What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Self-Made তিথির সপ্ন অতঃপর বিয়ে (1 Viewer)

Fahima

Senior Member
Joined
Apr 8, 2019
Threads
137
Messages
539
Credits
32,076
এক দিন পরে তিথিকে ছেলে পক্ষ দেখতে আসবে। তিথি ভাবছে এবারের বিয়েটা কিভাবে ভাঙা যাবে। এর আগের বিয়ের প্রস্তাবটা তিথি নিজেই ভেঙে দিয়েছে। তিথি ছেলেকে ফোন করে বলেছে, ওর একটা এ্যাফেয়ার আছে। কিন্তু ছেলে তো পুরোই নাছোড়বান্দা। বলে কি না, সুন্দরী মেয়েদের একটু আধটু প্রেম থাকা ব্যাপার না। বিয়ের পর শুধু উনার সাথে প্রেম করলেই চলবে। উনি নাকি প্রথম দেখেই তিথিকে ভালোবেসে ফেলেছেন। শেষমেশ বন্ধু পাভেল কে বয়ফ্রেন্ড সাজিয়ে ফোন করা হলো, এরপর বিয়ে ক্যানসেল। আর তিথি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো।

কিন্তু বাবা পরম উত্সাহে কয়েক দিনের মাথায় আরেকজন পাত্র ঠিক করেছেন।ইউনিভার্সিটি যাওয়ার সময় বাবা তিথিকে ডেকে বললেন, শোন মা, আমার পাশে এসে বস...
তিথি বাবার পাশে এসে বসলো। তিথির একটু ভয় করছে, বাবা জেনে গেল নাকি, যে বিয়েটা তিথি ভেঙে দিয়েছে। বলো বাবা।
তোর কি মন খারাপ মা।
কেন বাবা, মন খারাপ হবে কেন?
না মানে গাধাটা আমার এত সুন্দর মেয়েটাকে না করলো। আসলে গাধাটার চোখ নষ্ট। তুই মন খারাপ করিস না মা, আমি তোকে ওই গাধাটার থেকে অনেক ভালো ছেলের সাথে বিয়ে দেব।
তিথির বাবার জন্য মন খারাপ লাগছে। মনে মনে বললো, সরি বাবা।
আগামী পরশু ছেলে পক্ষ তোকে দেখতে আসবে।
ঠিক আছে বাবা, আমি এখন যাই। ক্লাসের দেরী হয়ে যাবে।
আজ গাড়ি নিয়ে যা, আমি আজ অফিস যাব না।
কেন বাবা, শরীর খারাপ, তিথি বাবার কপালে হাত দিয়ে দেখলো।
না রে, শরীর ভালো আছে। তোর মাকে নিয়ে একটু বের হবো।
কোথায় যাবে বাবা।
আমার বন্ধু সাইফুল, তোর মনে নেই হয়তো, ছোট বেলায় দেখেছিস। ওর মা নাকি ইউনাইটেড হসপিটালে ভর্তি। ভাবছি একটু দেখে আসি।
তাহলে তোমরা গাড়ি নিয়ে যাও। আমি বাসে চলে যাব।
তিথি ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বের হলো। তিথির খুব মন খারাপ লাগছে। বাসে উঠে জানালার পাশে একটা সিটে বসলো। তিথির খুব কান্না পাচ্ছে। বাবা মার জন্য খারাপ লাগছে, মনে হচ্ছে বাবা মাকে ঠকাচ্ছে ও।

তিথির কারো সাথে কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু তিথি একজনকে খুঁজছে। সেই মানুষটার কথা মনে হলে তিথির হার্টবিট বেড়ে যায়, গলা শুকিয়ে আসে, কানের কাছে বেহালার করুণ মিষ্টি সুর বাজতে থাকে। আর খুব কান্না পায় তিথির। লোকটাকে তিথি চেনে না, লোকটা সম্পর্কে কিছুই জানে না। একদিনের একটু সময়ের দেখায় কিভাবে তিথির সব ওলোট পালোট হয়ে গেল, তিথি নিজেই বুঝে উঠতে পারছে না। অসম্ভব রুপবতী, প্রেম থেকে ১০০ হাত দুরে থাকুন টাইপ তিথি, এভাবে টুপ করে প্রেমে পড়বে, তা তিথি কোনও দিন ভাবেনি। তিথির নিজের চুল নিজেরই ছিড়তে ইচ্ছা করছে।

