What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

কালা জাহাঙ্গীর, মেধাবী ছাত্র থেকে ঢাকা শহরের আতংক ! (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
o54N3zK.jpg


তার গল্প শুনেছি, কখনো চোখে দেখিনি। গল্প শুনেছি পুলিশ, সন্ত্রাসী এবং বিডিআর (বিজিবি) সদস্যদের থেকে। পুলিশ বা গোয়েন্দা যারা গল্প বলেছেন, তারাও কোনোদিন তাকে দেখেননি। বিডিআর সদস্যরা যখন 'অপারেশন ক্লিনহার্ট' নাম দিয়ে সন্ত্রাসী নির্মূলে নেমেছিলেন, তারাও গল্প শুনেছেন, দেখেননি। দুয়েকজন সন্ত্রাসী বলেছেন, তারা দেখেছেন। সেই গল্পেও বিশ্বাস বা আস্থা রাখা যায়নি। টেলিফোনে কথা হয়েছে, অনেক সন্ত্রাসীই একথা বলেছেন। অনেক ব্যবসায়ী তার টেলিফোনের হুমকিতে চাঁদা দিয়েছেন, কিন্তু কেউই তাকে দেখেননি। টেলিফোনে যে আসলে কার সাথে কথা হয়েছে, তা আর কখনোই নিশ্চিত হওয়া যায়নি !

যার কথা বলছি, নাম জাহাঙ্গীর ফেরদৌস। এ নামে অবশ্য কেউই তাকে চিনেনা। কালা জাহাঙ্গীর নামেই সবাই তাকে চেনেন। কালা জাহাঙ্গীর এবং আতংক, দুটি একে অপরের পরিপূরক শব্দ। যদিও শুধুমাত্র আতংক শব্দটি দিয়ে কালা জাহাঙ্গীর নামের ভয়াবহতা বোঝানো যায় না। কোন শব্দ দিয়ে বোঝানো সম্ভব, সেটাও গবেষণার বিষয়। তার নামে শুধু একটা ফোন আসলেই আতংক ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র।

একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কালা জাহাঙ্গীরের টেলিফোন কথোপকথন –

– হ্যালো, আমি কালা জাহাঙ্গীর বলছি।
– জি, বলেন।
– আমার ৫ লাখ টাকা দরকার।
– আমি কীভাবে টাকা দেব?
– আমি জানি আপনার বাসা কোথায়। মিরপুর এক নাম্বারে থাকেন। আপনার দুই মেয়ে মনিপুর স্কুলে পড়াশোনা করে। মিরপুরে আপনার ফার্নিচারের দুটি দোকান। আমার হাতে বেশি সময় নেই। ৫ লাখ টাকা যদি না দেন, তবে আমি আপনাকে একটা বুলেট দেব। আপনি মনে হয় চিনতে পারেননি, আমি কালা জাহাঙ্গীর বলছি। আমার নাম শুনলে কেউ টাকা দেয়া নিয়ে এত কথা বলেন না। আপনার মেয়েদেরও তুলে নিতে পারি। তাতে ঝামেলা বেশি। বেশি ঝামেলায় জড়াতে চাই না। আপনার হাতে সময় দুই দিন। আমি আর ফোন করব না। আমার লোক আপনাকে ফোন করবে। টাকা দিয়ে দিয়েন, যদি বুলেট না চান। সংকেতটি মনে রাখেন। ফাইভ এল টি।'
– হ্যালো, হ্যালো…

(সংকেত বলেই ফোন রেখে দেন কালা জাহাঙ্গীর !)

ঘটনাটা ১৯৯৬ সালের। এই ব্যবসায়ীর সাথে কথা হয়েছিল ১৯৯৭ সালের কোনো এক সময়ে। টেলিফোন কথোপকথন হুবহু নয়। তবে এমনই শুনেছিলাম। স্মৃতি থেকে লিখছি। বাক্য নিজে লিখছি, ঘটনাটা স্পষ্ট মনে আছে।

