What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review নামেই বাদশাহো, আদতে ফকির (1 Viewer)

Starling

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 7, 2018
Threads
775
Messages
12,015
Credits
220,609
Recipe wine
Kaaba
Profile Music
Birthday Cake
W2Qv5vX.jpg


বাদশাহো

পরিচালনা: মিলন লুথারিয়া

অভিনয়: অজয় দেবগন, ইমরান হাশম, এশা গুপ্ত, ইলিয়েনা ডি'ক্রুজ, বিদ্যুৎ জামওয়াল, সঞ্জয় মিশ্রা

পবিত্র কুরবানি ঈদের প্রাক্বালে মুক্তি পেল মিলন লুথারিয়ার ছবি 'বাদশাহো'। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, বাদশাহ শব্দের আভিধানিক অর্থ হল মাস্টার কিং বা মহান সম্রাট। কিন্তু মিলন লুথারিয়ার বাদশাহরা একেবারেই মাস্টার বা মহান নয়। নামের খানিক মিল থাকলেও বাঘ আর বাঘরোলের মধ্যে যে রকম বিস্তর ফারাক তেমনই ফারাক রয়েছে আসল বাদশাহ আর মিলনের বাদশাহদের মধ্যে। ফারাকটা শৌর্য, শক্তি, সৌন্দর্য আর আভিজাত্যের। ফলে ছবিটি একেবারেই ভাল হয়নি। খুবই অযত্নে বানানো একটি দুর্বল ছবি।

ছবিটি একটি পিরিয়ড ছবি। ১৯৭৫, অর্থাৎ এমার্জেন্সির প্রেক্ষাপটে তৈরি একটি অ্যাকশন-রবারি ঘরানার ছবি। পিরিয়ড গোত্রের ছবি বানানোয় মিলন স্পেশালিস্ট। এর আগে 'ওয়ানস আপন আ টাইম ইন মুম্বাই' (২০১০) ছবিতে উনি '৭০-এর দশকের মুম্বই আন্ডারওয়ার্ল্ডের কিছু ঘটনাকে তুলে ধরেছিলেন। 'ডার্টি পিকচার' (২০১১) ছবির স্থানকাল ছিল '৮০-র দশকের মাদ্রাজ/চেন্নাই। আর ওনার শেষ ছবি 'ওয়ানস আপন আ টাইম ইন মুম্বাই দোবারা'র (২০১৩) প্রেক্ষাপট '৮০-র দশকের মুম্বই। তাঁর ছবিগুলোর কেন্দ্রীয় চরিত্ররা সাধারণত রিয়েল লাইফ চরিত্রের আধারে তৈরি। যে রকম ওয়ানস আপন... এ অজয় দেবগন অভিনীত সুলতান মির্জা চরিত্রটি '৭০-এর দশকের মুম্বইয়ের ডন হাজি মস্তানের আদলে তৈরি। পার্ট টু-র অক্ষয় কুমারের চরিত্রটির সূত্র ছিল দাউদ ইব্রাহিম। ডার্টি পিকচার-এর বিদ্যা বালনের চরিত্রটা '৮০-র দশকের বিখ্যাত দক্ষিণী অভিনেত্রী সিল্ক স্মিতার আদলে।

KfK3vv2.jpg


'বাদশাহো' ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে।

কিন্তু এই ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রদের সে রকম কোনও ঐতিহাসিক রেফারেন্স নেই। একমাত্র সঞ্জীব নামক একটি চরিত্র সঞ্জয় গাঁধীর আদলে তৈরি করা হয়েছে। যদিও তার স্ক্রিন প্রেজেন্স খুবই কম। অনেকটা ধরি মাছ না ছুঁই পানি কায়দায় এই ছবিতে পিরিয়ডকে ক্রিয়েট করা হয়েছে। ছবিতে না আছে ঠিকঠাক আর্ট ডিরেকশন, না আছে ভাল ক্যামেরার কাজ আর না আছে কোনও গভীর গবেষণা। এই ছবি একেবারেই ইতিহাসের সঠিক চিত্রায়ন নয়। অনেকটা আরব্য রজনীতে বাদশাহ হারুন অল রসিদের গল্পগুলোর মত। যার অধিকাংশই কাল্পনিক। ছবিতে ইতিহাসের কিছু কিছু সূচককে আর মুহূর্তকে আবছা ভাবে ব্যাবহার করা হয়েছে। যার মধ্যে কোনরকম অথেন্টিসিটি নেই। অবশ্য থাকতেই হবে এ রকম কোনও কথাও নেই। কারণ এটি একটি ছবি, গবেষণাপত্র নয়।। আর ছবিটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি এ রকম কোনও দাবিও করা হয়নি। তবে আমার মতে, একটা গুরুত্বপূর্ণ পিরিয়ডকে চিত্রায়িত করার ক্ষেত্রে ইতিহাসের প্রতি আরও অনেক বেশি যত্নশীল হওয়া দরকার। নইলে পরিচালকের ওপর ইতিহাস বিকৃতির দায় উঠলে সেটাকে কিছুতেই ঝেড়ে ফেলা যায় না।

