতে কায়েস আরজু, আলীরাজ এবং মিশা সওদাগর দারুণ কাজ করেছেন। সাথে বাদল এবং সীমান্ত এর মতো ভালো মানের কমেডিয়ানরা ছিলেন। জোর করে হাসানোর চেষ্টা খুব কম ছিল, গল্প ধরে কমেডিগুলো আসায় অনেক বেশি উপভোগ করতে পেরেছি।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ৮০

tcaJl4j.jpg


ব্যক্তিগত : ছবিটি প্রায় ৪ বছর আগের, এমন ছবিগুলোর ক্ষেত্রে আমি সাধারণত তেমন কোনো প্রত্যাশা নিয়ে হলে যাই না। এবারও যায়নি, সাথে হলের ভেতরে গুটিকয়েক দর্শক দেখে মন আরো খারাপ হয়ে গিয়েছিল। ছবির ট্রেইলারও আমার কাছে ভালো লাগেনি। আমাদের এই মুহূর্তে ভালো ট্রেইলার বানানো শেখা জরুরি। ট্রেইলার বানানোই হয় দর্শক আকর্ষণের জন্য, তো সে কাজটাই যদি না হয় তবে তো কীভাবে বানাতে হয় সেটা শিখতেই হবে।

তবে সবমিলিয়ে ছবিটি আমি এনজয় করেছি। অনেক হেসেছি। ছবির শেষের ১৫/২০ মিনিটে কিছু টুইস্ট/সাসপেন্স যোগ করলে আরো বেশি উপভোগ্য লাগতো। যদি ছবিটি ঠিক সময়ে মুক্তি পেতো, তবে ভালো সাড়া ফেলতে পারতো।

আজ (শুক্রবার) বিপিএলের ফাইনাল ছিল, এটাও হলে দর্শক কম হওয়ার একটি কারণ। আশাকরি, আগামী দিনগুলোতে ভালো রেসপন্স পাবে।

রেটিং : ৬.৫/১০

ছবিটি কেন দেখবেন : যারা রোমান্টিক-কমেডি ছবি পছন্দ করেন তারা এছবি দারুণ উপভোগ করতে পারবেন। তাছাড়া যেহেতু ছবিতে কোনো বিশেষায়িত ভিলেন নেই তাই একটা "feel good" ব্যাপার তো রয়েছেই।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top