What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Self-Made সেঁজুতি 💕💕💕❤❤❤💕💕💕 (1 Viewer)

Fahima

Senior Member
Joined
Apr 8, 2019
Threads
137
Messages
539
Credits
32,076
আচ্ছা তুই কি ঐ বন্ধ্যা বউটারে নিয়েই জীবনটা পার করবি। তোর কি কোন শখ আহ্লাদ নাই। বাচ্চা কাচ্চা হবে। আব্বা আব্বা বলে বাচ্চারা নানা আবদার করবে। সেই বাচ্চার জন্য এটা ওটা নিয়ে বাসায় আসবি। ছুটির দিনে বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে বেড়াতে যাবি। এসব করতে তোর কি একটুও ইচ্ছে করেনা?



আম্মা ফোন দিয়েছেন। ফোন দিয়ে এক নাগাড়ে কথাগুলো বলে থামলেন। আম্মার কথা শেষ হলে আমি হু বললাম।



খবরদার বলছি হু হা করবি না। তোকে আমি হাড়ে হাড়ে চিনি। হু হা করে তুই তিন মাস পার করে দিবি। এই পৃথিবীতে এই বন্ধ্যা মেয়ে ছাড়া আল্লাহ তোর জন্য আরও মেয়ে রাখছে। তোর উচিৎ এই মেয়েটাকে ছেড়ে আরেকটা বিয়ে করা। দেখবি তোর ফুটফুটে একটা বাচ্চা হবে। চোখ দুটো হবে ঠিক তোর মত। সেই বাচ্চার জন্য আমি একটা স্বর্নের চেইন বানিয়ে রাখছি।



কথাটা শেষ করে আম্মা হাউমাউ করে কান্না শুরু করলেন। আমি কিছু না বলে ফোনের লাইনটা কেটে দিলাম। এখন আর কথা বলার প্রয়োজন নেই। আম্মা এখন কাঁদবেন। বেশ সময় নিয়ে কাঁদবেন। কিছুদিন পর পর আমার এসব কথা শুনতে আর ইচ্ছে করেনা।



আম্মার সাথে কথা বলে আমি অফিস থেকে বের হলাম। অফিস থেকে ফেরার সময় ফকিরাপুল বাজার থেকে টেংরা মাছ কিনলাম। এই মাছটা সেঁজুতির ভীষণ প্রিয়। সেঁজুতি নিয়ম করে মাথায় নারিকেল তেল লাগায়। বাসায় নারিকেল তেলের কৌটায় তেল প্রায় শেষের দিকে। আমি একটা নারিকেল তেলের কৌটা কিনলাম। চারিদিক মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তায় হাঁটু পানি। আমি সেই হাঁটু পানি মাড়িয়ে বাসার দিকে রওনা দিলাম।। সকালে ছাতাটা সেজুতী হাতে দিয়েছিলো ঠিক মনে আছে কিন্তু তারপর কোথায় রেখেছি মনে করতে পারছিনা। পুরো অফিস তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি কিন্তু কোথাও পেলাম না। বাসায় রেখে আসলাম কিনা তাও বুঝতে পারছি না।



ভিজে জুবু থুবু হয়ে টেংরা মাছ আর নারিকেল তেলের কৌটা নিয়ে বাসায় ঢুকে দেখি সেঁজুতি ব্যাগ গুছিয়ে বসে আছে। সেঁজুতি খুব সহজ ভঙ্গিতে আমার কাছ থেকে টেংরা মাছের পুটলিটা নিয়ে ফ্রিজে রাখলো। এই কাজটা সেঁজুতি খুব কমই করে। অন্য সময় হলে সেঁজুতি এই মাছের পুটলি নিয়ে বসে পড়তো মাছ কাটতে। সেঁজুতির মাছ ফ্রিজে রাখা নিয়ে আমার মনে সন্দেহ হল। বাইরে বৃষ্টির বেগ এখনো থামেনি। এভাবে বৃষ্টি চলতে থাকলে চারিদিক ডুবে একাকার হবে। বারান্দায় সেঁজুতির লাগানো গাছগুলোর গোড়ায় পানি জমে আছে। পানি জমে গাছের গোড়ার মাটি ধুয়ে যাচ্ছে। আমি টবগুলো বৃষ্টি থেকে সরিয়ে রাখলাম। এই কাজ সেঁজুতিই করে কিন্তু আজ কি হল বুঝতে পারলাম না। মাঝে মাঝে মানুষের বুঝতে পারার ক্ষমতা লোপ পায়। আমারও কি তেমন কিছু হচ্ছে। বুঝতে পারছি না। আর বুঝতে পারছি না বলেই আমি অপেক্ষা করছি বিষয়টা কি বোঝার জন্য।



