দুপুরে খেয়ে দেয়ে সাবিনা পিঠটা বিছানায় লাগিয়েছেন মাত্র ফোনটা বেজে উঠলো । রিমি ফোন করেছে, তার একমাত্র মেয়ে। দুমাস হলো বিয়ে হয়েছে, যে কয়দিন শ্বশুরবাড়ি থাকে এই দুপুর সময়টায় ফোন করবেই মেয়ে।
ফোন ধরতেই মেয়ে তিনি হ্যালো বলার আগেই বললো, " মা, আমার মেজাজ ভীষণ রকম খারাপ। কাজেই প্লিজ জ্ঞান দিও না।"
সাবিনা বুঝলেন কোনো ঝামেলা হয়েছে মেয়ের বাড়িতে। এমনিতে পরিবার তারা ভালোই পেয়েছেন। মেয়ে নিজে পছন্দ করেছে, ছেলে ভালো চাকরি করে। দুই ভাই দুই বোনের সবার বড় ছেলে সাব্বির। তার বাবা মা অমায়িক মানুষ, যতটুকু খোঁজ নিয়েছেন ছেলের বাবা বেশ অনেস্ট সরকারি কর্মচারী। মেয়েও বিয়ের পর বেশ বাকবাকুম থাকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে। এরমধ্যে কী হলো যে এরকম আগুনের উদগীরণ!!
- আচ্ছা রিমি তুই শান্ত হ! কী হয়েছে?
- এমন হাভাতে পরিবার জানলে আমি বিয়েই করতাম না!
- এ কী কথার ভাষা রিমি? ছি: ছি:! কী হয়েছে কী?
- আর বলোনা মা। আমি যা কিনে আনি আর যাই সাব্বিরকে দিয়ে আনাই খাবার জিনিস, সব গান্ডেপীন্ডে খেয়ে বসে থাকে সবাই মিলে। বাসায় তো দুই তরকারির বেশি রাঁধে না, আমি মুরগি ছাড়া খাই না, মুরগি রাঁধে সপ্তাহে মাত্র দুই দিন! তো তুমি তো জানো আমি ভালো নাস্তা না হলে খাই না। রুটিন করে খাওয়া দাওয়া করে তো ওরা অভ্যস্ত, এখন কেন কিছু কিনে আনলেই খেয়ে বসে থাকে?
- কে খেয়েছে? আর খেয়েছে তো কী হয়েছে বুঝলাম না তো!
- উফফ মা! আমি নাগেটস, সসেজ আরো কিছু ফ্রোজেন খাবার এনে রেখেছি ফ্রিজে, আর কয়েক ধরনের বিস্কিট স্ন্যাকস। সুন্দর দেখি সব ভাইবোন মিলে সন্ধ্যায় বসে গিলছে! আরে খাবি খা, আমাকে জিজ্ঞাসা করবি না একবার? সাব্বির আসলে আমি গিয়ে খাবার দিবো কী, বোনেরা এর আগেই খাবার নিয়ে রেডি। আবার কাল রাত দুইটায় ঘুম ভেংগে পানি খেতে যেয়ে দেখি তুবা পড়ছে আর তার জন্যে সাবা আমার কেনা নাগেটস ভাজছে। এটা কোনো কথা! শুধু যে একদিন তা না, প্রতিদিনই হচ্ছে এসব। আমার খুব মেজাজ খারাপ মা। তুমিতো জ্ঞান দিয়ে পাঠালে আলাদা সংসারের চিন্তা না করতে, এরকম হলে আমি কী করবো বলো? আমি আজকেই সাব্বিরকে বলবো আলাদা ফ্রিজ কিনতে আমার রুমের জন্যে।
