ঋতু আপুর রূপের দাপটে আমাদের হাই স্কুল কাঁপে! দুর্দান্ত রূপসী ঋতু আপুকে যেই দেখে সেই প্রেমে পড়ে যায়। তাঁর প্রেমে পড়েনি এমন ছেলে পাওয়া মুশকিল।
ঋতু আপু ক্লাসে গেলে অংক স্যার অংক মিলাতে পারে না ! ইংরেজির স্যার ন্যারেশান পড়াতে গিয়ে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস পড়িয়ে চলে আসেন !
নাম ঋতু বলেই কিনা জানিনা তিনি ছিলেন ঋতুর মতোই বৈচিত্র্যময়। রৌদ্রকরোজ্জল গ্রীষ্মের মতো দীপ্তিময় মুখাবয়ব। বর্ষার মতো স্নিগ্ধ মোহনীয় চাহনি। শরতের আকাশের মতো শুভ্র হৃদয় আর হেমন্তের সুরভিত প্রকৃতির মতো চঞ্চলা। শীতের হিমেল হাওয়ার মতো গ্রাস করা ব্যক্তিত্ব আর সতেজ বসন্তের মতো অনন্ত যৌবনা।
আমি যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি তখন তিনি নিউ টেনের ছাত্রী। বয়সে আমার চেয়ে প্রায় চার বছরের সিনিয়র। আমার হচ্ছে প্রেমে পড়া স্বভাব। সুন্দরী মেয়ে দেখলেই প্রেমে পড়ে যাই। ঋতু আপুকে প্রথম দিন দেখেই তাঁর প্রেমে পড়ে গেলাম !
ঋতু আপু আমাকে তুই তুই করে ডাকেন। প্রতিদিন স্কুলে ঢুকেই কীভাবে যেন আমি ওনার সামনে পড়ে যাই। আর তিনিও মিষ্টি করে ডেকে কমন রুমে নিয়ে যান। তারপর হাইবেঞ্চে বসে দু'পায়ে পেঁচিয়ে ধরে সোহাগ করে গাল টেনে দেন। এমন ভাবে টানেন যে ব্যথা পাই। তবে ব্যথা পেলেও আমি কিছু বলি না। ঋতু আপুর উষ্ণ ভালোবাসায় সিক্ত হতে আমার বরং ভালই লাগে। অবশ্য ভাব ধরি যেন আমি খুবই বিরক্ত হচ্ছি। মাঝে মাঝে বিরক্তিমাখা স্বরে বলি ,
- আরে ছাড়তো ঋতু আপু, আমার ক্লাস আছে।
- ওরে আমার ছাত্ররে ...! প্রতি ক্লাসেই তো পিটনা খাস!
- না , আজ পড়া শিখে আসছি !
- আজ কী পড়া ?
- শামসুর রাহমানের কবিতা, "মেঘনা নদী দেবো পাড়ি কলঅলা এক নায়ে , আবার আমি যাবো আমার পাড়াতলী গাঁয়ে। "
- বাহ্, তুই তো গুড স্টুডেন্ট হয়ে গেছিস। আচ্ছা বলতো "কলঅলা নায়ে" মানে কী ?
আমি আমতা আমতা করে বললাম,
- নায়ে মানে হচ্ছে নৌকা , আর কল মানে টিউবওয়েল। যে নৌকায় টিউবওয়েল আছে সেটাই কলঅলা নাউ !
আমার কথা শুনে ঋতু আপুর হাসি আর থামে না !
- তোরে গাধা ডাকলে গাধাও লজ্জা পাবে, যা ভাগ এখান থেকে !
গাধা লজ্জা পাবে কিনা জানি না, আমি লজ্জায় লাল হয়ে এক দৌড়ে ক্লাসে চলে আসলাম।
আমি জানি ঋতু আপুকে অনেকেই ভালবাসে। কিন্তু তিনি কাউকে ভালবাসেন কিনা জানিনা। একদিন ঋতু আপুকে বললাম,
- আচ্ছা ঋতু আপু তুমি কি কাউকে ভালবাসো ?
- হুম বাসি!
আমি আশা করেছিলাম তিনি 'না' বলবেন। তাঁর মুখে 'হুম' শব্দটি শুনে আমার ছোট্ট হৃদয়টা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলো। আমি মাথা নিচু করে চোখের পানি লুকানোর চেষ্টা করছি।
ঋতু আপু বললেন,
- কিরে কাঁদছিস নাকি ?
- না চোখে কী যেন পড়েছে !
- আচ্ছা অনি , তুই কি আমাকে ভালবাসিস ?
আমি লজ্জার মাথা খেয়ে বললাম "হু"।
- আমাকে বিয়ে করতে চাস ?
আমি আরো জোরে মাথা ঝাঁকিয়ে বললাম, "হু" !
- আমাকে বিয়ে করে কী করবি ?
আমি অবাক দৃষ্টিতে ঋতু আপুর দিকে তাকালাম ! ক্লাস সিক্সে উঠে আমি বিয়ের মিনিং জানি আর তিনি নিউ টেনের ছাত্রী হয়েও জানেন না। আশ্চর্য তো!
