বউ গোমড়া মুখে বসে আছে। আমি তার কাছে গিয়ে একটা হাত ধরলাম। সে হ্যাচকা টানে হাত সরিয়ে নিয়ে ধমকের সুরে বললো, এই খবরদার! আমার হাত ধরবে না,আমি যাকে তাকে আমার হাত ধরতে দেই না!
আমি নিরীহ গলায় বললাম, দেখ জান,দশটা না পাঁচটা না, আমি একটা মাত্র তোমার স্বামী। তোমার হাত ধরার রাইট আমার আছে। কলমা পড়ে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহর দিয়ে তোমাকে বিয়ে করেছি, সেটা কি ভুলে গেলে? আমার অপরাধ কী?
সাত খন্ড রামায়ণ পড়ে এখন বলছো সীতা কার বাপ?তোমার অপরাধ কী তা তুমি জান না? তুমি কোন আক্কেল নিয়ে সেই ডাইনিটার সাপোর্ট করতে গেলে? বউ দেখতে গিয়ে এমন গদগদ হয়ে কথা বলছিলে যেন বিয়েটা তুমি করবে! কেন, দেশে কি মেয়ের আকাল পড়েছে?
আমার দোষ কি বল!তোমার ভাই পছন্দ করলো,,,,
ঐ গাধা মেয়ে সম্পর্কে কিছু বুঝে? কোন আইডিয়া আছে ওর?একটা পেত্নী কে পছন্দ করে বসে আছে। দেশে সুন্দর সুন্দর মেয়ে থাকতে শেষে কীনা একটা পেত্নী,,,,,
পেত্নী বলছো কেন? মেয়ে তো দেখতে সুন্দর। অসুবিধা কী?
মেয়ে সুন্দর? গালের মধ্যে ফুটবলের মতো একটা তিল,,,,,
তিলে তো সমস্যা নাই। তোমার উঁচা দাত নিয়ে আমি বিয়ে করি নাই?
এই সেরেছে! ভুল করে এই কথা বলার পর সাথে সাথে জিভ কেটে ফেললাম। কিন্তু রক্ষা হলো না।
কি আমার দাঁত উঁচা! বিয়ের আগে তো বলতে, আহা লাবনী! তোমার দাঁত নয়,যেন মুক্তা!!সারা দিন ইচ্ছে করে তোমার দাঁতের দিকে তাকিয়ে থাকি!! তোমার কাছে ক্যাটারিনা, দীপিকা পাডুকোনের চেহারা পানিভাত!সেই কথা শুনেই তো তোমাকে বিয়ে করলাম। নইলে এমন ভুড়িওয়ালা কালো হুলু বিড়াল কে বিয়ে করতো? আগে আমাকে কলিজার টুকরা বলে ডাকতে, আর এখন? একটা লোহার টুকরা, নিদেনপক্ষে একটা কাঠের টুকরা বলেও ডাক দেও না!
আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললাম, এখন তো এসব বলবেই।বিয়ের আগে কত রোমান্টিক কথা! তখন তো বলতে আমার মতো স্মার্ট ছেলে তুমি জীবনেও দেখ নাই! আল্লাহ তায়ালা আমার মতো ছেলে এক পিস ই তৈরি করেছে। আমার কাছে সালমান খান, শাহরুখ খান নস্যি!
সেই তো ভুল করেছি। সেই মিথ্যা কথা বলার খেসারত এখন দিচ্ছি। কেন যে তোমাকে বিয়ে করতে গেলাম! আহা! বিয়ের আগে কত ছেলে আমার পিছনে লাইন দিয়েছে,,,,
একদম নাটক করবা না,তাহলে কিন্তু ডাইরেক্ট সিনেমা দেখিয়ে দেব! তোমার পিছনে ছেলেরা লাইন দিতো?আরে, মেয়েদের প্রেম পত্রের অফারের ঠেলায় মাঝে মাঝে আমার কলেজ যাওয়া বন্ধ হয়ে যেতো,,,,,
যেই না চেহারা, নাম রেখেছে পেয়ারা!মাঝে মাঝে আয়নায় নিজের খোমাটা দেখার চেষ্টা কর।শালা তালপাতার সেপাই! তোমাকে আমি জেলের ভাত খাওয়াবো।
এই খবরদার! তুমি জান, আমি একজন এডভোকেট। আমাকে হাইকোর্ট দেখাতে আসবে না, তাহলে কিন্তু ডাইরেক্ট সুপ্রিম কোর্ট দেখিয়ে দেব। এখনও বলছি স্বামী কে ইজ্জত করে কথা বল।নইলে আখেরে ফস্তাবে!
জ্ঞান দিতে আসবে না, তুমি জান আমি একজন কলেজের শিক্ষক! আমার সাথে সাবধানে কথা বল!
