What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected অনুভবে তুমি (1 Viewer)

Pegasus

Member
Joined
Mar 8, 2018
Threads
103
Messages
171
Credits
28,977
আজানের ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। পাখির
কিচিরমিচিরে পুলোকিত হল একটি শান্ত
কুয়াশাময় ভোর, এর কিছু পরেই একটি হাস্য
রৌদ্রজ্জলময় দিন যার খানিক বাদেই স্নিগ্ধ
বিকেল সাথে গিটারে বাজানো কিছু
ভুলভাল আওয়াজের পরেই বিচ্ছেদের বিরহে
ভেসে বেরানো গোঁধূলি আর এর পরেই একটি
ঘুমহীন রাত। একটি দিন আর রাতের
সমাবেশ.........
কিছুদিন আগে একটি পার্কে একটি ছেলে আর
একটি মেয়েকে একই বেন্চের দুই পাশে বসে
থাকতে দেখা যেত। অল্প করে পরিচিতি
তারপর দিনের নির্দিষ্ট সময় বিকেলবেলা গল্প
করে কাটিয়ে দিয়ে একটা সত্যিকারের বন্ধুত্ব
আর সাথে কিছু অনুভুতির আদান-প্রদান। প্রকৃতি
প্রেমি এই দুজনেই তাদের সময়ের বিবর্তনে
দুজনের মাঝের দুরত্বটা অনুভুতি আর ভালবাসার
টানে অনেক কমে গিয়েছিল। একরকম ছিলই না
বলা চলে। ছেলেটা গীটারে বাজিয়ে গান
করত আর মেয়েটা ছেলেটার এক হাত জড়িয়ে
মন দিয়ে গান শুনতো। অদ্ভুত এক ভালবাসা ছিল
সেটা। সারাটাজিবন এভাবেই কাটিয়ে
দিতে পারবে তারা নিঃসন্দেহে এমনটাই
বোঝা যেত। মেয়েটার পরিবার একটু উচ্চবিত্ত
ছিল। তার বাবার অফিসে একটি কালচারাল
প্রোগ্রাম ছিল কিছুদিন আগে। ছেলেটিকে
সে আসতে বলেছিল মেয়েটি, সবার সাথে
পরিচয় করিয়ে দিবে বলে। ছেলেটি বিব্রত
বোধ করছে, একটু ভয়ও পাচ্ছে। মেয়েটি হেসে
বলল, আমি আছি তো। ছেলেটি বলল আমাদের
সম্পর্কের এই বছরপুর্তিতে এটা না করলেই কি নয়।
মেয়েটা বলেছিল, একটা বছরের জমানো
অনুভুতির কাছে এটা কিছুই নয়। সন্ধার কিছু পরেই
ছেলেটি বের হল মেয়েটির বাবার
প্রোগ্রামে যাওয়ার জন্য। কিছুদুর থেকেই
দেখলো অফিসের সামনে অনেক ভিড়। দৌড়ে
সামনে গিয়ে জিজ্ঞেস করল কি হয়েছে। একজন
বলল, শর্ট সার্কিটের কারনে আগুন ধরেছে। তখনি
আগুনের এক লেলিহান শিখা অফিসের সামনে
আছড়ে পরল। অনেকেই বলাবলি করছে কয়েকজন
আটকে গেছে তারা হয়ত বের হতে পারছে না।
ছেলেটি এখন মেয়েটিকে খুজতে ব্যস্ত।
ফায়ার সার্ভিসের লোকেরাও ভিতরে
যেতে পারছে না। ছেলেটি আর কিছু ভাবতে
পারল না। দৌড়ে সামনের আগুন ভেদ করে
অফিসের ভেতরে চলে গেল। গিয়ে দেখলো
অনেকেই সেখানে আছে। যাদের ধোঁয়া আর
গ্যাসের কারনে মরমর অবস্থা। ছেলেটি
অনেককেই বাইরে নিয়ে আসলো। কিন্তু
মেয়েটিকে এখন পর্যন্ত দেখলো না। হঠাত
