What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেরা কিছু গোপন মিশন ১ (1 Viewer)

mastiguybd

Member
Joined
Oct 13, 2019
Threads
3
Messages
101
Credits
968
মানব ইতিহাসে যুদ্ধের সেরা কিছু নমুনা দেখা গিয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। এ যুদ্ধ শুধুমাত্র সৈন্য কিংবা অস্ত্রশস্ত্র দিয়েই হয়নি, যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া দেশগুলোকে যেতে হয়েছে এক নতুন পদ্ধতির মধ্য দিয়ে। গড়ে তোলা হয়েছে বিশেষ সেনাবাহিনী, যাদের কাজ হলো যুদ্ধক্ষেত্র এড়িয়ে গোপনে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা। সামরিক ভাষায় যাকে বলা যায় 'কভার্ট মিশন' কিংবা 'সিক্রেট অপারেশন'।
এই মিশনগুলো ছিল সম্মুখযুদ্ধের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। মিশনগুলো সফল কিংবা ব্যর্থ যা-ই হোক না কেন, তাদের উদ্দেশ্যগুলো যুদ্ধের মোড় পুরোপুরি পাল্টে দেওয়ার মতো ছিল। বর্তমান সময়ের বিখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে। ব্রিটিশ কমান্ডো দলকে তো স্বয়ং উইনস্টন চার্চিল নিজ হাতে তৈরি করেছেন, অফিস অব স্ট্র্যাটেজিক সার্ভিসেস বা ওএসএস-ও তৈরি হয়েছে এই সময়ে। এটিই পরবর্তীতে রূপ নিয়েছে সিআইএ হিসেবে। অন্যদিকে এসএএস বা স্পেশাল এয়ার সার্ভিস, স্পেশাল ফোর্সগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সেরা যাকে বলা হয়, সেই সংস্থাটিও তৈরি হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। তো জেনে আসা যাক, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সবচেয়ে গোপন এবং সবচেয়ে বিপদজনক মিশনগুলো সম্পর্কে, যা যুদ্ধের ইতিহাসে যোগ করেছে গুপ্তচরবৃত্তি, সাহস আর স্পর্ধার নতুন মাত্রা।

অপারেশন ফ্রাংকটন
১৯৪২, বিসকে উপসাগর। জিরোন্ডে নদীর মোহনার কয়েক মাইল দূরে একটা ব্রিটিশ সাবমেরিন ভেসে উঠল। সাবমেরিন থেকে বেরিয়ে এলো ৫টি ক্যানো আর মাইন ভর্তি ছোট একটি কার্গো নৌকা। প্রতিটি ক্যানোতে উপবিষ্ট রয়েছে দুজন করে রয়্যাল মেরিন সদস্য। তাদের মিশন বোর্দোঁর বন্দরে জার্মান কার্গোগুলো উড়িয়ে দেওয়া। কিন্তু তাদের অবস্থান এবং তাদের লক্ষ্যের মাঝে দুটি নৌবাহিনীর ট্রলার, ১২টি ই-বোট, ১২টি প্যাট্রোল বোট, ৬টি এম-ক্লাস মাইন সুইপার, জার্মান সেনাবাহিনী আর ৫০ মাইলেরও বেশি উত্তাল স্রোত। সাফল্যের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
সে বছরের সেপ্টেম্বরে ব্রিটিশরা বুঝতে পারে বোর্দোঁ বন্দর নাৎসি বাহিনীর অন্যতম প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। এখানে আঘাত হানতে পারলে অকেজো হয়ে পড়বে জার্মানদের রসদ পরিবহণ ব্যবস্থা। কারণ এই বন্দর থেকেই বিভিন্ন কারখানায় প্রয়োজনীয় কাঁচামাল পৌঁছে দেওয়া হয়। তাই রয়্যাল মেরিনের ঐ বিশেষ দল আর দেরি না করে বোর্দোঁর দিকে যাত্রা শুরু করল। যদি তারা বেঁচে ফিরতে পারে, তবে পিরেনিজের ভেতর দিয়ে স্পেনে পৌঁছে সেখান থেকে আবার ব্রিটেনে ফিরে আসবে।
শুরুতেই ঝামেলায় পড়ল তারা। প্রথম রাতেই দুটি ক্যানো উত্তাল সমুদ্রে হারিয়ে গেল। কোথায় হারাল তা আর জানা গেল না। পরদিন সকালেই আরো একটি ক্যানো জার্মান প্যাট্রোল বোটের হাতে ধরা পড়ল। বাকি আছে মাত্র দুটি ক্যানো। শেষপর্যন্ত ক্যাটফিশ আর ক্রেফিশ নামের এ দুটি ক্যানোর মধ্যে থাকা মাইন দিয়েই আটটি জার্মান কার্গো উড়িয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরে গেল চার ব্রিটিশ কমান্ডো। মিশন সফল হওয়ার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল মন্তব্য করেছিলেন, "এর ফলে যুদ্ধ আরো ছয় মাস কমে গেল"।

