What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ভুটানের নিষিদ্ধ জগত ‘দ্রায়াং’ (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
Q4WPEZS.jpg


কোনো দেশে ঘুরতে যাবার পর সবার প্রথমেই আমাদের মাথায় যে ভুতটি চাপে, সেটি হচ্ছে ওই দেশের আঁধারঘেরা গোপন জায়গাগুলো খুঁজে বের করা। ভুটান যাবার পর সবার প্রথমেই মাথায় আসে দ্রায়াং এর কথা ! দ্রায়াং হচ্ছে ভুটানের নিষিদ্ধ জায়গা। ঠিক যেমন বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জায়গাগুলো হচ্ছে বার বা মদের দোকান, নাইটক্লাব অথবা দৌতলদিয়া পতিতালয় !

ভুটান এমনিতেই অনেক নিয়মকানুনে বাধা একটি দেশ। তারা তাদের সংস্কৃতিকে খুবই প্রাধান্য দেয়। ভুটানে পাবলিক প্লেসে একটা সিগারেট পর্যন্ত খাওয়া যায় না। পুরো ভুটানেই সিগারেট নিষিদ্ধ। আর মদ, পতিতা তো দুর কি বাত !

তাহলে কি ভুটানে অন্ধকার গলি নেই? অবশ্যই আছে। সেই অন্ধকার গলির ঘরই হচ্ছে দ্রায়াং (Drayang) !

অপরিচিত দেশ ভুটানে গিয়ে রাস্তাঘাটে কাউকে দ্রায়াংয়ের কথা জিজ্ঞেস করলে তারা আপনাকে পাগল ভাবতে পারে। কারণ সভ্যসমাজে দ্রায়াং তাদের কাছেও একটি লজ্জার বিষয়। অথচ এই দ্রায়াংয়ে ঢুকার পর আপনার মনে হবে, এ কোথায় আসলাম !! এখানে তো লজ্জায় মাথা চাপড়ানোর মত নিষিদ্ধ কিছুই নেই ! তাহলে ভুটানিজরা কেনো এই জায়গার সন্ধান দিতে এত লজ্জা পায় ! এটাই ওদের নিয়ম। অত্যন্ত ভদ্র জাতি এরা…

দ্রায়াং কি?

সোজা কথায়, দ্রায়াং হচ্ছে ভুটানের অন্ধকার রজনীর বাতিঘর !

আমাদের প্রচলিত সমাজের একাকী মানুষগুলোর বিনোদনের একটি অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে বার বা নাইট ক্লাব। অন্তত আমাদের দেশে এটি অন্ধকার জগত হিসেবেই ব্যাপকভাবে উল্লেখিত। ঢাকার একটি বার বা নাইটক্লাবে সাধারণত সমাজের নিম্মশ্রেণীর লোক থেকে শুরু করে ছাত্র, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পুলিশ সহ সব শ্রেণীর লোকদেরই দেখা পাওয়া যায়। ছোট ছোট উশৃঙ্খল জামা পরে মেয়েরা নাচে। অশীলান মুভ দিতে দেখা যায় তাদের। এরসাথে ভুটানের দ্রায়াং এর পার্থক্যটা হচ্ছে, সেখানে সমাজের উচ্চবিত্ত, মিডেল ক্লাস, শিক্ষিত শ্রেণীর সব বয়সের নারীপুরুষরাই যান। এবং ভালগারিটি বলে কিছুই সেখানে নেই। কোনো নোংরামি হয়না সেখানে !

u14AKvp.jpg


দ্রায়াংয়ে মার্জিত পোশাকে মেয়েদের নাচ

বিদেশি নাইটক্লাব গুলোতে মেয়েরা যেমন বিকিনি বা ওইধরণের অশালীন জামা পরে নাচে, ভুটানের দ্রায়াংয়ে তেমনটা হয়না। দ্রায়াংয়েও নাচার জন্য মেয়ে থাকে। তারা তাদের ট্রেডিশনাল "কিরা" ড্রেস পরেন। অত্যন্ত মার্জিত একটি ড্রেস। তবে এতে কিন্তু তাদেরকে দেখতে একটুও বোরিং লাগেনা। ভদ্রতার মধ্যে থেকেও যে নাইটক্লাবে নেচে কাস্টোমারদের আনন্দের খোরাক জোগানো যায়, ভুটানের দ্রায়াং তার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ !

ভুটানের দ্রায়াংয়ে আমাদের দেশের বারগুলোর মত উচ্চস্বরে ডিজে মিউজিক বাজায় না। বরং তারা ঠান্ডা সূরের ভুটানিজ রোমান্টিক মিউজিক বাজায়। এতে দ্রায়াংয়ের ভেতরকার পরিবেশও ঠান্ডা থাকে। এই গানের সূরেই দ্রায়াংয়ের মেয়েরা মনোরম পরিবেশে নেচে মাতিয়ে তুলেন মদ খেতে আসা যুবকদেরকে !

