What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Self-Made কুড়িয়ে পাওয়া প্রেমের আহ্বান (1 Viewer)

dukhopakhi

Global Moderator
Staff member
Global Mod
Joined
Mar 3, 2018
Threads
98
Messages
10,961
Credits
103,626
LittleRed Car
Camera photo
T-Shirt
Thermometer
Glasses sunglasses
Strawberry
কুড়িয়ে পাওয়া প্রেমের আহ্বান - ১




কলেজে এক সপ্তাহের ছুটি থাকায় গিয়েছিলাম ফুলতলায় (খুলনা) নানিবাড়িতে (নানাকে কখনো দেখিনি, তাই নানাবাড়ি আর বলা হয়ে উঠেনা)। ফিরে এসে ঘরে ঢুকে কাপড় পালটে হাত মুখ ধুয়ে বিছানায় শরীরটা একটু এলিয়ে দিলাম। সেমি লোকাল বাসে করে ফুলতলা থেকে যশোর বকচরে আসতে প্রায় এক ঘন্টা সময় লাগে। কিছুক্ষন গড়াগড়ি করতেই খালাতো ভাইয়ের গলা পেলাম "ভাইয়া আম্মু ডাকছে"। আলসেমি ঝেড়ে ফেলে খালার ঘরের দিকে পা বাড়ালাম।

আমার সম্বন্ধে বিস্তারিত বলে নেই, আমার নাম রিয়েল, যশোর পলিটেকনিকের পঞ্চম পর্বের (তৃতীয় বর্ষ) ছাত্র। পড়ালেখার কারনে বর্তমানে যশোরে অবস্থান করছি। পৈত্রিক ভিটা খুলনাতে, তবে আপাতদৃষ্টিতে স্থায়ী নিবাস ঢাকাতে। সেই ১৯৮৬ সালে বাবা আমাদেরকে নিয়ে ঢাকাতে শেকড় গাড়েন। তারপর শুধু বছরে একবার সর্বোচ্চ ৫-৭ দিনের জন্য খুলনাতে আসা হতো। ২০০১ এ যশোর পলিটেকনিকে ভর্তি হওয়ার সুবাদে এখন আমি একাই যশোরে অবস্থান করছি। পলিটেকনিকে ভর্তি হওয়ার পর প্রথম বছর দেড়েক হোস্টেলেই ছিলাম। হোস্টেলের খাবার এর মান ভালোনা এবং কলেজের কাছেই খালার বাসা থাকাতে ও খালার তীব্র আপত্তিতে অবশেষে হোস্টেল ত্যাগ করি। খালার বাসায় দুটো ঘর। একটাতে খালা-খালু থাকেন, আরেকটাতে দুই খালাতো ভাই রেজা ও রাহাত (যথাক্রমে ১২ ও ১১ বছর বয়সী) থাকে। যেহেতু দুটোই যথেষ্ট বান্দর তাই সিদ্ধান্ত হলো, খালার ফ্ল্যাটের লাগোয়া ফ্ল্যাটে একজন ৩২/৩৩ বছর বয়সী ব্যাক্তি একাই থাকেন যিনি কিনা একটি ওষুধ কোম্পানির আঞ্চলিক প্রধান হিসেবে কর্মরত, তার দুই রুমের একটি আমি ভাড়া নিয়ে থাকবো। খালার ফ্লাট আর আমাদের ফ্ল্যাটের মাঝে একটি ষ্টীলের দরজা আছে, যেটা দিয়ে খুব সহজেই খালার বাসায় যেতে পারতাম। ফলে আলাদা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে একই ফ্ল্যাট মনে হয়। দরজাটা সব সময় তালা দেওয়া থাকে, প্রয়োজন হলেই রেজা অথবা খালা দরজা খুলে দেয়। এখানে পাড়ার ভিতরে আমি ঘোরাফেরা করিনা বলতে গেলেই চলে। শুধু মসজিদে যাই নামাজ পড়তে, আর কোন কিছু কেনার প্রয়োজন হলে তখন পাড়ার দোকানে যাই। তবে মাঝেমধ্যে খালা আর রেজার পিড়াপীড়িতে রাহাত আর রেজার সাথে একটু হাটতে বের হই। তবে সেটা খুবই কম সময় আর যতক্ষন হাটি মাথা নিচু করে মাটির দিকে তাকিয়ে হাটি। একারনে প্রায়ই রেজা আর ওর বন্ধুরা ঠাট্টা করে আমাকে বলে "ভাইয়া সামনে পিলার আছে গুতো খেয়ে পড়ে যাবেন তো" অথবা "ভাইয়া পুকুরে পড়ে যাবেন, একটু মাথা তুলে হাটেন" এমন আরো অনেক। তবে একারনে ভেবে বসেননা যে আমি আড্ডা দেইনা, একেবারে ফিডার খাওয়া ধরনের শান্ত আর ভদ্র। আমি আড্ডা দিতাম যশোর কমার্শিয়াল কলেজের মাঠে অথবা আমার কলেজের আশেপাশে বন্ধুদের সাথে। আরম বাঁদরামিও যা করার ঐ এলাকাতেই করতাম। বকচরে আসলে আমি একেবারেই অমায়িক শান্ত এক মাটির মানুষ।

