What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

দীপ জ্বেলে যাই (1 Viewer)

Rainbow007

Moderator
Staff member
Moderator
Joined
Mar 5, 2018
Threads
254
Messages
10,514
Credits
341,235
Watermelon
Camera
Tokyo Tower
Doughnut
Birthday Cake
Birthday Cake
দীপ জ্বেলে যাই

Writer: Dipankar Ray


শিখা আর পিউয়ের বন্ধুত্ব আমাদের প্রেমের থেকে অনেক পুরনো। যেদিন থেকে আমার শিখার সাথে আলাপ আমি ওর আর পিউয়ের বন্ধুত্বের কথা জানি। স্কুলের গণ্ডি ছেড়ে কলেজে এসে আলাপ হয় ওদের, এতো গভীর আর দৃঢ় বন্ধুত্ব সচরাচর মেয়েদের মধ্য দেখিনি। পিউয়ের জীবনে এমন কিছু কথা ছিলোনা যা শিখা জানত না, আমাকেও বলেছে অনেক কিছুই। আমিও পিউকে নিজে চিনেছি, দুটো মিলিয়ে আমি পিউকে বেশ বুঝতে পারি। বেশ কয়েকবার দেখা হয়েছে ওর সাথে। দেখা হলেও তেমন কথা হয় না, পিউয়ের কথা বার্তা আমার ভালো লাগে না। নিজের জীবনের দুঃখ নিয়ে চর্চা করা ছাড়া অন্য কোন আলোচনা করতে পারে না, এইসব মেয়েলি প্যানপ্যানানি আমার আবার সহ্য হয় না। কিন্তু শিখা ওর সব কথা আন্তরিক ভাবে শোনে, ওকে সান্ত্বনা বা পরামর্শ দেয়। যে কয়েকবার ওদের সাথে দেখা হয়েছে আমার বেশির ভাগ সময় কেটেছে পিউয়ের বর দীপের সাথে কথা বলে। দীপ বেশ বুদ্ধিদীপ্ত ছেলে। সরকারি কলেজে প্রোফেসর, ইতিহাস নিয়ে পড়ায়, সেই নিয়ে চর্চা করতে ভালবাসে। দীপকে আমার বেশ পছন্দ, মিতভাষী কিন্তু বেশ হাসিখুশি ওর সাথে কথা বলে সময়টা ভালই কেটে যায়। এমনিতে চুপ করে থাকে কিন্তু যখন ইয়ার্কি মারে সেটা বেশ সরসতা পূর্ণ। পিউ আবার এর বিপরীত, অল্পতেই রেগে যায় বা চট করে অভিমান হয়ে যায়। যাই হোক, এই পার্থক্যে ওদের বিবাহ ভঙ্গ হয়নি। শিখা আর পিউয়ের চরিত্র বিভিন্ন হওয়াতেও ওদের বন্ধুত্বে কখনো কোন চিড় ধরেনি। শিখার দিক থেকে সেটা অকৃত্রিম আর গভীর ছিল। দুজনের মধ্যে ভালবাসা আর এক অদ্ভুত পারস্পরিক বোঝাপড়া ছিল যা আমার বোঝার বাইরে।
এই গল্পটা যদি আমাকে শিখা না বলত, তাহলে কোনোদিন জানতে পারতাম না। শিখা আমার সাথে নিজের জীবনের সব কথাই বলে, এমন কোন কথা নেই যা নিয়ে আমরা আলোচনা করিনা। অনেকদিন ধরেই জানতাম যে পিউ ওদের সেক্স লাইফ নিয়ে প্রচণ্ড অখুশি। ওর যেরকম প্রবল আর তেজি শারীরিক আদর দরকার দীপ সেই তুলনায় অনেক ঠাণ্ডা ছেলে। তার ওপর স্ট্রেস বা যে কোন কারণে, শিথিলতা একটা বড় সমস্যা ছিল দীপের, আর এই নিয়ে ডাক্তার দেখাবে না বলে জেদ করে ও জিনিষটা আরও ঘোরালো করে দিয়েছিল। পিউয়ের দৈহিক চাওয়াটা