What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ভাইরাস ‘বোমার’ ভিলেন যখন বাদুর! (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
n2mGgtd.jpg


রাণঘাতী ভাইরাস বহনকারী বাদুর

উঁচু উঁচু গাছের মগডালে দিনের বেলা উল্টো হয়ে ঝুলে থাকা নিশাচর প্রাণী বাদুড়। আপাতদৃষ্টিতে খুব নিরীহ মনে হলেও বাস্তবে এরা নভেল করোনাভাইরাস, সার্স, মার্স, মারবার্গ, ইবোলা, হেন্দ্রা, নিপাহর মতো প্রাণঘাতী ভাইরাসসহ ১৩০টিরও বেশি প্রজাতির ভাইরাস বহন করতে পারে। এখন প্রশ্ন হতে পারে, বাদুড়ের ভেতর এত পরিমাণ ভাইরাস আসে কী করে? এর উত্তর হলো, বাদুড়ের প্রজাতির সংখ্যার আধিক্য, উড়তে পারার সক্ষমতা, জীবনাচার ও খাদ্যাভ্যাস।

পৃথিবীর মোট স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে বিশ শতাংশই হলো বাদুড়, প্রজাতির সংখ্যার দিক থেকে যার পরিমাণ তের'শর চেয়েও বেশি। আকাশে উড়তে সক্ষম পৃথিবীর একমাত্র স্তন্যপায়ী প্রাণী বাদুড় বরফাচ্ছাদিত এন্টার্কটিকা মহাদেশ ছাড়া বাকি সব মহাদেশেই বিদ্যমান। বাদুড় আকাশে উড়ে অনেক দূরত্বের পথ অতিক্রম করতে পারে। এমন কিছু প্রজাতির বাদুড় রয়েছে যারা এক হাজার কিলোমিটারের বেশি পথও পাড়ি দিতে পারে। তাই উড়তে পারার এই সক্ষমতার কারণে বিভিন্ন প্রজাতির বাদুড় একে অপরের কাছাকাছি আসার সুযোগ পায় এবং একত্রে বিশাল কলোনী আকারে দলবদ্ধ হয়ে বসবাস করার বৈশিষ্ট্যের কারণে তাদের মধ্যে নানা রকমের ভাইরাসের আদান-প্রদানের সুযোগও তৈরি হয়।

dBYPBWH.jpg


গাছের ডালে উল্টো হয়ে ঝুলে আছে বাদুড়।

এছাড়াও বাদুড় অসংখ্য পোকামাকড় খেয়ে বেঁচে থাকে যাদের ভেতর থেকেও নানা রকম ভাইরাস বাদুড়ের ভেতর চলে আসে। ভাইরাসের জন্য সহায়ক বাদুড়ের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো তার দীর্ঘ আয়ু। একটি বাদুড়ের আয়ু প্রায় ৩০ বছরের বেশি হয়, যা দীর্ঘ সময় ধরে ভাইরাসের বাহক হিসেবে কাজ করার পক্ষে সহায়ক। তাহলে এখন প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক, বাদুড় এত সব প্রাণঘাতী ভাইরাস বহন করলেও নিজে কেন সেগুলোতে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় না? এর উত্তর হলো, বাদুড়ের বিশেষ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, যা সে অর্জন করেছে বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় উড়তে পারার সক্ষমতা অর্জন করতে গিয়ে, এবং একইসাথে দীর্ঘকাল ধরে ভাইরাসের সাথে সহ-বিবর্তিত হতে গিয়ে।

