What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

‘ছারপোকা’ তাড়াতে ঔষধ নয়, প্রয়োজন সঠিক শিক্ষার ! (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
8P3KGh6.jpg


'ছারপোকা' বহুল আলোচিত নাম।ঢাকার শহরে এই রক্তচোষা প্রাণীকে চেনে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বাসা-বাড়ির বিছানা, বালিশের মধ্যে এর বসবাস।প্রায়ই রাতের অন্ধকারে এরা এদের অপারেশন চালিয়ে অন্যের কষ্টার্জিত রক্তে নিজেদের পেট পুরে নেয়।কিন্তু যে সকল মানুষ নামের অমানুষ দিনের আলোয় মানুষের রক্তচুষে নেয়, সেসকল ছারপোকার কাছে রাতের ছারপোকা অতিব নগণ্য।আমরা মানুষ নামের ছারপোকাদের গ্রেট ছারপোকা বলে সম্বোধন করব।

গ্রেট ছারপোকার বসবাস শুধুমাত্র ঢাকার শহর নয়, শহর পেরিয়ে সুদূর গ্রামে-গঞ্জেও ছড়িয়ে পরেছে। উদাহরণ স্বরুপ বলতে গেলে এদের বসবাস শিক্ষাঙ্গনে, অফিস-আদালতে, চিকিৎসা কেন্দ্রে, প্রশাসনিক ভবনগুলোতে এবং সর্বোপরি ধর্মীয় উপাসনালয়ে।

বর্তমানে বাংলাদেশে ১৫+ সাক্ষরতার হার ৬৪.০৬% হলেও আধুনিকতার ছোঁয়ায় উঁচু থেকে নিচু শ্রেণীর জনমনে শিক্ষার গুরুত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দারিদ্র্যতার জালে জর্জরিত হওয়া সত্ত্বেও মা-বাবা কস্ট করে ছেলে-মেয়েকে পড়াশুনা করার সুযোগ করে দেন। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষাঙ্গনে চালু হয়েছে বেসরকারি স্কুল এবং কোচিং সেন্টার নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যার করাল গ্রাসে ঝরে পড়ছে কোমলমতি মেধাবী ও দেশের ভবিষ্যৎ।কেননা দরিদ্র পরিবারের পক্ষে কোচিং ফি,বেতন ও অন্যান্য খরচ বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থের যোগান দেওয়া সম্ভব না।আর যারা প্রতিকূলতার মাঝেও টিকে থাকে তাদের লক্ষ্য থাকে বড় হয়ে চাকরি করে ব্যয়কৃত অর্থ পুনরুদ্ধার করা। এটাই কি শিক্ষালয়ের শিক্ষা হওয়া উচিৎ? অবশ্যই না। আর শিক্ষা ব্যবস্থার এহেন সংজ্ঞা আনয়নে দায়ী শিক্ষক নামের গ্রেট ছারপোকা সম্প্রদায়। যারা শিক্ষার নামে সাধারণ মানুষের রক্ত পানি করা উপার্জিত অর্থে ভাগ বসান। অতএব এদেরকে কোনক্রমে শিক্ষক বলা যায় না।এদের শিক্ষাঙ্গনের 'গ্রেট ছারপোকা' তথা 'রক্তচোষা' সম্বোধন করা আবশ্যক।

