What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি তাহিরপুর (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
TPNui9l.jpg


সুনামগঞ্জ জেলার অন্যতম পর্যটন সম্ভাবনাময় জনপদ তাহিরপুর। জেলা সদর থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত অপরিমেয় সৌন্দর্যের লীলাভূমি তাহিরপুর উপজেলায় রয়েছে টাঙ্গুয়ার হাওর, যাদুকাটা নদী, বারেক টিলা, সীমান্তের ওপারে মেঘালয় পাহাড় ও নীলাদ্রি লেকের মতো মনোরম দর্শনীয় স্থান। এর পাশাপাশি নতুন পর্যটন কেন্দ্র লাল শাপলার বিকি বিলও দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে ক্রমে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের কুলঘেষা এই জনপদকে যেন নিজ হাতেই নৈসর্গিক অপরূপ দৃশ্যবলিতে সাজিয়েছে প্রকৃতি। তবে জেলা শহরের সঙ্গে উন্নত সড়ক যোগাযোগ গড়ে না উঠায় এই সৌন্দর্য উপভোগে আগ্রহী হন না অনেকেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সড়কপথের উন্নয়নের পাশাপাশি পর্যটকদের জন্য মানসম্মত আবাসিক হোটেল ও স্বাস্থ্যসম্মত রেস্তোরাঁ গড়ে তুললে তাহিরপুর হতে পারে দেশের অন্যতম সেরা পর্যটন 'হাব'।

P1T2SsC.jpg


টাঙ্গুয়ার হাওর বাংলাদেশের বৃহত্তম গ্রুপ জলমহালগুলোর অন্যতম। বিশাল এই জলাভ'মিতে প্রকৃতি বেড়ে উঠেছে আপন খেয়ালে। আর তার যে সৌন্দর্য, চোখে না দেখলে ঠিক বোঝা যাবে না। এটি আন্তর্জাতিকভাবে ঘোষিত বাংলাদেশের দ্বিতীয় 'ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ রামসার সাইট'। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও ধরমপাশা উপজেলার ৯ হাজার ৭২৭ হেক্টর এলাকা নিয়ে ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের কোলঘেঁষে এই হাওরের অবস্থান। এটি বাংলাদেশের অন্যতম বড় জলাভূমি।

Ounc4li.jpg


বর্ষাকালে হাওরটির আয়তন দাঁড়ায় প্রায় ২০ হাজার একর। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা সত্তে¡ও হাওরের বিস্তীর্ণ স্বচ্ছ নীল জলরাশি আর প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক আসেন এই টাঙ্গুয়ার হাওরে। মাঝে মধ্যে আসছেন বিদেশি পর্যটকরাও। বিলাহবহুল ট্রলার থাকায় পর্যটকদের অনেকেই হাওরে এখন রাত্রিযাপনও করে থাকেন। এর জন্য অবশ্য গুনতে হবে ট্রলার প্রতি ৬ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। উপজেলা সদরে আবাসিক হোটেল থাকলেও হাওর দেখতে আসা ৯৫ ভাগ পর্যটকই নৌকায় রাত্রিযাপন করেন। প্রতিটি দলে থাকেন ১৫ থেকে ২০ জন করে পর্যটক। সাধারণত ছুটির দিনেই পর্যটকদের আগমন বেশি হয়।

eiwiGLe.gif


রামসার প্রকল্পভুক্ত টাঙ্গুয়ার হাওরের নান্দনিক সৌন্দর্য দেখতে এসে পর্যটকরা মেঘালয় সীমান্ত সংলগ্ন দেশের বৃহত্তম শিমুল বাগান, শহীদ সিরাজ লেক (নীলাদ্রী লেক), লাকমা ছড়া, চাঁনপুর ঝর্ণা, বড়গোপ টিলা (বারেক টিলা), যাদুকাটা নদী ছাড়াও হাওর, সীমান্তে বসবাসকারী পরিবার এবং আদিবাসীদের জীবনযাপন দেখে মুগ্ধ হন।

nvVmvy4.jpg


ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া পাহাড়ের পাদদেশ দিয়ে প্রবাহিত তাহিরপুরের সীমান্ত নদী যাদুকাটার একদিকে ভারত সীমান্তের উঁচু সবুজ পাহাড়, মধ্যে ছোট ছোট টিলা আর নিচে শান্ত স্বচ্ছ জলরাশি। নদীটির পাশেই রয়েছে তাহিরপুরের আরেক পর্যটন স্থান বারেকের টিলা। বারেকের টিলার পাশ দিয়ে প্রবহমান যাদুকাটা নদীর ধু-ধু বালু আর চকচকে স্বচ্ছ নীলাভ পানি আচ্ছন্ন করবে যে কোনো ভ্রমণপিয়াসীকে। তবে অপার সম্ভাবনা থাকা সত্তে¡ও শুধু যোগাযোগের কারণে যাদুকাটা ও বারেকের টিলা পর্যটন এলাকা হিসেবে বিকশিত হতে পারেনি। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে পর্যটকরা সহজে আসতে পারতেন। সরকারও প্রচুর রাজস্ব পেত বলে মনে করে সচেতন মহল।