বেশ নর্মাল ছিল কিন্তু ওদের দাম্পত্য জীবনে সেটা সমকক্ষ ছিল না। শিখার কথায় আমি জানতাম বিয়ের আগে পিউয়ের বেশ কিছু যৌন সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পর এই নৈরাশ্য থেকে অন্য সম্পর্ক ছিল কিনা সেটা পিউ কিছু বলেনি বা বললেও শিখা সেটা আমার কাছে চেপে গেছে। কয়েকবার ইয়ার্কি মেরে শিখাকে বলেছিলাম "হাজার হোক তোমার এতো ভালো বন্ধু, আমারও তো কর্তব্য আছে। বল তো আমি না হয় পিউকে সাহায্য করে দি?" এই নিয়ে আমাদের মধ্য বেশ কৌতুক-ব্যঙ্গ হতো।
ক্রমে সব অভিযোগ পেরিয়ে পিউয়ের মা না হতে পাওয়ার দুঃখটা কুল ছাপিয়ে উঠলো। ওরা ডাক্তারের কাছে গিয়ে জেনেছিল যে কারুরই তেমন কোন বড় প্রব্লেম নেই। আবার কিছু ছোট খাটো শারীরিক বা মানসিক অসুবিধে ছিল সন্তান ধারণের জন্য। তার পর থেকে পিউ আরও খামখেয়ালি হয়ে উঠলো। বেশ কয়েকবার তো শিখাকেও চাপ দিতে লাগলো ওকে আদর করার জন্য, দুই মহিলার একটা দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য। শিখা এটা নিয়ে অসন্তুষ্ট হলেও বন্ধুকে কিছু বলত না, বাড়িতে আমার সাথে কথা বলে মনের অস্বস্তিটা কাটিয়ে নিত। কয়েকদিন চাপাচাপির পর পিউ ব্যাপারটা ছেড়ে দিলো। আমি ভাবলাম মাথার পোকাটা কমেছে। তখন জানতাম না এ খ্যাপামি যাওয়ার না।
"জানো, পিউ আমাকে জামাকাপড় খুলে ছবি পাঠাতে বলছে", রাতে শুতে যাবার আগে পোশাক বদলানোর সময় বলল শিখা। আমি ওকে হা করে দেখছিলাম আর ফোনে ফটো তুলছিলাম। ওকে আমি অনেক ভাগ্য করে পেয়েছি। মানুষ হিসেবে, বৌ হিসেবে ওর কোন তুলনাই নেই। সেই সঙ্গে শিখার মতন সুন্দরী আর যৌবন প্রাচুর্যে উচ্ছ্বসিত মহিলা আমি দেখিনি। নিজের বৌ বলে বলছিনা কিন্তু ওর শরীর দেখে কোনারক মন্দিরের ভাস্কর্যর কথা মনে পড়ে। মনে হয় এই সেই আদি নারী যাকে দেখে এই মন্দিরে নারী রূপের পরিভাষা তৈরি হয়েছে। ক্ষীণ কটি, উন্নত বক্ষ, সুগোল বিশাল নিতম্ব। এই নারীকে পুরুষের ভালোবাসা পাওয়ার জন্য বিধাতা পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। নগ্ন হয়ে যখন আমার সামনে গর্বিতার মতন দাড়িয়ে থাকে, তখন শরীরের ভাষা যতটাই উদ্ধত চোখের ভাষাটি ততোটাই নমনীয় থাকে। মৈথুন কালে যখন চার হাত পায়ের ওপর ভর দিয়ে নিতম্বটাকে উঁচু করে নিজের সর্বস্ব দিয়ে আমাকে আহ্বান করে তখন আমার নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পুরুষ বলে মনে হয়।
"ও তো তোমার পেছনে অনেকদিন ধরে হাওয়া দিচ্ছে, তা যদি তোমার শরীরের সৌন্দর্য দেখে ওর যৌবন জ্বালা একটু কমে, ক্ষতি কি?"