এই বিনোদনকে অন্য লেভেলে নিয়ে যাওয়ার জন্য দ্রায়াংয়ে আলাদা কোনো গোপন কক্ষ থাকেনা। এইসব দিক থেকে তারা অত্যন্ত মার্জিত। অথচ আমাদের দেশের ক্লাব বা বারগুলোতে গেলে আপনি সামান্য পয়সা স্টাফদের পকেটে ঢুকিয়ে দিলেই মেয়ে নিয়ে সময় কাটানোর জন্য আলাদা কক্ষ পাবেন। এটাই মূলত আমাদের সমাজ নষ্ট করার কারণ। যে বিনোদনটা সুন্দর হতে পারত, আমরা নিজেরাই তাকে বিকৃত বানিয়ে ফেলেছি। আমাদের সাথে এটাই ভুটানের সবচেয়ে বড় পার্থক্য ! শুধু আমরাই না, সাউথ এশিয়ার অনেকগুলোর তুলনাই ভুটান এদিক থেকে আলাদা !

দ্রায়াংয়ে আপনি যখন ঢুকবেন, ডান্স ফ্লোরে নাচতে থাকা কোনো একটি মেয়ে আপনাকে এসে জিজ্ঞেস করবে, আপনার কোনো পছন্দের গান আছে কিনা। আপনার পছন্দের গান বাজিয়েই তারা আপনাকে নেচে দেখাবে। খুশি হয়ে আপনি যদি কিছু টাকা দেন, এই টাকা দিয়েই তাদের সংসার চলবে। কিন্ত আপনাকে যে বাধ্যতামূলক টাকা দিতেই হবে, এমন কোনো কথা নেই। টাকা দেয়ার জন্য তারা আপনার কাছে জোরও করবেনা, এমনকি টাকা চাইবেও না !

ভুটানের দ্রায়াংয়ের খদ্দেররা কখনোই মদ্যপ অবস্থায় এই মেয়েগুলোকে উত্যক্ত করেন না বা যৌনকর্মের জন্য প্রস্তাব দেন না। নীতিগতভাবে তারা অনেক অনেক বেশিই উন্নত। নারীকে তারা ভোগ্যপন্য মনে করেন না। যদি বিষন্নতা বলে কিছু না থাকত, তাহলো হয়ত ভুটানিজরা দ্রায়াংয়েও মেয়েদের নাচতে দিতেন না। এতটাই মার্জিত জাতি তারা !

তাহলে কি দ্রায়াংয়ে পতিতাবৃত্তি একেবারেই নেই? মানুষ কি সেখানে শুধু মদ খেতে আর নাচ দেখতেই আসেন?

একটু গভীরে গিয়ে জানা যায়, দ্রায়াংয়ে নাচা বেশিরভাগ মেয়েরাই ভুটানের একেবারে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসে, যাদের খুব একটা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বা অক্ষরজ্ঞান নেই। এরা আসে অত্যন্ত গরিব পরিবার থেকে। ভালো কোনো জায়গায় চাকরি না পেয়ে এরা দ্রায়াংয়ে কাজ নেয়। দ্রায়াং থেকে রোজগারের টাকা দিয়েই তাদের পুরো পরিবার চলে। তারা দ্রায়াংয়ে কাজ করতে ভালোবাসে, কারণ এখান থেকে তারা মাসে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা পান। এবং মালিকরাও তাদের খারাপ লোকদের হাত থেকে সুরক্ষা দেন।

খারাপ কাজ যদি নাই হয়, তাহলে দ্রায়াং সমাজের কাছে এত নিষিদ্ধ জায়গা হিসেবে পরিচিত কেনো?

ভুটানের পরিবেশগত অবস্থার কথা বিবেচনা করলে দেখা যায়, এমনিতেই এরা খুব ভদ্র জাতি। তাই মদ খাওয়া বা ক্লাবে নাচার মত সামান্য ব্যাপারকেও এরা খুব বড় করে দেখেন। তাই দ্রায়াংয়ের ব্যাপারটাও এদের কাছে ট্যাবুর মত। দ্রায়াংয়ে যদিও পতিতাবৃত্তির মত কিছুই ঘটেনা, তবুও ভুটানের মুরব্বিরা ভাবেন, নিশ্চয়ই এখানে ওরকম কিছু না কিছু হয় ! সমাজও তাই দ্রায়াংয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন জগত হিসেবে মেনে নিয়েছে !

তবে হ্যাঁ, ক্ষেত্রবিশেষে দ্রায়াংয়ে কাজ করা কিছু কিছু মেয়েরা দেশটির বড় বড় রাজনীতিবিদদের সাথে যৌনসম্পর্কে লিপ্ত হন।

জেনে অবাক হবেন, সারাদিন খুঁজলেও ভুটানের কোনো রাস্তায় আপনি দ্রায়াং লেখা একটা সাইনবোর্ডও পাবেন না। রাস্তার পাশে সারি সারি ঘর। এরমধ্যেই যেকোনো একটায় লুকিয়ে আছে কাঙ্খিত সেই দ্রায়াং ! যেখানে লুকিয়ে রাখার মত কিছুই নেই। অথচ এটাই ভুটানের একমাত্র নিষিদ্ধ ঘর !
 

Users who are viewing this thread

Back
Top