সেদিন ছিল তিথির জন্মদিন, তাই শাড়ি পড়ে ক্যাম্পাসে এসেছিল তিথি। সেদিন তিথি নীল সাদা কম্বিনেশনে একটা জামদানি শাড়ি পড়েছিল, লম্বা চুলগুলো হাত খোঁপা করে বেলি ফুলের মালা পড়েছিল, চোখে কাজল, আর কপালে ছোট্ট নীল টিপ। শাড়ি পড়লে ওর হাঁটতে কষ্ট হয়। এ কারণে শাড়ি পরা হয় না। বাস থেকে নেমে, রিকশা না পেয়ে হেঁটে কলাভবনের দিকে যাচ্ছিল তিথি। হঠাত্ পিছলে পড়লো তিথি। লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে হচ্ছিল, মনে হচ্ছিল সবাই তাকিয়ে হাসছে। এ সময় একটা সাদা গাড়ি এসে থামলো, একজন ভদ্রলোক নেমে এসে হাত বাড়িয়ে দিলো তিথির দিকে। শাড়ি সামলে উঠতে সমস্যা হচ্ছিল তিথির, তাই বাড়ানো হাতটা ধরে উঠে দাঁড়ালো। পড়ে গিয়ে তিথির এত বেশি লজ্জা লাগছিল, লোকটাকে ধন্যবাদ ও দেয়া হলো না।
লোকটা জিজ্ঞাসা করলো, ব্যথা পাননি তো।
তিথি বললো না ঠিক আছি।
লোকটা বললো, সাবধানে চলবেন। তারপর একটা হাসি দিয়ে চলে গেল।

এরপর তিথি অল্প কিছু সময় ক্যাম্পাসে কাটিয়ে বাসায় ফিরেছে। বাসায় ফিরে শাওয়ার শেষে, ফুল স্পীডে ফ্যান ছেড়ে শুয়ে আছে তিথি।
মা এসে ঢুকলেন। কি রে মা, এত তাড়াতাড়ি চলে এলি যে।
আর বলো না মা, পাবলিক লাইব্রেরির সামনে পড়ে গেছি। জীবনে এত লজ্জা পাইনি। কি যে বিশ্রী একটা অবস্থা, মনে হচ্ছিল সবাই আমাকেই তাকায় দেখতেছে, আর মজা নিচ্ছে।
ব্যথা পাসনি তো।
আমি ঠিক আছি মা। বাবা ফিরেছে।
না রে, ফিরেনি। চা খাবি...
বাবা এলে একসাথে খাবো। মা, আজ পাকোড়া বানাও না, প্লিজ।
বানাবো, তার আগে আমার একটা কথা আছে তোর সাথে। অবশ্য তোর বাবা জানতে চেয়েছে।
বাবা আবার তোমাকে মিডিয়া বানিয়েছে। আশ্চর্য তো, আচ্ছা বলো কি বলবে।
তোর বাবা তোর বিয়ের কথা ভাবছে।
মা, এত তাড়াতাড়ি বিয়ে কেন?
ছেলে দেখলেই কি বিয়ে হয়ে যায়।
কিন্তু আমার মাস্টার্সটা এডলিস্ট কমপ্লিট হোক মা।
তোর তো আর এখনই বিয়ে দিয়ে দিচ্ছি না। ছেলে দেখতে নিতেও তো সময় লাগে, তাই না।
যা ইচ্ছে করো তোমরা, আমাকে বাড়ি থেকে তাড়াতে পারলে তো বাঁচো তোমরা।
শোন, বাবা এলে বলিস এসব। আমাকে শুধু বল, তোর কোনও পছন্দ আছে কিনা।
কপট অভিমান করে তিথি বললো, কেউ থাকলে জানতে নিশ্চয়ই।

