What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review এই সময়ে দাঁড়িয়ে ‘মুল্ক’-এর মতো ছবি বানানোর সাহস দেখিয়েছেন পরিচালক (1 Viewer)

Starling

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 7, 2018
Threads
775
Messages
12,015
Credits
220,609
Recipe wine
Kaaba
Profile Music
Birthday Cake
t6EEPYF.jpg


মুল্ক

পরিচালনা: অনুভব সিংহ

অভিনয়: ঋষি কপূর, তাপসী পান্নু, রজত কপূর, প্রতীক বব্বর, নীনা গুপ্তা, মনোজ পাহওয়া, আশুতোষ রানা

মুল্ক কোনও মহান ছবি নয়। ছবির পরিচালক অনুভব সিংহ এর আগেও যে ক'টি ছবি বানিয়েছেন সেগুলো মহান ছবি ছিল না। ভাল খারাপ মিলিয়ে কিছু একটা বানিয়েছিলেন। মুল্ক-ও ভাল খারাপ মিলিয়েই। কিন্তু এই ছবিটি তিনি বানিয়েছেন হৃদয় নিংড়ে। আর হৃদয় দিয়ে যে কাজ করা হয় তা মহান না হলেও মানুষের মনে একটা ছাপ রেখে যায়। এটাই এই ছবির শক্তি, তেজ আর ভাল দিক। মুল্ক একটি সিরিয়াস ছবি। ফলে যাঁরা ছবির মাধ্যমে শুধু হালকা মনোরঞ্জন চান তাঁরা ছবিটা না-ও দেখতে পারেন। কিন্তু মনোরঞ্জনের তো অনেক দিক আছে। অনেকে সার্কাস দেখতে গিয়ে মনোরঞ্জন পান, অনেকে লাইব্রেরিতে গিয়ে। তার মানে এই নয় যে একটা ভাল আর আরেকটা খারাপ। পুরোটাই মানুষের ও তাদের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। এই ছবি আপনার মনোরঞ্জন করবে, কিন্তু একটু ভিন্ন ভাবে। মুল্ক একটা সিরিয়াসনেস দাবি করে। আপনি যদি মানসিক ও শারীরিক ভাবে সেটা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকেন তা হলে ছবিটা দেখতে যান। ছবিতে কিছু বক্তব্য, কিছু তর্ক-বিতর্ক উঠে আসবে। সেগুলোর কিছু কিছু আমি লিখব। পুরোটা লিখতে পারব না। কারণ, সব জিনিস লেখা যায় না। সেগুলো উপলব্ধি করার। দেখার পর সেগুলো নিয়ে ভাবতে পারেন।

মুল্ক বেনারসে বসবাসকারী একটি মুসলিম পরিবারের হারানো আত্মসম্মান পুনরুদ্ধারের কাহিনি। সত্য ঘটনা অবলম্বনে নয়। কিন্তু গল্পের প্রতিটি ছত্রে সত্যতা আছে। সেই সত্য আমরা প্রতি মুহূর্তে ফেস করি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অবজ্ঞা করি। কারণ, এই সত্য আমাদের অস্বস্তি দেয়। ছবিটা এই অস্বস্তিকর আয়নার সামনেই আমাদের দাঁড় করিয়ে দেয়। মুরাদ আলি মহম্মদ (ঋষি কপূর) ও তাঁর পরিবার জন্ম থেকে বেনারসের বাসিন্দা। তিনি এক জন সম্মানীয় উকিল। তার ভাই বিলাল মহম্মদ (মনোজ পাহওয়া) এক জন সাধারণ ব্যবসায়ী। বিলালের একটি পুত্র আছে তার নাম শাহিদ (প্রতীক বব্বর) এবং সে এক জন সন্ত্রাসবাদী। সে ইলাহাবাদে একটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় এবং পুলিশের হাতে মারা যায়। কিন্তু পরিবারের বাকিরা এর কিছুই জানে না। তারা ইনোসেন্ট। কিন্তু প্রশাসন আর সরকার এটা প্রমাণ করার চেষ্টা করতে থাকে যে গোটা পরিবারই এই সন্ত্রাসবাদী কাজের সঙ্গে যুক্ত। এবং তার সঙ্গে এটাও প্রমাণ করার চেষ্টা করতে থাকে যে মুসলমান মানেই তাকে সন্দেহের চোখে দেখা উচিত।

