সমবয়সী প্রেমের ঝামেলাপূর্ণ বিয়ে। আর বিয়ের দুদিন পরেই আমার প্রচন্ড রাগী বাবা আমায় আমাদের গ্রামের বাড়িতে পারসেল করে দিলেন। মাত্রই মেডিকেল ইন্টারনশিপ শেষ করেছি.. নলেজ টাটকা.. জোশের ও কমতি নেই.. কিন্তু সারাজীবন শহরে বেড়ে ওঠা আমার মন গ্রামে হাপিয়ে ওঠে মাঝে মধ্যেই.. (স্বামীর জন্যও মন কেমন কেমন করে) কিন্তু ফিরে যাব বাবাকে এটা বলার সাহস ছিল না।
ছোট চাচার নিজের ক্লিনিক.. উনি একজন কেমিস্ট.. কিন্তু চিকিৎসক তিনি নিজেই.. সারজেন ও। আমাকে পেয়ে উনি বিরাট খুশি.. সুন্দর একটা রুমে চেম্বার করে দিলেন.. আশে পাশে প্রায় ত্রিশ কিলোমিটারের মধ্যে আমিই একজন এম বি বি এস.. যদিও সপ্তাহান্তে একজন সারজেন আসেন আর একজন গাইনী ডাক্তার অন কল এ থাকেন..
এই লম্বা শানে নজুল এই জন্য যে ওখানে থাকার তিনটা মাস আমার বিচিত্র রোগি সম্ভার এর জন্য আমি সারাজীবন মনে রাখবো..কখনোই ভোলার নয়!
সবচেয়ে আনন্দের ছিলো এই তিন মাসে আমি নিরানব্বই টা মেয়ের নরমাল ডেলিভারি করেছি। আমার বন্ধুরা তো এখনো দুস্টুমি করে আমাকে বলে দোস্ত তুই একটা রানের জন্য সেঞ্চুরি করতে পারলি না।
সে যাই হোক, গন্ড গ্রাম তায় আবার টাকার অভাব.. সবচেয়ে বেশি অভাব সচেতনতার। যদিও সবাইকে পই পই করে বলে দিতাম প্রসব পরবর্তী সময়ের সেবা আর ডাক্তার এর পরামর্শ নেওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু বেশিরভাগ মেয়েরাই আর ফলোআপ এ আসতো না.. ওই যে সচেতনতার অভাব.. 'মা দাদি দের ত দাই এর হাতে বাচ্চা হয়েছে,আমি তো তাও ডাক্তার পেলাম.. এই যথেষ্ট.. আর ফলোআপ লাগবেনা আপা' .. অনেকটা এরকম।
ঠিক সেরকম পনের বছরের আঞ্জিরা ও আর আসেনি.. ফুটফুটে মেয়ে কোলে বাড়ি ফিরে গেল.. আমিও ভুলে গেছি তার কথা.. এরকম আরও অনেক আঞ্জিরা দের কথা.. নিত্ত নতুন রোগীর ভীড়ে পুরান রোগীর স্মৃতি ঝাপসা..।
কিন্তু বিস্ময় অপেক্ষা করছিল আমার জন্যে। কিছু দিন আগে দেশে বেড়াতে গেলাম.. সেখান থেকে গ্রামের বাড়িতে দু দিনের একটা ঝটিকা সফর। ফিরে আসার দিন সকালে শুনি ভোর থেকে একজন মহিলা নাকি একটা বাচ্চাকে নিয়ে অপেক্ষা করছে আমার সাথে দেখা করবে বলে। হাল্কা বিরক্ত হলাম এই ভেবে যে একটু পর রওনা হবো এখন আবার কি না কি। যাই হোক ফ্রেশ হয়ে গেলাম দেখা করতে। গিয়ে দেখি প্রায় বছর ত্রিশ এর একজন মহিলা এগারো বারো বছর বয়সের মায়া মায়া চেহারার একটা মেয়ে নিয়ে বসে আছে। আমি বললাম "জি বলুন.."
মহিলা বললেন " আপা আমি আঞ্জিরা.. ওই যে পনের বছর বয়সে আমার মেয়েটা হইসিলো আপনের হাতে.. বাচন মরন অবস্থা আমাগের দুইজনেরই.."
ঝাপসা স্মৃতি নিয়ে আমি বললাম " হ্যাঁ হ্যাঁ আঞ্জিরা... কি খবর তোমার? কতদিন পর.. তোমার তাহলে আমাকে মনে আছে?!!"
আঞ্জিরা বললো " আপা আমি আপনারে কুনদিন ভুলিনাই.. এই আমার সেই মাইয়া.. অরে নাম টা জিগাস করেন আপা.."
এক রাশ ভালো লাগা নিয়ে মেয়েটার গালে হাত দিয়ে বললাম.. " কি নাম তোমার মামনি...?"
তার চেয়েও দশ গুন মায়া নিয়ে মেয়েটা আমার গালে ওর আঙুল ছুয়ে বল্লো " আমার নাম ফাহিমা.. বড়ো হইলে আমিও ডাক্তার হব আপা..
"ডাক্তার ফাহিমা!!"
