What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected সাগর ছেলেটা ভালো ছিল। (1 Viewer)

perfect man

Former Developer
Former Staff
Joined
Mar 6, 2018
Threads
158
Messages
825
Credits
19,228
ফোনের ওপাশ থেকে জরিনা খালা কাঁদো কাঁদো গলায় বলছে, ভাইজান আমারে বাঁচান!



গন্তব্যে গিয়ে দেখলাম জরিনা খালা রাস্তার মাঝখানে কান ধরে একপায়ের উপর দাঁড়ানো!



কি জরিনা খালা এভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেন?



পাশ থেকে একজন আর্মি এসে বললো,

এই মহিলাটা কে?



আমার ঘরের বুয়া!



সে জানেনা দেশে এখন লক ডাউন চলে। কাউকে ঘর থেকে বের হওয়া নিষেধ।



জরিনা খালারে বললাম, তুমি ঘর থেকে বের হতে গেলা কেন?



ভাইজান আর বান্ধবীরা আইছে গ্রাম থেইকা। সবাই মিলা আর্মি দেখতে আইছি, আর্মিগো লগে সেলফি উঠামু তাই!



তোমাদের কমনসেন্স নাই। দেশে এতোকিছু চলে আর তোমরা আছো তোমাদের তালে।



আর্মিকে কোনরকম বুঝিয়ে জরিনা খালারে নিয়া গেলাম।

এদিকে রুপন্তীর আম্মু রুপন্তীর স্কুলের ছুটি পেয়ে বায়না ধরেছে বাপের বাড়ি যাবে। আমি তো কড়া ভাবে নিষেধ করে দিয়েছি।

সকালে দেখি শ্বশুর শাশুড়ি এসে হাজির। তারা নাকি লঞ্চে ঝুলে ঝুলে চলে আসছে একসাথে ঘুরবে পিকনিক করবে তাই।



আমি শ্বশুরআব্বারে বললাম,

আপনাদের আর্মি এ ধরে নাই?



ধরেছিল, বলছি আমার মেয়ের জামাইয়ের করোনা হয়ছে শেষ নিশ্বাস নিচ্ছে তাই দেখতে যাচ্ছি।



আমারে মেরে ফেললেন?



আরে এরকম তোমার শাশুড়ি আমাকে কতোবার মেরেছে।



কিন্তু এটা তো অন্যায়। এখন দেশ লক ডাউন। আপনারা এভাবে সীমা লঙ্গন করে বের হলে তো করোনা ভাইরাস দেশের সব মারা যাবে।



আরে, জামাই চুপ করো তো! এসব করোনা আমাদেরকে ধরবে না। বুঝলে!



তর্ক না করে চুপচাপ রুমে চলে গেলাম।

কিছুক্ষন পর দেখি জরিনা খালা নাচতে নাচতে এসে বললো,

ভাইজান আরা বেগ্গিনে কাইলক্যা কক্সবাজার যামু!



আমি যাচ্ছি না। আর কেউ যাইতেও পারবা না। আর্মি রা লাঠি নিয়ে বইসা আছে।



জরিনা খালা ভিলেনের মতো হাসি দিয়ে বললো,

আরা প্ল্যান করি রাইখছি!



কি প্ল্যান?



ও হু কওয়া যাইতুনু!



সবাইরে অনেক জিগাইলাম কেউ বলেনি।

রাতে রুপন্তীর আম্মুকেও রাতে অনেক রিকোয়েস্ট করলাম। সে ও বলেনি।



পুরো রাত ঘুম হয়নি। কি জানি কক্সবাজার যাওয়ার কি ভয়ানক প্ল্যান বানাচ্ছে।



সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি সবাই রেডি হচ্ছে। আমাকে রেডি হওয়ার জন্য বলছে কিন্তু আমি যাবোনা বলে বসেই আছি।

পরে শাশুড়ি আম্মার ধমকে রেডি হতে হল।



বুঝতে পারছি না বাইরে এতো কড়া ব্যবস্থা এরা বের হবে কিভাবে।

সবাই দেখি রেডি। আমার জন্য দাঁড়িয়ে আছে সবাই। আমি তো ইচ্ছে করে লেইট করছি। রুপন্তীর আম্মুর হাতে দেখলাম একটা বাটি,

আমার দিকে এগিয়ে এসে রুপন্তীর আম্মু বললো,

নেন মিস্টিমুখ করে নেন! বের হওয়ার আগে আব্বা বলেছে মিস্টিমুখ করতে, তাহলে সফরটা ভালো যাবে। আমরা সবাই মিস্টিমুখ করেছি। এখন খালি আপনি বাকি।



এক চামচ পায়েস খেয়ে দুই কদম হাঁটতেই মাথা ঘুরে পড়ে গেলাম। শরীরে যেনো একদম শক্তি নাই। সবকিছু দেখছি কিন্তু ঠিকমতো দাঁড়াতে আর মুখ দিয়ে কথাও বলতে পারছি না।



জরিনা খালা লাফ দিয়ে বললো, যাক কাম হয়ছে!