আমার জন্য টেবিলে আগে থেকেই খাবার দেওয়া আছে। পেপে ভাজি, মুগডাল আর পুটি মাছ ভাজা। আমার খেতে এখনো অনেক দেরি। এত তাড়াতাড়ি টেবিলে খাবার দেখে আমি সেঁজুতিকে জিজ্ঞেস করলাম, এত তাড়াতাড়ি খাবার দিলে, ব্যাপার কি?



সেঁজুতি কোন উত্তর দিলনা। সবকিছুর এমন অস্বাভাবিকতা দেখে আমি নিশ্চিত হলাম সেঁজুতি আমার উপর রেগে আছে। আমি নিজেকে শান্ত রেখে বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করছি। আমার নিজের ভেতর বিশাল একটা ভয় কাজ করছে। এই ভয় আমাকে আস্তে আস্তে অস্থির করে তুলছে। আমি ভীষণ চেষ্টা করছি এই অস্থিরতা লুকাতে। আমার মনে হচ্ছে সেঁজুতি আমার অস্থিরতা বুঝতে পেরেছে। বুঝতে পেরেছে বলেই ও আরও সাহসী হচ্ছে।



সেঁজুতির সাথে আমার বিয়েটা পাঁচ বছর আগে জুলাই মাসের শেষ শুক্রবার। বিয়ের দিন সেই কি বৃষ্টি। থামার কোন নাম গন্ধ নেই। আমরা বর যাত্রা করার জন্য বসে আছি। বৃষ্টির পানিতে পুকুর থেকে কৈ মাছ উঠা শুরু করল। বর যাত্রীর লোকজন কৈ মাছ ধরতে নেমে পড়ল। কি এক বিপদ। অপেক্ষা করতে করতে সেই রাত হল। আমরা কনে বাড়ি পৌঁছালাম রাত একটায়। বিয়ের কাজ শেষ হতে হতে ভোর হল।



বিয়ের মাস তিনেক পর সেঁজুতিকে নিয়ে আসলাম ঢাকায়। দুজনের সংসার ভালই চলছিল। বিয়ের বছর দুয়েক যেতেই ঝামেলা শুরু। বাচ্চা কাচ্চার চেষ্টা করছি কিন্তু হচ্ছে না। অনেক ডাক্তার টাক্তার দেখিয়ে কোন ফল পেলাম না। ডাক্তার বলছে সেঁজুতির কিছু সমস্যা আছে। আল্লাহ যদি চান তবে যেকোন সময় হতেও পারে। এরই মধ্যে সময় পেরিয়েছে পাঁচ বছর। বাচ্চা কাচ্চা ছাড়া আমরা ভালই আছি। কোন সমস্যা নেই। কিন্তু আমার আম্মা এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। তার এক কথা আমি আবার বিয়ে করলে বাচ্চা হবে। মায়ের কথা আমি পাত্তা দিইনা। সেঁজুতিকে ছাড়া অসম্ভব। এদিকে আম্মা দিন দিন কেমনজানি আরো উগ্র হয়ে উঠেছেন। এই নিয়ে অশান্তি আর ভালো লাগেনা। আমি বাড়ি যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি বছর খানেক হল। রোজ এক কথা শুনতে কার ভালো লাগে। তারপরও আম্মা ফোন দিয়ে মাঝে মাঝে নানা কথা বার্তা বলে। আমি শুনে হু হা করি। আম্মা সেঁজুতিকেও ফোন দিয়ে নানা কথা বার্তা বলে। সেঁজুতির ভীষণ মন খারাপ হয়। এসব দেখে আমার ভেতরটা কেমন অশান্ত হয়ে উঠছে। বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে আমি। আম্মার একটাই কথা তোর বাপের বংশের কোন মানুষ থাকবে না এটা আমি জীবিত থাকতে হতে দিব না।



