What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review সাউথ কোরিয়ান চলচ্চিত্রঃ সিরিয়াল কিলিং যেখানে শিল্প (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
hMyjP32.png


একটা ক্লাস রুমের কথা চিন্তা করুন। ক্লাসের প্রত্যেকটা ছাত্রই কমবেশি একেক বিষয়ে পারদর্শী। কেউ ইতিহাস ভালো জানে, কারো দক্ষতা সাহিত্যে, কেউ দারুণ ছবি আঁকে। কিন্তু এদের মধ্যে একজন ছাত্র বেশ আলাদা, তার দক্ষতাও সবার চেয়ে ভিন্ন ধাঁচের। তার নাম সাউথ কোরিয়া, আর তার পছন্দের বিষয়? সিরিয়াল কিলিং।

সমুদ্র থেকে এক আঁজলা জল তুলে নিলে যেমনটি হয়, ঠিক তেমন করেই মোটে ৫ টি কোরিয়ান চলচ্চিত্রের কথা জানাচ্ছি এই লেখায়।

মেমোরিস অফ মার্ডার (২০০৩)

কোরিয়ান চলচ্চিত্র জগতেই শুধু নয়, ক্রাইম জনরার ছবির ইতিহাসে অন্যতম নিখুঁত, নান্দনিক এবং অনন্য চলচ্চিত্র এই 'মেমোরিস অফ মার্ডার'। এই ছবির গাঁথুনি থেকে সিনেমাটোগ্রাফি এতই আকর্ষণীয় যে মুক্তির ১৬ বছর পরেও এর আবেদন ফুরায়নি এতটুকু। সিরিয়াল কিলিংয়ের আদি অকৃত্রিম নৃশংসতার পাশাপাশি প্রশ্নবিদ্ধ তদন্তের আদ্যোপান্ত –সবটাই এসেছে বং জুন–হোর সেলুলয়েডে।

১৯৮৬–৯১ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ায় ঘটে যাওয়া রহস্যজনক ক্রমিক খুন ও ধর্ষণের সত্য ঘটনা অবলম্বনে ছবিটি তৈরি হয়। সিরিয়াল কিলার জনরার মাস্টারপিস ছবিটিতে উঠে এসেছে কোরিয়ার প্রথম স্বীকৃত সিরিয়াল কিলিংয়ের কাহিনী, এর তদন্ত, কর্মীদের অসহায়তা, ফরেনসিক ও অন্যান্য বিভাগের সীমাবদ্ধতা। ৬ বছরে ১০ জনেরও বেশি নারীকে একই উপায়ে ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যা করে কে বা কারা। উল্লেখিত কেসটি আজ অব্দি সমাধান করা সম্ভব হয়নি। ছবি মুক্তির পরপর একই উপায়ে দুয়েকটি খুনের আলামত পাওয়া যায়। যার ফলে সেই খুনির জীবিত থাকার সম্ভাবনা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।

দি চেজার(২০০৮)

কোরিয়ান সিরিয়াল কিলার ইও ইয়ং চুলকে কেন্দ্র করে 'দি চেজার' দিয়ে পরিচালক হিসেবে ক্যারিয়ারের সূচনা করেন না হং–জিন। সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা জুং হো স্রেফ টাকার স্বার্থেই যৌন কর্মীদের দালালির ব্যবসায় নেমে পড়েন। ক্রমে আবিষ্কার করতে থাকেন, অনেক কর্মীই হারিয়ে যাচ্ছে। সেই তদন্তে নেমেই টের পান সিউল শহরে বাস করছে এক ভয়ংকর সিরিয়াল কিলার। কিন্তু তাকে ধরার উপায় কী? আর প্রমাণই বা একাট্টা করবেন কীভাবে?

হা জং–উ ও কিম ইউন–সিক প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন। মাত্র ২.৬ মিলিয়ন ইউএস ডলারে নির্মিত এই ছবি ৩৫.৮ মিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করে। ব্লু ড্রাগন, বুসানসহ নামজাদা বিভিন্ন ফেস্টিভ্যালে উল্লেখসংখ্যক পুরস্কার পায়ও এটি।

NXwKrMP.jpg


সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত 'দি চেজার'; Image Source: Movie Links BD

আওয়ার টাউন (২০০৭)

শহরজুড়ে আচমকাই খুনের প্রকোপ! বিভিন্ন স্থানে ঠিক একই প্যাটার্নে দেখা যাচ্ছে ঝুলন্ত নারীদের লাশ। সেই রহস্যের কিনারা করতেই মাঠে নামে কল্পকাহিনী লেখক ওহ মান– সিউক এবং তার গোয়েন্দা বন্ধু জায়ে–সিন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি রহস্যের কিনারা মিলবে? নাকি সিউকের গোটা আশঙ্কাই ভুল? প্রশ্নের উত্তর মিলবে 'আওয়ার টাউন' ছবিতে।

