What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

প্রেজেন্টেশন ও বক্তৃতায় বাজিমাত করার ১০টি কৌশল (1 Viewer)

perfect man

Former Developer
Former Staff
Joined
Mar 6, 2018
Threads
158
Messages
825
Credits
19,228
~ গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন - প্রেজেন্টেশন ও বক্তৃতায় বাজিমাত করার ১০টি কৌশল ~


বহুকাল আগের কথা, প্রায় ২৬ বছর আগে কোন এক দিন ডাক পড়লো বিটিভির স্টেশনে, এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলের কারণে শিক্ষা বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে। সব বোর্ডের প্রথম কয়েকজনের সাক্ষাতকারের ধারাবাহিকতায় কুমিল্লা বোর্ডের পালা।


আমি পড়লাম বিপাকে। সবার সামনে বা ক্যামেরার সামনে কথা বলার একেবারেই অভ্যাস, সাহস, কোনোটাই নাই। অনেক কষ্টে বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব মুখস্ত, ঠোঁটস্থ করে গেলাম। কিন্তু বিধি বাম। ক্যামেরার ফোকাস যখনই পড়লো আমার উপরে, মাথার ভিতর থেকে গেলো সব জবাব হারিয়ে, অনেক কষ্টে চিঁচিঁ করে যা বললাম, তা পরে টিভিতে দেখে আমার নিজেরই মায়া হলো। আহা, কী কষ্টেই না বেচারা কথা বলছে!


বাংলাদেশের স্কুল কলেজে পড়াশোনাটা অনেকটা একমূখী, মানে শিক্ষক বলেন, ছাত্ররা শুনে। বড়জোর বেতের সামনে দাড়িয়ে পড়া বলা -- এই যা। কিন্তু পাবলিক স্পিকিং, মানে অনেক লোকের সামনে কথা বলা, সে যেন কেবল বিতার্কিক কিংবা রাজনীতিবিদদের জন্যই বরাদ্দ।


কিন্তু গবেষক বা উচ্চশিক্ষার্থী হতে হলে নিজের কাজকে সবার সামনে তুলে ধরাটা খুব জরুরি। কেবল তাই না, ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবী, সবাইকেই প্রায় কোনো না কোনো সময়ে প্রেজেন্টেশন দিতে হয়। এক রুম ভর্তি লোকজনের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে হয়। আজকের এই লেখাটা আপনাদের জন্যই, যাঁদের সবার সামনে দাড়িয়ে কথা বলতে গেলে কাপে হাঁটু, মাথা ঘুরে, আর গলাটা শুকিয়ে তোতলাতে থাকেন।


২৬ বছর পর আমি আজ কথা বেচে খাই, মানে একজন শিক্ষক হিসাবে বা গবেষক হিসাবে সপ্তাহে প্রায় ৬-৮ ঘণ্টা টানা কথা বলি এক রুম ভর্তি মানুষের সামনে। আমি এখন যেকোনো বিষয়ে, এমনকি যে বিষয়ে হালকা জানি, তার উপরেও ঘণ্টা খানেক কথা বলতে পারবো, কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই। অধ্যাপনা পেশার এ এক অঙ্গাঅঙ্গী অংশ। কিন্তু কীভাবে পাল্টালাম নিজেকে? আসুন দেখা যাক।


১) কী বলবেন, ঠিক করে নিন সবার আগে। আপনি যদি জানেন কীসের উপরে কথা বলতে হবে, তাহলে কথা বলার আগে চিন্তা করে নিন। কী বলবেন, কেনো বলবেন, কীভাবে বলবেন, আগেই ভেবে রাখুন। স্লাইড প্রেজেন্টেশন যদি করেন, তাহলে "প্রেজেন্টার" মোড এ করুন, আর দরকার হলে প্রতি স্লাইডের তলায় নোট লিখে রাখুন। নাহলে নোট কার্ডে কিছু লিখে রাখুন।


২) প্রস্তুতি — প্রাকটিসের উপরে আর কিছুই নাই। অবশ্যই পারলে আগে থেকে অনুশীলন করে রাখবেন। একাডেমিক বা চাকুরির প্রেজেন্টেশন দিতে গেলে অবশ্যই বন্ধু বান্ধব বা অন্তত ১/২ জ্নের সামনে প্রাকটিস সেশন করবেন। কারণ সেটা না করলে মূল সেশনে আপনার সমস্যা হবেই। বিশেষ করে সময়ের অভাব -- কথা বলার যেটুকু সময় পাবেন, তাতে সব কথা বলতে হলে আপনাকে অনুশীলন করে নিতে হবেই।