গম্ভীরমুখে ঋতু আপু বললেন,
- অনি প্যান্টটা খুলতো ?
- প্যান্ট খুলবো কেন?
- তোর ইয়েটা একটু দেখি! দু'দিন পর আমার বর হবি , তোর ইয়ে আছে কিনা আমার জানা দরকার।
আমি লজ্জায় মরে যাই অবস্থা। এখানে দাঁড়িয়ে থাকবো নাকি ঝেড়ে দৌর লাগাবো বুঝতে পারছি না।
- শোন অনি, তুই অনেক পেকে গেছিস। আজ থেকে তোর সাথে আমার সম্পর্ক ডিসমিস। আর কোনো দিন আমার কাছে আসবি না!
ঋতু আপু রেগে গেছেন!
ছোট বেলায় বোকা ছিলাম, কিছুই বুঝতাম না। আমি মনে করছি "ইয়ে" না দেখানোয় তিনি রাগ করছেন! তাই প্যান্টের জিপারে হাত দিয়ে জিপার আপ ডাউন করলাম।
কিন্তু হায় আমার অনুধাবন জ্ঞান মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণ ছিল। জিপার ক্যালেঙ্কারিতে ঋতু আপু ভয়ানক মাইন্ড করলেন। কাঠের লম্বা স্কেল হাতে নিয়ে কঠিন দৌড়ানি দিলেন!
কলেজে পড়ার সময় ঋতু আপুর বিয়ে হয়ে গেল। স্কুল থেকে ফেরার পথে হঠাৎ একদিন ঋতু আপুর সাথে দেখা। তিনি তাঁর হাজবেন্ডকে আমার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করিয়ে দিলেন,
- এইটা হচ্ছে অনি, ইবলিশ শয়তানের নিকটাত্মীয় ! ক্লাস সিক্সে থাকতে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিছিল। এখন ওরে মাথার উপরে তোলে একটা আছাড় দাও তো !
সুন্দরী মেয়েরা সাধারণত বর হিসেবে পিগমি টাইপের নিগ্রো হাসবেন্ড পায়। ঋতু আপুর হাসবেন্ডও ছিল আফ্রিকান মাগুর মাছের মতো!
বউ ভক্ত আফ্রিকান কালো মাগুর আমাকে বলে,
- কী অনি, ঘটনা কি সঠিক ?
আমি নিরাপদ দূরত্বে সরে গিয়ে উত্তর দিলাম,
- জী না, আপনার বউ আমার ইয়ে দেখতে চাইছিল। দেখাইনি বলে আমার নামে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে!
অতঃপর
ঋতু আপু আমাকে আবার দৌড়ানি দিলেন
(সমাপ্ত)
ঋতু আপু ক্লাসে গেলে অংক স্যার অংক মিলাতে পারে না ! ইংরেজির স্যার ন্যারেশান পড়াতে গিয়ে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস পড়িয়ে চলে আসেন !
নাম ঋতু বলেই কিনা জানিনা তিনি ছিলেন ঋতুর মতোই বৈচিত্র্যময়। রৌদ্রকরোজ্জল গ্রীষ্মের মতো দীপ্তিময় মুখাবয়ব। বর্ষার মতো স্নিগ্ধ মোহনীয় চাহনি। শরতের আকাশের মতো শুভ্র হৃদয় আর হেমন্তের সুরভিত প্রকৃতির মতো চঞ্চলা। শীতের হিমেল হাওয়ার মতো গ্রাস করা ব্যক্তিত্ব আর সতেজ বসন্তের মতো অনন্ত যৌবনা।
আমি যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি তখন তিনি নিউ টেনের ছাত্রী। বয়সে আমার চেয়ে প্রায় চার বছরের সিনিয়র। আমার হচ্ছে প্রেমে পড়া স্বভাব। সুন্দরী মেয়ে দেখলেই প্রেমে পড়ে যাই। ঋতু আপুকে প্রথম দিন দেখেই তাঁর প্রেমে পড়ে গেলাম !
ঋতু আপু আমাকে তুই তুই করে ডাকেন। প্রতিদিন স্কুলে ঢুকেই কীভাবে যেন আমি ওনার সামনে পড়ে যাই। আর তিনিও মিষ্টি করে ডেকে কমন রুমে নিয়ে যান। তারপর হাইবেঞ্চে বসে দু'পায়ে পেঁচিয়ে ধরে সোহাগ করে গাল টেনে দেন। এমন ভাবে টানেন যে ব্যথা পাই। তবে ব্যথা পেলেও আমি কিছু বলি না। ঋতু আপুর উষ্ণ ভালোবাসায় সিক্ত হতে আমার বরং ভালই লাগে। অবশ্য ভাব ধরি যেন আমি খুবই বিরক্ত হচ্ছি। মাঝে মাঝে বিরক্তিমাখা স্বরে বলি ,
- আরে ছাড়তো ঋতু আপু, আমার ক্লাস আছে।
- ওরে আমার ছাত্ররে ...! প্রতি ক্লাসেই তো পিটনা খাস!
