What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

আত্মহত্যা প্ররোচনাকারী ‘ব্লু হোয়েল’ গেইমের ইতিহাস ! (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
nR3kE1p.jpg


২০১৫ সালের কথা, রাশিয়ায় ১৫ বছরের একটা মেয়ে ১৪ তলা বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করে। পারিবারিক-সামাজিক সকল ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ মেয়েটার অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি তার মা। ভদ্রমহিলা তার মেয়ের ফোন আর ল্যাপটপ ঘাঁটাঘাঁটি করে জানতে চাইলেন অনলাইনে সোশ্যাল মিডিয়ায় কাদের সাথে তার নিয়মিত যোগাযোগ হত।

রাশিয়ায় VK নামক একটা সোস্যাল মিডিয়া খুব জনপ্রিয়। অনেকটা ফেইসবুকের মতো এই মিডিয়ায় মেয়েটা F57 নামের একটা গ্রুপের মেম্বার ছিলো। ভদ্রমহিলা দেখতে পেলেন এই গ্রুপ থেকে প্রতিদিন ডিপ্রেশনমূলক পোস্ট, গান, ছবি কিংবা ভিডিও ক্লীপ ইত্যাদি আপলোড করা হচ্ছে। আর গ্রুপের মেম্বাররা সেসব শেয়ার করছে। তার সদ্যমৃত মেয়েও এসব পোস্ট রেগুলারলি শেয়ার করত। দেরি না করে ওই মহিলা গ্রুপটির ব্যাপারে পুলিশকে অবহিত করলো। পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এলো এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। গত দুই বছরে শুধুমাত্র রাশিয়ায় আত্মহত্যা করা ১৩০ জনের মৃত্যুর জন্যে দায়ী ওই F57 গ্রুপ। আত্মহত্যাকারীদের মধ্যে বেশিরভাগই মেয়ে, যাদের বয়স ১৪ থেকে ১৭ বছর।

চলুন জেনে নেয়া যাক এমন কি ছিলো ওই গ্রুপে, যার জন্যে মাত্র ২ বছরে এতোগুলো মানুষ আত্মহত্যা করলো বা করতে বাধ্য হলো !

F57 VK Group

F57 গ্রুপের এ্যডমিনরা প্রথমেই গ্রুপের মেম্বারদের মধ্যে থেকে মাত্রাতিরিক্ত ডিপ্রেস্ড আর দুর্বল চিত্তের টিনএজারদের শনাক্ত করতো। তারপর তাদের একটা বিশেষ অলটারনেট রিয়েলিটি ভিত্তিক গেইম খেলার জন্যে আমন্ত্রন জানানো হতো। অলটারনেট রিয়েলিটি বলতে বুঝায় এমন এক ধরনের গেইম, যার টাস্কগুলো সম্পন্ন করতে হয় রিয়েল লাইফে, কিন্তু প্রমানস্বরুপ সেসব টাস্কের ছবি তুলে অনলাইনে আপ্লোড করতে হয়।

F57 গ্রুপ থেকে শেয়ার করা গেইমটির নাম হচ্ছে ব্লু হোয়েল (Blue Whale) কিংবা নীল তিমি। যারা এই গেইম খেলতে সম্মতি জানায়, তাদেরকে প্রথমেই নিজের নাম, পরিবার, বাসস্থান সহ অন্যান্য পার্সোনাল ইনফর্মেশন সাবমিট করতে হয় কিউরেটরের কাছে। কিউরেটর হচ্ছে সেই ব্যক্তি যে গেইমারদের বিভিন্ন টাস্ক দিবে এবং তাদের সাবমিট করা প্রমান বা তথ্য যাচাই-বাছাই করে পরবর্তি টাস্কের জন্যে গেইমারকে রেডি করবে।

ব্লু হোয়েল গেইম (Blue Whale Game)