আহ..অসম্ভব আবেগ আর ভালো লাগার একটা মিশ্র অনুভূতি নিয়ে প্রথম যে কথাটা মাথায় এলো তা হলো নিজের নামটা আমার কখনই তো এতোটা সুন্দর আর মায়াময় লাগেনি... ফাহিমা... তুমি অনেক ভাল থেক মামনি....
ছোট চাচার নিজের ক্লিনিক.. উনি একজন কেমিস্ট.. কিন্তু চিকিৎসক তিনি নিজেই.. সারজেন ও। আমাকে পেয়ে উনি বিরাট খুশি.. সুন্দর একটা রুমে চেম্বার করে দিলেন.. আশে পাশে প্রায় ত্রিশ কিলোমিটারের মধ্যে আমিই একজন এম বি বি এস.. যদিও সপ্তাহান্তে একজন সারজেন আসেন আর একজন গাইনী ডাক্তার অন কল এ থাকেন..
এই লম্বা শানে নজুল এই জন্য যে ওখানে থাকার তিনটা মাস আমার বিচিত্র রোগি সম্ভার এর জন্য আমি সারাজীবন মনে রাখবো..কখনোই ভোলার নয়!
সবচেয়ে আনন্দের ছিলো এই তিন মাসে আমি নিরানব্বই টা মেয়ের নরমাল ডেলিভারি করেছি। আমার বন্ধুরা তো এখনো দুস্টুমি করে আমাকে বলে দোস্ত তুই একটা রানের জন্য সেঞ্চুরি করতে পারলি না।
সে যাই হোক, গন্ড গ্রাম তায় আবার টাকার অভাব.. সবচেয়ে বেশি অভাব সচেতনতার। যদিও সবাইকে পই পই করে বলে দিতাম প্রসব পরবর্তী সময়ের সেবা আর ডাক্তার এর পরামর্শ নেওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু বেশিরভাগ মেয়েরাই আর ফলোআপ এ আসতো না.. ওই যে সচেতনতার অভাব.. 'মা দাদি দের ত দাই এর হাতে বাচ্চা হয়েছে,আমি তো তাও ডাক্তার পেলাম.. এই যথেষ্ট.. আর ফলোআপ লাগবেনা আপা' .. অনেকটা এরকম।
ঠিক সেরকম পনের বছরের আঞ্জিরা ও আর আসেনি.. ফুটফুটে মেয়ে কোলে বাড়ি ফিরে গেল.. আমিও ভুলে গেছি তার কথা.. এরকম আরও অনেক আঞ্জিরা দের কথা.. নিত্ত নতুন রোগীর ভীড়ে পুরান রোগীর স্মৃতি ঝাপসা..।
কিন্তু বিস্ময় অপেক্ষা করছিল আমার জন্যে। কিছু দিন আগে দেশে বেড়াতে গেলাম.. সেখান থেকে গ্রামের বাড়িতে দু দিনের একটা ঝটিকা সফর। ফিরে আসার দিন সকালে শুনি ভোর থেকে একজন মহিলা নাকি একটা বাচ্চাকে নিয়ে অপেক্ষা করছে আমার সাথে দেখা করবে বলে। হাল্কা বিরক্ত হলাম এই ভেবে যে একটু পর রওনা হবো এখন আবার কি না কি। যাই হোক ফ্রেশ হয়ে গেলাম দেখা করতে। গিয়ে দেখি প্রায় বছর ত্রিশ এর একজন মহিলা এগারো বারো বছর বয়সের মায়া মায়া চেহারার একটা মেয়ে নিয়ে বসে আছে। আমি বললাম "জি বলুন.."
মহিলা বললেন " আপা আমি আঞ্জিরা.. ওই যে পনের বছর বয়সে আমার মেয়েটা হইসিলো আপনের হাতে.. বাচন মরন অবস্থা আমাগের দুইজনেরই.."
ঝাপসা স্মৃতি নিয়ে আমি বললাম " হ্যাঁ হ্যাঁ আঞ্জিরা... কি খবর তোমার? কতদিন পর.. তোমার তাহলে আমাকে মনে আছে?!!"
আঞ্জিরা বললো " আপা আমি আপনারে কুনদিন ভুলিনাই.. এই আমার সেই মাইয়া.. অরে নাম টা জিগাস করেন আপা.."
এক রাশ ভালো লাগা নিয়ে মেয়েটার গালে হাত দিয়ে বললাম.. " কি নাম তোমার মামনি...?"
তার চেয়েও দশ গুন মায়া নিয়ে মেয়েটা আমার গালে ওর আঙুল ছুয়ে বল্লো " আমার নাম ফাহিমা.. বড়ো হইলে আমিও ডাক্তার হব আপা..
"ডাক্তার ফাহিমা!!"
আহ..অসম্ভব আবেগ আর ভালো লাগার একটা মিশ্র অনুভূতি নিয়ে প্রথম যে কথাটা মাথায় এলো তা হলো নিজের নামটা আমার কখনই তো এতোটা সুন্দর আর মায়াময় লাগেনি... ফাহিমা... তুমি অনেক ভাল থেক মামনি....