নিজের সম্বন্ধে বলতে গিয়ে অনেক সময় নষ্ট করে ফেললাম। এবার আসল কথায় আসি। রেজা দরজা খুলেই দাঁড়িয়ে ছিলো, আমি আসতেই আমাকে দেখে মুচকি মুচকি হাসছে। দেখে কিছুটা সন্দেহ হলো, খালা কি কোন বিশেষ কারণে আমাকে ডেকেছেন নাকি! আমি আবার কি করলাম!!
কিরে রেজা, তুই হাসছিস কেন? কি হইছে!
না ভাইয়া কিছু হয়নি।
মিথ্যা কথা বলছিস কেন? তোর হাসি ই তো বলে দিচ্ছে কিছু না কিছু হয়েছে। কি ব্যাপার রে! আমার কলেজ থেকে কেউ আমার খোজে আসছিলো নাকি? (কলেজে আমার একটি বিশেষ নাম প্রচলিত ছিলো, আশঙ্কা করছিলাম কেউ আবার বদমায়েশি করে বাসায় এসে সেই নামে ডাক দিয়েছিল কিনা)
না ভাইয়া কেউ আসেনি আপনার খোঁজে। আম্মু এমনি আপনাকে ডাকছে মনেহয়।
খালা এমনি ডাকছে ঠিক আছে, কিন্তু তোর হাসি বলে দিচ্ছে যে তুই এমনি হাসছিস না। কি ব্যাপার খুলে বলতো।

এই রেজা রিয়েল কি করছে রে? এতক্ষণ লাগে ওর এই ঘরে আসতে! (খালা চিৎকার করে উঠলেন)

আমি আর কাল বিলম্ব না করে খালার ঘরে ঢুকলাম। খালা বসতে বলে নানি আর ছোট খালার বিষয়ে খোঁজ খবর জানতে চাইলেন। আমিও মনে মনে হাপ ছেড়ে বাচলূম যে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু হয়নি। খালার সাথে কথা বলছি আর এরই মাঝে খেয়াল করলাম যে, বাড়িওয়ালার ছেলে আইনুল আর পাশের বাসার রিয়াজ জানালার সামনে দিয়ে ঘুরাফেরা করছে আর আমার দিকে আড় চোখে তাকিয়ে হাসছে আর দুজনে কি নিয়ে যেন কানাঘুষা করছে। রেজার রহস্যময় হাসি, আবার এদের দুইজনের আড়চোখের চাহনী ও হাসি আমার মনের মধ্যে সন্দেহ আরো বাড়িয়ে দিল। না পেরে খালাকে বলেই ফেললাম-
খালা রেজা আর ওর বন্ধুরা মিলে মনেহয় আমার বিরুদ্ধে কোন দুষ্টুমির ফাঁদ পাতছে।
কেন কি হইছে! কি করছে আবার রেজা? এই রেজা কি হইছেরে!!
রেজা দৌড়ে এসে বলল "কি হইছে আম্মু"
আমি সাথে সাথে বললাম, খালা এখনো কিছু হয়নি। তবে রেজা দরজা খুলে দেওয়ার সময় আমাকে দেখে দুষ্টুমির হাসি দিচ্ছিলো। কিন্তু জিজ্ঞেস করার পর কিছুই বললোনা।
বাহ আমি কি একটু হাসতেও পারবোনা!! যত্তোসব। (বলেই রেজা পালালো)
কি জানি কোন মতলব করতেছে আবার। কিছু করলে ওর আমি ঠ্যাং ভেঙ্গে দিব। (খালা বললেন)
খেয়াল করে দেখছেন খালা? আপনার সাথে যখন কথা বলতেছিলাম তখন আইনুল আর রিয়াজ জানালা দিয়ে আমাকে দেখে হাসছিলো আর কি জানি কানাকানি করছিলো।
আচ্ছা আমি ওদের ডেকে জিজ্ঞেস করে দেখবো। তুই যা, গোসল করে নামাজ পড়ে এসে খেয়ে নে। একটা বাজতে গেলো প্রায়।

