What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

শূকরের যুদ্ধ : ‌ইতিহাসের অদ্ভুত একটি যুদ্ধের ঘটনা (2 Viewers)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
AFc9qlO.jpg


বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময় নানান অদ্ভুত ঘটনাকে কেন্দ্র করেই যুদ্ধ হয়েছে। যুদ্ধ হয়েছে বসার টুলকে কেন্দ্র করে। এমনকি যুদ্ধ হয়েছে সামান্য পেস্ট্রি কেক নিয়েও। কিন্তু তাই বলে শূকরের মত একটা নিরীহ প্রাণীকে নিয়ে যুদ্ধ ! অদ্ভুত এই শূকরের যুদ্ধ (Pig War) নিয়ে আজকে আমরা কথা বলবো। চলুন এই যুদ্ধের পটভূমি থেকে ঘুরে আসা যাক…

ব্রিটিশ এবং আমেরিকানরা গলায় গলায় বন্ধু হবার আগে তারা ছিলো একে অপরের জানে দুশমন। তাদের মধ্যকার ইতিহাস ছিলো দুশমনির ইতিহাস। পান থেকে চুন খসলেই এক দল আরেক দলের গলা কাটার জন্যে লাফিয়ে উঠত। সেই প্রেক্ষাপটেই ১৮৫৯ সালে বেঁধে যেতে বসেছিলো আরেকটা যুদ্ধ। যুদ্ধের কারণ ছিলো একটা শূকর। না, এটা কোনো স্বর্ণে মোড়ানো শূকর নয়। বা কোনো অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন কোনো শূকরও না। একদম সাধারণ একটা শূকর, যেটা সারাদিন ঘোঁত ঘোঁত করে ডাক ছেড়ে কাদাপানিতে গড়াগড়ি খায় !

ঘটনার শুরু যেভাবে…

সেই সময় ওয়াশিংটন থেকে দক্ষিণে ছিলো আমেরিকার অংশ, আর উত্তরের ভূমি ছিলো ব্রিটেনের দখলে। অর্থাৎ দুই অঞ্চলের সীমানা ছিলো ওয়াশিংটনে। কিন্তু সমস্যা ছিলো, সীমানাটা ওয়াশিংটনের ঠিক কোথায়, তা কেউ জানত না। সান হুয়ান (San Juan) আইল্যান্ড সেই সীমানায় চুপচাপ বসে ছিলো।

আমেরিকা এবং ব্রিটেন দুই দেশই দাবী করলো ওই আইল্যান্ডটা তাদের। দুই দেশই আইল্যান্ডটা নিয়ে সুযোগ পেলে ঝগড়া করতে দাঁড়িয়ে যেত। তবে ব্যাপারটা শুধু হুমকি-ধামকি আর চোখ রাঙানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো। অন্তত ততক্ষণ পর্যন্ত, যতক্ষণে না একটা শূকর এসে দাঁড়ালো তাদের মাঝখানে !

সেই আইল্যান্ডে 'হাডসনস বে কোম্পানি' নামক একটা ব্রিটিশ মালিকানাধীন ট্রেডিং কোম্পানি '১০ ভাগ ট্রেডিং আর ৯০ ভাগ ভেড়া ও শূকর' নিয়ে তাদের প্রজেক্ট চালাচ্ছিলো। ১৮৫৯ সালে ২৫ আমেরিকান পরিবার সেই আইল্যান্ডে এলো তাদের বসত গড়তে। এসে দেখলো পুরো আইল্যান্ড ভর্তি ভেড়া আর শূকর।

যেভাবে বাঁধলো শূকরের যুদ্ধ

১৮৫৯ সালের ১৫ই জুন ওই ২৫ আমেরিকান পরিবারের 'লাইম্যান কাটলার' নামে একজনের বাড়ির বাগানে দেখা গেলো একটা শূকর ঘুরে বেড়াচ্ছে। তিনি আগপিছ কিছু না ভেবে শূকরটাকে গুলি করে বসলেন। দেখা গেলো, শূকরটা ছিলো হাডসনস বে কোম্পানির কর্মকর্তা 'চার্লস গ্রিফিন' এর, যিনি কিনা জাতে আইরিশ।

গ্রিফিন কাটলারের কাছে ক্ষতিপূরণ চাইলেন। কাটলার ১০ ডলার সাধলেন। গ্রিফিন মাথা নেড়ে বললেন, হবে না। তার ১০০ ডলার চাই।

জবাবে কাটলার বললেন, শূকরটা তার আলু বাগানের সব আলু খেয়ে ফেলেছে। গ্রিফিন প্রত্যুত্তরে জানালেন, সেটা তার জানার বিষয় নয়। তিনি আলু বাগানের চারপাশে বেড়া দেননি কেনো?

