What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

খুঁজে পাওয়া গেল মাটির নিচের রহস্যময় শহর – দেরিনকুয়ু (1 Viewer)

MOHAKAAL

Mega Poster
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
2,263
Messages
15,953
Credits
1,447,334
Thermometer
Billiards
Sandwich
Profile Music
French Fries
TkkmL9x.jpg


১৯৬৩ সালের ঘটনা। সেসময় প্রাচীন শহর দেরিনকুয়ু সম্পর্কে কারো কিছু জানা ছিল না। একদিন অদ্ভুদভাবে আবিস্কার হয় শহরটি। তুরস্কের কাপ্পাদকিয়া অঞ্চলের এক ব্যক্তি তার পুরনো বাড়ি সংস্কারের কাজ শুরু করেন। তিনি এসময় একদিন তার বাড়ির নিচতলায় একটা দেয়াল ভেঙে ফেলার জন্য আঘাত করে। এতে করে তার পায়ের নিচের মাটি সরে যায়। এবং তিনি নিচে একটা পাতাল কক্ষে পড়ে যায়। চোখের সামনে দেখতে পান একটা সুড়ঙ্গপথ। কৌতুহলবশতঃ তিনি এই সুরঙ্গ পথে প্রবেশ করেন এবং খুঁজে পান হাজার বছরের পুরনো এক শহর, যার পুরোটাই গড়ে উঠেছে মাটির নিচে। পুরো শহরটি ছিলো মোট ১৮ তালা বিশিষ্ট।

দেরিনকুয়ু নামের এই হাজার বছরেরও পুরাতন ১৮ তলা বিশিষ্ট শহরটি। কি হয়েছিল এই শহরের? কেন হারিয়ে গেল কালের গহ্বরে? তাই নিয়ে আজকের বিশেষ আয়োজন।

দেরিনকুয়ু আসলে কী?

কল্পনা করুন তো ২০ হাজার মানুষকে নিয়ে একটা শহর তৈরির কথা, তাও আবার কোনরকম প্রযুক্তির সাহায্য ছাড়াই। বেশ কষ্টকর বলে মনে হচ্ছে তাইতো? আর শহরটা যদি বানাতে হয় মাটির নীচে, তাহলে? অবাক হলেন? ভাবছেন এত কষ্টের একটা কাজ মাটির নীচে কে করবে আর কেনইবা করবে? এসব প্রশ্নের উত্তর কারো জানা নেই তবে সত্যটা হচ্ছে তুরস্কে এমন একটা পাতাল শহর আছে, যার নাম দেরিনকুয়ু।

qGTpjTn.jpg


দেরিনকুয়ু নির্মিত হয়েছিল অনেককাল আগে। শেষ এর ব্যবহার করেছিল নিরাপত্তার খাতিরে লুকোতে চাওয়া কিছু মানুষ। তাও আবার ১৯২৩ সালে। এরপর মানুষের মন থেকে একেবারেই হারিয়ে যায় শহরটি। এর উপরে বাড়িঘর স্থাপনা নির্মিত হতে থাকে। পরবর্তীতে একে খুঁজে পাওয়া যায় ১৯৬০ সালে। সেই থেকে এখনো অব্দি মানুষের মন ও মস্তিষ্কের বিনোদন জুগিয়ে আসছে এই রহস্যময় স্থানটি।

দেরিনকুয়ু কীভাবে নির্মিত হয়েছিলো?

গবেষণা করে দেখা যায়, ৭৮০ থেকে ১১৮০ খ্রিস্টাব্দে বাইজেন্টাইন আমলে এই শহর স্থাপন করা হয়েছে। এই শহরে অন্তত ২০ হাজার মানুষের বসবাস ছিল। এমনটি ধারণা করেছেন গবেষকরা। শুধু তাই নয়, সংরক্ষিত এই শহরের ছবিগুলো দেখে জানা যায়, গৃহপালিত পশু, খাদ্যসহ এই শহরে রান্নাঘর থেকে শুরু করে আস্তাবল, কবরস্থান, গির্জা, কূপ, সামাজিক কক্ষ এবং স্কুল ছিল। অনেক বাংকারের সন্ধান পাওয়া যায়। সম্ভবত এগুলো আরব-বাইজেন্টাইন যুদ্ধ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বাসিন্দারা ব্যবহার করত।

এই প্রাচীন শহরে পাওয়া গেছে গুহার সন্ধানও। যেখানে খ্রিস্টানদের উপাসনালয় ও গ্রিক শিলালিপি রয়েছে। এই শহরে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য প্রায় ৬০০টি প্রবেশপথ রয়েছে। অনুপ্রবেশকারীদের প্রতিহত করার জন্য দেরিনকুয়ু শহরে প্রবেশপথ ভেতর থেকে ভারী পাথরের দরজা দিয়ে বন্ধ করা হতো এবং প্রতিটি তলা আলাদা আলাদাভাবে বন্ধ করা যেত।

কয়েক মাইল দীর্ঘ সুড়ঙ্গের মাধ্যমে এই লুকানো সম্প্রদায়ের অন্যান্য ভূগর্ভস্থ শহরের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। তবে দেরিনকুয়ুর প্রায় অর্ধেক পথ এখন প্রবেশযোগ্য। তারপরও বর্তমানে কাপ্পাদকিয়ায় এই শহর পর্যটকদের কাছে একটি জনপ্রিয় আকর্ষণ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।

শহর সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন: গোরেমে ডট কম থেকে

বর্তমান পরিস্থিতি

তবে দেরিনকুয়ু শহরের প্রায় অর্ধেক পথ এখন প্রবেশযোগ্য। মধ্য আনাতোলিয়ায় এই ঐতিহাসিক অঞ্চল 'রূপকথার ধূমপথ' হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও অবিশ্বাস্য ভূতাত্ত্বিক, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের জন্য দেরিনকুয়ু শহর পর্যটকদের নিকট আকর্ষণীয় স্থান।

যুগের পর যুগ, কালের আসা যাওয়ায় কত মানুষের পদস্পর্শে পড়েছে এই হারিয়ে যাওয়া দেরিনকুয়ু অঞ্চলে। হিট্টাইট সভ্যতার সময় থেকে শুরু করে পারসিয়ান, মহাবীর আলেক্সান্ডার, রোম, বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য, ওট্টোমান সাম্রাজ্য আর এখন তুরস্ক- পুরোটা সময়ের সাক্ষি এই ঐতিহাসিক শহর। সকলেই শাসন করেছেন অনিন্দ্যসুন্দর এই শহরকে।

একশত বর্গমাইল এলাকার মধ্যে ২০০ এর অধিক ভূ-গর্ভস্ত গ্রাম আর তাদের মধ্যে যোগাযোগের রাস্তা নিয়ে, এই গুহাবাসীর সভ্যতা সত্যিই পৃথিবীর ইতিহাস নতুন করে চিনিয়েছে আমাদের।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top