আম্মা মনে হয় আজ কঠিন কিছু একটা বলেছেন সেঁজুতিকে। সেঁজুতি আমাকে ভয়ানক রকমের ভালোবাসে। সেঁজুতির ভালোবাসো দেখে মাঝে মাঝে আমি ভীষণ ভয় পেয়ে যায়। আমিও যে কম ভালোবাসি তা কিন্তু না। তবে সেঁজুতির তুলনায় আমার ভালোবাসা খুব নস্যি।



এই বৃষ্টির মধ্যে একটু আগে সেঁজুতির ছোট চাচা এসেছেন। লোকটা বয়সে আমার ছোট হবে। খুব চুপচাপ টাইপের মানুষ। তিনি পুরোপুরি ভিজে গেছেন। ভেজা কাপড় চোপড় নিয়ে ড্রয়িং রুমে বসে আছেন। আমি সেঁজুতিকে বললাম তাকে তোয়ালে আর কাপড় চোপড় দিতে। সেঁজুতি আমার কথা তেমন একটা গুরুত্ব দিল না। মনে হচ্ছে সেঁজুতিই খবর দিয়ে আনিয়েছে। লোকটাকে দেখে আমার ভয় আরও বেড়ে গেল। আমি নিশ্চিত সেঁজুতি আজ চলে যাবে।



আমি খেতে বসলাম। পুটি মাছ ভাজা ভীষণ তেতো লাগছে। ভীষণ তেতো। মাছ এত তেতো হয় জানতাম না। মাছ কাটাটা ঠিক মত হয়নি। পেটের পিত ঠিক মত গলাতে পারেনি সেঁজুতি। এমনটা সেঁজুতি করেনা। আজ নিশ্চয় মন খারাপ ছিল। আমি খাবার টেবিলে থাকতেই সেঁজুতি ব্যাগ ট্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। আমি বাধা দিতে গিয়ে কেন দিলাম না বুঝতে পারছি না। আমার সবকিছু ওলট পালট হয়ে যাচ্ছে। আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে পড়েছে। আমি খাবার টেবিল থেকে উঠতে গিয়ে উঠতে পারলাম না। আমি শুধু চেয়ে দেখলাম সেঁজুতি চলে যাচ্ছে।



খাবার টেবিলের বাসন কোসন ধুয়ে গুছিয়ে রেখে আমি খুব স্বাভাবিকভাবে বসে আছি বারান্দায়। নিজেকে খুব শান্ত রাখার চেষ্টা করছি। কিছুই হয়নি এমন একটা ভাব নিয়ে বসে আছি বারান্দায়। মাঝ রাতে ঘুমাতে গেলাম। সেঁজুতিকে বিয়ের পর এই প্রথম আমি একা ঘুমাচ্ছি। কেনজানি খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়েও পড়লাম। ভোরের দিকে আমার ঘুম ভাঙ্গলো। ঘুমের ঘোরে খুব আবোল তাবোল চিৎকার করা একটা অসুখ আমার অনেকদিনের। সেঁজুতিকে বিয়ের আগে রোজ এটা হত। বিয়ের পর প্রথমদিকে একটু আধটু হলেও এখন আর হয় না। এই চিৎকারের অসুখটা আজ আবার হল। অনবরত চিৎকারে আমার গলা ভেঙ্গে গিয়েছে। ঘুম ভাঙ্গার পর আমি আর কথা বলতে পারছি না। ভীষণ অস্তির লাগছে। ঠিক ফজরের আজান পর্যন্ত আমি বাচ্চাদের মত করে কাঁদলাম। সেঁজুতিকে দেখতে ইচ্ছে করছে। একটা মানুষকে এতটা দেখতে ইচ্ছে করছে যে মনে হচ্ছে দেখতে না পেলে আমার দম বন্ধ হয়ে যাবে। দৌড়ে মোবাইলটার কাছে গিয়ে দেখি আমার ফোনের সাথে সেঁজুতির ফোনটা রাখা। সেঁজুতি ফোন নেয়নি। পুরো ঘর আমি এদিক ওদিক দৌড়াচ্ছি আর কাঁদছি। সেঁজুতির ছোট চাচার ফোন নাম্বারও আমার কাছে নেই।



