স্মার্টফোন বর্তমান সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কোন ব্যবহারকারীর কাছে। কারণ ফোনে অনেক ব্যক্তিগত তথ্য থাকে। ফোনটি অন্য কারো হাতে পড়লে ঝামেলায় পড়তে হতে পারে। এছাড়াও রয়েছে ম্যালওয়্যার ও ভাইরাসের আক্রমণ ঝুঁকি। কম্পিউটারের পাশাপাশি এ আক্রমণের শিকার হচ্ছেন অনেকেই। একবার কোনোভাবে ফোনে ম্যালওয়্যার আক্রমণ করলে আর রক্ষা নেই। হারিয়ে যেতে পারে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য। তাই আক্রান্তের আগেই মাত্র পাঁচটি বিষয়ে সর্তক থাকলেই রক্ষা করা যাবে তথ্য, নিরাপদ রাখা যাবে ফোন।
স্ক্রিন লক ব্যবহার করা
স্মাটফোন নিরাপদে রাখার প্রাথমিক ধাপ হলো স্ক্রিন লক ব্যবহার করা। ফোনের সেটিংস থেকে স্ক্রিন লক করা যায়।স্ক্রিন লক করতে প্রথমে ফোনের সেটিংস অপশনে যেতে হবে। তারপর 'security' অপশনে গিয়ে কোন পদ্ধতিতে ফোনটি লক করতে চান সেটি নির্বাচন করতে হবে।সাধারণ পিন, পাসওয়ার্ড, প্যাটার্ন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ফেইস রিকগনিশন ইত্যাদি অপশন থেকে তা বেছে নিতে হবে। এরপর পছন্দমত অপশনটিতে ক্লিক করে পাসওয়ার্ড, ফেইস রিকগনিশন বা ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে তা সেইভ করতে হবে। তাহলে ফোনের স্ক্রিন অফ হওয়ার পরে তা চালু করতে প্রতিবার নির্ধারিত পাসওয়ার্ড বা ফিঙ্গারপ্রিন্টটি দিতে হবে।
ফোল্ডার, গুরুত্বপূর্ণ ফাইল, ছবি ও ভিডিও লক রাখা
স্মার্টফোনে ব্যক্তিগত অনেক ফাইল, ছবি ও ভিডিও থাকে। অন্যের হাতে সেগুলো পড়লে অসুবিধা হতে পারে। তাই নিরাপত্তার কথা ভেবে ফোনে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলো লক করে রাখা ভালো।সাধারণত অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসগুলোতে ডিফল্টভাবে ফাইল লকের ব্যবস্থা থাকে না। সেজন্য গুগল প্লেতে থার্ড পার্টি অনেক অ্যাপ রয়েছে। সেগুলো দিয়ে ফোনের ফাইল লক রাখা যায়। তেমনি একটি অ্যাপ হল 'ফোল্ডার লক'। অ্যাপটি এই ঠিকানা থেকে ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যাবে। ইন্সটলের পর অ্যাপটি চালু করলে একটি পাসওয়ার্ড দিতে হবে। তারপর অ্যাপে প্রবেশ করে কোন ফাইলগুলো লক করতে রাখতে চান তা নির্ধারণ করে দিতে হবে। এছাড়া ফোনে কোন অ্যাপ লক করে রাখতে চাইলে 'অ্যাপলক' নামক অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারেন।
অজানা সোর্স থেকে অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল বন্ধ রাখা
কোনো অ্যাপ্লিকেশন ডিভাইসে ইন্সটলের আগে মনে রাখতে তা যেন গুগল প্লে থেকে সরাসরি ইন্সটল করা হয়। এতে ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার আক্রান্তের হাত থেকে অনেকাংশে রক্ষা পাওয়া যায়।আবার অনেক সময় কিছু ম্যালওয়্যার স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফোনে ইন্সটল হতে চায়। এটি বন্ধ করতে অজানা সোর্স থেকে অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল বন্ধ রাখতে হবে।এ জন্য প্রথমে ফোনের সেটিংস অপশনে যেতে হবে। এরপর 'security' অপশনে ক্লিক করতে হবে। সেখান থেকে 'unknown sources' অপশনটি চালু থাকলে অফ করে দিতে হবে। তাহলে যে কোনো অজানা সোর্স থেকে অ্যাপ্লিকেশন সারাসরি ইন্সটল হবে না।