সাবিনা বুঝে পাননা মেয়েকে কী বলবেন। এতো ছোট মন তার মেয়ের কবে হলো??? কিন্তু চুপ করে থাকলে তো চলবে না, আজই রাশ না টানলে এর জের চলবে সারাজীবন।
- রিমি, গত সপ্তাহে তোর শ্বশুরবাড়ি দাওয়াতে গেলাম।মুরগির রানটা তোর শাশুড়ি তোর পাতেই দিলো। আমি তোর মা,তুই আমার একমাত্র মেয়ে তাই আমি জানি তুই রান ছাড়া খাস না, উনি নিজের চার ছেলেমেয়েকে না দিয়ে তোকে দিয়েছেন। তখন তো ওদের জিজ্ঞাসা করেননি, তুইও তো একবারই বলিস নাই যে আমাকে না মা, ওদেরকে দেন। তোর শ্বশুর তোর বাবার হাত ধরে বলেছেন,"আল্লাহ সব দিয়েছে ভাই, শুধু আপনার মেয়ে দিন কোনো উপহার সামগ্রী না!" তুই যে ফ্রিজে খাবার রাখিস আর খাস সেটা কিন্তু তোর বাবার দেওয়া না, ওদের বাবারই কেনা! ওরা যখন তোকে আপন ভেবে কদবেল ভর্তা করে রাতদুপুরে মিসকল দেয়, তখন তো ঠিকই খাস। যখন ইচ্ছা আমাদের কাছে, বান্ধবীর বাসায় আসছিস যাচ্ছিস কিছু বলে না কেউ, সামান্য খাবার খাওয়া নিয়ে তোর এতই অভিযোগ? তুই নিজে কেন খাবার নিয়ে তুবা সাবাকে দিস না ওরা যখন পড়তে বসে? দুইদিন পর মেয়ে দুটো ডাক্তার হলে তো ফ্রি ট্রিটমেন্ট নিতে লজ্জা লাগবে না, লাগবে? সাব্বির বড় চাকরি করে। তুইও আজ বাদে কাল করবি। চার প্যাকেট খাবারের বদলে আট প্যাকেট কিনলে কি তুই গরীব হয়ে যাবি রিমি?যাইহোক, অনেক কথা বললাম। সব কথার শেষ কথা এই যে, এই ধরনের সস্তা কথা আর কখনো যেন না শুনি আমি তোর মুখে। আমি তো কষ্ট পেয়েছি, তোর বাবা শুনলে মরেই যাবে যে তার মেয়ের আত্মা এত ছোট। তোকে বিয়ে করিয়ে ওদের সংসারে ভাঙন ধরলে আমরাই লজ্জায় মুখ দেখাতে পারবো না।"
- কিন্তু মা, তুমি তো আমার কথা.....
- কোনো কথা না আর। এই ধরনের কোনো বিষয়ে আমি যদি কোনোদিন সাব্বিরের পরিবার থেকে কোনো অভিযোগ শুনি, ব্যাপারটা তোর জন্যে ভালো হবেনা। তুই যেদিন প্রথম আর শেষবার তোর বাবার পকেট থেকে টাকা চুরি করে আইস্ক্রিম খেয়েছিলি, আমি তোকে দুই দিন ভাত খেতে দেইনি, নিজেও খাইনি। তুই নিজে খিদায় কাঁদিস নাই, আমাকে খাওয়ানোর জন্যে কেঁদেছিলি মনে আছে? মনে রাখিস, অন্যায় তুই করলে, ছোট আমি আর তোর বাবা হবো। মনে থাকবে?