ঠিক ভোরের আলো ফুঁটতেই আমি বেরিয়ে পড়লাম সেঁজুতির চোট চাচার বাসার দিকে। লোকটা ছোট একটা বাসা নিয়ে থাকে ডেমরার দিকে। এত সকালে গাড়ি টাড়ি খুব একটা নেই। আমি পায়ে হেঁটে রওনা দিলাম। কমলাপুর থেকে যেতে ঘন্টা খানেক লাগবে।



আমার ভীষণ ভালো লাগছে। ভীষণ। নিজের ভেতর পুষে রাখা একটা কঠিন প্রশ্নের উত্তর আমি পেয়ে গেলাম। এটা আমার প্রয়োজন ছিল।



হাঁটতে হাঁটতে এই ভোরেই আম্মাকে ফোন দিলাম। আম্মা ফজরের নামাজ পড়েন বলে এই সময়টা জেগে থাকেন। আমি আম্মাকে বললাম, আম্মা আমি সেঁজুতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি।



আম্মা বললেন, আলহামদুল্লিাহ।



আমি বললাম, আম্মা বাচ্চা কাচ্চা দেওয়ার মালিক কে?



আম্মা বললেন, আল্লাহ, আল্লাহ চাইলে সবকিছু দিতে পারেন।



আমি বললাম, হ্যাঁ আম্মা, আল্লাহ চাইলে সব দিতে পারেন। না চাইলে কিছুই না। ধরেন, আল্লাহ আমাকে কোন বাচ্চা কাচ্চা দিতে চাইছেন না তবে আমি আবার বিয়ে করলে আল্লাহ কেন দিতে চাইবেন। আচ্ছা মেনে নিলাম আমি আবার বিয়ে করলে বাচ্চা কাচ্চা হবে ঠিক আছে কিন্তু কোন কারণে যদি আমি না থাকি তবে। আপনি নিজেও বলেন হায়াতের মালিক আল্লাহ। আল্লাহ যদি আমার হায়াত না রাখে তবে এই বাচ্চা কাচ্চার কি হবে। বংশের বাতি অসহায়ভাবে বড় হওয়ার চেয়ে না থাকায় ভালো। কি বলেন?



আম্মা চুপ করে আছেন। আমিও কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললাম, আমার সিদ্ধান্ত আমি নিয়ে ফেলেছি। এটা আর নড়চড় হবেনা। কথাগুলো শেষ করে আমি লাইন কেটে দিলাম।



সেঁজুতির ছোট চাচার বাসায় গিয়ে দেখি সে নেই। চাচা বললেন, গতকাল রাতেই সেঁজুতি বাড়ি চলে গিয়েছে।



আমার অস্তিরতা আরো বেড়ে গেল। নিশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। সেই ভোরে আমি দুরপাল্লার বাস ধরলাম। সেঁজুতিদের বাড়ি পৌঁছাতে পৌঁছাতে বিকেল হল। আমাকে দেখে কোথায় যেন লুকিয়েছে মেয়েটা। আমি জানি কেন লুকিয়েছে। এখন সে কিছুক্ষণ লুকিয়ে থাকবে। এই কিছুক্ষণ সেঁজুতি কাঁদবে। খুব কাঁদবে। এই কাজটি সেঁজুতি প্রায় করে। আমার সামনে কখনো কাঁদেনা। কষ্ট হলেও কাঁদেনা। জানিনা কেন। ওর কথা, প্রিয় মানুষগুলোকে কান্না দেখাতে নেই। লুকিয়ে কেঁদে চোখ দুটো ফুলিয়ে ইয়া বড় বড় করে আমার সামনে আসবে।