আমাদের দেশে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন নৃশংস ঘটনা ঘটছে কিন্তু তার মধ্যে একটি নির্দিষ্ট ধর্মের মানুষদের আমরা অনেক সময় জঙ্গি আখ্যা দিয়ে থাকি। খারাপ মানুষদের প্রতি কোনও সহানুভূতি ছবিতে দেখানো হয়নি, কিন্তু বাকি তর্কগুলো ছবিতে উঠে এসেছে। ছবিটা বলতে চেয়েছে যে, হিংসা ও বিদ্বেষ নয়, পৃথিবী চলে ভালবাসা ও মানবিকতায়। একটা ছবির মাধ্যমে মানুষের চেতনা জাগ্রত হয়ে যাবে এ রকম আশা করা যায় না। অধিকাংশ মানুষের মন একটা বদ্ধ জলাশয়ের মতো। নিজের স্বার্থের বাইরে তারা ভাবতে পারে না। সিনেমা একটা আধলা ইট যা এই বদ্ধ জলাশয়ের মধ্যে পড়লে কিঞ্চিৎ আলোড়নের সৃষ্টি হয়। সিনেমা এটুকুই করতে পারে।

gxlolf4.jpg


ছবির দৃশ্যে তাপসী। ছবি: ইউটিউবের সৌজন্যে।

ছবিতে সবাই খুব ভাল অভিনয় করেছে। কিন্তু তাপসী পান্নুর কথা বিশেষ ভাবে বলতে হয়। ছবিতে তিনি এক জন হিন্দু উকিলের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন যিনি নিজের ধর্ম পরিবর্তন না করে এই মহম্মদ পরিবারের ছেলেকে বিয়ে করেছেন। মহিলারা সাধারণ ভাবে এমনিতেই বেশি আবেগপ্রবণ হন। ছবির কোর্টরুম দৃশ্যগুলিতে তাপসী যে ইমোশনটা দেখিয়েছে সেটা অভিনয় না তাঁর নিজস্ব অনুভূতি তা বলা শক্ত। হয়ত বিষয়গুলো তিনি ভেতর থেকে খুব বেশি করে অনুভব করেছেন। পরিচালক মহাশয়ের কথা আর কী বলব। তিনি এতটাই ইমোশনাল ছিলেন যার ফলে এতটা ঝুঁকি নিয়ে এই সময়ে দাঁড়িয়ে এ রকম একটা বিষয় নিয়ে ছবি বানিয়ে ফেলার সাহস দেখিয়ে ফেলেছেন। এ বার বিভিন্ন ভাবে তাঁর উপর বিভিন্ন ধরনের চাপ আসতে পারে। সে যা-ই হোক। তাঁকে সাধুবাদ। তিনি সংলাপের মাধ্যমে অনেক কিছু বলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কিছু কিছু জিনিস সংলাপে বলা হয় না। সেগুলো থাকে ছবির মননে। তার একটা সারসংক্ষেপ লিখে সমালোচনাটা শেষ করব।

YadK22o.jpg


মুল্ক, অর্থাৎ দেশ মানে কাঁটাতারে ঘেরা একটা ভৌগোলিক এলাকা নয়। দেশ মানে তার জাতীয় পতাকা বা সরকার নয়। দেশ হল তার মধ্যে বসবাস করা লক্ষ-কোটি সাধারণ মানুষ। যে ধর্ম বা ভাষারই হোক না কেন, সেই মানুষ যেখানে খেটে খায়, শ্রম দিয়ে বসত করে, প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে থাকে সেটাই তার দেশ, তার মুল্ক। তাকে সেখান থেকে উচ্ছেদ করা চলে না। আর দেশপ্রেম হল একটি অন্তর্নিহিত স্বাভাবিক অনুভূতি। বাবা-মায়ের প্রতি সন্তানের ভালবাসা যেমন জনে জনে প্রচার করে প্রমাণ করতে হয় না, তেমনই দেশের প্রতি ভালবাসাও মানুষকে অলিতে-গলিতে, রাজপথে, ফেসবুকে চিৎকার করে প্রমাণ করার প্রয়োজন হয় না।
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top