সেদিন রাত থেকেই তিথির সমস্যা শুরু হয়েছে। গভীর রাতে তিথির ঘুম ভাঙলো অদ্ভূত একটা স্বপ্ন দেখে, স্বপ্নে ঐ ভদ্রলোকের হাতে মাথা রেখে ঘুমিয়ে ছিল তিথি। ঘুম ভেঙে গেলে তিথি ভাবলো, স্বপ্ন তো স্বপ্নই। আবার ঘুমিয়ে পড়েছিল তিথি। এরপর থেকে প্রতি রাতেই ভদ্রলোককে স্বপ্নে দেখে তিথি। কোন দিন ভদ্রলোকের সাথে বৃষ্টিতে ভিজছে, কোন দিন কোথাও বেড়াতে যাচ্ছে, কোন দিন একটা সুন্দর সবুজ খোলা মাঠে বসে জোছনা মাখছে। তিথি বুঝতে পারছে না কেন এমন হচ্ছে। ইদানীং সে অবচেতন মনে দিনের বেলায় ও লোকটার কথা ভাবে। কখনও নিজেকে আবিষ্কার করে পাবলিক লাইব্রেরির সামনে। একা একাই কখন যেন এসে দাঁড়িয়েছে। ওর মন, ওর চোখ খুঁজতে থাকে ওই অচেনা অজানা লোকটাকে।

তিথি চলতে ফিরতে মনে মনে ঐ লোকটা কে খোঁজে। তিথি বাবা মাকে বলতে পারছে না ওর মনের অবস্থা। আর কি বলবে, ও তো নিজেই বুঝতে পারছে না ওর কেন এমন হচ্ছে। তাই বিয়ের প্রস্তাবটা তিথি নিজেই ভেঙে দিয়েছে। তিথি ভাবছে এবারের বিয়েটা কিভাবে ভাঙা যাবে। তিথি পাভেল কে ফোন দিলো। তুই কোথায় পাভেল?

শামসুন নাহার হলের সামনে দোস্ত। কেয়া খুব রাগ করছে, রাগ ভাঙাইতে আসছি। তুই কই? ক্যাম্পাসে আসবি?

আমি বাসে, দশ পনেরো মিনিট লাগবে আসতে। তুই কেয়াকে নিয়ে হলের সামনে থাক, আমি আসতেছি। তোদের সাথে ইমপর্টেন্ট কথা আছে।
ঠিক আছে , দেরী করিস না।
ওকে, রাখছি।
তিথি প্রায় আধা ঘণ্টা পরে হলের সামনে এলো। আইল্যান্ডে পাভেল আর কেয়া বসে আছে।
তিথি ওদের কাছে গেল।
কেয়া জিজ্ঞাসা করলো, কিরে সুন্দর মুখটাতে আষাঢ়ের মেঘ কেন?

পরশু আবার কে যেন আসবে দেখতে। মা বললো, বাবার বন্ধুর বড় ভাইয়ের ছেলে। ছেলে ঢাকা মেডিক্যাল থেকে পাশ করেছে। ইউনাইটেড হসপিটালে প্র্যাকটিস করছে, গুলশানে বাড়ি আছে। কি করবো বুঝতে পারছি না।

পাভেল বললো, এতে আবার বুঝাবুঝির কি আছে। এবার আমি অন্তত তোর এসব ঝামেলার মধ্যে নাই। কয়মাস পর মাস্টার্স পরীক্ষাও শেষ। ছেলে দেখতেও সময় লাগে। আর এত ভালো প্রপোজাল, এইটা নিয়ে অন্তত ফাজলামো করিস না।

কেয়া বললো, পাভেল কিন্তু ঠিকই বলছে, ওই ভদ্রলোককে খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর তাছাড়া একজন আননোন লোকের জন্য এসব করার মানে কি বল।

ভালো বলতে না পারিস, নেগেটিভ বলিস না প্লিজ...আমার বিশ্বাস আমি উনাকে খুঁজে পাবো।

হ্যাঁ,,,খুঁজে পাবি আর উনিও এসে বলবে, চলো তিথি বিয়ে করি।

পাভেলের কথায় তিথির খুব মন খারাপ লাগছে, তিথি যে ভাবেনি তা না। তিথি ও ভেবেছে লোকটা বিবাহিত হতে পারে, অন্য কোথাও পছন্দ থাকতে পারে। কিন্তু ও শুধু একবার লোকটার মুখোমুখি হতে চাচ্ছে। ওর লোকটার জন্য এধরনের ফিলিংস ওকে অনেক বেশি ডিস্টার্ব করছে। পড়াশুনায় মন দিতে পারছে না।