"চুপ করো তো, সবসময় ফাজলামি ভালো লাগেনা" শিখা একটু রেগেই গেলো। রাগটা কমলো না উলটে বেড়ে গেলো "বলো তো দিয়ে দি। পিউ বলছে ওর বরকে দেখাবে। যাতে উত্তেজিত হয়ে পিউকে আদর করে। কি? দেবো? এখন চুপ মেরে গেলে কেন?" সত্যি একটু থতমত খেয়ে গেছিলাম, এটা একটু নতুন কথা!
"দেখো হয়ত নিজের জন্য চাইছে, বর এর নাম করে বলছে।"
"কেন, পিউ কেন ভাববে ওর বরের নাম করে চাইলে আমি ছবি দেবো? আসল কথা হল ও সেটা ভাববে না, কিন্তু হয়ত তুমি সেটা ভাবছ!" শিখার গলা উত্তরোত্তর বাড়ছিল "অন্য লোক আমার ছবি দেখবে কেন? তোমাকে বলেছি না আমি শুধু তোমার!" মাঝে- মাঝে মেয়েরা একটা যুক্তিকে এক প্রান্ত থেক অন্য প্রান্তে নিয়ে যায়, তখন মুখ বন্ধ রাখাই শ্রেয়। তখনকার মতন ছেড়ে দিলাম বটে কিন্তু পিউ আবার কি নতুন বলে তার জন্য উদগ্রীব হয়ে রইলাম।
বেশিদিন অপেক্ষা করতে হল না।
সেদিন রাতে আদর করার পর আমার বুকে মাথা রেখে শিখা গায়ে হাত বোলাচ্ছিল। "পিউ এর মাথাটা গেছে, এরকম ভাবে চলতে থাকলে ওর সাথে আর বন্ধুত্ব থাকবে না!" আমি জানতাম একটু মান-অভিমান চলছিল ওদের মধ্য। শিখা যখন বাপের বাড়ি যাবে তখন ওদের বাড়ি যাক কারণ এই দুটো বাড়ি কাছাকাছি, এটা পিউয়ের জেদ। সেই তুলনায় পিউ আমাদের এখানে আসতে চায় না। এটা নিয়ে একটু মন কষাকষি চলছিল, আমি ভাবলাম সেই ব্যাপার হবে।
"পিউরা তো অনেকদিন আসেনি, তবে ভালই হয়েছে। ও আসলে আমি একটু বিরক্ত হই।"
"না, তা না....."
"তাহলে?"
"পিউয়ের মনে এখন বদ্ধ ধারনা যে ওর বরের যা যৌন অক্ষমতা আছে আমি সেটা ঠিক করতে পারি", এইটুকু বলে শিখা চুপ করল। শিখার শরীরে যা যৌন আবেদন আছে তা আমি অন্য কোন নারীতে দেখিনি, এমন যৌন পটীয়সী বৌ বোধহয় ভূভারতে আর নেই। এমন কোন পুরুষত্ব নেই যা ওর কাছে এসে জাগ্রত হবেনা। ওর হাল্কা জিভের ছোঁওয়া পেলেই যে কোন পৌরুষ সজাগ হয়ে যাবে।
"তুমি ওকে বলে দাওনি কি ভাবে আদর করতে হয়? তোমার মতন এমন সুনিপুণা বান্ধবী থাকতে ওর আর কি অসুবিধে?" একটু কৌতুক করে বললাম।
"কতবার বলেছি আভাষে–ইঙ্গিতে, ইদানীং তো বেশ স্পষ্ট করে বলেছি কি কি করতে হবে – বিছানায় কি করতে হবে। পিউয়ের আবার বড্ড বেশি প্যাংচামি, এটা করব না! ওটা করতে পারব না! এটা করলে বর মাথায় চেপে বসবে!"
"ওর যখন সবকিছুতে অসুবিধে তাহলে ওকে বোলো বাইরে কোন প্রেমিক জুটিয়ে সব চাহিদা পূরণ করে নেবে।"
"সেটাও বলেছিলাম; অভিমান করে বলল আমি নাকি ওকে বেশ্যা হবার পরামর্শ দিচ্ছি!"
"সে কি? ওর তো এদিক-ওদিক বেশ সম্পর্ক ছিল!"