দুইদিন পর দুপুরের দিকে দোকানে ফোন এলো। কর্মচারী ধরে ব্যবসায়ীকে দিলেন…

– হ্যালো, কে?
– ফাইভ এল টি।
– হ্যালো, আপনি কে?
– আজ সন্ধ্যা ৭টার সময়, মিরপুর ১০ নাম্বার গোল চক্করের বাম দিকের ফুটপাতে একটা পান-সিগারেটের দোকান আছে। একটা প্যাকেটে টাকা নিয়ে ওখানে আসবেন। সিগারেটের দোকান থেকে ৬টা গোল্ডলিফ সিগারেট কিনবেন। ৫০ টাকার নোট দিবেন। ৫ লাখ টাকার প্যাকেটটা বের করে দোকানের উপর রাখবেন। কোনোদিকে তাকাবেন না। দুইজন আপনার সাথে হাত মিলিয়ে কথা বলবে। একটি ছেলে ওই প্যাকেটটা নিয়ে আপনার পেছন দিকে চলে যাবে। ভুল করেও পেছন দিকে তাকাবেন না। আর যদি চালাকি করেন, পুলিশকে জানান, তাহলে কি হবে বুঝতেই পারছেন।

ভয় আতংকে প্রেসার বেড়ে গেলো ব্যবসায়ীর। পরিচিত দুয়েকজনের সঙ্গে আলাপ করলেন। কেউ পুলিশে জানাতে বললেন। কেউ বললেন, "পুলিশে জানালে বিপদ বাড়বে। কালা জাহাঙ্গীরকে তো টাকা দিতে হবেই, পুলিশকেও দিতে হবে।" আবার কেউ বললেন, "টাকা দিয়ে রক্ষা পাবেন না। কতবার টাকা দেবেন? কিছুদিন পরপর টাকা চাইবে।"

ভদ্রলোকের তো আর চিন্তায় ঘুম আসে না। তিনি দোকানেও যান না। সারাদিন বাসায় থাকেন। মেয়েদের স্কুলে পাঠান না।

তো তারপর নির্ধারিত সময়ে তিনি আর টাকা নিয়ে গেলেন না। সাতদিন কেটে গেল, আর কোনো ফোনও এলো না। কিছুটা চিন্তা মুক্ত হলেন তিনি। বিপদ তাহলে কেটে গেছে। প্রায় পনেরো দিন পর আরেকটু সাহস বাড়লো। মেয়েরা স্কুলে গেলো। তিনি নিজেও দোকানে গেলেন। এতদিন কর্মচারীরা ব্যবসা দেখাশোনা করছিলো।

সন্ধ্যার আগে বাসায় ফিরে আসতে হবে। ভদ্রলোক বিকেল চারটার দিকে রিকশায় উঠলেন। রিকশা কিছুদূর এগোতেই পেছন থেকে আরেকটি রিকশা দ্রুতগতিতে সামনে এসে দাঁড়ালো। অল্প বয়সী দুটো ছেলে রিকশা থেকে নেমে বললো, 'ভাই সালাম। আপনাকে আর একদিন সময় দেয়া হয়েছে। কাল দুপুর ১.৪৫ মিনিটে দোকানে থাকবেন। একজন একটি আলমারী কিনতে আপনার দোকানে যাবে। বলবে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে শিশু কাঠের আলমারি হবে কিনা। প্যাকেটটা তার হাতে দিয়ে দেবেন'।

এই বলেই ছেলে দুটি রিকশায় উঠে চলে গেল। স্তব্ধ হয়ে রিকশায় বসে থাকলেন ব্যবসায়ী ভদ্রলোক।

পরের দিন নির্ধারিত সময়ে একজন কিশোর গেলো দোকানে। কোনো ভয়-ডরহীন নির্বিকার কিশোর। গায়ের রঙ কালো, বয়স ১৫-১৬ বছরের বেশি না। দোকানে ঢুকেই সে পেছনের দিকে চলে গেলো। কর্মচারী এগিয়ে গেলো,

– কি দেখবেন?
– মালিককে এদিকে আসতে বলেন।

কর্মচারী ছেলেটা হাতের ইশারায় ডাকল ব্যবসায়ীকে। টাকার খাম হাতে এগিয়ে গেলেন ব্যবসায়ী। কিশোর ছেলেটা বললো, 'পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে শিশু কাঠের আলমারী খুঁজছিলাম'। তারপর আস্তে করে বলল, তাড়াতাড়ি করেন সময় নেই। এরপরই সে ছোঁ মেরে হাতের খামটি নিয়ে চলে গেল।

দশ মিনিট পর ফোন এলো…

– কালা জাহাঙ্গীর বলছি
– জি, ভাই সালাম
– দুই লাখ টাকা কখন দেবেন?

