What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

বসার টুল নিয়ে যুদ্ধ (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
AGetbvi.jpg


কখনো যদি কোনো দেশে বেড়াতে গিয়ে সেখানে স্বর্ণের তৈরি বসার টুল বা চেয়ার জাতীয় কিছু দেখতে পান, তবে উপদেশ রইলো, ওই টুল বা চেয়ারে মজা করে হলেও বসতে যাবেন না। কেননা শেষমেশ দেখা যেতে পারে ওই টুলের কারণেই আপনার দেশের সাথে অন্য দেশের যুদ্ধ বেঁধে গেছে ! এমন একটি অদ্ভুত নিয়েই আজকে আমরা কথা বলবো। যেটি ছিলো বসার টুল নিয়ে যুদ্ধ (War of the Golden Stool) !

ঘটনার শুরু যেভাবে

আফ্রিকার উপকূলে 'আসান্তি' নামে এক অঞ্চল ছিলো। এই আসান্তি সাম্রাজ্যের সম্রাট হচ্ছেন স্থানীয়দের নিকট মোটামুটি ঈশ্বরের সমতুল্য। তার সবকিছুই পবিত্র হিসেবে গণ্য করা হত। এমনকি তিনি যে সোনালী টুলটায় বসে তার রাজকর্ম পরিচালনা করেন, সেটাকেও ! তাদের বিশ্বাস ছিলো, গোত্রের রাজারা মারা গেলেও তাদের আশীর্বাদপ্রাপ্ত আত্মারা মাঝে মধ্যে এসে এই চেয়ারে বসেন।

১৮৯৬ সালে ঘটলো অঘটন। তৎকালীন রাজা কোনো এক কারণে আসান্তির জনগণের অনুভূতিতে আঘাতের দায়ে নির্বাসিত হয়ে গেলেন। কি সেই কারণ, তার ব্যাখ্যায় নাহয় আর না গেলাম ! কেননা ধার্মিক সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত পেতে কোনো উপযুক্ত কারণ লাগেনা।

যাই হোক, পুরো আসান্তির জনগণ অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়লো। তারা যখন এই ঘটনায় হতবিহ্বল, তখন তাদের সংকট কাটাতে এগিয়ে এলেন ব্রিটিশ গভর্নর স্যার ফ্রেডরিক হগসন। ব্রিটিশদের চিরাচরিত স্বভাব অনুযায়ী তিনি জানালেন, আসান্তিবাসীদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। তাদের রাজা চলে গেছে তো কি হয়েছে? ব্রিটেনের রাণী তো আছেন। আর ব্রিটেনের রাণীর পক্ষ হতে তিনি নিজেই না হয় শত কষ্ট উপেক্ষা করে আসান্তিবাসীদের দেখে রাখবেন।

যুদ্ধ বাঁধলো যেভাবে

১৯০০ সালের মার্চে হগসন আসান্তির রাজধানীতে ঢুকে জনগণকে জানালেন- যেহেতু এখন থেকে তিনিই তাদের রাজা, তাই রাজার বসার সোনালী টুলটা তাকে এনে দেয়া হোক। স্থানীয়রা বজ্রাহত হয়ে কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে রইলো। তারপর কোনো কথা না বাড়িয়ে ঘরে ফিরে গেলো। ঘরে ঢুকে লাঠি-সোঁটা, বল্লম, তীর-ধনুক যা পারলো হাতে নিলো। এইদিকে আসান্তিবাসীদের দেরি দেখে হগসন তার লোকদের পাঠিয়ে দিলেন বসার টুলটা নিয়ে আসার কী অবস্থা সেটা দেখে আসতে। তারা টুলটার ব্যাপারে খোঁজ করতে গেলেই তাদের উপর আচমকা ঝাঁপিয়ে পড়লো আসান্তিবাসীরা। এই আক্রমণের নেতৃত্বে ছিলেন 'ইয়া আসান্তিওয়া', যিনি ছিলেন সেই নির্বাসিত রাজার মাতা।

ব্রিটিশ কলোনি প্রায় পুরোটাই জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেয়া হলো। যারা বেঁচে গিয়েছিলো তারা ২৮ মার্চ 'কুমাসি' নামক এলাকার এক দুর্গে প্রাণে বাঁচতে নিজেদের বন্দী করে ফেললো। সেই দুর্গের চারপাশে ইয়া আসান্তিওয়া ১২,০০০ যোদ্ধা নিয়ে অবস্থান গ্রহণ করলেন। তারা প্রায় তিন মাস সেই দুর্গ অবরুদ্ধ করে রাখলো। তিন মাস পরই তাদের সমস্ত রসদ এবং গোলাবারুদ ফুরিয়ে এলো। কিন্তু তারচেয়েও বড় প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলো প্রত্যেকের জন্যে নতুন এক জোড়া আন্ডার প্যান্টের। শেষে উপায় না পেয়ে ১৪ জুলাই ব্রিটিশরা 'মেজর জেমস উইলকক্স'এর নেতৃত্বে বিশাল সৈন্যবহর পাঠিয়ে দিলো। তিনি এসে প্রথমে অবরুদ্ধ থাকা ব্রিটিশদের মুক্ত করলেন। পরে অবসর পেয়ে ১৯০০ সালের বাকি গ্রীষ্মকালটা তিনি ব্যয় করলেন আসান্তিদের ভিটা-মাটি সব জ্বালিয়ে দেয়ার কাজে।

যুদ্ধের ফলাফল

বসার টুল নিয়ে সংঘটিত হওয়া অদ্ভুত এই যুদ্ধে আসান্তিদের ২,০০০ যোদ্ধা একেবারে কচুকাটা হয়েছিলো জেমস উইলকক্সের বাহিনীর হাতে। আসান্তির ক্ষমতা ঠিকই চলে গিয়েছিলো ব্রিটিশদের অধীনে। কিন্তু যুদ্ধের ময়দানে তারা হেরে গেলেও মূল উদ্দেশ্য সাধনে তারা বিজয়ী। এর কারণ হচ্ছে, তারা তাদের সেই পবিত্র সোনালী টুলে কোনো সাদা মানুষের পশ্চা‍ৎদেশের স্পর্শ লাগতে দেয়নি !
 

Users who are viewing this thread

Back
Top