"হ্যাঁ, বিয়ের আগে ছিল। তাদের মধ্য দুজনের সাথে তো এখনও দেখা সাক্ষাত আছে। একজনের তো দীপের সাথে ভালো আলাপ আছে, সে এখন পিউকেই পাত্তা দেয় না। অন্যজনের আদর করার ধরনটা পিউয়ের পছন্দ কিন্তু সেখানেও নানান কারণে বিশেষ কিছু এগোয় না।"
"পরিস্থিতি তুমি ঠিক করে দেবে অথচ তোমার কথা শুনবে না, এটা কি ধরনের আবদার?"
"ওর বক্তব্য হচ্ছে আমি সব করব। আমি নাকি করলে সব ঠিক হয়ে যাবে! আমার হাত লাগলেই সব প্রব্লেম ঠিক হয়ে যাবে!"
"মানে?!" বেশ আশ্চর্য হলাম আমি। রেগেও গেলাম হয়ত।
"ওর কথা হচ্ছে ওর বরের এই অপদার্থ ভাব আমি একবার ঠিক করে দিলে, বাকিটা ও সামলে নেবে।"
"আচ্ছা!, তো এই অপদার্থ ভাব তুমি কি ভাবে কাটাবে? তোমাকে দেখিয়ে দিতে হবে?" ব্যাঙ্গার্থক সুর আমার।
"হ্যাঁ। ওর বরের শিথিলতা দূর করে ওকে সুদৃঢ় পুরুষ করে দিতে হবে" বেশ সম্মোহিনী ভঙ্গিতে বলল শিখা। আমি জোরে হেসে ওঠাতে কথা সেদিনের মতন বন্ধ হয়ে গেলো।
কাজের ব্যস্ততায় পরের বেশ কয়েকদিন পিউদের নিয়ে আর কোন কথা হয়নি। সেদিন শনিবার ছুটি ছিল, বিকেলের দিকে আমি আর শিখা জলখাবার খেতে-খেতে টিভি দেখছি, এমন সময় শিখার ফোনটা বেজে উঠলো। কিছুক্ষণ কথা বলেই শিখা রেখে দিলো, চোখমুখে প্রচণ্ড উৎকণ্ঠা, চোখ লাল হয়ে জলে ছল্ ছল্ করছে।
"পিউ আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছ, কিছু খেয়েছে। মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা উঠছে, অজ্ঞান হয়ে আছে" আর বেশি কিছু বলতে পারল না শিখা। উৎকণ্ঠা আর ভয়ে ফোনে দীপ বিশেষ কিছু বলতে পারেনি। চেনা এক ডাক্তারকে নিয়ে ওদের বাড়ি পৌঁছাতে বেশি সময় লাগলো না। ডাক্তার বলল পিউ কোন ঘুমের ওষুধ খেয়েছে, পেট পাম্প করাতে হবে। ওকে একটা প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে সব করতে অনেক সময় বেরিয়ে গেলো। হাসপাতালের ডাক্তার বলল রাত না কাটলে কিছু বলা যাবে না। চরম উৎকণ্ঠা নিয়ে বাড়ি ফিরলাম আমরা। দীপ হাসপাতালে রয়ে গেলো। বাড়ি ফিরে পিউয়ের মা-বাবাকে আশ্বস্ত করার জন্য ফোন করল শিখা। বলল পরের দিন ওনাদের হাসপাতালে নিয়ে যাবে। যতক্ষণ কথা বলছিল শিখা ধাতস্থ ছিল। ফোনটা রেখে কান্নায় ভেঙে পড়ল। আমি হতভম্ব হয়ে ওকে জড়িয়ে সান্ত্বনা দিতে লাগলাম।
"পিউ আমাকে বলেছিল ও আত্মহত্যা করবে। সেই নিয়ে ওর সাথে কথা কাটাকাটি থেকে ঝগড়া। গত দুদিন আমি রাগের চোটে ওর সাথে কথা বলিনি। আমি সত্যি বুঝতে পারিনি গো ও এতো বড় একটা পদক্ষেপ নিয়ে নেবে!" আবার ঝর-ঝর করে কেঁদে ফেললো শিখা। কাঁদছিল আর নানান কথা বলছিল যার মূল বক্তব্য হল যে ওর জন্য জন্য পিউ আজ এই অবস্থায়। কিছুক্ষণ পরে ধাতস্থ হয়ে আমাকে পুরো ব্যাপারটা বলল।
"পিউয়ের এখন যা মানসিক অবস্থা, ও যে যৌন তৃপ্তি পাবে না, সেটার সাথে ও আপোষ করে নিয়েছে। কিন্তু ওর ইচ্ছে যে ওদের একটা সন্তান হোক এবং সেটা দীপের সন্তান হোক। কিন্তু বাধা হয়েছে যে দীপ আগে যতটুকু আদর করতো এখন আর সেটুকুও করেনা। পিউ কাছে আসলে পালিয়ে যেতে চায়। রাত্রিবেলা পরীক্ষার খাতা বা পড়াশুনো করার অজুহাতে পড়ার ঘরে দরজা বন্ধ করে থাকে। আর কালে ভদ্রে পিউ ওকে চেপে ধরলে তখন ওর পৌরুষ শক্ত হওয়া তো দূরের কথা আরও ছোট হয়ে যায়।"
"হ্যাঁ, পিউ যদি ওরকম ভাবে চাপ দেয় তাহলে দীপের পক্ষে আরই কিছু করা সম্ভব হবেনা..."