ব্যবসায়ী কান্নাকাটি, অনুনয় বিনয় করে বোঝালেন, "ভাই আমার ছোট ব্যবসা। অনেক কষ্ট করে তিন লাখ টাকা দিয়েছি। আরো দুই লাখ টাকা আমার কাছে নেই। কিভাবে দেব!"

কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে টেলিফোনের ওপাশ থেকে বললেন, 'ঠিক আছে। ভয় পাবেন না। আমার লোকজন সবসময় এই এলাকায় থাকে। আর কেউ আপনার কাছে টাকা চাইবে না। কেউ যদি চায়, আমার কথা বলবেন। বলবেন, কালা জাহাঙ্গীর টাকা দিতে নিষেধ করেছে। তাহলে আর এই এলাকায় কেউ আপনাকে ডিস্টার্ব করবে না।'

যার কথা বলছি, তার এখনো ফার্নিচারের দোকান দুটো আছে কিনা জানি না। ২০০২-০৩ সাল পর্যন্ত তার ব্যবসা ভালোই চলছিলো। তারপর থেকে আর যোগাযোগ নেই তার সাথে…

আন্ডারওয়ার্ল্ডের কালা জাহাঙ্গীর

SziqwHN.jpg


কালা জাহাঙ্গীর

১৯৯২ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ঢাকা শহরে রাজত্ব কায়েম করেছিল কালা জাহাঙ্গীর নামক একটি নাম। এই সময়কালে ঢাকা শহরে অধিকাংশ হত্যাকান্ড হয়েছে তার নামে। কালা জাহাঙ্গীরের নামে মানুষ হত্যা, কালা জাহাঙ্গীরের নামে চাঁদাবাজি, সবমিলিয়ে এক অস্থির সময়। চাঁদার পরিমাণ ছিল ৫০ হাজার থেকে ২০ লাখ পর্যন্ত। চাঁদা দিয়ে অনেক ব্যবসায়ী বেঁচে গেছেন। কালা জাহাঙ্গীরের লোকজন তাদের দেখে রেখেছে, এমন ঘটনা যেমন আছে। তেমনি চাঁদা না দিয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, এমন ঘটনাও অনেক আছে।

কালা জাহাঙ্গীর নামক অদৃশ্য এই সন্ত্রাসীর নামে ঢাকা শহরে যে কত কোটি টাকার চাঁদাবাজি হয়েছে, তার কোনো হিসাব নেই। তার নামে ঘটানো হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা কমপক্ষে ১০০টি। টানা দশবছর মিরপুর, বনানীসহ ঢাকার অনেক এলাকায় নিরবচ্ছিন্নভাবে চাঁদাবাজি এবং হত্যাকাণ্ড ঘটেছে কালা জাহাঙ্গীরের নামে।

সাংবাদিকতার রিপোর্টার জীবনে ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ে কিছু কাজ করার সুবাদে কাজের অভিজ্ঞতায় একটা বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছি, সন্ত্রাসীদের নামে নানা গল্প, মিথ তৈরি করে পুলিশ-গোয়েন্দারা। সন্ত্রাসীদের রোমাঞ্চকর গল্পগুলো পুলিশ বলে, সাংবাদিকদের কাছে। সাংবাদিকরা সেই গল্প লেখেন পত্রিকায়। অন্য সব রিপোর্টের মত এই গল্পের সূত্র উল্লেখ করতে হয় না অধিকাংশ ক্ষেত্রে। সত্য-মিথ্যা যে কল্পকাহিনীই লেখা হোক না কেনো, প্রশ্নের মুখে পড়ার ভয় থাকেনা। একজন সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীরকে নিয়ে যত গল্প তৈরি হয়েছে, তার সবই পুলিশ-সাংবাদিকদের তৈরি করা। কালা জাহাঙ্গীরের ঘাড় কাত করা একটি ছবি অসংখ্যবার সব পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। আদৌ এটাই কালা জাহাঙ্গীরের ছবি কিনা, সেই রহস্যের কিনারা আজও হয়নি। আদৌ কালা জাহাঙ্গীর নামে কোনো সন্ত্রাসী ছিলো কিনা, তাও আজো অজানা। অথচ তাকে নিয়ে কত গল্প !