রিমি মৃদু গলায় বললো, হুঁ মা, থাকবে।
সাবিনা বললেন,
- চাকরি যতদিন শুরু না করছিস, নাস্তা বানিয়ে সবাইকে নিয়ে একসাথে খা। মূল রান্না করিস না আবার, তোর শাশুড়ির রান্না খেয়ে তোর রান্না খেলে বাসার সবার স্যালাইন খাওয়া লাগবে" হাসতে হাসতে বললেন তিনি।
কথোপকথন শেষ করে সাবিনা আবার শুয়ে পরলেন, কিন্তু ঘুম এলো না। কতো স্মৃতি মনের মধ্যে ভিড় করছে! তারা দুইবোন তখন স্কুলে, দুই ভাই কলেজে, ভাগাভাগি করে আত্নীয় স্বজনদের বাসায় থাকতেন। বড় ভাই বিয়ে করে ঢাকা বাসা নিলেন সবাইকে নিয়ে। ভাবী ছিলেন অবস্থাপন্ন ঘরের মেয়ে। ওদের জন্যে পুঁই শাক কুঁচো চিংড়ি আর ডাল, পাশেই ভাবির বাপের বাড়ির ড্রাইভারের দিয়ে যাওয়া ইলিশ মাছ শুয়ে থাকতো সগৌরবে! ওদের কেউ কিছু বলতো না, কিন্তু চার পিস মাছ নিজেরাই জানাতো, তোমরা কিন্তু আমাকে খেও না। এভাবে কতো দিন, দিনের পর দিন লোভনীয় তরকারির গন্ধে বসে আটপৌরে খাবার খেয়েছেন! বড় ভাই কিছু বলতো না, কারণ বড়কর্তা শ্বশুর যে তাকে মেয়ে নিয়ে আলাদা সংসারের ফরমায়েশ করেননি তাতেই তিনি আনন্দিত।
একদিন সাবিনার ছোট বোন আফরিনা লোভে পরে ভাবির বাসা থেকে দেওয়া রোস্ট থেকে বড় রানের টুকরা খেয়ে ফেললো। খেতে বসে ভাবী খুব সুললিত কণ্ঠে যা বলেছিলো, ডাকসাইটে ডক্টর আফরিনা হাবিব আজও মুরগির মাংস খান না। সাবিনার সবই মনে পরে একে একে।
আজ যদি তিনি বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় দেন, একটা সুন্দর সংসারে অশান্তি হবে। মেয়েকে মাথায় রাখেননি উকুনের ভয়ে, মাটিতে রাখেননি পিপড়ার ভয়ে। মাতৃত্ব তার কাছে এতো লোভনীয় ছিল যে তার জন্যে বাইরের সব প্রলোভন ত্যাগ করতে তিনি দ্বিতীয়বার চিন্তা করেননি, ভেবেছেন মেয়েটাকে মানুষের মত মানুষ করবেন। আজ মেয়ের কথা মনের মধ্যে কু ডাক শুনেছেন, তাই তার শক্ত হাতে রাশ ধরেছেন। তার কথাগুলোর তিক্ততার স্বাদ আজ পেয়েছে মেয়ে, কিন্তু একদিন তার মিষ্টতা জানবে। ওইদিন বুঝবে, মা ঠিক ছিল, মা সুবুদ্ধি দিয়েছিল। সেদিন হবে তার সুশিক্ষার জয়।
(সমাপ্ত)
ফোন ধরতেই মেয়ে তিনি হ্যালো বলার আগেই বললো, " মা, আমার মেজাজ ভীষণ রকম খারাপ। কাজেই প্লিজ জ্ঞান দিও না।"
সাবিনা বুঝলেন কোনো ঝামেলা হয়েছে মেয়ের বাড়িতে। এমনিতে পরিবার তারা ভালোই পেয়েছেন। মেয়ে নিজে পছন্দ করেছে, ছেলে ভালো চাকরি করে। দুই ভাই দুই বোনের সবার বড় ছেলে সাব্বির। তার বাবা মা অমায়িক মানুষ, যতটুকু খোঁজ নিয়েছেন ছেলের বাবা বেশ অনেস্ট সরকারি কর্মচারী। মেয়েও বিয়ের পর বেশ বাকবাকুম থাকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে। এরমধ্যে কী হলো যে এরকম আগুনের উদগীরণ!!
- আচ্ছা রিমি তুই শান্ত হ! কী হয়েছে?
- এমন হাভাতে পরিবার জানলে আমি বিয়েই করতাম না!
- এ কী কথার ভাষা রিমি? ছি: ছি:! কী হয়েছে কী?
- আর বলোনা মা। আমি যা কিনে আনি আর যাই সাব্বিরকে দিয়ে আনাই খাবার জিনিস, সব গান্ডেপীন্ডে খেয়ে বসে থাকে সবাই মিলে। বাসায় তো দুই তরকারির বেশি রাঁধে না, আমি মুরগি ছাড়া খাই না, মুরগি রাঁধে সপ্তাহে মাত্র দুই দিন! তো তুমি তো জানো আমি ভালো নাস্তা না হলে খাই না। রুটিন করে খাওয়া দাওয়া করে তো ওরা অভ্যস্ত, এখন কেন কিছু কিনে আনলেই খেয়ে বসে থাকে?