d2cXWF1.jpg


ছবির শুরুতেই দেখা যায় যে ১৯৭৩ সালে রাজস্থানের মহারানি গীতাঞ্জলি (ইলিয়েনা ডি'ক্রুজ) তাঁর প্যালেসের এক পার্টিতে সঞ্জীবের (প্রিয়াংশু চট্টোপাধ্যায়) অর্থাৎ, সঞ্জয় গাঁধীর প্রেমের প্রস্তাব নাকচ করে দেয়। যার ফলে সঞ্জীব প্রতিশোধ প্রবণ হয়ে ওঠেন। এবং এমার্জেন্সির সুযোগ নিয়ে গীতাঞ্জলির যাবতীয় লুকনো সোনাদানা আর হিরে-মুক্তোর খাজানা বাজেয়াপ্ত করার চক্রান্ত শুরু করেন। ১৯৭৫ সালে সেই কাজে তিনি সফল হন। আর্মি অফিসার সেহের সিং (বিদ্যুৎ জামওয়াল)-এর তত্ত্বাবধানে আনঅফিসিয়ালি সেই সব সোনাদানা একটি হাইটেক ট্রাকে রাজস্থান থেকে দিল্লিতে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়। আর এখানেই একে একে এন্ট্রি হয় ছবির বাদশাদের, অর্থাৎ হিরোদের। ভবানী (অজয় দেবগন), যিনি একাধারে রানির বডিগার্ড আবার একাধারে রানির গোপন প্রেমিক। সে রানিকে কথা দেয় যে সেই ট্রাক দিল্লি পৌঁছনোর আগেই তারা সেটা লুঠ করে এনে রানিকে ফিরিয়ে দেবে। এই কাজে ভবানীকে সাহায্য করে দালিয়া (ইমরান হাশমি) নামে এক চোর, রানির এক বন্ধু সঞ্জনা (এষা গুপ্ত) এবং তিলকা নামক আর এক চোর (সঞ্জয় মিশ্র)। তারা কি পারবে সেই হাইটেক সিকিউরিটি ভেঙে সোনা লুঠ করতে? তাদের পরিণতিই বা কী হবে? এই নিয়ে খুবই বিরক্তিকর ভাবে ছবির গল্প চলতে থাকে।

CXFxRxV.jpg


ছবিতে কারও অভিনয়ই দাগ কাটে না। অবশ্য অভিনয় করার জন্য ভাল চিত্রনাট্যের প্রয়োজন হয়। যা এই ছবিতে নেই। খুবই দুর্বল চিত্রনাট্য নিয়ে ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। অ্যাকশন ছবি হয়েও ছবির অ্যাকশন সিকোয়েন্সগুলো খুবই নিম্নমানের। দেখলে মনে হবে '৮০-র দশকের কোনও একটা আনস্মার্ট ছবি দেখছি। যেখানে আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে বলিউড অনেক বেশি স্মার্ট এবং এক্সপেরিমেন্টাল হয়ে উঠছে সেখানে এই ধরনের মান্ধাতা আমলের কনসেপ্ট এবং পরিচালনা বিরক্তির উদ্রেক ঘটানো ছাড়া আর কিছুই করে না।

1Jqz0bt.jpg


'বাদশাহো' ছবির একটি দৃশ্যে অজয় দেবগণ ও ইলিয়ানা। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে।

একমাত্র ছবির গানগুলি কিছুটা হলেও বিরক্তি কমায়। ছবিতে তিনটি গান আছে। এর মধ্যে নুসরত ফতে আলি খাঁ সাহেবের সুর দেওয়া এবং গাওয়া 'মেরে রশ্কে কমর' গানটি ছবিতে নতুন ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া ছবিতে সানি লিওনের একটি বোল্ড আইটেম সং আছে। যেটা দেখতে খারাপ লাগে না। ছবির প্রোমোশনের সময় আর ডি বর্মণের সুর দেওয়া বিখ্যাত ছবি 'দিওয়ার'-এর 'কেহ্দু তুমহে' গানটি ব্যাবহার করা হয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে ছবিতে গানটি নেই। ফলে ওভারঅল ছবিতে এমন কিছু নেই যার জন্য অর্থ এবং আড়াই ঘণ্টা সময় নষ্ট করা যায়। ছবিটি নামেই 'বাদশাহো' কিন্তু আদতে ফকির।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top