বলা হয়, কালা জাহাঙ্গীরের বাড়ি বগুড়ায়। জন্ম ১৯৭৭ সালে। কালা জাহাঙ্গীর ১৯৯২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাঁচটি লেটারসহ স্টার মার্কস নিয়ে পাস করে। সেসময় এমন রেজাল্ট করত বাছাই করা অল্প কিছু ছাত্রই। সে হিসেবে ভবিষ্যতে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে স্কুলশিক্ষিকা মায়ের মুখ উজ্জ্বল করারই কথা ছিলো তার। কিন্তু সময়ের অদ্ভুত খেলা কে জানে ! কে জানত তার এ মেধা সে কাজে লাগবে অন্ধকার জগতে? কালা জাহাঙ্গীরের বেড়ে ওঠ‍া ঢাকার ইব্রাহিমপুরে। সেখানকার ১৩১/১নং আদর্শপল্লীর বাসায় থাকত মায়ের সাথে। অসাধারণ কৃতিত্বের সঙ্গে স্কুল পেরোনোর পর ভর্তি হয়েছিল তেজগাঁও কলেজে।

কিন্তু ওই সময় ঘটে যায় একটি দুর্ঘটনা। কাফরুল এলাকার লিটন ও মাসুম নামের দুই যুবকের সঙ্গে বিরোধ বাধে জাহাঙ্গীরের। বিরোধের একপর্যায়ে তাদের ছুরিকাঘাত করে বসে জাহাঙ্গীর। এ ঘটনার জের ধরে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জীবনে এই একবারই গ্রেফতার হয় সে। ২১ দিন হাজতবাস করে ছাড়া পায়। কিন্তু এ ২১ দিনের হাজতবাসে বদলে যায় অনেক কিছুই। ২১ দিনে তার ভেতরকার তুখোড় মেধাবী ছেলেটি বনে যায় এক দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীতে। এই ২১ দিনে ফেরদৌস জাহাঙ্গীর হয়ে ওঠে কালা জাহাঙ্গীর।

জেল থেকে বের হয়ে জাহাঙ্গীর আর পড়াশোনা করে না। এলাকার কিছু বখাটে তরুণদের নিয়ে ছিনতাই-চাঁদাবাজি-মাস্তানি শুরু করে। সবাই তাকে চিনতে শুরু করে কালা জাহাঙ্গীর নামে।

১৯৯৬ সালে 'কিসলু' হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে কালা জাহাঙ্গীরের দানবীয় আত্মপ্রকাশ ঘটে। তখন থেকেই কালা জাহাঙ্গীর হয়ে ওঠে আতঙ্ক। 'ব্লাক প্যানথার' নামে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ গড়ে তোলে কালা জাহাঙ্গীর। ব্লাক-প্যানথারের সন্ত্রাসী কাহিনী ছড়িয়ে পড়ে সবার মুখে মুখে। ,২০০২-০৩ সালের দিকে এসে প্রশ্ন দেখা দেয় কালা জাহাঙ্গীর জীবিত নাকি মৃত ! পুলিশের একাধিক সূত্র একাধিক গল্প প্রচার করে তার মৃত্যু নিয়ে। এই পুরো সময়কালে কালা জাহাঙ্গীর নামক এই সন্ত্রাসীকে পুলিশ কখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

কালা জাহাঙ্গীর জীবিত না মৃত?