ব্যস, আগুন ধরে গেলো পুরো ব্যাপারটা নিয়ে ! ব্রিটিশরা কাটলারকে অ্যারেস্ট করতে আইনি লোক পাঠালো। কাটলার ডাক দিলেন আমেরিকান আর্মিদের। ৬৬ জন আমেরিকান সৈন্য দ্বীপে অবস্থান নিলো। ব্রিটিশরা আইল্যান্ড হাতছাড়া হবার ভয়ে যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়ে দিলো সেখানে। জবাবে আমেরিকানরাও তাদের সামরিক শক্তি বাড়ালো। ১০ই আগস্ট নাগাদ দেখা গেলো দ্বীপে ৪৬১ জন আমেরিকান সৈন্য ১৪টা কামান নিয়ে ২১৪০ জন ব্রিটিশ সৈন্যবাহী পাঁচটা যুদ্ধজাহাজের সাথে পুরো মুখোমুখি অবস্থানে। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ হতে নির্দেশ দেয়া হলো জাহাজ থেকে দ্বীপে হামলা চালাতে এবং সকল আমেরিকান বসতি উৎখাত করতে। ব্রিটিশ শূকরের বদলে যেখানে আরেকটা আমেরিকান শূকর গুলি করে মারলেই ঝামেলা মিটে যেতে পারত, সেখানে এখন পুরোদমে যুদ্ধাবস্থা !

ব্রিটিশ এবং আমেরিকান, দুই দেশের কমান্ডিং অফিসাররাই তাদের সৈন্যদের কড়া নির্দেশ দিলেন, বিপরীত দিক হতে গুলি না আসা পর্যন্ত যাতে নিজেদের বন্দুক হতে কোনো গুলি ছোঁড়া না হয়। শেষ পর্যন্ত দেখা গেলো, উন্মাদ সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে এই কমান্ডিং অফিসারদের ঠাণ্ডা মাথায় সাহসিকতার সাথে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণই কাজে দিয়েছিলো। আরেকটা ব্রিটিশ-আমেরিকান যুদ্ধ হতে ইতিহাস রক্ষা পেলো।

শূকরের যুদ্ধের ফলাফল

ফলাফলবিহীন অদ্ভুত এক যুদ্ধ এই শূকরের যুদ্ধ ! এ যুদ্ধে জিতেনি কেউই। তবে হেরেছিলো গুলি খেয়ে প্রাণ হারানো ব্রিটিশ শূকরটা। সেটাকে যদি গোণায় ধর‍া হয়, তাহলে বলা যায়, হার হয়েছিলো ব্রিটিশদের।

সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ দেখা গেলো, ব্রিটিশ এবং আমেরিকান, দুই পক্ষই পুরো ব্যাপারটায় উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে। ফলে তখন তারা সিদ্ধান্ত নিলো, দ্বীপে দুই পক্ষের সৈন্যরাই সহাবস্থান করবে এবং দুই পক্ষই দ্বীপে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। এর পরবর্তী ১২ বছরে দ্বীপে এই সহাবস্থানকারী সৈন্যরা এবং তাদের অন্যান্য পরিবারেরা একে অপরের বেশ ভালো বন্ধু হয়ে গিয়েছিলো। প্রায়ই দেখা যেত, আমেরিকানরা শূকরের মাংসের বার্গার বানিয়ে ব্রিটিশ পরিবারকে উপহার দিচ্ছে। আবার ব্রিটিশরা শূকরের মাংসের স্যান্ডউইচ বানিয়ে আমেরিকানদের তা খাওয়াচ্ছে !
 

Users who are viewing this thread

Back
Top