What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review থিয়েটার থ্রেড : সিনেমাপাগল একদল ত‍রুণের ছুটে চলা (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
RdeAWf7.jpg


ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়, এ কথাটা যে শুধুমাত্র ভাব সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, তার প্রমাণ আমরা মাঝে মাঝেই দেখতে পাই। এরকমই একটা প্রমাণের নাম হতে পারে সিনেমাভিত্তিক বাংলাদেশী ইউটিউব চ্যানেল থিয়েটার থ্রেড ! দুদিন আগেই পেরিয়ে গেলো তাদের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী…

কয়েকজন সিনেমাপাগল তরুণ, যারা সিনেমা দেখতে ভালোবাসেন, এবং সেটা নিয়ে টুকটাক লিখতেও বেশ ভালোবাসেন। লেখার গণ্ডি নিজের ফেসবুক টাইমলাইন থেকে শুরু করে কয়েকটা ফেসবুক গ্রুপ পর্যন্তই ছিলো সীমাবদ্ধ। টুকটাক দেশীয় সিনেমার পাশাপাশি অসংখ্য জাত, ভাষা ও ঘরানার বৈদেশিক সিনেমা তাদের দেখা হত নিয়মিত। কিন্তু ভেতরে ভেতরে প্রচণ্ড ইচ্ছে, দেশীয় সিনেমার জন্য কিছু করার ! কিন্তু শুধু "ফেসবুক লেখক" ট্যাগ নিয়ে কি আর তা সম্ভব?

আপাত দৃষ্টিতে অসম্ভব মনে হলেও নিজেদের ভেতরের ইচ্ছেটাকে তারা মরতে দেননি, জিইয়ে রেখেছিলেন। এর ফলটাও একদিন মিললো একদম হুট করেই !

২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া আয়নাবাজি সিনেমাটি বাংলাদেশী সিনেমার ইতিহাস এক অর্থে বদলে দেয়। খুব সহজেই বাংলাদেশী সিনেমার সময়কালকে যে কেউ দুই ভাগে ভাগ করতে পারেন – ১. আয়নাবাজির আগে, এবং ২.আয়নাবাজির পরে ! এই সিনেমার ট্রেইলার বের হওয়ার পর থেকেই কতিপয় এই উদ্যমী তরুণ প্রচণ্ড উত্তেজিত ছিলেন সিনেমাটির ব্যাপারে। দেশীয় বেশিরভাগ সিনেমাতে ক্রমাগত হতাশ হতে হতে যেকোনোভাবেই হোক তারা আয়নাবাজিকে সফল সিনেমা হিসেবে দেখতে চাচ্ছিলেন। নিজেদের উদ্যোগেই শ্যামলী হল পুরোটা বুকড করে ফেলেছিলেন তারা, যেখানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পরিচিত সিনেমাপাগল সব মানুষদের !

উদ্দেশ্য একটাই, আয়নাবাজিকে সফল করতে হবে যে করেই হোক !

আমন্ত্রণ তো হলো, কিন্তু আয়োজকদের একটা নাম থাকা দরকার না? অনেক নাম বিতর্কের পর "থিয়েটার থ্রেড" নামটি সাজেস্ট করেন রৌশান তাইন। "আয়নাবাজি উইথ থিয়েটার থ্রেড" নামের ইভেন্ট খোলা হয় ফেসবুকে। মূল প্ল্যানটি ছিলো থিয়েটার থ্রেডের ফাউন্ডার এস রাব্বি'র। কিভাবে এমন অদ্ভুত চিন্তা মাথায় এলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, "তখন শুধু মনে হয়েছে এরকম একটা সিনেমার পাশে থাকতে হবে, কীভাবে হবে জানিনা, জাস্ট জানতাম যে হল বুকড করে ফেলতে হবে; যেখানে কেবল আমরা সিনেমা পাগল মানুষ থাকবো। সেটাই করেছিলাম।"

সফল ওই ইভেন্টের পর তারা বসে থাকেননি। সেই Theatre Thread নামেই একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলা হয়। আপকামিং সিনেমা রিভিউ আর প্রিভিউ করবেন, এমনটাই প্রথম পরিকল্পনা ছিলো। এরই মাঝে চ্যানেলের উপস্থাপক, সাবেক রেডিও জকি সৈয়দ নাজমুস সাকিবের সাথে রেডিওতে পরিচয় হয় অভিনেতা শাহেদ আলীর, হালদা সিনেমার মুক্তির সময় ঘনিয়ে আসছে তখন। শাহেদ আলীর মাধ্যমেই তৌকির আহমেদের সাথে পরিচয় থিয়েটার থ্রেড টিমের। এরপর থেকে থিয়েটার থ্রেড টিম সিদ্ধান্ত নেয়, শুধুমাত্র প্রিভিউ আর রিভিউতে আটকে থাকবে না তাদের ইউটিউব চ্যানেল, বরং আপকামিং সব আশা জাগানিয়া বাংলাদেশী সিনেমাগুলোর প্রচারের দায়িত্ব নিবেন তারা। সিনেমার সাথে জড়িত সমস্ত লিডিং আর্টিস্টদের সাক্ষাৎকার নেয়া, সিনেমার হল রিঅ্যাকশন, সিনেমা সম্পর্কিত যত অজানা ফ্যাক্টস শেয়ার করা, এসব কিছুর পাশপাশি সিনেমা নিয়ে ফেসবুক জুড়ে লেখালেখি তো থাকছেই !