- কে খেয়েছে? আর খেয়েছে তো কী হয়েছে বুঝলাম না তো!
- উফফ মা! আমি নাগেটস, সসেজ আরো কিছু ফ্রোজেন খাবার এনে রেখেছি ফ্রিজে, আর কয়েক ধরনের বিস্কিট স্ন্যাকস। সুন্দর দেখি সব ভাইবোন মিলে সন্ধ্যায় বসে গিলছে! আরে খাবি খা, আমাকে জিজ্ঞাসা করবি না একবার? সাব্বির আসলে আমি গিয়ে খাবার দিবো কী, বোনেরা এর আগেই খাবার নিয়ে রেডি। আবার কাল রাত দুইটায় ঘুম ভেংগে পানি খেতে যেয়ে দেখি তুবা পড়ছে আর তার জন্যে সাবা আমার কেনা নাগেটস ভাজছে। এটা কোনো কথা! শুধু যে একদিন তা না, প্রতিদিনই হচ্ছে এসব। আমার খুব মেজাজ খারাপ মা। তুমিতো জ্ঞান দিয়ে পাঠালে আলাদা সংসারের চিন্তা না করতে, এরকম হলে আমি কী করবো বলো? আমি আজকেই সাব্বিরকে বলবো আলাদা ফ্রিজ কিনতে আমার রুমের জন্যে।
সাবিনা বুঝে পাননা মেয়েকে কী বলবেন। এতো ছোট মন তার মেয়ের কবে হলো??? কিন্তু চুপ করে থাকলে তো চলবে না, আজই রাশ না টানলে এর জের চলবে সারাজীবন।
- রিমি, গত সপ্তাহে তোর শ্বশুরবাড়ি দাওয়াতে গেলাম।মুরগির রানটা তোর শাশুড়ি তোর পাতেই দিলো। আমি তোর মা,তুই আমার একমাত্র মেয়ে তাই আমি জানি তুই রান ছাড়া খাস না, উনি নিজের চার ছেলেমেয়েকে না দিয়ে তোকে দিয়েছেন। তখন তো ওদের জিজ্ঞাসা করেননি, তুইও তো একবারই বলিস নাই যে আমাকে না মা, ওদেরকে দেন। তোর শ্বশুর তোর বাবার হাত ধরে বলেছেন,"আল্লাহ সব দিয়েছে ভাই, শুধু আপনার মেয়ে দিন কোনো উপহার সামগ্রী না!" তুই যে ফ্রিজে খাবার রাখিস আর খাস সেটা কিন্তু তোর বাবার দেওয়া না, ওদের বাবারই কেনা! ওরা যখন তোকে আপন ভেবে কদবেল ভর্তা করে রাতদুপুরে মিসকল দেয়, তখন তো ঠিকই খাস। যখন ইচ্ছা আমাদের কাছে, বান্ধবীর বাসায় আসছিস যাচ্ছিস কিছু বলে না কেউ, সামান্য খাবার খাওয়া নিয়ে তোর এতই অভিযোগ? তুই নিজে কেন খাবার নিয়ে তুবা সাবাকে দিস না ওরা যখন পড়তে বসে? দুইদিন পর মেয়ে দুটো ডাক্তার হলে তো ফ্রি ট্রিটমেন্ট নিতে লজ্জা লাগবে না, লাগবে? সাব্বির বড় চাকরি করে। তুইও আজ বাদে কাল করবি। চার প্যাকেট খাবারের বদলে আট প্যাকেট কিনলে কি তুই গরীব হয়ে যাবি রিমি?যাইহোক, অনেক কথা বললাম। সব কথার শেষ কথা এই যে, এই ধরনের সস্তা কথা আর কখনো যেন না শুনি আমি তোর মুখে। আমি তো কষ্ট পেয়েছি, তোর বাবা শুনলে মরেই যাবে যে তার মেয়ের আত্মা এত ছোট। তোকে বিয়ে করিয়ে ওদের সংসারে ভাঙন ধরলে আমরাই লজ্জায় মুখ দেখাতে পারবো না।"
- কিন্তু মা, তুমি তো আমার কথা.....