"সেটাই হচ্ছে" আমাকে থামিয়ে শিখা বলল "ও বলছিল যে দীপ যখন পারেনা তখন প্রচণ্ড হতাশ হয়ে পিউ ওকে গালাগালি করে। বস্তির মতন খিস্তি-খেউড় করে। ওর অক্ষমতা নিয়ে কটাক্ষ করে। এমনকি একবার যখন দীপ পাল্টা বলেছিল যে তেমন হলে অন্য কোন পুরুষ খুঁজে নিতে তখন পিউও ওকে বলেছিল যে পুরুষ বিয়ে করে নিজের বৌকে সুখ দিতে পারেনা তার কর্তব্য হল দালালের মতন বউয়ের জন্য নিত্য-নতুন পুরুষ হাজির করা।"
"পিউ ভাবে এই ভাবে একজন পুরুষমানুষকে উৎসাহিত করবে?" আমার তির্যক প্রশ্ন।
"আমি জানি তুমি ওকে পছন্দ করোনা। কিন্তু দীপকে এইসব বলে ও নিজেই মরমে মরে ছিল। আর ঝামেলা করেনি ওর সাথে। আমার সাথে ফোনে প্রচুর কথা হয়েছে, যার প্রধান বক্তব্য হল আমি যদি দীপকে প্রলুব্ধ করি তাহলে ও ভেড়া থেকে পুরুষ সিংহ হয়ে যাবে! সেই নিয়ে পিউয়ের সাথে ঝগড়া। আর যখন ঝেড়ে অস্বীকার করেছিলাম তখন আমাকে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করেছিল যে আমার এই সাহায্যে ও মা হতে পারবে এবং ওর জীবনটা শুধরে যাবে। সেই তুলনায় আমাকে যা করতে হবে সেটা নগণ্য। আমি তখন রেগে গেছিলাম গো! পিউকে বেশ কয়েক কথা শুনিয়ে ফোন কেটে দিয়েছিলাম। পরের দিন ও আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে মেসেজ পাঠিয়েছিল, আমি উত্তর দিইনি। আর আজকে এই অবস্থা!"
শিখা উদাস ভাবে চুপ করে গেলো কিছুক্ষণ। "হ্যাঁ গো। পিউ বেঁচে যাবে তো?"