আজ সেঁজুতি আমার সামনে আসলো বেশ খানিক পরে। প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেল। আমি বসে আছি সেঁজুতিদের বাড়ির উত্তরে বিশাল দিঘির ঘাটে। বিশাল দিঘি। এত বড় দিঘি আমি আগে কখনো দেখিনি। আজ সন্ধ্যা হতে হতেই জোছনা দেখা যাচ্ছে। সেঁজুতি যখন দিঘির ঘাটে আসলো তার চোখ দুটি জোছনার আলোয় দেখা যাচ্ছে। চোখ দেখে ঠিক বুঝা যাচ্ছে আজ খুব কেঁদেছে মেয়েটা।



সেঁজুতি আমার মত পানিতে পা ভিজিয়ে বসে আছে আমার পাশে। পা ভিজিয়ে বসে থাকতে আমার খুব ভালো লাগছে। একটু সুরসুরিও লাগছে। মাছের পোনা পায়ে ঠোকর দিচ্ছে। আমি বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে সেঁজুতিকে বললাম, আমি তোমাকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ফাইনাল করে ফেলেছি।



আমার কথা শুনে সেঁজুতি পানি থেকে পা তুলে বুকের সাথে গুটিয়ে নিয়ে বসল। সেঁজুতি কিছু বলছে না। চুপ করে আছে। আমি বললাম, আমি তোমাকে মুক্ত করতে চাই। দিনের পর দিন আমি তোমাকে বেঁধে রেখেছি। এতটা অন্যায়, এতটা চাপ, এতটা শংকা নিয়ে তোমাকে আষ্টে পৃষ্টে বেঁধে রাখা অনুচিত। তোমার যে মুক্তি প্রয়োজন।



কথাগুলো বলে আমি বেশ কিছুক্ষণ থামলাম। সেঁজুতি আমার দিকে বড় বড় চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে। দেখতে আমার ভীষণ ভয় করছে।



আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি সেঁজুতি। আমার শেষ নিঃশ্বাস পযর্ন্ত আমি তোমাকে ভালোবাসবো। এছাড়া আমার কোন উপায় নেই। যাকে আমি এতটা ভালোবাসি সে দিনের পর দিন সন্তান দিতে না পারার অক্ষমতার কষ্ট, দায়, চাপ নিয়ে দিন কাটাবে তা আমি হতে দিতে পারি না। আজ থেকে এই অক্ষমতার দায় থেকে তুমি মুক্ত। আজ থেকে তুমি আমাকে এক বিন্দু সময়ের জন্য ছেড়ে যেতে পারবে না। আমি আর তুমি শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত একসাথে থাকব। সন্তান জন্ম দিতে না পারার অক্ষমতার কষ্ট, দায়, চাপ কেন তুমি নেবে। সৃষ্টিকর্তা সন্তানহীন ছাড়া আমাদের সুখী দেখতে চান। যেখানে সৃষ্টিকর্তা এমনটি চান সেখানে আমি তুমি কে? এই দায় কেন তুমি নেবে? এই দায় থেকে তুমি মুক্ত।



কথাগুলো বলে আমি কিছুক্ষণ সেঁজুতির দিকে তাকিয়ে তার একটা হাত মুঠো করে ধরে বললাম, আমার বেঁচে থাকার জন্য তোমাকে খুব প্রয়োজন। কথাটা আমি পুরো শেষ করতে পারিনি। আমার ভীষণ কান্না পাচ্ছে। আমি চেষ্টা করছি কান্না চেপে রাখতে। কিন্তু আমার কথা শেষ হতেই সেঁজুতি হাউমাউ করে মাথা গুঁজে দিল আমার কোলে। আমার কোলে সেঁজুতি ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাঁদছে। আজ এই কান্না শুনতে আমার কি যে ভালো লাগছে। আমি চাই সেঁজুতি আজ পুরোটা রাত এমন করে কাঁদুক।



চারিদিকে জোছনায় ঝলমল করছে। দিঘির জল জোছনার আলোয় চিক চিক করছে। সেঁজুতির কান্না থেমে গেছে। তবে এখনো আমার কোলে মাথা গুঁজে আছে। আমাদের দুজনের ছায়া পড়েছে দিঘির জলে। আমি তাকিয়ে আছি সেই জলের দিকে। আমার কাছে মনে হচ্ছে দিঘির জলে ছায়াতে যে দুটি মানুষ দেখা যাচ্ছে সেই দুটি মানুষ পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ।


(সমাপ্ত)
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top