হালদা থেকে অফিসিয়ালি শুরু হওয়া থিয়েটার থ্রেড টিম এরপরে একে একে কাজ করেছে গহীন বালুচর, ঢাকা অ্যাটাক, স্বপ্নজাল, পোড়ামন ২, দহন, জান্নাত, মিস্টার বাংলাদেশ সহ আরো অসংখ্য সিনেমা নিয়ে ! শুধু মেইনস্ট্রিম সিনেমা নিয়ে থিয়েটার থ্রেড কাজ করে, এমনটা ভাবলে কিন্তু ভুল করবেন। মাটির প্রজার দেশের মত ইন্ডি সিনেমার জন্যেও এই থিয়েটার থ্রেড তাদের সর্বোচ্চটা দিয়েছিলো।

"সিনেমা প্রযোজকের মাধ্যমে জেনেছিলাম, কোন হলই সিনেমাটা নিতে চাচ্ছিলো না। সিনেমাতে নাচ নেই, সেরকম বড় বাজেটের গান নেই, স্টারকাস্ট নেই, এটাই নাকি ছিলো এমন আচরণের কারণ। কিন্তু তাই বলে একটা ভালো সিনেমা প্রচার পাবে না? এমনটা আমরা আসলে মেনে নিতে পারিনি। অনেকটা চ্যালেঞ্জ নিয়েই মাটির প্রজার দেশের পাশে ছিলাম আমরা। টানা অনলাইনে সিনেমার ব্যাপারে লেখালেখি করলাম, মানুষকে জানানোর চেষ্টা করলাম। এর পরের ব্যাপারটা ছিলো অনেকটাই ম্যাজিকের মত। যে সিনেমা মাত্র তিনটি হলে মুক্তি পেয়েছিলো, সেই সিনেমাই টানা তিন সপ্তাহ স্টার সিনেপ্লেক্সে চললো ! অন্য আরেকটি বাণিজ্যিক সিনেমা হল থেকে নামিয়ে দিয়ে মাটির প্রজার দেশে চালানো হতে থাকলো। খুব ভালো লেগেছিলো সেদিন, জানেন ! নিজের ভেতরে আলাদা একটা শক্তি অনুভব করেছিলাম, থিয়েটার থ্রেডে কাজ করে গর্বিত মনে হচ্ছিলো", বলছিলেন চ্যানেলের উপস্থাপক সৈয়দ নাজমুস সাকিব !

অনলাইনের বাইরেও থিয়েটার থ্রেডের আরেকটি বড় মাপের অফলাইন প্রমোশনাল ক্যাম্পেইন ছিলো "পোড়ামন ২" সিনেমা নিয়ে যমুনা ফিউচার পার্ক এবং রবীন্দ্র সরোবরে পাবলিক ইভেন্ট করা, দুটি সিনেমা একত্র করে প্রমোশনাল ক্যাম্পেইন হিসেবে আবাহনী মাঠে ক্রিকেট খেলার আয়োজন করা !

থিয়েটার থ্রেড টিমের বেশিরভাগ সদস্য ২০০৮-২০১০ এসএসসি এইচএসসি ব্যাচের। এত কমবয়সী ছেলেরা এরকম একটা বড় আয়োজন করে ফেলতে পারে, এটা শুনলে প্রথমে কেউই বিশ্বাস করবে না। তবে নিজেদের আত্মবিশ্বাস আর সাহসের জোরেই তারা এতকিছু সম্ভব করতে পেরেছিলেন, ধারণার বাইরে থাকা এত এত পথ হেঁটে আসতে পেরেছেন, এমনট‍াই মনে করেন থিয়েটার থ্রেডের আরেক সদস্য, কো-ফাউন্ডার রাব্বী খান !

থিয়েটার থ্রেডের আরেকটি চমৎকার আয়োজন হচ্ছে, দর্শক মঞ্চ। সাধারণ দর্শকরা নিজেদের পছন্দের তারকাকে তাদের সিনেমা এবং সিনেমার সাথে জড়িত অন্যান্য বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করতে পারবেন একদম সরাসরি, মাত্র কয়েক হাত দূরত্বে বসে থেকে। 'দহন' হোক বা 'যদি একদিন' সিনেমাটাই হোক, যতবারই দর্শক মঞ্চের আয়োজন করা হয়েছে, ততবারই বিপুল পরিমাণে প্রতিক্রিয়া এসেছে। কারণ প্রিয় তারকাকে সামনে থেকে দেখা এবং সেই সাথে তাকে প্রশ্ন করার সুযোগ পাওয়া, এটা আর কেই বা হারাতে চায় !!