একমাত্র শালার জন্য মেয়ে দেখতে গেছি। এর আগে পনেরটা বাতিল করা হয়েছে। ষোলো নাম্বার মেয়ে শালার মনে ধরলো, সে বললো, দুলাভাই, মেয়ে আমার পছন্দ হয়েছে। যে করেই হউক এই মেয়ে আমি বিয়ে করবো দেখেছেন নাকের ডগায় কি সুন্দর একটা তিল।নাকের ডগায় তিল থাকা মেয়েরা সংসারী হয়।এই মেয়ে লক্ষী হবে।
আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ির আপত্তি নেই। আমার স্ত্রী লাবনী বেকে বসলো। সে তার একমাত্র ভাইকে আরও ভালো মেয়ে দেখে বিয়ে করাতে চায়।তার এই মেয়ে পছন্দ হয়নি। তার মতে এই তিল ওয়ালা মেয়ে তার ভাইয়ের জন্য উপযুক্ত নয়।
আমি বললাম, বিয়ে তো তুমি করবে না,করবে তোমার ভাই। তোমার ভাইয়ের পছন্দ মতো বিয়েটা হউক।
সে আমার কথায় পাত্তা দিল না।
কোন রকমে বোনকে রাজি করাতে না পেরে শালা বিয়ের চিন্তা বাদ দিল। সে তার বোনকে অসম্ভব ভয় পায়।আমি লাবনী কে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করি, কাজ হয় না।শেষে আমি ও হাল ছেড়ে দিলাম।
আজ বিকেলে শালা আমাকে জানালো,তারা কোর্ট ম্যারেেজ করতে চায়,আমি যেন উপস্থিত হই।আমি গিয়ে দেখি সেই তিল ওয়ালী মেয়ে! কি আর করা,তারা বিয়ে করে ফেললো।
বউ নিয়ে সরাসরি শালা আমাদের বাসায় এসেছে। লাবনী তখন টিভিতে সিরিয়াল দেখছিল।আমি সবার আগে ঢুকলাম, পিছনে বিশাল ঘোমটা দেওয়া বউ।শালা ভয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে রইলো।
আমি ঢুকেই একটা গলা খাঁকারি দিলাম। লাবনী মুখ তুলে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললো, এইটা কে?
আমি বললাম, বউ।
কার বউ?
আমার না,অন্তত এ ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পার।
কিন্তু সে নিশ্চিত থাকলো না। ও আল্লাহ গো! আমার কি হবে গো!! বলেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল।
বোনের চিৎকার শুনে ভাই তো কাছে এলোই না,উলটো পালিয়ে গেল।শালার বউ আর আমি আধাঘন্টা পানি ঢেলে তাকে কিছুটা সুস্থ করতে পারলাম। জ্ঞান ফিরে এই মেয়েকে দেখে,"ও আল্লাহ, তুমি এই মেয়ে বিয়ে করেছো?" বলে আবার অজ্ঞান হয়ে গেল!!
(সমাপ্ত)
আমি নিরীহ গলায় বললাম, দেখ জান,দশটা না পাঁচটা না, আমি একটা মাত্র তোমার স্বামী। তোমার হাত ধরার রাইট আমার আছে। কলমা পড়ে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহর দিয়ে তোমাকে বিয়ে করেছি, সেটা কি ভুলে গেলে? আমার অপরাধ কী?
সাত খন্ড রামায়ণ পড়ে এখন বলছো সীতা কার বাপ?তোমার অপরাধ কী তা তুমি জান না? তুমি কোন আক্কেল নিয়ে সেই ডাইনিটার সাপোর্ট করতে গেলে? বউ দেখতে গিয়ে এমন গদগদ হয়ে কথা বলছিলে যেন বিয়েটা তুমি করবে! কেন, দেশে কি মেয়ের আকাল পড়েছে?
আমার দোষ কি বল!তোমার ভাই পছন্দ করলো,,,,
ঐ গাধা মেয়ে সম্পর্কে কিছু বুঝে? কোন আইডিয়া আছে ওর?একটা পেত্নী কে পছন্দ করে বসে আছে। দেশে সুন্দর সুন্দর মেয়ে থাকতে শেষে কীনা একটা পেত্নী,,,,,
পেত্নী বলছো কেন? মেয়ে তো দেখতে সুন্দর। অসুবিধা কী?
মেয়ে সুন্দর? গালের মধ্যে ফুটবলের মতো একটা তিল,,,,,
তিলে তো সমস্যা নাই। তোমার উঁচা দাত নিয়ে আমি বিয়ে করি নাই?
এই সেরেছে! ভুল করে এই কথা বলার পর সাথে সাথে জিভ কেটে ফেললাম। কিন্তু রক্ষা হলো না।
কি আমার দাঁত উঁচা! বিয়ের আগে তো বলতে, আহা লাবনী! তোমার দাঁত নয়,যেন মুক্তা!!সারা দিন ইচ্ছে করে তোমার দাঁতের দিকে তাকিয়ে থাকি!! তোমার কাছে ক্যাটারিনা, দীপিকা পাডুকোনের চেহারা পানিভাত!সেই কথা শুনেই তো তোমাকে বিয়ে করলাম। নইলে এমন ভুড়িওয়ালা কালো হুলু বিড়াল কে বিয়ে করতো? আগে আমাকে কলিজার টুকরা বলে ডাকতে, আর এখন? একটা লোহার টুকরা, নিদেনপক্ষে একটা কাঠের টুকরা বলেও ডাক দেও না!
আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললাম, এখন তো এসব বলবেই।বিয়ের আগে কত রোমান্টিক কথা! তখন তো বলতে আমার মতো স্মার্ট ছেলে তুমি জীবনেও দেখ নাই! আল্লাহ তায়ালা আমার মতো ছেলে এক পিস ই তৈরি করেছে। আমার কাছে সালমান খান, শাহরুখ খান নস্যি!
সেই তো ভুল করেছি। সেই মিথ্যা কথা বলার খেসারত এখন দিচ্ছি। কেন যে তোমাকে বিয়ে করতে গেলাম! আহা! বিয়ের আগে কত ছেলে আমার পিছনে লাইন দিয়েছে,,,,
একদম নাটক করবা না,তাহলে কিন্তু ডাইরেক্ট সিনেমা দেখিয়ে দেব! তোমার পিছনে ছেলেরা লাইন দিতো?আরে, মেয়েদের প্রেম পত্রের অফারের ঠেলায় মাঝে মাঝে আমার কলেজ যাওয়া বন্ধ হয়ে যেতো,,,,,
যেই না চেহারা, নাম রেখেছে পেয়ারা!মাঝে মাঝে আয়নায় নিজের খোমাটা দেখার চেষ্টা কর।শালা তালপাতার সেপাই! তোমাকে আমি জেলের ভাত খাওয়াবো।
এই খবরদার! তুমি জান, আমি একজন এডভোকেট। আমাকে হাইকোর্ট দেখাতে আসবে না, তাহলে কিন্তু ডাইরেক্ট সুপ্রিম কোর্ট দেখিয়ে দেব। এখনও বলছি স্বামী কে ইজ্জত করে কথা বল।নইলে আখেরে ফস্তাবে!
জ্ঞান দিতে আসবে না, তুমি জান আমি একজন কলেজের শিক্ষক! আমার সাথে সাবধানে কথা বল!
একমাত্র শালার জন্য মেয়ে দেখতে গেছি। এর আগে পনেরটা বাতিল করা হয়েছে। ষোলো নাম্বার মেয়ে শালার মনে ধরলো, সে বললো, দুলাভাই, মেয়ে আমার পছন্দ হয়েছে। যে করেই হউক এই মেয়ে আমি বিয়ে করবো দেখেছেন নাকের ডগায় কি সুন্দর একটা তিল।নাকের ডগায় তিল থাকা মেয়েরা সংসারী হয়।এই মেয়ে লক্ষী হবে।
আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ির আপত্তি নেই। আমার স্ত্রী লাবনী বেকে বসলো। সে তার একমাত্র ভাইকে আরও ভালো মেয়ে দেখে বিয়ে করাতে চায়।তার এই মেয়ে পছন্দ হয়নি। তার মতে এই তিল ওয়ালা মেয়ে তার ভাইয়ের জন্য উপযুক্ত নয়।
আমি বললাম, বিয়ে তো তুমি করবে না,করবে তোমার ভাই। তোমার ভাইয়ের পছন্দ মতো বিয়েটা হউক।
সে আমার কথায় পাত্তা দিল না।
কোন রকমে বোনকে রাজি করাতে না পেরে শালা বিয়ের চিন্তা বাদ দিল। সে তার বোনকে অসম্ভব ভয় পায়।আমি লাবনী কে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করি, কাজ হয় না।শেষে আমি ও হাল ছেড়ে দিলাম।
আজ বিকেলে শালা আমাকে জানালো,তারা কোর্ট ম্যারেেজ করতে চায়,আমি যেন উপস্থিত হই।আমি গিয়ে দেখি সেই তিল ওয়ালী মেয়ে! কি আর করা,তারা বিয়ে করে ফেললো।
বউ নিয়ে সরাসরি শালা আমাদের বাসায় এসেছে। লাবনী তখন টিভিতে সিরিয়াল দেখছিল।আমি সবার আগে ঢুকলাম, পিছনে বিশাল ঘোমটা দেওয়া বউ।শালা ভয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে রইলো।
আমি ঢুকেই একটা গলা খাঁকারি দিলাম। লাবনী মুখ তুলে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললো, এইটা কে?
আমি বললাম, বউ।
কার বউ?
আমার না,অন্তত এ ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পার।
কিন্তু সে নিশ্চিত থাকলো না। ও আল্লাহ গো! আমার কি হবে গো!! বলেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল।
বোনের চিৎকার শুনে ভাই তো কাছে এলোই না,উলটো পালিয়ে গেল।শালার বউ আর আমি আধাঘন্টা পানি ঢেলে তাকে কিছুটা সুস্থ করতে পারলাম। জ্ঞান ফিরে এই মেয়েকে দেখে,"ও আল্লাহ, তুমি এই মেয়ে বিয়ে করেছো?" বলে আবার অজ্ঞান হয়ে গেল!!
(সমাপ্ত)