What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

হজরত ইমাম মাহদি আ কবে আসবেন বিস্তারিত আলোচনা (1 Viewer)

mahabub1

Member
Joined
Mar 4, 2018
Threads
93
Messages
103
Credits
13,877
মুসলিম জাহান আজ শত দলে বিভক্ত। প্রিয় নবীর (সা.) অন্তর্ধানের পর মুসলমানদের মধ্যে ঐশী খেলাফত ব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল। আর তার (সা.) ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ীই এ খেলাফত ব্যবস্থার সমাপ্তি হয়ে জুলুম-অত্যাচারের রাজত্বের পর আবার পৃথিবীতে শান্তি ফিরে আসার কথা ইমাম মাহদির (আ.) আগমনের মাধ্যমে। অনেকেই মনে করেন, আমরা নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত সবই পালন করছি ও মানছি তাহলে আবার ইমাম মাহদি আসার কি প্রয়োজন আছে? আবার উম্মতের বেশির ভাগ তার আগমনের অপোয় দিন গুনছেন? ইতোমধ্যে অনেক পীর-মাওলানা ইমাম মাহদির আগমনের দিন-তারিখও উল্লেখ করে গেছেন। এ ছাড়া তার আগমনের বিষয়ে মহানবীও (সা.) ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। এখন প্রশ্ন হলো তিনি কখন আসবেন?
মহানবী (সা.) বলেছেন, 'আমার শতাব্দী সর্বোৎকৃষ্ট, তারপর উহার সন্নিহিতরা, তারপর উহার সন্নিহিতরা, অতঃপর মিথ্যার প্রাদুর্ভাব হবে' (নেসাই ও মিশকাত)। মহানবীর (সা.) সোনালি যুগ ৩০০ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর থেকে এক হাজার বছর পর ইমাম মাহদির আবির্ভাব হওয়ার কথা। অন্য একটি হাদিসে ইমাম মাহদির আগমনের নিদর্শনগুলো প্রকাশের কথা আরও কিছু আগে শুরু হবে বলে উল্লেখ রয়েছে। যেমনÑ হজরত আবু কাতাদা (রা.) বর্ণনা করেছেন, মহানবী (সা.) বলেছেন, 'সেই লণগুলো ২০০ বছর পর দেখা দেবে, যা হাজার বছর পর আসবে' (মেশকাত)। এই হাদিসের সমর্থনে আল্লামা হজরত মোল্লা আলী কারি (রহ.) মিশকাত শরিফের শরাহ মিরকাহ নামক গ্রন্থে লিখেছেন 'সেই ২০০ বছর পর, যা হাজার বছর পর আসবে, তখনই ইমাম মাহদির (আ.) জাহির হওয়ার সময়' (মিরকাহ, শরহে মেশকাত)। মহানবীর (সা.) হাদিস থেকে বোঝা যায়, ইসলামের প্রথম ৩০০ বছর ইসলাম প্রতিষ্ঠার শ্রেষ্ঠতম যুগ। অতঃপর যদিও ধারাবাহিকভাবে প্রত্যেক শতাব্দীর শিরোভাগে মুজাদ্দিদ বা ধর্ম সংস্কারক আবির্ভূত হতে থাকবেন তার পরও পরবর্তী এক হাজার বছরে শরিয়ত আল্লাহর দিকে উঠে যাবে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, মহানবীর (সা.) ৩০০ বছরের পর চতুর্থ শতাব্দী থেকে ক্রমাবনতির ধারায় ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষ ভাগ পর্যন্ত ইসলাম আল্লাহর দিকে উঠে যাবে আর পৃথিবীতে ইসলাম শুধু নামেমাত্র থাকবে, ইসলামের চরম অধঃপতন ঘটবে। ইসলামের এই অধঃপতন থেকে উদ্ধার করার জন্য আল্লাহতাআলা ইমাম মাহদিকে হিজরি চতুর্দশ শতাব্দীর শুরুতেই পাঠাবেন।
বিষয়টি স্পষ্ট, হজরত ইমাম মাহদির আগমন হওয়ার কথা ১২০০ হিজরি সনের পর। কিন্তু ১২০০ হিজরি পার হয়ে বর্তমান ১৫০০ হিজরি শতাব্দী চলছে। ইমাম মাহদির আগমন যদি এখনো না হয়ে থাকে, তাহলে তার আশাকরিবেন এবং চল্লিশ বৎসর বয়সে আত্মপ্রকাশ করিবেন। এই হিসাব অনুসারে ইমাম মাহদি ১৪২০ হিজরী সালে আত্মপ্রকাশ করিবেন। সুতরাং তাহার প্রকাশ পাওয়ার মাত্র বিশ বৎসর বাকী রহিয়াছে' (পৃষ্ঠা. ১৬-১৭)। এ অনুযায়ী ইমাম মাহদির আবির্ভাব হওয়ার কথা ২০০৪ সালে। কারণ ১৯৮৪ সালে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন আর মাত্র ২০ বছর বাকি আছে ইমাম মাহদির আগমনের সময়। তাহলে বর্তমান কত সাল চলছে?
মিসরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস থেকে প্রকাশিত (হিজরি ১৩০৫) হজরত আল্লামা আব্দুল ওহাব শা'রানী প্রণীত কিতাব 'আল ইওয়াকিত ওয়াল জাওয়াহির' গ্রন্থের প্রথম সংস্করণের ১৬০ পৃষ্ঠায় তিনি এ মত প্রকাশ করেছেন, মাহদি (আ.) ১২৫৫ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করবেন। দ্বাদশ হিজরির মুজাদ্দিদ হজরত শাহ ওলীউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলবী (রহ.) তার মূল্যবান কিতাব 'তাফহিমাতে ইলাহিয়াত' প্রকাশকাল ১৩৫৫ হিজরি। ওই গ্রন্থের ১৪৩ পৃষ্ঠায় তিনি লিখেছেন, 'মহাপ্রতাপশালী আমার প্রভু আমাকে জানিয়েছেন যে, কেয়ামত অতি নিকটবর্তী এবং হজরত মাহদি (আ.) প্রকাশ হওয়ার জন্য প্রস্তুত। ' মৌলভি নবাব সিদ্দীক হাসান খান ভূপালী সাহেবের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ 'হেজাজুল কেরামাহ ফি আসারে কাদীমা' গ্রন্থে তিনি ইমাম মাহদির আবির্ভাব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন এবং বহু গণ্যমান্য আলেমের উদ্ধৃতি দিয়ে নিজ মন্তব্য এভাবে বর্ণনা করেছেনÑ 'আমি বড় মজবুত সূত্রগুলো মিলিয়ে দেখছি যে, নিশ্চয় তিনি (ইমাম মাহদি) হিজরি চতুর্দশ শতাব্দীর প্রারম্ভে আবির্ভূত হবেন' (পৃষ্ঠা-৩৯৫)।
পাক ভারতের খ্যাতনামা আলেম সৈয়দ আব্দুল হাই (রহ.) তার লিখিত পুস্তক 'হাদিসুল গাসীয়া' গ্রন্থে লিখেছেনÑ 'চতুর্দশ শতাব্দীর প্রারম্ভে হজরত ইমাম মাহদি (আ.)-এর আবির্ভাব অনেকটা সুনিশ্চিত। যেহেতু মাহদি (আ.) সম্পর্কিত সকল নিদর্শনাবলী প্রকাশ হয়ে গেছে। ' খাজা হাসান নিযামী পাক-ভারতের বিখ্যাত সুফি ও সাহিত্যিক এবং বিশিষ্ট সাংবাদিক তিনি ইমাম মাহদির আগমন সম্পর্কে 'কিতাবুল আমর ইয়ানী মাহদির আনসার ও ফরায়েয' নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেন। ওই গ্রন্থে তিনি উল্লেখ করেনÑ 'মাহদি (আ.)-এর যুগ হিজরী চতুর্দশ শতাব্দী। ' তাছাড়া তিনি একবার আরব দেশ ভ্রমণ করে লিখেছেনÑ 'আরবের মশায়েখ ও উলামায়ে কেরাম সবাই হজরত ইমাম মাহদি (আ.)-এর অপো করছেন। এমন কি শেখ সানসীর এক খলীফা এতদূর বলে ফেললেন যে, হিজরী ১৩৩০-এ মাহদি (আ.) যাহির হয়ে পড়বেন' (পত্রিকা 'আহলে হাদিস', ২৬ জানুয়ারি, ১৯১২ ইং)।
