What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected বাবা - চিঠি (1 Viewer)

MOHAKAAL

Mega Poster
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
2,263
Messages
15,953
Credits
1,447,334
Thermometer
Billiards
Sandwich
Profile Music
French Fries
DAEAjdy.png


বাবা - দুর্জয়

প্রিয় বাবা,

পত্রের শুরুতে কলমের আঁচরের অনুলিপে তোমার জন্য রইলো হৃদয় নিংড়ানো সবটুকু অনুভূতির সুপ্ততা। ভালোবাসা মানে কতটা আদর-স্নেহ অথবা যত্নশীলতা, বাবা তোমাকে না দেখলে হয়ত তা দৃষ্টির অগোচরেই থেকে যেত। যদি তোমাদের ঘিরে থাকা আমার নিস্পাপ প্রার্থণা মঞ্জুর হয় তবে স্রষ্টার পরম করুণায় মা এবং তুমি দুজনেই ভালো আছ এবং সেই সাথে ভালো আছে তোমাদের চারপাশ। এ যাবত যতবার কলম ধরেছি শুধু নিজ প্রয়োজন মেটানোর প্রয়াস নিয়েই বসেছি। তুমি অথবা মা'কে নিয়ে কখনো কিছু বলা হয়নি। কখনো প্রকাশ পায়নি হৃদয় কোঠরে মৌ-পোকার মত ভীর করে থাকা অব্যাক্ত কথামালারা। স্বার্থের সন্ধানে চাপা পড়ে আছে সব অনুভূতিরা- শুধু প্রকাশের ভাষা জানা নেই বলে। আজ বোসেছি-

হৃদয়ের সবটুকু অনুভূতি নিংড়ে দেবো বলে।

বাবা তোমাকে বলি,

যখন বা যেদিন থেকে বুঝতে শিখেছি সম্মুখ পৃথিবীর উদ্ভাবনায় আমি এক জীবন্ত আত্মা। আর সেই আত্মার বেঁচে থাকার সমস্ত অবলম্বন যেন তোমার শরীরের প্রতিটা নিঃশ্বাসের বিনিময়ে আসে। জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকার একমাত্র সহযোদ্ধা বাবা তুমি। যেন বিস্তৃর্ণ মরুভূমির তপ্ত বালুকণার মত সকল কঠিনতা তোমাকে কুর্ণিশ করে। ধরণীর সবকুটু সহনশীলতা দিয়েই বুঝি স্রষ্টা তোমায় সৃজন করেছেন একজন প্রতীয়মান বীর স্বরুপ। গ্রীষ্ম-বর্ষা, শীত কী বসন্ত, সবকিছুই যেন তোমার শরীরে মিশে যায় সমুদ্দুরের আনমনা ঢেউগুলো তীর ছুঁয়ে যাওয়ার মত। সন্তানের ক্ষুদ্র প্রয়াস মেটাতে সব ধরণের প্রতিবন্ধকতা যেন বাবার কাছে হার মেনে নেয় অমাবস্যার নিকষ কালো ঘোলাটে অন্ধকারে বুকে চিরে ভেসে উঠা একমুঠো জোৎস্নার স্নিগ্ধতা। তোমার পরশ বুলানো সেই সাহসীকতার সবটুকু প্রাপ্তিই আজ তোমাকে উৎস্বর্গ করে দিলাম। জানো তো বাবা? ছোটবেলায় যখন টাকার দরকার হত, তোমার কাছে দশ টাকা চাইলে তুমি পাঁচ টাকা দিতে। আর সেটা পেয়েই সেই মুহূর্তে আমি সব থেকে বেশি উৎফুল্ল ছিলাম। হাটি হাটি পা পা করে স্কুলের চৌকাঠ পেরিয়ে যখন কলেজে পা রাখি, তখন একশত টাকা চাইলে তুমি একশত টাকাই দিতে। কিন্তু সাথে যোগ করে দিতে "একটু হিসেব কষে খরচ করিস"। এরপরে কলেজের গন্ডি পেরিয়ে গগনচুম্বী স্বপ্ন নিয়ে ভার্সিটির করিডোরে যখন পা রাখি। তখন থেকে তোমার কাছে টাকা চাইলে তুমি শুধু এটাই জানতে চাও " কীসে টাকা পাঠাবে "। জানো তো বাবা? আধুনিকতার ছোঁয়ায় শুধু সমাজ পাল্টায়নি। সময়ের বিড়ম্বনায় আমারও মুড়ে গেছি বহু আগেই। এখন আর কোন হিসেব বা উপদেশ দাওনা। বাবা তুমিও বুঝে নিয়েছ আমি এখন বড় হয়ে গেছি। অনেক বড় হয়ে গেছি তবুও তো সাহস করে বাহিরে থাকার কথা কল্পনায়ও জায়গা দিতে পারনা। বাবা মানে গ্রীষ্মের দুপুরে তপ্ত বালুকায় মাথার উপর এক খন্ড ছায়া। আমার প্রতিটা প্রাপ্তিই নির্দ্বিধায় সাক্ষ্যদেয় এর সবটুকু অবদান তোমার ঘাম ঝড়ানো অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল। যতবার হেরেছি, দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছি, ততবার উঠে দাঁড়িয়েছি তোমার সাহসীকতার সম্বলটুকু পুঁজি করে। আবার যতবার হারতে হারতে জিতে গিয়েছি তাও তোমার শেখানো কৌশলকে পুঁজি করেই জিতেছি। জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার সকল উপকরণ বাবা তোমার থেকেই পাওয়া। কতবার বালিশে মাথা ঠেকিয়ে ভেবেছি তোমার কথা। কতবার ভেবেছি জড়িয়ে ধরে একবার বলবো বাবা তোমাকে প্রচন্ড ভালোবাসি। কিন্তু কখনো বলাই হয়নি সে কথা। পৃথিবীতে সকল বাবারাই নিশ্চুপে সবকিছু সয়ে যান দৃষ্টিশক্তির অগোচরে। সকল বাবাদের ভালোবাসা সবক্ষেত্রে অপ্রকাশিত'ই থেকে যায়। তাই শতবার সামনে গিয়েও লজ্জায় ফিরে এসেছি। কখনো মুখ ফুটে বলতে পারিনি ভালোবাসি বাবা। আজ এই সময় কাগজ-কলমের সেতু বন্ধনে যপে দিলাম। বাবা ভালোবাসি তোমায়…