বাংলাদেশ গ্রাম প্রধান দেশ। সচেতনতার অভাবে শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষ বিভিন্ন দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিভিন্ন জেলা শহরে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে অসংখ্য বেসরকারি ক্লিনিক বা সেবা কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। এদের নির্দিষ্ট কোন ডাক্তার নেই। ঢাকার বিখ্যাত হাসপাতাল বারডেম,স্কয়ার,পিজি,সোহরাওয়ার্দী সহ বিভিন্ন হাসপাতালের ডাক্তারগন কন্টাকের ভিত্তিতে সপ্তাহে একদিন গ্রামের জেলা শহরের ক্লিনিকগুলোতে সময় দেন। ক্লিনিকগুলো বড় ডাক্তারের সাইনবোর্ড দেখিয়ে অসহায়, দুস্তদের থেকে ভিজিট হিসেবে আদায় করে নেন বিপুল অংকের টাকা। অথচ ডাক্তার একদিকে রোগীর সমস্যার কথা জিজ্ঞেস করেন অন্যদিকে স্লিপে একটার জায়গায় পাঁচটা টেস্ট ও স্লিপ ভরে ঔষধের নাম লিখে দিচ্ছেন (মুখস্থ)। রোগী প্রতি সময় দিচ্ছেন সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৪মিনিট।এবার প্রতিটা টেস্টের জন্য গুনতে হয় ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত। তারপরও সন্দেহ থেকে যায় টেস্ট পরবর্তী রেজাল্ট সঠিক কিনা !

আবার প্রতিটা টেস্টের জন্য গুনতে হয় ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত।পাঁচটা টেস্টের সমষ্টিগত ব্যয়ভার বহন করতে প্রায়ই হিমশিম খেতে হয় তাদের। তারপরও সন্দেহ থেকে যায় টেস্ট পরবর্তী রেজাল্ট সঠিক কিনা ! কেননা এমনও দেখা গেছে গ্রামের ক্লিনিকে বলা হয়েছে রক্তের গ্রুপ B-(Neg)। শহরের টেস্ট করার পর সেটা A+(ve) হয়ে গেছে। অথবা বলা হচ্ছে রোগীর (অবিবাহিত) পেটে বাচ্চা আছে। অথচ শহরের কোনো উন্নত ক্লিনিকে টেস্ট করা হলে পেটে বাচ্চার পরিবর্তে টিউমার ধরা পরে। এরকমও উদাহরণ রয়েছে, টিউমার ধরা পরার পূর্বে রোগী অনেক সময় আত্মসম্মানবোধের তাড়নায় আত্মহনন করে বিদায় নিয়েছেন।

ক্লিনিগুলোর পরিক্ষাগারে স্বল্প বেতনে কাজ করেন কলেজ কিংবা স্বল্প শিক্ষিত অনভিজ্ঞ ছাত্র-ছাত্রী। অর্থাৎ সার্টিফিকেট বিহীন। তারা ৪-৫টা টেস্টের জন্য সময় নিচ্ছে সর্বোচ্চ ২০ থেকে ৩০ মিনিট, যা অভিজ্ঞ কোন পরিক্ষকের দ্বারাও সম্ভব নয়। উদাহরণ স্বরুপ, আমার জেলা শহর ভোলা'র কথা উল্লেখ করা যায়। যেখানে আমার স্কুল পড়ুয়া এক বন্ধু শহরের একটা বিখ্যাত ক্লিনিকে পরিক্ষাগারে দায়িত্বে আছে। অভিজ্ঞতার কথা জিজ্ঞেস করলে বলেছে, "দেখে শিখেছে"। কিন্তু আফসোস যার কাছে শিখেছে, সেও দেখে শেখা !

একবার শহরের সদর হাসপাতালে (সরকারি) দন্ত বিভাগের শরণাপন্ন হতে হয়েছে। লক্ষ্য করলাম ডাক্তার শাহীন চৌধুরী (ডিগ্রিধারী) প্রত্যেক রোগীকে দাঁতের সমস্যার জন্য দাঁত ফেলে দিতে বলছেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, "ফেলে দেওয়া ছাড়া কোনো প্রতিকার নেই নাকি?" প্রত্যুত্তরে তিনি ছোট্ট করে বললেন, 'চেম্বারে আইসেন'(ব্যাক্তিগত)। অথচ দন্ত বিভাগেই ফিলিং, রুট ক্যান মেশিন পরে থেকে থেকে জঙ ধরে পরে আছে। এরা কি সমাজের গ্রেট ছারপোকা নয়? যারা চিকিৎসার নামে হত দরিদ্রের রক্ত চুষে খাচ্ছেন।