উল্লিখিত বিশিষ্ট আলেমরা ইমাম মাহদির (আ.) আবির্ভাব সম্পর্কে তাদের পুস্তকে যা উল্লেখ করেছেন, সে অনুযায়ী ইমাম মাহদি অনেক বছর আগেই অবির্ভূত হওয়ার কথা ছিল, তাহলে এখন তিনি কোথায়? অন্যদিকে তাকে মানার গুরুত্বও অনেক, যেভাবে হাদিসে উল্লেখ রয়েছেÑ মহানবী (সা.) বলেছেন, 'যখন তোমরা তাকে দেখতে পাও তার হাতে বয়াত করবে, যদি বরফের পাহাড় হামাগুড়ি দিয়েও যেতে হয়, নিশ্চয় তিনি তোমাদের খলিফা আল-মাহদি' (সুনানে ইবনে মাজাহ, বাব খুরুজুল মাহদি)। অন্য এক হাদিসে তিনি (সা.) বলেছেন, 'অতঃপর আল্লাহতাআলার খলিফা ইমাম মাহদি আসবেন, তোমরা তার আগমনবার্তা শোনামাত্রই তার কাছে হাজির হয়ে বয়াত করবে' (মিসবাহ, হাসিয়া ইবনে মাজাহ)।
কোরআন-হাদিস থেকে যা জানা যায়, ইমাম মাহদির (আ.) আগমন হবে আবার সব ধর্মের ওপর ইসলামকে জয়যুক্ত করার উদ্দেশ্যে। তিনি মহানবীর (সা.) আদর্শ এবং পবিত্র কোরআনের শিাকে বিশ্বমানবের কাছে আবার প্রতিষ্ঠা করবেন। তিনি নতুন কোনো শরিয়ত নিয়ে আসবেন না, কারণ ইসলাম পরিপূর্ণ ধর্ম এবং মহানবী (সা.) শেষ শরিয়তদাতা নবী, তারপর আর কেই নতুন শরিয়ত নিয়ে দুনিয়ায় আগমন করবেন না। ইমাম মাহদি (আ.) এসে মহানবীর (সা.) কাজই পরিচালনা করবেন। ধর্মে যেসব বেদাত সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করবেন। তিনি ইসলামের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনবেন। তাই ইমাম মাহদিকে (আ.) সাহায্য করা ও তার আহ্বানে সাড়া দেওয়াকে প্রত্যেক মুসলমানের ওপর ওয়াজিব বা অবশ্য কর্তব্য বলে মহানবী (সা.) ঘোষণা করেছেন। যেমন তিনি (সা.) বলেছেন, 'প্রত্যেক মুসলমানের ওপর সর্বতোভাবে ওয়াজিব হবে ইমাম মাহদির সাহায্য করা অথবা তার ডাকে সাড়া দেওয়া' (সুনানে আবু দাউদ, কিতাবুল মাহদি)। তাই আমাদের কর্তব্য হবে ধর্ম সংস্কারের জন্য শেষ জামানায় যার আসার কথা তিনি এসেছেন কিনা তা অন্বেষণ করা। আল্লাহতাআলা আমাদের সবাইকে প্রকৃত ইসলামের ছায়ায় জীবন পরিচালনার তৌফিক দান করুন, আমিন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top