What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Self-Made জামাই বউয়ের খুনসুটি (1 Viewer)

Fahima

Senior Member
Joined
Apr 8, 2019
Threads
137
Messages
539
Credits
32,076
গতকাল থেকে রিহানের আম্মু আর আমি আলাদা থাকছি। মনের মিল যেহেতু হচ্ছেই না একসাথে থেকে কী লাভ। তাই পূর্ণ সেপারেশন চলছে। সে খাটে ঘুমায় আর আমি ফ্লোরিং করি !

একই ঘরে দুজন ভিন্ন গ্রহের প্রাণী। বার্তা আদান প্রদানও বন্ধ ! ইশারা ইঙ্গিতে হালকা কমিউনিকেশন অব্যাহত আছে।



ঘটনা হচ্ছে সেদিন সিঁড়ি দিয়ে উঠার সময় হঠাৎ চোখে একটা পোকা পড়ছিল। কিছুই দেখছিলামনা, অন্ধের মতো হাতড়াচ্ছিলাম। তিফার আম্মুর হাত না ধরলে তো পড়েই যেতাম।

ভদ্রমহিলার দৃষ্টিশক্তি ভালো। শাড়ির আঁচল দিয়ে সুনিপুণ হাতে পোকা বের করে দিলেন। অনেক ব্যথা করছিল তাই মুখ দিয়ে গরম ভাপ দিলেন। তিফার আম্মুর সাথে আমার এই রাসায়নিক বিক্রিয়া রিহানের আম্মুর চোখ এড়ালোনা। সুতরাং নিউক্লিয়ার এক্সপ্লোশান।



ভয়াবহ ঝগড়া, আমাকে খাটে জায়গা দিচ্ছে না। আমি নাকি দূষিত হয়ে গেছি। সাত ঘাটের পানিতে গোসল করে আমাকে নাকি পবিত্র হতে হবে। এ কেমন বিচার ?



এই অন্যায় আমি মানি না। তাই কাঁথা বালিশ নিয়ে ছাদে চলে এসেছি। বাকি জীবন ছাদেই কাটিয়ে দিব। এমন শুচিবায়ুগ্রস্ত মহিলার সাথে আর না। বিপদে প্রতিবেশির সাহায্য না নিলে কার কাছে যাবো। মনটাই খারাপ করে দিল।



এই অস্থির বিক্ষিপ্ত মনকে কেন্দ্রীভূত করতে হবে। ধ্যান ছাড়া উপায় নাই! ঋষিদের মতো পা ভাজ করে ধ্যানে বসে গেলাম।

জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে ছাড়তে হবে। মস্তিষ্ক ঠাণ্ডা হবে মনের অস্থিরতা কমবে হৃদয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে।



বাহ্ শান্ত সুশীতল পরিবেশ। হৃদয় নদীর বুকে রূপালি ঢেউ। কলকল ধ্বনিতে স্বর্গীয় রব উঠেছে। নদীর পাড়ে গাছের সারি, ডালে ডালে ন্যাশনাল বার্ড দোয়েল ডাকছে। কৃষ্ণচূড়ার মিহি পাতায় বাতাসের খেলা। আহা কী অপূর্ব।



শুদ্ধ সাধনায় মুর্শিদের দেখা মিলে। হে মুর্শিদ এই অভাগা অসহায়কে তরাও। এ জীবন সংসারের ভারে আমি ন্যুজ্ব্য তুমি আমাকে মুক্তি দাও।



নিষ্পাপ আশিকের আর্তনাদ আমার মুর্শিদ সহ্য করতে পারলেন না। প্রিয় মুর্শিদ আমার ডাকে সাড়া দিয়ে পরম মমতায় মাথায় হাত রেখে বলেন,



- বল, কী চাস ?

- কিছু চাই না প্রভু, শুধু আপনাকে চাই!

- মিথ্যা বলিস না, মনের বাসনা বল!

- আপনি সর্বজ্ঞ প্রভু, মনের খবর তো আপনি জানেন!

- তবুও খুলে বল!

- মুক্তি চাই প্রভু, এই গুণ্ডা মহিলার হাত থেকে আমাকে মুক্তি দিন !

- এটা তো সম্ভব না, তাকে তোর পাঁজরের হাড় দিয়ে বানানো হইছে!

- ভুল জিনিস বানাইছেন প্রভু!

- তুই কি সংশোধন করতে চাস ?

- আজ্ঞে প্রভু !

- কাকে চাস বল ?

- আপনি সর্বজ্ঞ প্রভু মনের খবর আপনি জানেন!

- কিন্তু তুই যাকে চাস তাঁর তো স্বামী সন্তান আছে!

- আপনি সর্বজ্ঞ প্রভু!

- ঠিক আছে, চোখ খুল বাছা!



ওমা চোখ খুলে দেখি রিহানের আম্মু! মুর্শিদের লেবাস ধরে রিহানের আম্মু আমার মনের গোপন বাসনা জেনে ফেলেছে। কী চাইলাম আর কী পাইলাম ? মুর্শিদ এ তুমি কাকে পাঠালা ? আমি অনেকটা ভুত দেখার মতো করে বললাম,



- তুমি! তুমি এখানে কেন ?

- তোর মুর্শিদ আমাকে পাঠাইছে!

- মুর্শেদের নামে হাবিজাবি বলবানা! আমি ঠিক করেছি এই জীবন মুর্শিদের তরে বিসর্জন দিয়ে দিবো।

- তুই যে কী ঠিক করেছিস সবই তো শুনলাম। বিড়াল তপস্বীর ডাক ঈশ্বর শুনেনা। জীবনে যতোটুকু পূণ্য করেছিলি তার সবটুকু দিয়ে আমাকে পেয়েছিস। এখন বাসায় চল, নইলে এডিস মশার কামড় খেয়ে ডেঙ্গু বাঁধাবি।



আসলেই তো এই বাসার ছাদে মশার আধিক্য!



- হা করে তাকিয়ে আছিস কেন? বাসায় চল, নাকি ধাক্কা দিয়ে মুর্শিদের চরণে বিলীন করে দিব !



আমি কাঁথা বালিশ নিয়ে দীর্ঘ এক ঘন্টার সন্ন্যাস ত্যাগ করে বাসায় চলে আসলাম। ডেঙ্গু জ্বরের বিষয়টা মনে ছিলনা।

ভাগ্যিস মুর্শিদ রিহানের আম্মুকে পাঠিয়েছিল।

(সমাপ্ত)
 

Users who are viewing this thread

Back
Top