অজানা ওয়াইফাই সংযোগ ব্যবহার না করা
কোথায় বেড়াতে গিয়ে বা কোনো শপিং মলে কেনাকাটা করতে গিয়ে ফ্রি পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহারের আগে সতর্ক হতে হবে। এমন পাবলিক ওয়াইফাই থেকে হ্যাকিং বা ম্যালওয়্যার আক্রান্তের শিকার হতে পারে আপনার ডিভাইস। সাইবার অপরাধীদের অনেকে ফ্রি এমন সংযোগের মাধ্যমে হ্যাকিং বা ভাইরাস ছাড়ানোর কাজটি করে থাকে। তাই অজানা কোনো ওয়াইফাই সংযোগের সঙ্গে ফোন যুক্ত করা উচিত নয়।
চোরের হাত থেকে তথ্য বাঁচাতে
স্মার্টফোনের এই যুগে দামি মোবাইল ফোনের ব্যবহার বাড়ছে। এত দামি ফোন চুরি হলে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি প্রিয় জিনিস হারানোর কষ্ট মনে বাজে। সঙ্গে পোহাতে হয় নানান সমস্যা। ভয় থাকে ফোনে জমানো তথ্য বেহাত হওয়ার। এ অবস্থা থেকে ফোনটি নিরাপদ রাখতে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ম্যানেজার ব্যবহার করুন।অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ম্যানেজার (Android Device Manager) দিয়ে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের লোকেশন বের করা যায়। অর্থাৎ মোবাইল ফোন যদি চুরি হয় তাহলে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ম্যানেজারের সাহায্যে মোবাইলের বর্তমান লোকেশন বের করা সম্ভব। এ জন্য গুগল সেটিংস মেনুতে গিয়ে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ম্যানেজার অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে। তারপর remotely locating, locking and resetting your phone এই বক্সেগুলোতে চেক করে দিতে হবে।অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন দিয়ে ট্রেস করা স্থান বা হারানো ফোনটি খুঁজে বের করার জন্য প্রথমে Android Device Manager site এ গুগল আইডি দিয়ে লগ ইন করতে হবে। সেখানে আপনার সকল ডিভাইস প্রদর্শন করবে যেগুলো এ আইডি দিয়ে আপনি ব্যবহার করছেন। প্রতিটি ডিভাইসে ক্লিক করলেই গুগল ম্যাপে লোকেশন দেখতে পারবেন। আর হ্যাঁ অবশ্যই ফোনে ইন্টারনেট থাকতে হবে।আরও কিছু অপশন রয়েছে-যেমন নতুন লক কোড সেট করা, ৫ মিনিট ফুল ভলিউমে মোবাইল বাজানো হোক সেটা সাইলেন্ট মুড এবং সেটের সকল ডাটা মুছে দেওয়া। তবে থার্ড পার্টি অ্যাপসগুলোতে আরও অনেক ফিচার রয়েছে।অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল যদি অফলাইন মুডে থাকে বা পাওয়ার বাটনের মাধ্যমে সুইচ অফ করে দেওয়া হয় তাহলে এ পদ্ধতিগুলো কাজে আসবে না। তবে মোবাইল অন করার পর আপনি নোটিফিকেশন পেতে পারেন। আর ডেটা যখন মুছে ফেলবেন তখন আর কোনো ট্রেসিং ফলাফল পাবেন না। আর এ ক্ষেত্রে মোবাইল মেমরিই শুধু মুছে যাবে রিমোটলি-মেমরি কার্ডের ফাইল মুছবে না।