আমি আর দেরি না করে আমার ঘরে চলে আসলাম। রেজা দরজা লাগানোর সময় ওর দিকে কটমট করে তাকিয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ। ওমা! এতে দেখি ওর মজা যেন আরো বেড়ে গেলো। আমার দিকে তাকিয়ে ও আরো গভীর দুষ্টুমির হাসি নিক্ষেপ করলো। আমি কিন্তু এবার ভীষণ চিন্তায় পড়ে গেলাম। রহস্য নিয়ে ভাবতে ভাবতে কাপড় আর গামছা নিয়ে গোছল খানায় গিয়ে ঢুকলাম। আমি আবার বাথরুম সিঙ্গার। গোসল করার সময় হেড়েগলায় গান গাওয়াটা আমার অভ্যাস। ওপারের ডাক যদি আসে, শেষ খেয়া হয় পাড়ি দিতে, মরণ তোমায় কোন দিনও, পারবেনা কভু কেড়ে নিতে... । গাইতে গাইতে গোসল শেষ করে বেরিয়ে এসে সোজা মসজিদে যেয়ে যোহরের নামাজ আদায় করে সোজা খালাদের পাশের সদর দরজা দিয়ে খালার বাসায় ঢুকলাম। খালা শুয়ে ছিলো, ঐ অবস্থায়ই বললো রেজা কে ডেকে দুই জনে মিলে ভাত তরকারী সব নামা আমি আসতেছি। রেজা খালার কথা শুনেই খাবার নামাতে শুরু করলো। আমিও সেই সাথে হাত লাগালাম।

খাওয়া শেষ করে আমার ঘরে এসে চিন্তা করলাম একটু শুয়ে নিই। পরে চারটার দিকে কমার্শিয়ালের দিকে যাবো (যশোর কমার্শিয়াল কলেজ)। শুয়ে শুয়ে গল্পের বই পড়াটা আমার অভ্যাস। তাই আমার পড়ার টেবিল থেকে গল্পের বই নিতে যেয়ে দেখলাম আমার টেবিলের উপর একটা ভাজ করা কাগজ, হাতে নিতে যেয়ে দেখি জানালার নেটে অনুরুপ আরেকটি কাগজ গুজে রাখা (আমার পড়ার টেবিলটা ঠিক জানালার সাথে, আর এই এলাকার প্রায় সব বাড়িতেই নীচতলার জানালাগুলোতে নেট দেওয়া আছে চুরি ঠেকানোর জন্য)। আমি জানালার নেটে গুজে রাখা কাগজ আর টেবিলের উপর থাকা কাগজ দুটোই নিলাম। একটা কাগজের ভাজ খলতে খুলতে বিছানায় যেয়ে শুয়ে পড়লাম। ভাজ খোলা শেষে প্রথম কয়েক লাইন পড়েই তড়াক করে শোয়া থেকে উঠে বসলাম। চিঠির ভাষা নিম্নরুপ


প্রিয় রিয়েল ভাই

আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি। আমি জানি আপনিও আমাকে অনেক ভালোবাসেন। আমি আপনাকে ছাড়া আর কোন কিছুই ভাবতে পারিনা। আপনি গোসলের সময় যখন গান করেন, আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো সেই গান শুনি। আপনার গান শুনলে আমি যেন আর আমার মাঝে থাকিনা। আপনি গোসলের সময় ছাড়া গান করেননা কেন! আপনি পড়ার সময় ছাড়া সব সময় গান গাবেন। আপনার গান না শুনতে পাইলে আমার কিছুই ভালো লাগেনা। সেদিন ছাদে আপনার নাম জানতে চাইলাম, কিন্তু আপনি আমার সম্বন্ধে কিছুই জানতে চাইলেন না। একবার আমার দিকে তাকিয়েও দেখলেননা। আমি কিন্তু অনেক কষ্ট পাইছি। আপনার গান শুনার অপেক্ষায় থাকলাম।

ইতি

আপনার ভালোবাসা
 

Users who are viewing this thread

Back
Top