বাইরে একটা অ্যাম্বুলেন্স দাঁড় করানো। সবাই আমাকে নিয়ে গাড়িতে উঠলো। অর্ধেক যেতেই আর্মিরা ধরলো,

তখন সবাই আমাকে দেখিয়ে বললো, রোগীকে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এভাবে পুরো কক্সবাজার পর্যন্ত চলে এলাম।



কয়েকটা ঘন্টা পর শরীরে একটু এনার্জি এসেছে।



কক্সবাজার এসে দেখি মানুষ তেমন নাই। আর যারা আছে তাদেরও তেমন সাবধানতা নাই।

এদিকে আমি বলে যাচ্ছি, এটা অন্যায় ঘোর অন্যায়। আমরা আইন মেনে চলছি না। আমাদের ঘরে থাকা উচিত। চলেন ফিরে যায়।



শাশুড়ি আম্মা এসে মুখে এক্কান টেইপ লাগিয়ে দিল। আর বললো,

খবরদার জামাই এটা খুলবা না! বকবক করা এখন বন্ধ!



জরিনা খালা এসে একটা মাক্স পরিয়ে দিল। যেনো কেউ বুঝতে না পারে আমার মুখে টেইপ লাগানো।



অনেক হোটেল দেখি খোলা, তারা নিত্যনতুন অফার দিচ্ছে মানুষ না পেয়ে। তাই খুব সল্প খরচে হোটেল ম্যানেজ হয়ে গেল।



বাইরে বের হলে আমার মুখ টেইপ দিয়ে বাঁধা থাকে সাথে মাস্ক পরানো থাকে।

সবাই সাগরে লাফাচ্ছে আর আমি বসে সবার ব্যাগ, জুতা, কাপড় পাহারা দিচ্ছে। আমার সিটের দুপাশে আমার মতো মাস্ক পরা আরো দুইজন লোক একইভাবে তাদের ফ্যামিলির জিনিসপত্র পাহারা দিচ্ছে।



হঠাৎ একজন আমাকে কাগজে কি যেনো লিখে দিয়ে বললো, পাশের জনকে দিতে।

পাশের জনও দেখি কিছু লিখে আবার আমাকে দিল আগেরজনকে দিতে । আমি মাঝখানে। তাই ভাবলাম এরা কি লিখছে একটু দেখি। দেখলাম তারা লিখে কথপোকথন করছে। মনে হয় কথা বলতে পারেনা বেচারা।



সাথে আমিও লিখলাম, কথা বলতে পারেন না নিশ্চয়! সো স্যাড!



এরা দুজনে দেখলাম মাস্ক সরিয়ে দেখালো। তাদের ও আমার মতো মুখবন্ধ! অফিস ছুটি পেয়ে তাদেরও এই অবস্থা।



জরিনা খালা পানিতে লাফাতে লাফাতে ঢেউয়ের ঠ্যালায় হারিয়ে গেল। বেশ ভালো লাগছে আপদটা বুঝি গেল। পরে কেমনে জানি ভেসে ভেসে চলে আসলো আবার।



তিনদিন ধরে কক্সবাজারে ঘুরাফেরা করলাম। পরে বাসায় ফেরার সময় দেখলাম রুপন্তীর আম্মু, জরিনা খালা শ্বশুর শাশুড়ি সবাই কাশতাছে, সবারই জ্বর, সবার ই গলব্যাথা। সবার অবস্থা বেশি খারাপ।

ভাগ্য ভালো আমার মাস্ক পরা ছিল।

ওই একই অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে হাসপাতালে গেলাম।



জরিনা খালা বললো, ভাইজান আরে মাফ করি দিয়েন, মনে অয় আর বাছুম না! আই আন্নের বহুত ট্যাকা চুরি কইরছি।



রুপন্তীর আম্মু বললো, রুপন্তীর পাপ্পা একটা কথা আপনাকে কখনো বলা হয়নি,

আমি সাগরের সাথে তিনবার কক্সবাজার আসছিলাম। সাগর ছেলেটা ভালো ছিল।



শ্বশুর আর শাশুড়ি আম্মাও একসঙ্গে বললো, জামাই তোমারে শেষ এক্কান কথা বলবার চাই,

তোমার লগে আমার মাইয়ার বিয়া হওয়ার আগে সাগরের সাথে দুই বার ডিভোর্স হয়ছিল। সাগর ছেলেটা ভালো ছিল!



লেখা : Md. Naim Uddin (ফেলুদা)
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top