কান, ভেনিস ও বার্লিনে তিনটি সেরা চলচ্চিত্র উৎসবেই একমাত্র কোরিয়ান অভিনেতা হিসেবে উপস্থিত থাকার অনন্য সম্মানের অধিকারী লি সুন–কিউন আছেন এই ছবিতে।

dBPDglK.jpg


বক্স অফিসেও দারুণ সফল 'আওয়ার টাউন' ছবিটি; Image Source: Pinterest

আই স দ্য ডেভিল(২০১০)

ঘটনার সূত্রপাত তুষারাবৃত এক রাতে। যৌনবিকারগ্রস্ত জ্যাং কিউন চুল পেশায় একজন গাড়িচালক। সেই রাতে তুষারে আটকে পড়া এক নারীকে সাহায্যের আশ্বাসে প্রথমে ধর্ষণ ও পরে হত্যা করে সে। তবে এতেই শেষ নয়, তার দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে চরম পৈশাচিকতার প্রমাণ দেয়। ঘটনাক্রমে সেই নারী ছিল ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের কর্মী কিম সু হিউনের বাগদত্তা। বাগদত্তার খুনের প্রতিশোধে মরিয়া হয়ে তদন্তে নামে কিম।

এখানেই আসে চমক। জ্যাং চুলের পরিচয় বের করতে গিয়ে কিমের হাতে আসে আরও অনেক খুন ও ধর্ষণের আলামত। প্রতিটি খুনের মূল কারণই জ্যাংয়ের যৌন লালসা ও বিকৃত মানসিকতা। ছবিটিতে সিরিয়াল কিলার জ্যাংয়ের চরিত্রে আছেন তারকা চই মিন–সিক এবং কিমের চরিত্রে আছেন সুদর্শন লি বিউং–হুন। ছবিতে রক্তপাত ও ভায়োলেন্সকে এতটাই খোলামেলা ভাবে দেখানো হয়েছে যে কোরিয়া মিডিয়া রেটিং বোর্ড এর পরিচালক কিম জং উনকে দুইবার কাটছাঁটের নির্দেশ দেয়। বেশ অনেকখানি ছেঁটে ফেলার পরেও 'রেস্ট্রিকটেড' তকমা এঁটে থাকে এর গায়ে। আমেরিকা ভিত্তিক ম্যাগাজিন 'রোলিং স্টোনে'র সর্বকালের ভয়ংকরতম ২০ চলচ্চিত্রে'র তালিকায় আছে এই ছবিটি।

সমালোচকদের পাশাপাশি বক্স অফিসেও ব্যবসা করে বাজেটের দ্বিগুণ ১২.৮ ইউএস ডলার ঘরে তোলে ছবিটি। বলিউডের 'এক ভিলেন' ছবিটি এরই রিমেক।

mgk8j2H.jpg


ক্রমিক খুনের পৈশাচিক ব্যাপারগুলোই উঠে এসেছে চই মিন-সিকের চরিত্রে; Image Source: Amazon

মেমোইর অফ এ মার্ডারার (২০১৭)

বুমেরাংয়ের মতো যদি জীবনের এক কালো অধ্যায় আপনার জীবনে ফিরে আসে? কী করবেন আপনি? ছুটে পালাবেন নাকি মুখোমুখি লড়বেন?

সে দোটানা নিয়েই সাবেক সিরিয়াল কিলার কিমগ বিউং–সুর এই কাহিনী। আলঝেইমারের কবলে সব স্মৃতি মুছে যায় এই খুনির। কিন্তু একসময় সে আবিষ্কার করে তার মেয়ে ইউন হির প্রেমিকও এক সিরিয়াল কিলার। তার মানে কি ইউন হিও সম্ভাব্য ভিক্টিম?

শেষে এক দারুণ প্লট টুইস্ট দিয়ে শেষ হয় ২০১৭ এই সাড়া জাগানো ছবিটি। কিম ইউন–হা'র A Murderer's Guide to Memorization বই অবলম্বনে ছবিটি নির্মাণ করেন 'দি সাসপেক্ট' খ্যাত ওন শিন–ইউন।

QIpS1aE.jpg


'Don't trust your memory' – এই সংলাপই বলে দেয় গোটা মুভির কথা; Image Source IMDb

সিরিয়াল কিলিং ঘরানাকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে সাউথ কোরিয়ানরা। সিরিয়াল কিলিং বা ক্রমিক খুন নিয়ে তাদের যত চলচ্চিত্র আছে সে তুলনায় অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রি নাবালকই। 'হ্যানিবল', 'পারফিউম', 'সাইকো', 'দ্য সাইলেন্স অফ দ্য ল্যাম্বস'এর মতো হলিউডি ছবি সিরিয়াল কিলিং ঘরানাকে জনপ্রিয় করে তুললেও এই ঘরানার সেরা উপহারগুলো যে কোরিয়ানদের হাত ধরেই এসেছে– তা এড়িয়ে যাবার জো নেই।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top