৩) মূদ্রাদোষ — আপনি হয়তো নিজেও বুঝতে পারছেন না আপনি কথা বলার সময়ে অদ্ভুত কী কী সব কাজ করেন। আমার স্কুলের এক স্যার ক্লাসে পড়াবার সময়ে একটু পরে পরেই মুখ খিঁচাতেন অদ্ভুতভাবে। আমরা একবার টালি কেটে হিসাব করে বের করেছিলাম, উনি প্রায় ৮০ বার এটা করেছেন। আপনার অনুশীলন সেশনের দর্শকদের বলুন, এগুলা খেয়াল করতে, কোনো ভঙ্গী বা শব্দ আপনি কি বার বার ব্যবহার করছেন কি না। সম্ভব হলে ভিডিও করে রাখুন, বা আয়নার সামনে কথা বলা অভ্যাস করুন। নিজেকে নিজের চোখে দেখলে অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে।


৪) দর্শকদের দিকে তাকানো — কথা বলার সময়ে এটা খুব দরকারী। দয়া করে ছাদের কড়ি কাঠ কিংবা মাইক্রোফোনের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। আপনার চোখ বুলাতে থাকেন সবদিকেই। বিশেষ কোনো দর্শকের দিকে বার বার তাকাবেন না (ক্ষেত্রবিশেষে দর্শকেরা কিন্তু আপনার চরিত্র নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করতে পারে)।


৫) ভয় কাটানো — প্রতি দর্শক মণ্ডলীতেই কেউ না কেউ থাকে যে আপনার সব কথায় হাসি মুখে বুঝতে পারছে বা এক মত হচ্ছে। সব সময়ে তাদের দিকে তাকাবেন না বটে, কিন্তু আপনার ভয় করলেই তাদের উপরে চোখ বুলিয়ে নিবেন। মনে সাহস আসবে।


৬) নার্ভাস হবেন না — ভয় লাগলে ভাববেন, আপনাকে নার্ভাস দেখালে বা স্পিচ ভালো না হলে কী হবে? লোকজন আপনাকে কি মারবে নাকি? তাহলে আর ভয়ের কী আছে? তাছাড়া একটু পরেই তো স্পিচ শেষ, কেটে পড়তে পারবেন।


৭) একঘেঁয়েমি কাটান — স্পিচ দেয়ার একটা খুব দরকারী ব্যাপার হলো একঘেঁয়েমি কাটানো। রোবটের মতো করে এক সুরে এক লয়ে কথা বলবেন না। দর্শক টেপ রেকর্ডিং শুনতে আসেনি। তাই কথা বলুন আলাপচারিতার মতো করে, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কথা বলার সময়ে আমাদের গলার স্বর কিন্তু উঠানামা করে। স্পিচের ক্ষেত্রেও তাই করুন।


৮) স্থির হয়ে থাকবেন না — এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকে মূর্তি বনে থাকবেন না। একটু নড়াচড়া করুন। হাত নাড়ুন।


৯) রিডিং পড়বেন না — স্লাইডের দিকে তাকিয়ে রিডিং পড়বেন না। অথবা আপনার হাতে লেখা বক্তৃতার কপি লাইন ধরে ধরে পড়বেন না। অত্যন্ত বিরক্তিকর।


১০) মুখস্ত করা বাদ দিন — সবশেষে আবারও বলি, ভয় পাবেন না, আর প্রতিটা লাইন মুখস্ত করে যাবেন না। মুখস্ত করে গেলে আপনার দুই একটা লাইন নার্ভাসনেসের কারণে মিস যাবে নিশ্চিত। তখন আরো নার্ভাস হবেন। তাই বিষয়টা বুঝে নিয়ে কথা বলুন। হড়বড় করে কথা বলবেন না। আস্তে আস্তে ধীরে ধীরে বলুন। বিষয়টা বোঝা থাকলে আপনি অবশ্যই সেটা পারবেন। সবার দিকে তাকাতে ভয় লাগলে যেটা ৪ নম্বরে বলেছি, মানে এক জায়গায় চোখ না আটকে রেখে চোখ পুরা রুমে ঘোরানো, সেটা আস্তে আস্তে করেন। থামুন। বিরতি নিন ২/৩ সেকেন্ডের। আলাপচারিতা যেভাবে করেন, সেভাবেই কথা বলুন।

Take it easy, বুক ভরে শ্বাস নিন, বিরতি দিয়ে একটু পানি খেয়ে নিন। ভয়ের কিচ্ছু নাই।

এভাবেই দিন আপনার প্রেজেন্টেশন কিংবা অন্য স্পিচ, আর করে দিন বাজিমাত।

#গবেষণা
 

Users who are viewing this thread

Back
Top