ক্লাসেও তিথি সারাক্ষণ মন খারাপ করে থাকলো। কেয়া অনেক বুঝালো, তিথি তুই যদি একটা রিলেশনের মধ্যে থাকতিস তাহলে আমরা তোর জন্য সর্বোচ্চ করতাম, কিন্তু এই পাগলামোতে কি বলবো বল। তিথি চুপ করে থাকলো। দুটো ক্লাস করেই বাসায় ফিরে এলো। একটু মাথা ধরেছে, তাই চেঞ্জ না করেই রুম অন্ধকার করে শুয়ে থাকলো।
আশা এসে জিজ্ঞাসা করলো, আপা ভাত দেই।
খেতে ইচ্ছে করছে না, মাথা ধরেছে। এক কাপ কড়া লিকারের চা দিতে পারবি।
দিচ্ছি আপা।
চা নিয়ে তিথি বারান্দায় এসে বসলো। হালকা ঝিরঝিরে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির ছাঁট তিথির চোখে মুখে এসে পড়ছে, তিথির খুব কান্না পাচ্ছে। ওর সাথে কেন এমন হলো।

মা তিথিকে ডাকতে ডাকতে রুমে ঢুকলো।
কিরে অসময়ে চা খাচ্ছিল, মাথা ধরেছে নিশ্চয়।
অল্প ব্যথা, ঠিক হয়ে যাবে। তোমাকে অনেক খুশী খুশী লাগছে মা, কি হয়েছে।

তোর সাথে কথা আছে।
বলো মা।
তোর জন্য যে ছেলেটা ঠিক করেছে তোর বাবা, ছেলেটাকে দেখে এলাম।
বাবা বললো, তোমরা ইউনাইটেড হসপিটালে যাচ্ছো সাইফুল চাচার মাকে দেখতে।
কথা শেষ করতে দে তিথি। তোর সাইফুল চাচার বড় ভাইয়ের ছেলেই পাত্র। ছেলে তো ইউনাইটেড হসপিটালের ডাক্তার। সারাক্ষণ দাদির পাশে ছিল। এত ভালো, এত সুন্দর, তোর সাথে অনেক মানাবে। তোর বাবার ও অনেক পছন্দ হয়েছে। আর ওদের সাথে আমাদের একসময় খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। খুব ভালো ফ্যামিলি। মাঝখানে অনেক বছর যোগাযোগ ছিল না। তোর বাবা সেদিন ইউনাইটেডে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে সাইফুল ভাইয়ের সাথে দেখা।
তিথির মুখ গম্ভীর দেখে মা জিজ্ঞাসা করলো, কিরে মুখ কালো করে আছিস কেন?
না মা মাথাটা প্রচণ্ড ধরেছে।
আমি একটু মাথায় হাত বুলিয়ে দেই।
না মা লাগবে না, একটু ঘুমাব তাহলে ঠিক হয়ে যাবে।
ঠিক আছে তুই ঘুমা, আমি ও ফ্রেশ হয়ে নেই। পরশু ছেলে পক্ষ আসবে, তোর বাবা সহ বাজারেও যেতে হবে।

বিকেলে ঘুম থেকে উঠে শাওয়ার শেষে রুম থেকে বাইরে এলো তিথি। দেখলো বাবা মা বাজার গুছিয়ে রাখছে। বাবা মা দুজনেই যে অনেক খুশী তা ওদের দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। তিথি জানে ওর বাবা মা ওর মতের বিরুদ্ধে কিছু করবে না। কিন্তু ও কি বলবে, একটা ছেলেকে একদিন দেখে প্রেমে পড়ে গেছে। আসলে প্রেম কিনা তা ও বুঝতে পারছে না। পাভেল, কেয়া ঠিকই বলছে, ঐ ছেলেকে হয়তো কোনও দিন খুঁজে পাবে না। তিথি ঠিক করলো ওর বাবা মা যা বলবে, ও তাই মেনে নিবে।

পরের দিন তিথি ক্লাসে গেল না। কেয়া কে ফোন করে বাসায় আসতে বললো।
আশা এসে বললো, আপু আপনার বান্ধবী আসছে।
আমার রুমে নিয়ে আয়।
কেয়া এসে বসলো তিথির পাশে। কি রে মন খারাপ।
না। আমি ঠিক করেছি বাবা মা যা বলবে তাই করবো।
এই তো লক্ষ্মী মেয়ে। এসব স্বপ্ন টপ্ন দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমিই আসলে পাগল, কি সব আবোল তাবোল ভাবি। তুই কাল আসবি কেয়া।
সকালে পারবো না, বিকেলে চলে আসবো।
ছেলে পক্ষ বিকেলেই আসবে। ছেলের দাদি হসপিটালে ভর্তি আছেন, ওরা দু একজনই আসবেন। ছেলের দাদি নাকি নাতবউ দেখতে চান, তাই এত তাড়াহুড়ো।
তিথি তুই ঠিক আছিস তো।
হ্যাঁ রে ঠিক আছি। যা হবে না তা নিয়ে মন খারাপ করে কি হবে বল।
কেয়ার তিথির শুকনো মুখটা দেখে খুব মন খারাপ লাগছে।