- না , আজ পড়া শিখে আসছি !
- আজ কী পড়া ?
- শামসুর রাহমানের কবিতা, "মেঘনা নদী দেবো পাড়ি কলঅলা এক নায়ে , আবার আমি যাবো আমার পাড়াতলী গাঁয়ে। "
- বাহ্, তুই তো গুড স্টুডেন্ট হয়ে গেছিস। আচ্ছা বলতো "কলঅলা নায়ে" মানে কী ?
আমি আমতা আমতা করে বললাম,
- নায়ে মানে হচ্ছে নৌকা , আর কল মানে টিউবওয়েল। যে নৌকায় টিউবওয়েল আছে সেটাই কলঅলা নাউ !
আমার কথা শুনে ঋতু আপুর হাসি আর থামে না !
- তোরে গাধা ডাকলে গাধাও লজ্জা পাবে, যা ভাগ এখান থেকে !
গাধা লজ্জা পাবে কিনা জানি না, আমি লজ্জায় লাল হয়ে এক দৌড়ে ক্লাসে চলে আসলাম।
আমি জানি ঋতু আপুকে অনেকেই ভালবাসে। কিন্তু তিনি কাউকে ভালবাসেন কিনা জানিনা। একদিন ঋতু আপুকে বললাম,
- আচ্ছা ঋতু আপু তুমি কি কাউকে ভালবাসো ?
- হুম বাসি!
আমি আশা করেছিলাম তিনি 'না' বলবেন। তাঁর মুখে 'হুম' শব্দটি শুনে আমার ছোট্ট হৃদয়টা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলো। আমি মাথা নিচু করে চোখের পানি লুকানোর চেষ্টা করছি।
ঋতু আপু বললেন,
- কিরে কাঁদছিস নাকি ?
- না চোখে কী যেন পড়েছে !
- আচ্ছা অনি , তুই কি আমাকে ভালবাসিস ?
আমি লজ্জার মাথা খেয়ে বললাম "হু"।
- আমাকে বিয়ে করতে চাস ?
আমি আরো জোরে মাথা ঝাঁকিয়ে বললাম, "হু" !
- আমাকে বিয়ে করে কী করবি ?
আমি অবাক দৃষ্টিতে ঋতু আপুর দিকে তাকালাম ! ক্লাস সিক্সে উঠে আমি বিয়ের মিনিং জানি আর তিনি নিউ টেনের ছাত্রী হয়েও জানেন না। আশ্চর্য তো!
গম্ভীরমুখে ঋতু আপু বললেন,
- অনি প্যান্টটা খুলতো ?
- প্যান্ট খুলবো কেন?
- তোর ইয়েটা একটু দেখি! দু'দিন পর আমার বর হবি , তোর ইয়ে আছে কিনা আমার জানা দরকার।
আমি লজ্জায় মরে যাই অবস্থা। এখানে দাঁড়িয়ে থাকবো নাকি ঝেড়ে দৌর লাগাবো বুঝতে পারছি না।
- শোন অনি, তুই অনেক পেকে গেছিস। আজ থেকে তোর সাথে আমার সম্পর্ক ডিসমিস। আর কোনো দিন আমার কাছে আসবি না!
ঋতু আপু রেগে গেছেন!
ছোট বেলায় বোকা ছিলাম, কিছুই বুঝতাম না। আমি মনে করছি "ইয়ে" না দেখানোয় তিনি রাগ করছেন! তাই প্যান্টের জিপারে হাত দিয়ে জিপার আপ ডাউন করলাম।
কিন্তু হায় আমার অনুধাবন জ্ঞান মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণ ছিল। জিপার ক্যালেঙ্কারিতে ঋতু আপু ভয়ানক মাইন্ড করলেন। কাঠের লম্বা স্কেল হাতে নিয়ে কঠিন দৌড়ানি দিলেন!
কলেজে পড়ার সময় ঋতু আপুর বিয়ে হয়ে গেল। স্কুল থেকে ফেরার পথে হঠাৎ একদিন ঋতু আপুর সাথে দেখা। তিনি তাঁর হাজবেন্ডকে আমার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করিয়ে দিলেন,
- এইটা হচ্ছে অনি, ইবলিশ শয়তানের নিকটাত্মীয় ! ক্লাস সিক্সে থাকতে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিছিল। এখন ওরে মাথার উপরে তোলে একটা আছাড় দাও তো !
সুন্দরী মেয়েরা সাধারণত বর হিসেবে পিগমি টাইপের নিগ্রো হাসবেন্ড পায়। ঋতু আপুর হাসবেন্ডও ছিল আফ্রিকান মাগুর মাছের মতো!
বউ ভক্ত আফ্রিকান কালো মাগুর আমাকে বলে,
- কী অনি, ঘটনা কি সঠিক ?
আমি নিরাপদ দূরত্বে সরে গিয়ে উত্তর দিলাম,
- জী না, আপনার বউ আমার ইয়ে দেখতে চাইছিল। দেখাইনি বলে আমার নামে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে!
অতঃপর
ঋতু আপু আমাকে আবার দৌড়ানি দিলেন
(সমাপ্ত)