কালা জাহাঙ্গীরের মৃত্যু নিয়ে একটি গল্প এমন। কোনো একটা কারণে তার 'ব্লাক প্যানথার' গ্রুপ ভেঙে যায়। নানা গ্রুপ, সাব-গ্রুপ তৈরি হয়। তার গ্রুপের জুনিয়র সন্ত্রাসীরা তাকে অসম্মান করে, হত্যার চেষ্টা চালাতে থাকে। হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে কালা জাহাঙ্গীর। মিরপুর-বনানী এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারাতে থাকে সে। ২০০৩ সালের কোনো একদিন হতাশ কালা জাহাঙ্গীর নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে আত্মহত্যা করে।

আরেকটি গল্পে বলা হয়, ঢাকা থেকে পালিয়ে যশোর চলে যায় কালা জাহাঙ্গীর। 'অপারেশন ক্লিনহার্ট' থেকে বাঁচার জন্যে সে ভারতে পালিয়ে যেতে চায়। যশোরে গিয়ে তার সাথে অন্য গ্রুপের সন্ত্রাসীদের দেখা হয়। দুই গ্রুপের গোলাগুলির মধ্যে পড়ে নিহত হয় কালা জাহাঙ্গীর। তার মূখ এসিড দিয়ে ঝলসে দেয়া হয়, ফলে শনাক্ত করা যায়নি তাকে।

আরেকটি গল্পে বলা হয়, সন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নানের (র‌্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত) সাথে বিরোধ তৈরি হয় কালা জাহাঙ্গীরের। এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের সন্ত্রাসীদের হত্যা করতে থাকে। বনানী এলাকার নিয়ন্ত্রণ পিচ্চি হান্নান ছেড়ে দিতে বলে কালা জাহাঙ্গীরকে। প্রভাব টিকিয়ে রাখা, চাঁদাবাজির জন্যে লাভজনক বনানী এলাকা ছেড়ে দিতে রাজি হয় না কালা জাহাঙ্গীর। উল্টো কারওয়ান বাজার এলাকা থেকে পিচ্চি হান্নানকে সরিয়ে দখল প্রতিষ্ঠা করতে চায় কালা জাহাঙ্গীর। একপর্যায়ে পিচ্চি হান্নান আপসের প্রস্তাব দেয়। কলেজ গেট এলাকায় সন্ত্রাসী নিটোলের বাসায় জাহাঙ্গীর-হান্নান মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়। নিটোলের সহায়তায় কালা জাহাঙ্গীরকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই মিটিংয়ের আয়োজন করে পিচ্চি হান্নান। নিটোলের বাড়িতে ঢুকেই কালা জাহাঙ্গীর কিছু একটা আঁচ করতে পারে। সঙ্গীদের নিয়ে গুলি চালাতে শুরু করে কালা জাহাঙ্গীর। পিচ্চি হান্নান-নিটোলদের প্রস্তুতি বেশি থাকায় গুলিবিদ্ধ হয় কালা জাহাঙ্গীর। তারপর গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত জাহাঙ্গীর পালিয়ে মহাখালী সাততলা বস্তিতে চলে যেতে সক্ষম হয়। সাততলা বস্তি তখন সন্ত্রাসী মোল্লা শামীমের আস্তানা। মোল্লা শামীম ছিলো কালা জাহাঙ্গীরের ঘনিষ্ঠ। মোল্লা শামীমের সন্ত্রাসীরা বক্ষব্যাধী হাসপাতাল থেকে অস্ত্রের মুখে একজন ডাক্তার ধরে আনে। বস্তিতে সেই ডাক্তার কালা জাহাঙ্গীরকে বাঁচানোর সাধ্যমত চেষ্টা করেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাকে বাঁচানো যায় না। পরে গোপনে সাততলা বস্তিতেই তার দাফন হয়।

শুধুমাত্র কালা জাহাঙ্গীরের মৃত্যু নিয়েই কমপক্ষে এমন ৮-১০টি গল্প প্রচলিত আছে। সব গল্পের সূত্র সম্মিলিতভাবে পুলিশ এবং অন্য সন্ত্রাসীরা, যারা কেউ কোনো দিন কালা জাহাঙ্গীরকে দেখেননি। অদৃশ্য সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তারে বড় বড় বেশ কিছু অভিযান চালানো হয়েছিলো। সবচেয়ে বড় অভিযানটি চালানো হয়েছিলো 'অপারেশন ক্লিনহার্ট' এর সময়।


সেই অভিযানের কাহিনীটা পড়ে নিতে পারেন এখান থেকে – "কালা জাহাঙ্গীর : অপারেশন ক্লিনহার্ট"
 

Users who are viewing this thread

Back
Top