ভেতরে কারও আর্তনাদ শোনা গেল। ছেলেটি
আবারও দৌরে ভিতরে গেল। দেখলো
কিচেনের পাশে মেয়েটি পরে আছে।
মেয়েটিকে সে নিজের শার্টটি পেচিয়ে
দিল। এরপর ঘারে হাত দিয়ে বাইরে নিয়ে
আসল। ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা দরজার
সামনের আগুন নিভিয়ে ফেলেছে। তবে কেউই
ভিতরে যেতে পারছে না। মেয়েটিকে
বাইরে নিয়ে এসে হালকা পানি ছিটিয়ে
জ্ঞান ফেরানো হল। জ্ঞান ফিরে সামনে
ছেলেটিকে দেখে সে চিৎকার করে কেঁদে
বলল, তুমি কেন ভেতরে গিয়েছিলে। মেয়েটি
ছেলেটির পুড়ে যাওয়া মুখ, ঝলসানো পিঠ
দেখতে পারছিল না। কিন্তু ছেলেটির কিছু
মনে হচ্ছিল না। মেয়েটিকে বাঁচাতে পেরেই
তার মনে শান্তি লাগছে। মেয়েটি একটু এদিক
ওদিক তাকিয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকদের
বলল, ইনাকে একটু হাসপাতালে নিন প্লিজ। আর
ভেতরে বাবা আটকা পরেছে। ফায়ার
সার্ভিসের লোকেরা বলল, ম্যাম ভেতরে এখনও
আমরা কেউ যেতে পারছিনা। আগুনটা একটু
বেশি। ছেলেটি এটা শুনে উঠে দারালো।
মেয়েটিকে বলল, তোমার বাবার কিছু হবে
না। আমি ফিরিয়ে আনব তাকে। তবে যদি না
ফিরতে পারি, তবে আমার মাকে একটু দেখে
রেখো। তার গল্পের সঙ্গি এতদিন আমি ছিলাম
তবে যদি আমি না ফিরি, আমাকে গল্প ভেবে
নিয়ে মাকে একটু শুনিয়ে দিও। বলেই ছেলেটি
ভেতরের দিকে দৌরে গেল। মেয়েটি
চিৎকার করে বলল, না, তুমি যেওনা। তবে এই
চিৎকার ছেলেটির কানে গেল না। একটু পরেই
দ্বিতীয় তলার কিচেন থেকে কে যেন নিচে
পরল। এর পরপরেই উপরে একটি গ্যাস সিলিন্ডার
বিস্ফোরন হল। ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা
গিয়ে দেখলো, যে উপর থেকে নিচে পরলো এই
লোকটি মেয়েটার বাবা। মেয়েটার
বাবাকে জরুরীভাবে হাসপাতালে নেওয়া
হল। তবে এতসবের মাঝেও মেয়েটি একজনের
বেরিয়ে আসার অপেক্ষায় চেয়ে রয়েছে।
আগুন এক পর্যায়ে নিভে গেল। মেয়েটি
চেয়ে আছে কেউ বেরোবে বলে। খানিক
বাদেই ফায়ার সার্ভিসের একটি লোক এসে
বলল, ভেতরে একটি ঝলসানো বডি রয়েছে
ম্যাম। তাকে দেখে চেনা যাচ্ছে না। তবে
তার হাতে এটা পেয়েছি আমরা বলেই একটা
আংটি বারিয়ে দিল। মেয়েটির চোখ দিয়ে
কিছু নোনাজল গড়িয়ে পড়ল। তারপর আংটিটি
হাতে নিয়ে শক্ত মনে হাসপাতালে গেল তার
বাবার কাছে। বাবার এখন ঝুকির বাইরে তাই
মেয়েটি ছেলেটির মায়ের কাছে গেল।
সেখানে কি হল এটা আর নাই বা বললাম। তবে
মায়ের কোলে এতদিন শুয়ে ছিল তার ছেলে।
এখনও শুয়ে থাকে তবে শুধু তার ছেলে নয় সঙ্গে