মা এবার তোমাকে বলি,

মা তোমার মনে আছে? অজস্র দিবস-রজনী পারি দেওয়া আমার সেই নয় মাসের দীর্ঘ যাত্রার কথা। তোমার জঠরের রক্তের ভেতরে ছোট্ট একটা ভ্রণ থেকে তীলে তীলে একটা পুর্ণঙ্গ মানুষ হয়ে ওঠা সে গল্পের কথা। যেখানে ছিলোনা কোন না পাওয়ার আকুতি অথবা অগুন্তক স্বপ্নচারি হওয়ার অপেক্ষায় দিনগোনা। মা তোমার মনে আছে? দীর্ঘ যাত্রা শেষে তোমার অস্তিত্ব থেকে যেদিন আমায় আলাদা করে দিলে। আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছিলো তোমার সেদিনের ভয়াল চিৎকারে। প্রকম্পিত হয়েছিলো ভূবন। অথচ আনন্দের সিমানা ছিলনা তোমার দু'চোখে। সেদিনের পর থেকে প্রকৃতির বাকি নিয়মগুলোর মত আমিও সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে উঠতে থাকি। শৈশব থেকে কৈশোরে যেন না চাইতেই চলে এলাম। যতবার ভেবেছি "আমি কেন কৈশোরে চলে এলাম?" ততবার নতুন করে বুঝতে শিখেছি মানুষের চাওয়া-পাওয়াগুলো তো নৈমিত্তিক ব্যাপার মাত্র। শৈশব থেকে কৈশোর, কৈশোর থেকে বৃদ্ধার কোঠায়। এসব'ই স্রষ্টার চিরায়ত বিধান। তোমাকে ছেড়ে দূরে থাকার অব্যাক্ত ব্যাথারা তিলে তিলে কুঁড়ে খাচ্ছে প্রতিনিয়ত। তোমাকে বলার জন্য কত মান-অভিমান, দুঃখ-কষ্ট, ভালোবাসার এমন সহস্র কথামালারা জমা হয়ে আছে মনের গহীনে। জানো তো মা, নিস্প্রাণ- কনক্রিটের এই শহরে সবকিছু হাতের লাগালে শুধু তুমি বা তোমার মমতাময়ী স্নেহটুকু লাগালের বাহিরে। অসুস্থ হলে এখানে কেউ আপন শিয়রে বোসে শাড়ীর আঁচলে মুখ লুকিয়ে স্রষ্টার কাছে প্রার্থনায় নিজেকে সোপে দেয়না। তুমি হিনা বিবর্ণ এই শহরে আমি বড্ড বেমানান, বড় ক্লান্ত আপন আলয়। তোমার কোলের উষ্ণতায় আর ক'টাদিন থাকতে দাও মা। বলো তো মা, কোন অদৃশ্য জাদুতে বেঁধেছে বিধি তোমার কোল! শত-সহস্র ক্রোশ দূরে থেকেও সে জাদুতে সবাই কাভু। অজস্র শব্দের মিলনমেলায় ঘুড়ে এসেও তোমার কোন উপমা পাইনি। পাইনি তোমার বিকল্প কোন আত্মার অস্তিত্ব। তুমি জননী, তুমি উপমাহীনা এক রমনী। স্বার্থপরের মত তোমার স্তন চুষে শুধু নিজের অস্তিত্ব গড়েছি কখনো তোমাকে বুঝতে চেষ্টা করনি মা। আজও ভাগ নিতে শিখেনি তোমার দুঃখগুলো। তবুও নিশ্চুপে সয়ে গেছো সবকিছু শুধু মমতার দাবানলে নিজেকে পিষতে দিবেনা বলে। তাই তো স্রষ্টা মায়ের চরণ তলে সন্তানের স্বর্গ বেঁধে দিয়েছেন। ক্ষমা করো মা। কারণ তুমি গরবিনী, জম্মেছি তোমার আদলে-তুমি মোর মা…

ইতি

তোমাদের আদুরে ছেলে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top