দ্য টিজার্ড অপারেশন
প্রত্যেকটি গোপন মিশনের পেছনে শুধু ভয়ডরহীন সেনাই ছিল, এমন নয়, স্যুট-টাই পরা বিজ্ঞানীরাও অংশ নিয়েছে এ ধরনের গোপন মিশনে। এরকমই একটি মিশনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল আমেরিকায় পাঠালেন হেনরি টিজার্ডকে। তার সাথে ছিল বিমান সম্পর্কিত চমকপ্রদ কিছু প্রযুক্তি, যা তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে সেরা প্রযুক্তি: ফ্রাংক হুইটেলের ডিজাইন করা বিশ্বের সর্বপ্রথম জেট ইঞ্জিনের নীলনকশা, আণবিক বোমার পরিকল্পনা আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস ম্যাগনেট্রন, রাডার তৈরি করার অন্যতম প্রধান উপাদান।
নাৎসি বিমানবাহিনী 'লুফতওয়াফে' আর নৌবাহিনী 'ক্রিয়েগসমেরিন' যখন প্রতিনিয়ত ব্রিটেনে হানা দিচ্ছে, তখন চার্চিলের সামনে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য চাওয়া ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। এই প্রযুক্তির বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সেনাবাহিনী ইউরোপে পাঠিয়ে সাহায্য করল ব্রিটেনকে। কিন্তু এর বিনিময়ে চড়া মূল্য দিতে হলো ব্রিটেনকে। তাদের সেরা প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এভিয়েশন প্রযুক্তিতে ব্রিটেনকে পিছনে ফেলে দিলো, এবং তাদেরকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
কিন্তু হেনরি টিজার্ড কে ছিলেন? হেনরি টিজার্ড ছিলেন ব্রিটেনের তৎকালীন সময়ের অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী, রয়্যাল সোসাইটির সদস্য এবং একইসাথে একজন পাইলটও। রয়্যাল এয়ার ফোর্স এবং ব্রিটেন সরকারের বিজ্ঞান উপদেষ্টাও হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। ব্রিটেনের সর্বোচ্চ নাইটহুড 'নাইট গ্র্যান্ড ক্রস' পাওয়া এই বিজ্ঞানী পরে কাজ করেছেন সিআইএ'র সাথেও।

অপারেশন ভেনজেন্স
৭ ডিসেম্বর, ১৯৪১। এই দিনেই জাপান পার্ল হারবারে মার্কিন নৌবাহিনীকে আক্রমণ করে, আর যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। কে এই আক্রমণের পরিকল্পনা করেছিল? অ্যাডমিরাল ইসোরোকু ইয়ামামোতো, ইম্পেরিয়াল জাপানিজ নেভির প্রধান।
মার্কিন নৌবাহিনী এর দেড় বছরের মাথায় এক বিরাট আবিষ্কার করে, জাপানের নৌবাহিনীর গোপন সংকেতের পাঠোদ্ধার করে ফেলে তারা। ঠিক ৩ মাস পরেই তাদের হাতে একটি গোপন বার্তা পৌঁছে যায়, অ্যাডমিরাল ইয়ামামোতো সলোমন দ্বীপপুঞ্জে পরিদর্শন করতে আসছেন। আমেরিকানরা পরিকল্পনা করলো যে, এখানেই ইয়ামামোতোকে শেষ করে দিতে হবে। এজন্য তাদের বিমানকে পাড়ি দিতে হমে কম করে হলেও ১ হাজার মাইল। মার্কিন নৌবাহিনীর কাছে এরকম বিমান আছে মাত্র একটিই- পি-৩৮জি লাইটনিং। ধরা পড়া থেকে বাঁচতে এই বিমানটিকে চালাতে হবে হবে মাত্র ৫০ ফুট (১৫ মিটার) এর মধ্যেই, নাহলে রেডিওতে ধরা পড়ে যাবে তাদের অস্তিত্ব। মার্কিন বিমান নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট আগেই গন্তব্যস্থানে পৌঁছে যায় এবং একসময়ের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইয়ামামোতোর গাড়ি জঙ্গলের মধ্যেই উড়িয়ে দিয়ে আবার নিরাপদে ফিরে আসে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top