KbP2aer.gif


বিস্তীর্ণ নীল জলরাশি আর অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ গত সপ্তাহে তাহিরপুর উপজেলার কাশতাল এলাকায় অবস্থিত লাল শাপলার বিকি বিলকে পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছেন। বিকি বিলে এখন তাকালে মনে হবে লাল গালিচা বিছানো। জলের দেখা মিলবে পরে। যে দিকে চোখ যায়, শুধু লাল শাপলা। যেন লাল শাপলার মেলা বিলজুড়ে। পাহাড়ের কাছে হাওরের এমন সৌন্দর্য স্থানীয়দের তো বটেই, মুগ্ধ করছে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোকজনকেও।

LwwqKuq.jpg


পর্যটকদের সুবিধার্থে এসব এলাকায় নানা ধরনের কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছেন স্থানীয়রা। হাওর পাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ এবং পাহাড়ের উঁচু-নিচু পথে ঘুরে বেড়াতে পর্যটকরা ভাড়া করতে পারেন মোটরসাইকেল রাইডারদের। আর হাওরে ঘুরে বেড়ানো ও রাত্রিযাপনের জন্য রয়েছে অন্তত ২০টি বাহারি ও বিলাসবহুল নৌযান। পর্যটকদের ভ্রমণকে নিরাপদ ও আনন্দময় করতে যেগুলো ভাড়ায় পরিচালিত হয়। এ ছাড়া রয়েছে ভাড়ায় চালিত ছোট বড় আরো শতাধিক নৌযান।

NZ7rWaZ.jpg


সুনামগঞ্জ থেকে টাঙ্গুয়ার হাওরের দূরত্ব সড়ক পথে ৪৫ কিলোমিটার আর নৌপথে ৭০ কিলোমিটার। সুনামগঞ্জ জেলা সদর থেকে নৌপথে টাঙ্গুয়ার হাওর যেতে লাগে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা। আর সড়ক পথে সুনামগঞ্জ জেলা সদর থেকে তাহিরপুর থানা ঘাট পর্যন্ত যেতে লাগে ২ ঘণ্টা। তাহিরপুর উপজেলা সদরের থানাঘাট থেকে বৌলাই নদী হয়ে ইঞ্জিন বোটে করে টাঙ্গুয়ার হাওরে যেতে সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। তাই দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণের জন্য দেশ-বিদেশের পর্যটকরা বেছে নেন সড়ক পথ। তবে জেলা সদরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী একমাত্র লাউড়েরগড় সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় তা অনেকটাই যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে পর্যটকদের অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

7rxWvjp.jpg


এ ছাড়া নিরাপত্তার নিশ্চয়তা, মানসম্মত আবাসিক হোটেলের অভাব ও স্বাস্থ্যসম্মত রেস্তোরাঁ না থাকায় এখানে দীর্ঘ সময় বেড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। এখানে বর্ষায় নৌকা আর হেমন্তে মোটরসাইকেল ছাড়া যোগাযোগ মাধ্যম নেই বললেই চলে। তবে যাদুকাটা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে এ উপজেলার সঙ্গে জেলা শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থার বৈপ্লবিক উন্নয়ন সাধিত হবে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ইকবাল আহমদ। ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এ ব্রিজের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কাথা রয়েছে।টাঙ্গুয়ার হাওর দেখতে আসা ব্যবসায়ী সাদিক মোহাম্মদ ভোরের কাগজকে বলেন, এমন মনোমুগ্ধকর পর্যটন এলাকার রাস্তাঘাট উন্নত করে পর্যটনবান্ধব পরিবেশ রাখতে পদক্ষেপ নেয়া উচিত সরকারের।

FFBsQ8R.jpg


পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা ভোরের কাগজকে বলেন, বিগত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাটের সংস্কার এবং যাদুকাটা নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতুর নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন হলে এ উপজেলার পর্যটন স্পটগুলো দেশ-বিদেশের সৌন্দর্য পিপাসুদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠবে। তাহিরপুরের বাসিন্দা এডভোকেট আবুল কাশেম এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে রাস্তাঘাট নাজুক থাকায় তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওর, বারেক টিলা, যাদুকাটা নদী ও শহীদ সিরাজ লেকে আসতে অনেক ভোগান্তিতে পড়ার কথা জানান।

UgHGLlT.jpg


এসব বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ ভোরের কাগজকে বলেন, তাহিরপুরের বারেকের টিলা ও টাঙ্গুয়ার হাওর পর্যটন কেন্দ্রে যাতায়তের রাস্তা প্রশস্তকরণ কাজ চলছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে তাহিপুরের বারেক টিলা, শহীদ সিরাজ লেক, যাদুকাটা নদী, টাঙ্গুয়ার হাওরকে নিয়ে একটি ইকো-ট্যুরিজম প্রকল্প হওয়ার কথা রয়েছে। এই এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করা হলে পর্যটকরা যেমন বিশাল হাওর ও পাহাড়ি বনভূমির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন, পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top