পরের দিন বিকেলে ছেলে পক্ষ এলো। তিথি একটা ল্যাভেন্ডার কালারের শাড়ি পড়েছে, হালকা কতক রুপার গয়না। মনে মনে দোয়া পড়ছে ছেলে পক্ষ ওকে যেন পছন্দ না করে। তিথির চাচাতো ভাইয়ের বউ রুমা ভাবিকে মা নিয়ে এসেছে, সব তদারকি করার জন্য। ভাবি এসে তিথিকে অতিথিদের কাছে নিয়ে গেল। ছেলের মা, বোন, ভাবি, সাইফুল চাচার ওয়াইফ সবাই মায়ের রুমে বসে গল্প করছে। যেন এ বাড়িতে তাদের অনেক আসা যাওয়া। তিথি সবাই কে সালাম দিল। ছেলের মা তিথিকে কাছে নিয়ে বসালো। তিনি তিথির মাকে বললেন, মাশাআল্লাহ্ মেয়ে তো তোমার পরীর মত সুন্দর। এই মেয়েকেই আমি বউমা করে নিয়ে যাব। অবশ্য তোমাদের যদি আমার ছেলেকে পছন্দ হয়। তিথির মা বলে উঠলেন, আপা আমাদের ও ছেলেকে অনেক পছন্দ হয়েছে। এখন ছেলে মেয়ে দুজন দুজনকে দেখুক।

তিথির মন খারাপ লাগছিল, তাই সবাই কে বলে ওর রুমে এলো। আসার সময় বসার রুমে একজন সুদর্শন ভদ্রলোককে দেখতে পেলো, তিথি বুঝলো এটাই পাত্র।

মায়ের রুম থেকে হাসির শব্দ আসছে। সবাই গল্পের আসর জমিয়ে ফেলেছে। ড্রইং রুমেও জম্পেশ গল্প চলছে। তিথি নিজের রুমে বসে শুনতে পাচ্ছে, সবাই পুরনো দিনের গল্প করছে। তিথির মনে হচ্ছে পারলে আজই সবাই ওর বিয়ে দিয়ে দেয়।

দুই পরিবারের সবাই সিদ্ধান্ত নিল, ছেলে মেয়েকে যেহেতু পরিবারের সবাই পছন্দ করেছে, ছেলে মেয়ের মধ্যেই শুধু দেখা হওয়া বাকি, ওরা আলাদা ভাবেই কথা বলুক। ছেলের মা বললো, আমার সায়ান এসব ব্যাপারে অনেক লাজুক। দেখা যাবে মুরুব্বীদের মাঝে মেয়েকে না দেখেই বলবে দেখেছি। ঠিক হলো তিথিদের বাসার ছাদে
ওরা কথা বলবে। রুমা ভাবি তিথিকে ছাদে নিয়ে এলো, বললো তুমি বসো, আমি সায়ানকে নিয়ে আসি। তিথি বুঝলো ছেলের নাম সায়ান। তিথি রেলিংয়ে হেলান দিয়ে দাঁড়ালো, ওর মনে হচ্ছে এখানেই বিয়েটা হয়ে যাবে তিথির। তিথি ঠিক করলো, বাবা মার ইচ্ছেটাকেই মেনে নিবে। একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো। পেছনে পায়ের শব্দে ঘুরে দাঁড়ালো তিথি। তিথির পুরো শরীর কাঁপছে।
ভাবি পরিচয় করিয়ে দিলো, সায়ান এ হলো আমার ননদীনি তিথি, আর তিথি ইনি সায়ান। তোমরা কথা বলো, আমি দশ মিনিট পরে আসছি।

তিথির পুরো শরীর কাঁপছে। এটা কি করে সম্ভব। ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে সেই মানুষটা, যাকে সে প্রতি দিন খুঁজে ফিরে। সায়ান হেসে হেসে কি সব বলছে তিথিকে, তিথি কিছু শুনছে না। তিথি সায়ানের দিকে হাতটা বাড়িয়ে বললো, প্লিজ আমাকে একটা চিমটি দিন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top