"তোমার সামনেই তো ডাক্তারের সাথে কথা হল। অনেকগুলো ওষুধ খেয়েছে, কিন্তু যেহেতু চিকিৎসা তাড়াতাড়ি শুরু হয়েছে তাই ভয়টা কম। কিন্তু আজ রাতটা ভালভাবে কাটা দরকার।"
কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে, হাতজোড় করে বলল, "ঠাকুর ও যেন ভালো হয়ে ওঠে, প্রতিজ্ঞা করছি ওর সাথে আর কোনোদিন ঝগড়া করব না।"
সেই রাতটা আধঘুমেই কাটিয়ে দিলাম। সারারাত স্বপ্ন দেখলাম, শিখা রানীদের সাজে দাঁড়িয়ে আছে, একটা জোকার শিখার হাত ধরে টানাটানি করছে আর ও জোকারের হাত ছাড়িয়ে নিচ্ছে। পরেরদিন গাড়িটা শিখার ব্যবহারের জন্য রেখে আমি ট্যাক্সি করে অফিস চলে গেলাম। ওকে বলে গেলাম তেমন দরকার পড়লে আমায় ডেকো। দুপুরের আগে শিখা ফোন করে জানাল, ডাক্তার বলে গেছে পিউয়ের ফাঁড়া কেটে গেছে এবং ওকে আইসিইউ থেকে রুমে দেওয়া হবে। বিকেলে গিয়ে দেখলাম পিউয়ের জ্ঞান ফিরেছে কিন্তু বিশেষ কথা বলছে না, ঝিমুনি ভাবটা কাটেনি। আমি দীপকে নিয়ে হাসপাতালের সুপারের সাথে কথা বলে পুলিশ কেস এবং অন্য ঝামেলা মিটিয়ে নিলাম।
ইয়ার এন্ডিং এর চাপে কদিন মুখ তোলার অবকাশ পাইনি, তার ওপর গ্রীষ্মের প্রবল দাবদাহ। চব্বিশ ঘণ্টা এসিও কম পড়ছে! এর পর আরও আছে! অফিসের নতুন সেক্রেটারির পিছনে প্রচুর সময় যাচ্ছে। শুধু হাতে ধরে কাজ শেখানো নয়, তাকে সহজ করার জন্য বেশ কিছু সময় কাটাতে হচ্ছে যাতে পরবর্তীতে তাকে দিয়ে অনেক কাজই করানো যায়। তাই কয়েকদিন আর হাসপাতাল যাইনি, শিখা নিয়ম করে দুবেলাই যেত। যেদিন পিউকে বাড়িতে নিয়ে এলো, ওইদিন ওদের বাড়িতে গেলাম। সাইকোলজিস্টের পরামর্শ মতন দুপক্ষের বাবা-মা কেউ ওদের বাড়িতে রইল না, বাড়ির পরিবেশটা স্বাভাবিক রাখার জন্য। পিউয়ের সাথে কোন অঘটন ঘটেছিল সেটা মনে আসার কোন কারণ যেন না থাকে। পিউ শুধু শিখার সাথেই কথা বলছিল এবং ও সামনে না থাকলে উৎকণ্ঠা বেড়ে যাচ্ছিলো। শিখাকে যে ওদের ওখানেই থাকতে হবে সেটা আমি বুঝতে পারছিলাম। এই পরিস্থিতিতে পিউয়ের অনেকটা দায়িত্বই না চাইলেও ওর কাঁধে এসেই যায়।
বসবার ঘরে চা খেতে খেতে আমাদের দুজনের কথা হচ্ছিলো, "থাকতে হবে সেই ভাবে প্রস্তুত হয়ে আসিনি, আজকের রাতটা ব্যবস্থা করে নিচ্ছি, তুমি কালকে সকালে অফিস যাবার আগে আমার জামা-কাপড় আর দরকারি কিছু জিনিষ দিয়ে যেও।"
"হ্যাঁ, আজকের রাতটা পিউয়ের জামা দিয়ে কাজ চালিয়ে নিতে পার" ঘরে ঢুকতে-ঢুকতে দীপ বলে উঠলো। ওর চোখে মুখে স্বস্তির ছাপ। এই পরিস্থিতিতে সেটা হওয়াই স্বাভাবিক, কিন্তু মনে হল যেন একটু বেশিই খুশী হয়েছে। ওর এই উদ্গ্রিবতা দেখে হাসি পেল, শিখার সান্নিধ্যে এসে প্রায় সব পুরুষমানুষই নিজের অজান্তে একটু আহ্লাদিত হয়ে যায় । শিখার এই রূপটা আমার পরিচিত, কারুর দুঃখে তার পাশে গিয়ে দাঁড়ানো, তার কি করা উচিত সেটা নিয়ে স্থিরবুদ্ধিতে মীমাংসা করে দেওয়াটাই ওর ধর্মের মধ্যে পড়ে। আমি ওঠার আগে যেসব জিনিষ আনতে হবে সেগুলোর খুঁটিনাটি লিখে একটা তালিকা ধরিয়ে দিলো।
পরের দিন সকালবেলায় সব জিনিসপত্র গুছিয়ে পৌঁছে গেলাম। শিখা যে পরিমাণে জিনিস আনতে বলেছিল তাতে মনে হল বেশ কয়েকদিন থাকতে হতে পারে, তার মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছে। দীপকে দেখলাম পিউয়ের সাথে কথায় মগ্ন তাই শিখার খোঁজে রান্নাঘরের দিকে গিয়ে দেখি বেঢপ এক নাইটি পরে প্রাতরাশের আয়োজন করছে। পেছন থেকে কোমরটা জড়িয়ে ধরে ওর শরীরের সাথে নিজের শরীরটা মিশিয়ে দিলাম। না চমকে, না পেছনে তাকিয়ে শিখা বলল "এই ছাড়! হাত পুড়ে যাবে যে!"