BW8GMIm.jpg


কথিত আছে কেস-মামলার মার পেঁচে যারা পরেন সেখানে বাদী, আসামী দুজনই দেউলিয়া হয়ে বাড়ি ফেরেন। কেননা সামান্য দু চার টাকার কাগজে দরখাস্ত লিখেও মুহুরি ২০০০ টাকা দাবী করে বসেন। কারণ হিসেবে দাঁড় করান উকিলের কমিশন সহ ইত্যাদি ইত্যাদি খরচা আছে তাদের। এবার বাদী বা আসামী অনেক বলে কয়ে ১০০০-১৫০০ দিয়ে বিদায় হন। মামলাও শেষ হয় না; উকিল আর মুহুরিদের রক্তচোষাও বন্ধ হয় না। জবে শেষ হয়, ততক্ষণে বাদী, আসামী উভয়ে সব হারিয়ে নিঃস্ব। এরাই হচ্ছেন আদালতের গ্রেট ছারপোকা !

ধর্মীয় উপাসনালয় গুলোতেও গ্রেট ছারপোকার অবস্থান বেশ পাকাপোক্ত। ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা এদের প্রধান কাজ। সম্প্রতি জঙ্গি হামলা গুলো এর প্রধান উদাহরণ। ধর্ম রক্ষার্থে "জিহাদ" করা নামে ব্রেন ওয়াশ এর মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মতৎপরতা চালাচ্ছেন দেশের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়ে। সমাজে শান্তি-শৃঙখলা রক্ষার্থে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) ইয়াহুদীদের বিভিন্ন সুবিধা দিয়েও সন্ধি করেছেন। এমনকি তিনি নিজের ইচ্ছায় কখনো যুদ্ধ ঘোষণা করেননি যতক্ষণ না বিপক্ষদল যুদ্ধে অগ্রসর হয়। এখান থেকেও আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিৎ ইসলামে সন্ত্রাসীদের স্থান নাই। এছাড়াও অন্যান্য ধর্মে মানব তৈরি নানা কুসংস্কারে জর্জরিত।

প্রশাসনিক কাজের ক্ষেত্রে রক্তচোষাদের আধিক্য রয়েছে। যেমন, একজন যোগ্যতা সম্পন্ন লোক পুলিশ হতে হলে তাকে ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে চাকরি পেতে হয়। সে কিছুদিন গত হওয়ার পর নিজের লগ্নীকৃত টাকা উসুল করার জন্য নানা দুর্নীতির আশ্রয় নেয়। টাকা উসুল হতে হতে দুর্নীতি তার রক্তে মিশে গিয়ে অভ্যাসে পরিণত হয়। আর রক্তচোষা কর্মকাণ্ড বিরামহীন চলতে থাকে।

আমরা সেদিনই মানুষ হব যেদিন সঠিক শিক্ষা অর্জন করতে পারবো। আর শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য যে সার্টিফিকেট অর্জন করে চাকরি পাওয়া নয় সেটা যেদিন শিখবো। শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য মনুষত্ববোধ জাগ্রত করা। মানুষকে মানবতার কল্যাণে অগ্রসর করা।আজকের ছাত্র/ছাত্রী আগামী দিনের শিক্ষক,চিকিৎসক,উকিল,জজ, ধর্মগুরু। সুতরাং আজকে তারা সঠিক শিক্ষা পেলে আগামি দিনে মনুষ্যত্বপূর্ণ পৃথিবী গড়ে তোলা সম্ভব। সর্বোপরি বলবো পানিতে ঢিল না ছুড়লে ঢেউ হবে না। অর্থাৎ দুর্নীতির শেখর উপ্রে ফেলুন; গাছ জন্মাবে না।

[একটু বেশি লিখে ফেলেছি। বোধহয় ছোটখাট একটা প্রবন্ধ হয়ে গেছে। ]
 

Users who are viewing this thread

Back
Top