ব্লু হোয়েল এমন একটি গেইম, যাতে মোট ৫০টি স্টেজ আছে। প্রথমদিকের স্টেজ গুলো হয় খুব ইজি। যেমন, কিউরেটরের পাঠানো ভিডিও দেখা, মিউজিক শোনা, ছবি কিংবা পোস্ট সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা, সারাদিন পরিবারের কারো সাথে কোনো কথা না বলা, সারাদিন না খেয়ে থাকা, রাত ৪.২০ মিনিটে ঘুম থেকে উঠে ছাদে গিয়ে প্রচন্ড ঠান্ডার মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা, রাত ৪.২০ এ কাছাকাছি কোনো রেললাইনে গিয়ে একা একা বসে থাকা ইত্যাদি। ধীরে ধীরে গেইম যত সামনের দিকে আগায় টাস্কগুলো তত কঠিন থেকে কঠিনতর হতে থাকে। যেমন ছুঁড়ি দিয়ে পায়ে তিনটা কাঁটা দাগ দেয়া, ব্লেড দিয়ে হাতে F57 লিখা, সুঁই দিয়ে হাতে ফুঁটো করে করে নীল তিমি আঁকা ইত্যাদি।

ব্লু হোয়েল গেইমেরস প্রতিটি স্টেজে এভাবে একটা করে আলাদা টাস্ক দেয়া হয়। এবং একবার ব্লু হোয়েল গেইম শুরু করার পর অবশ্যই গেইমারকে সবগুলো স্টেজ কমপ্লিট করতে হবে। কেউ মাঝপথে এর ভয়াবহতা দেখে ছেড়ে দিতে চাইলে কিউরেটর তাকে প্রথমে হিপ্নোটিজম, তাতে কাজ না হলে ভয়-ভীতি এমনকি গেইমারের পুরো পরিবারকে হত্যার হুমকি দিয়ে হলেও গেইম সম্পূর্ন করতে বাধ্য করে। যেহেতু কিউরেটরের কাছে গেইমারদের সব পার্সোনাল তথ্য আগে থেকেই দেয়া থাকে, তাই গেইমার বাধ্য হয় কিউরেটরের কথা মানতে। গেইম শুরু করার পর প্রতিদিন একটা করে নতুন টাস্ক কমপ্লিট করে ৫০তম স্টেজে এসে গেইমার বাধ্য হয় আত্মহত্যা করতে।

২০১৩ সালে ব্লু হোয়েল নামে এই ভয়ঙ্কর গেইমটি চালু করেছিলো রাশিয়ার একজন শিক্ষানবিশ সাইকলোজিস্ট, নাম ফিলিপ বাডকিন। এই ফিলিপ আবার বিভিন্ন অনিয়ম ও উচ্ছৃঙ্খলতার কারনে তার ভার্সিটি থেকে এক্সফেইল্ড হয়েছিলো। পুলিশের কাছে দেয়া তার জবানবন্দীতে সে দাবী করেছে, এই গেইমের মাধ্যমে সে সমাজ থেকে সেইসব অবাঞ্ছিত ও দুর্বল মানুষদের মেরে ফেলতে চেয়েছিলো যারা সমাজ কিংবা দেশের কোনো উপকারেই আসবে না। এক অর্থে সে খানিকটা সফলও হয়েছিলো বলা চলে।

২০১৩ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত সারাবিশ্বে প্রায় আড়াইশ' মানুষের মৃত্যুর পিছনে রয়েছে এই ব্লু হোয়েল গেইমটি। ব্লু হোয়েল গেইমের প্রতিষ্ঠাতা ফিলিপ গ্রেফতার হওয়ার পর রাশিয়ান পুলিশ অফিসিয়ালি গেইমটি বন্ধ করে দিলেও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অন্যান্য নামে এখনো সক্রিয় রয়েছে এটা। উল্লেখযোগ্য নামগুলোর মধ্যে রয়েছে a silent house, a sea of whales, wake me up at 4.20am ইত্যাদি। ইউরোপ, আমেরিকা সহ আমাদের পার্শবর্তী দেশ ভারতেও এই গেইমের কারনে সুইসাইড করার খবর পাওয়া গেছে। শুধুমাত্র গতো দুই মাসেই ভারতে ৮ জনের সুইসাইডের পেছনে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত রয়েছে এই ব্লু হোয়েল ! আমাদের সমাজের টিনএজারদের মধ্যে ডিপ্রেশনের পরিমান এত বেশি যে যেকোনো সময় আঘাত হানতে পারে এই মরণঘাতী গেইমটি।

তাই আপনার পরিবার কিংবা বন্ধু-বান্ধবদের দিকে নজর রাখুন, তাদের সময় দিন এবং ডিপ্রেশন কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করুন। নির্জনমেলার পরিবারের পক্ষ থেকে সকলের সুস্থ্যতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top