"থিয়েটার থ্রেডের মূল শক্তি হচ্ছে সততা আর পরিশ্রম করার ক্ষমতা। আমরা সবসময় ভালো সিনেমা বা অন্ততপক্ষে তুলনামূলক ভালো সিনেমার সাথে থাকতে চেয়েছি। বাংলাদেশের মত জায়গায় থেকে সবসময় "আয়নাবাজি" সমতূল্য সিনেমা পাবো না, সেটা আমরা খুব ভালো করেই জানি। এরপরও আমরা এমন সব সিনেমার সাথে থাকতে চেয়েছি, যেটা দেখে অন্তত যেনো আপনার একবার হলেও মনে হয়, "নাহ, খারাপ না ! মোটামুটি এন্টারটেইনিং ছিলো", বলছিলেন চ্যানেলের আরেক সদস্য সাইদুর বিপু।

"কনটেন্ট এর ব্যাপারে আমরা কোনো ছাড় দেই না। সাকিব ভাইয়ের একটা ভুল হলে আমরা সবাই সাথে সাথে তার সামনে বলে ফেলি, আবার আমার বা আমাদের কারো কোনো ব্যাপার বা আইডিয়া কারো পছন্দ না হলে বাকিরা সেটা সরাসরি বলে ফেলেন। ভালো হলে আবার প্রশংসাও করি। শুরু থেকেই আমরা এই জিনিসটা মেইন্টেইন করেছি আর সামনেও করবো। এটা আমাদের অন্যতম প্রধান একটা স্তম্ভ বলতে পারেন। সমালোচনাকে আমরা খুবই সহজভাবে নেই, হয়ত এই কারণেই অনেক কঠিন সব কাজ করা সম্ভব হয় আমাদের পক্ষে। তাছাড়া পুরো বাংলা চলচ্চিত্র পরিবার আমাদের যেভাবে গ্রহন করেছেন, পাশে থেকেছেন। সে কারণেও অনেক কাজই করা সহজ হয়েছে আমাদের", বলছিলেন এস রাব্বি।

বর্তমানে এই টিমের সদস্যসংখ্যা ২৫ এর উপরে। শুধু ঢাকায় না, ঢাকার বাইরেও এই টিমের বেশ কিছু সদস্য আছেন, যেমন চট্টগ্রামের হৃদয় সাহা। দেশীয় নাটক সিনেমার উইকিপিডিয়া বলা যেতে পারে তাকে। দেশের যেকোনো নাটক সিনেমার ইতিহাস গড়গড় করে বলে যেতে পারেন। তিনি শুরু থেকেই রয়েছেন থিয়েটার থ্রেডের সাথে। এছাড়াও আছেন সাইদুজ্জামান আহাদ, ফরিদ হোসেন, খাইরুল মোস্তাকিম রিয়াদ, সাইফুদ্দিন শাকিল, জুনায়েদ প্রান্ত, তানভীর হোসেন রায়ান, এবি মিনহাজ, শুভ্র আলম, পারভেজ সোহরাব, শান্ত জামান, তাওসিফ সায়মন, রয়েল হাসান, আতিক ফয়সাল, মেহেদী হাসান মুন, আনিসুর রহমান, অলি আহমেদ, নিষাদ, বিপ্লব, তৈমুর খান সহ আরো অনেকে।

থিয়েটার থ্রেড টিমের প্রত্যেক সদস্যই জীবিকার তাগিদে বিভিন্ন পেশায় যুক্ত। এরপরও ঠিকই নিজেদের চ্যানেলের কনটেন্ট বানানোর জন্য তারা সময় বের করে নেন। আইটি ফার্মের সাথে যুক্ত থেকেও এস রাব্বি থিয়েটার থ্রেডের কোনো কাজে একেবারেই আপোষ করেন না। সাবেক আরজে আর বর্তমানে শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত সৈয়দ নাজমুস সাকিবও ঠিকই সময় বের করে নেন থিয়েটার থ্রেডের জন্য। শুধু সিনেমার প্রচার নয়, 'মুক্তিযুদ্ধের উপরে সেরা দশ সিনেমা, যেসব বাংলাদেশী সিনেমা কলকাতায় রিমেক হয়েছিলো, বাংলা সিনেমাতে অশ্লীলতা', এধরনের চমৎকার সব তথ্য নিয়ে সাজানো ব্যতিক্রমী সব কনটেন্টের দেখাও মেলে থিয়েটার থ্রেড চ্যানেলে…

দেশের সিনেমার পাশাপাশি সামনে আন্তর্জাতিক মানের সিনেমা নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আছে থিয়েটার থ্রেডের, দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এমনটাই জানালেন এস রাব্বি সহ টিমের বাকি সদস্যগণ। দুইবছরের বাচ্চারা নাকি বেশ ভালোই দৌড়াতে পারে, থিয়েটার থ্রেডও সেভাবেই দৌঁড়াতে চায় ভালো কাজের পেছনে। তবে সেই দৌঁড়ানোটা যে কখনো শুধু "ভিউ" এর পেছনে হবে না, সে ব্যাপারে থিয়েটার থ্রেডের সবাই একমত !

থিয়েটার থ্রেড কর্তৃপক্ষের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা !
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top