মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে করে সব কিছু ছেড়ে অজানার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ি। পৃথিবীর অদ্ভুত সুন্দর স্থানগুলো ঘুরে ঘুরে দেখি। যদি সত্যিই কোনদিন সেই সুযোগ আসে তাহলে যে যায়গাগুলো অবশ্যই ঘুরে দেখব তার মধ্যে অন্যতম হল অস্ট্রলিয়ার আয়ারস রক বা যাদুর পাহাড় ।
আয়ারস রক বা যাদুর পাহাড়
আয়ারস রক হচ্ছে বিশাল আকৃতির এক পাহাড়। এটি অন্যান্য পাহাড় থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এই পাহাড়টি ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলায়। সকালে এক রঙ দেখবেন তো দুপুরে আরেক রঙ। সন্ধ্যায় বা রাতে দেখবেন পাহাড়ের আরেক রুপ। এই পাহাড়ের নাম আয়ারস রক। মানুষজন এর নাম দিয়েছে যাদুর পাহাড়।
ভৌগলিকভাবে এ আয়ারস রকের অবস্থান অস্ট্রেলিয়ায় নরদার্ন টেরিটোরিতে। যায়গাটিকে সবাই উলুরু নামে চিনে। আয়ারস রক লিখে আপনি যদি গুগলে সার্চ দিয়ে ইমেজ খুঁজে বের করবেন, সত্যি বলছি ২ মিনিটের জন্য আপনাকে থমকে যেতে হবে! কারন প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য থেকে আপনি কোনোভাবেই চোখ সরিয়ে নিতে পারবেননা।
কেন আয়ারস রককে বলা হয় যাদুর পাহাড়
আয়ারস রক পাহাড়টির স্বাভাবিক রঙ লালচে কমলা। কিন্তু সকালে সূর্যের রস্নি পাহাড়ের গায়ে পড়লেই মনে হয় যেন আগুন ধরে গেছে এর গায়ে। বেগুনী ও গাঢ় লাল রঙয়ের বিচ্ছুরন বের হয়ে আসে পাহাড় থেকে। দিনের বিভিন্ন সময় চলে এই রঙ বদলের খেলা।পাহাড়টি যেন রঙ নিয়ে খেলছে। এই রং বদলের কারনেই পাহাড়টিকে সবাই যাদুর পাহাড় বলে অবিহিত করে।
পাহাড়টির রঙ প্রথমদিকে থাকে হলুদ। সেখান থেকে কমলা, পরে লাল ও মাঝে মাঝে বেগুনী আবার কখনও কখনও গুমোট কালো রঙও ধারণ করে। রঙের এই রহস্য যে কাউকেই মুগ্ধ করবে। রহস্যে ঘেরা অদ্ভুত এই পাহাড়টি আসলে সম্পূর্ণ একটি প্রস্তর খণ্ড। এর গঠন কাঠামই অদ্ভুত। সূর্য আলোর আপতন কোণের পরিবর্তনের সাথে পাল্লা দিয়ে ক্ষণে ক্ষণে এই পাহাড়ের রঙ পরিবর্তন হয়।
এই রহস্যের পেছনে কি আছে?
পাহাড়টির রঙ বদলানর রহস্য নিয়ে মতবিরোধ আছে। অনেকে মনে করেন সব রহস্য লুকিয়ে আছে পাহাড়টির ভোউগলিক অবস্থানের উপর। ধারনা করা হয় পাহাড়ের নিচে কোন ম্যাগনেটিক ফিল্ড আছে। যার কারনে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে সূর্যের আলো পাহাড়টিতে পরার সাথে সাথে অবিরাম পাহাড়ের রঙ বদল হচ্ছে। অনেক কল্প কাহিনীও প্রচলিত আছে এই পাহাড় নিয়ে। স্থানীয়রা ভাবেন এই পাহারে এক সময় জাদুকররা বাস করতেন। তারাই যাদু মন্ত্র দিয়ে এমনটি করে গেছে বলে তাদের ধারনা। কিন্তু আসল রহস্য কারো পক্ষেই বের করা সম্ভব হয়নি।
প্রতিনিয়ত অগনিত পর্যটক আসে আয়ারস রক পাহাড়টি দেখতে। তাই পর্যটকদের পরিদর্শনের সুবিধার্থে অস্ট্রেলিয়ান সরকার পাহাড়টির আশেপাশে ৪৮৭ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে মাউন্ট ওগলা ন্যাশনাল পার্ক গড়ে তুলেছে। পাহাড়টিতে ঘুরতে আসা পর্যটকরা মনে প্রানে উপভোগ করেন প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্যকে। আপনার যদি কখনও অস্ট্রলিয়ায় ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ হয়, তাহলে অবশ্যই আয়ারস রক বা যাদুর পাহাড়ের কাছ থেকে ঘুরে আসবেন। অনেক ভাল লাগবে।
ধন্যবাদ। আজ এই পর্যন্তই। আগামিতে নতুন কোন রহস্য নিয়ে হাজির হয়ে যাব আপনাদের সামনে।
আরও বিস্তারিত জানতে পারবেন উইকিপিডিয়া থেকে।