tiSSmov.jpg


কলাগাছে কলা খাওয়ার জন্য বাদুরের অপেক্ষা।

দীর্ঘদিন ধরে ভাইরাসের সাথে সহ-বিবর্তিত হতে গিয়ে বাদুড়ের অন্তর্নিহিত রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এমনভাবে গঠিত হয়েছে যে, বাদুড়ের দেহে বেশি পরিমাণে 'ইন্টারফেরন' এবং কম পরিমাণে 'প্রদাহ সৃষ্টিকারী সাইটোকাইন' এর উপস্থিতি দেখা যায়। এই ইন্টারফেরনের আধিক্য বাদুড়কে যেকোনো নতুন আরএনএ ভাইরাসের আক্রমণ থেকে খুব দ্রুত সুরক্ষা দিতে পারে এবং কম পরিমাণে প্রদাহ সৃষ্টিকারী সাইটোকাইনের উপস্থিতি বাদুড়কে ভাইরাসের উপস্থিতিতে নিজ দেহে প্রদাহ সৃষ্টি করা থেকে বিরত রাখে। একইসাথে ডিএনএ ভাইরাসের প্রতি বাদুড়ের 'দুর্বল ডিএনএ সেন্সিং' এর বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা গেছে। দুর্বল ডিএনএ সেন্সিং এর অর্থ হলো ডিএনএ এর উপস্থিতিকে এড়িয়ে যাওয়া এবং এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবার চেষ্টা না করা।

বাদুড়ের দেহে এই দুর্বল ডিএনএ সেন্সিং এর কৌশল বাদুড়ের উড়তে পারার সক্ষমতার কারণেই সৃষ্টি হয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন। কেননা ওড়ার সময় অতিরিক্ত বিপাকীয় ক্রিয়ার ফলে বাদুড়ের দেহে কিছু ডিএনএ নষ্ট হয়ে সাইটোসলে ঘুরে বেড়ায়, যেগুলোর প্রতি বাদুড়ের প্রতিক্রিয়া দেখাবার কথা থাকলেও বিবর্তনীয় প্রক্রিয়ায় অর্জিত দুর্বল ডিএনএ সেন্সিং কৌশলের কারণে বাদুড় এদের উপস্থিতিকে এড়িয়ে চলে। অর্থাৎ, ডিএনএ ভাইরাসকে বাদুড় নিজেদের শত্রু হিসেবেই চিনতে পারে না। আর এই চিনতে পারার অক্ষমতাই বাদুড়ের জন্য শাপে বর হয়েছে।

OTbMvxT.jpg


নিপাহভাইরাস সৃষ্টিকারী বাদুর।

বাদুড়ের দেহের এই বিশেষ রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার কারণে ভাইরাসগুলো বাদুড়ের দেহের ভেতর খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারে না। তাই তাদের অন্য পোষক দেহে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা দেখা যায় এবং দীর্ঘদিন বাদুড়ের মধ্যে একপ্রকার চাপে থাকার কারণে নতুন পোষক দেহে প্রবেশ করার পর ভাইরাসগুলোর তীব্র রোগ সৃষ্টি করতে দেখা যায়। তবে উঁচু গাছে বসবাস এবং নিশাচর জীবনযাপনের কারণে বাদুড়ের সাথে অন্যান্য প্রাণীর খুব ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ হবার কথা না থাকলেও বর্তমানে মানবসৃষ্ট পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে বাদুড়ের আবাসস্থল বিনষ্ট হওয়ায় বাদুড়ের সাথে অন্যান্য প্রাণীর সংস্পর্শ দিন দিন বেড়ে চলেছে। ফলে বাদুড় থেকে অন্যান্য প্রাণী এমনকি মানুষের মধ্যেও ভয়াবহ রোগগুলো ছড়িয়ে পড়ছে।

সুতরাং, ভাইরাসকে সহ্য করতে পারার বাদুড়ের এই বিশেষ সক্ষমতা নিয়ে বিজ্ঞানীদের আরো গভীরভাবে গবেষণা করা প্রয়োজন। কেননা, এখান থেকেই বের হয়ে আসতে পারে এমন কোনো কৌশল, যা হয়তো ভবিষ্যতে মানুষের নিজেদের রোগবালাই নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তথ্যসূত্র: রোরবাংলা।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top