এক মেয়েও। পার্থক্য শুধু এতটুকুই যে কেউ শুয়ে
থাকে গল্প হয়ে আর কেউ গল্পের লেখিকা হয়ে।
মেয়েটি সেই মায়ের চোখের কান্নায়
কোনদিন তার ছেলের জন্য দুঃখ দেখেনি। শুধু
দেখেছে এমন ছেলের জন্য ভালবাসা আর গর্বে
গর্বিত হয়ে ঝরে পরা দুফোটা নোনাজল।
মেয়েটি এখন ছেলেটির মায়ের সাথেই
থাকে। ছেলেটির রুমে এখন মেয়েটি বিচরন
করে। মেয়েটির বাবা মা আত্মীয় হয়ে সেই
মেয়েটির সাথে দেখা করে যায়। তারাও
মেয়েটিকে কিছু বলতে পারে নি। তার বাবা
মা সেদিন থেকে বুঝেছিল জিবনে
ভালবাসা বলতে সবসময় মিলন হবে এমনটা না।
ভালবাসা কিছু অপুর্নতা এবং আকাঙ্খার
মাঝেও ভালভাবে পুর্নতা পায়। আজ সেই
ঘটনার এক বছর হতে চলল। মেয়েটি সেই পার্কে
এসে বসে আছে ছেলেটির গীটার হাতে
নিয়ে। মাঝে মাঝে ভুলে গীটারে হাত পরে
টুংটাং আওয়াজ হচ্ছে যা বাতাসে এক
আলোড়ন তৈরী করেও থেমে যাচ্ছে।
মেয়েটি এখন রাতে ঘুমায় না। স্বপ্নে
ছেলেটি যে তার সাথে অনেক দুরে বসে
প্রেম করে। এটা মেয়েটির ভাল লাগে না।
একটু কাছে আসলে কি এমন হয়। গোঁধুলি আসতে
চলল। মেয়েটি উঠে দারালো বাড়িতে
ফিরবে আরেকটি নির্ঘুম রাতের উদ্দেশ্যে।
তখনি মেয়েটির হাত কে যেন ধরল। তাকিয়ে
দেখল সেই ছেলেটির মা। মেয়েটি মনে মনে
অনেক বেশি আনন্দিত হল। ছেলেটির মা বলল,
আজ থেকে আমার সাথে ঘুমাবি। দুজনে
একসাথে ভালবাসব। তুই তোর মত করে আর আমি
ওর মত করে। মেয়েটি ছেলেটির মায়ের
হাতটি শক্ত করে ধরে বলল, আমিও ওর মত করেই
ভালবাসব।
পরিশেষে সেই নির্ঘুম রাতের সমাপ্তি।
থেকে গেল সেই সত্যিকারের ভালবাসা আর
কিছু বিষ্ময়ের প্রতীক্ষা। পার্কে এখন আর
ছেলেটিকে দেখা না গেলেও মেয়েটিকে
দেখা যায় তবে এখন সেই ছেলেটির মায়ের
কাঁধে মাথা রেখে। দুজনে দুজনার গল্পে
তারা সেই ছেলেটির সান্নিধ্য খুজে পায়।
এখনও ভুলে গিটারে হাত পরে যায় কিন্তু সেই
টুংটাং আওয়াজে বাতাস মুখরিত না হলেও
কোন এক অদৃশ্য আত্মার প্রশান্তি তারা অনুভব
করতে পারে। অপেক্ষার এই প্রহর কখনও শেষ হবে
না জেনেও কারও জন্য প্রতিক্ষায় থাকাটা
এতটা সুখের হয় সেটা সেই ছেলেটির মা আর
প্রেমিক অনেক ভালভাবে বুঝেছিল। একটু পরেই
গোঁধুলি নামবে তবে তা এখন বিচ্ছেদের নয়,
কারও জন্যে ভালবেসে প্রতিক্ষার প্রহর
গোনার জন্য। হ্যা এটাও একটা ভালবাসা, কোন
ছেলের প্রতি তার মায়ের আবার কোন
প্রেমিকের প্রতি তার প্রেমিকার।
ভুলত্রুটির ক্ষমাপ্রার্থী.......

 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top