- কোনো কথা না আর। এই ধরনের কোনো বিষয়ে আমি যদি কোনোদিন সাব্বিরের পরিবার থেকে কোনো অভিযোগ শুনি, ব্যাপারটা তোর জন্যে ভালো হবেনা। তুই যেদিন প্রথম আর শেষবার তোর বাবার পকেট থেকে টাকা চুরি করে আইস্ক্রিম খেয়েছিলি, আমি তোকে দুই দিন ভাত খেতে দেইনি, নিজেও খাইনি। তুই নিজে খিদায় কাঁদিস নাই, আমাকে খাওয়ানোর জন্যে কেঁদেছিলি মনে আছে? মনে রাখিস, অন্যায় তুই করলে, ছোট আমি আর তোর বাবা হবো। মনে থাকবে?
রিমি মৃদু গলায় বললো, হুঁ মা, থাকবে।
সাবিনা বললেন,
- চাকরি যতদিন শুরু না করছিস, নাস্তা বানিয়ে সবাইকে নিয়ে একসাথে খা। মূল রান্না করিস না আবার, তোর শাশুড়ির রান্না খেয়ে তোর রান্না খেলে বাসার সবার স্যালাইন খাওয়া লাগবে" হাসতে হাসতে বললেন তিনি।
কথোপকথন শেষ করে সাবিনা আবার শুয়ে পরলেন, কিন্তু ঘুম এলো না। কতো স্মৃতি মনের মধ্যে ভিড় করছে! তারা দুইবোন তখন স্কুলে, দুই ভাই কলেজে, ভাগাভাগি করে আত্নীয় স্বজনদের বাসায় থাকতেন। বড় ভাই বিয়ে করে ঢাকা বাসা নিলেন সবাইকে নিয়ে। ভাবী ছিলেন অবস্থাপন্ন ঘরের মেয়ে। ওদের জন্যে পুঁই শাক কুঁচো চিংড়ি আর ডাল, পাশেই ভাবির বাপের বাড়ির ড্রাইভারের দিয়ে যাওয়া ইলিশ মাছ শুয়ে থাকতো সগৌরবে! ওদের কেউ কিছু বলতো না, কিন্তু চার পিস মাছ নিজেরাই জানাতো, তোমরা কিন্তু আমাকে খেও না। এভাবে কতো দিন, দিনের পর দিন লোভনীয় তরকারির গন্ধে বসে আটপৌরে খাবার খেয়েছেন! বড় ভাই কিছু বলতো না, কারণ বড়কর্তা শ্বশুর যে তাকে মেয়ে নিয়ে আলাদা সংসারের ফরমায়েশ করেননি তাতেই তিনি আনন্দিত।
একদিন সাবিনার ছোট বোন আফরিনা লোভে পরে ভাবির বাসা থেকে দেওয়া রোস্ট থেকে বড় রানের টুকরা খেয়ে ফেললো। খেতে বসে ভাবী খুব সুললিত কণ্ঠে যা বলেছিলো, ডাকসাইটে ডক্টর আফরিনা হাবিব আজও মুরগির মাংস খান না। সাবিনার সবই মনে পরে একে একে।
আজ যদি তিনি বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় দেন, একটা সুন্দর সংসারে অশান্তি হবে। মেয়েকে মাথায় রাখেননি উকুনের ভয়ে, মাটিতে রাখেননি পিপড়ার ভয়ে। মাতৃত্ব তার কাছে এতো লোভনীয় ছিল যে তার জন্যে বাইরের সব প্রলোভন ত্যাগ করতে তিনি দ্বিতীয়বার চিন্তা করেননি, ভেবেছেন মেয়েটাকে মানুষের মত মানুষ করবেন। আজ মেয়ের কথা মনের মধ্যে কু ডাক শুনেছেন, তাই তার শক্ত হাতে রাশ ধরেছেন। তার কথাগুলোর তিক্ততার স্বাদ আজ পেয়েছে মেয়ে, কিন্তু একদিন তার মিষ্টতা জানবে। ওইদিন বুঝবে, মা ঠিক ছিল, মা সুবুদ্ধি দিয়েছিল। সেদিন হবে তার সুশিক্ষার জয়।
(সমাপ্ত)