"পিউ যদি বাড়িতে এই সব নিরস জামা-কাপর পরে, তাহলে আর কি করে কিছু হবে?"
"ও পোশাকের ব্যাপারে চিরকাল একটু সংরক্ষণশীল, কিন্তু বেশ ভালই সাজগোজ করে।"
"তুমি তো দেখছি, পিউয়ের ওকালতি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লে। সারারাতের পরে বরকে দেখছো সেরকম কোন ভাব নেই! আর জানলেও বা কি করে এটা আমি? দীপও হতে পারত?"
"তোমার ছোঁওয়া আমি চিনব না? ঘুমিয়ে থাকলেও জানব।" ওখানেই ব্রেকফাস্ট সেরে অফিস রওনা দিলাম।
কাজের জন্য দুদিন বাইরে ছিলাম তাই ওই বাড়িতে আর যাওয়া হয়নি। ফেরত এসে দেখি পিউয়ের শরীর অনেকটা ভালো।। চোখেমুখে অবসাদ কেটে অনেকটা পরিষ্কার ভাব। পিউকে অনেক বুঝিয়ে সেদিনের মতন আমার সাথে বাড়ি এলো শিখা।
"কেমন বুঝছ পিউয়ের অবস্থা?" জিজ্ঞাসা করলাম।
"খুব একটা ভালো না। ও যে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে ভুল করেছে সেটার কোন অনুভব ওর নেই, বা তার জন্য খারাপ লাগা নেই।"
"কিন্তু ওকে দেখে তো কিছুটা ভালো মনে হল?"
"সেটা আমি ওর কাছে ছিলাম বলে। ওর ধারনা এবার আমি ওকে মা হতে সাহায্য করব।"
"মানে, তুমি কি করবে?"
"পিউয়ের ধারনা আরও বদ্ধ হয়েছে যে আমি যদি দীপের সাথে প্রেম করি তাহলে ওর স্বামী আবার পুরুষত্ব ফিরে পাবে।"
"এখনো ওই চিন্তা থেকে বেরোতে পারেনি?" আমি হাসবো না রাগ করব বুঝে পেলাম না।
"না, বরং চিন্তাটা আরও দৃঢ় হয়েছে" কথাটা বলে অন্যমনস্ক হয়ে গিয়ে আবার বলতে শুরু করল শিখা। "জানো, পিউয়ের মানসিক অবস্থাটা ডাক্তাররা যা বলছেন তার থেকেও বেশি খারাপ বা জটিল। নাহলে, এই কথাটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না, যে কোনো মেয়ে নিজেকে হেয় করে অন্য একটা মেয়েকে বেশি সুন্দরী দেখবে! সে তারা যতই ভালো বন্ধু হোক না কেন! এটা তো মেয়েদের স্বভাব বিরুদ্ধ। তুমি বলো ঠিক বলছি কিনা?"
"হুম, কথাটা ভুল বলোনি…"
"তবে, এই কথাটার একটা অন্য দিকও আছে। আমার মনে হয় ও কথাটা কিন্তু খুব একটা ভুল বলেনি, এই কদিন ওদের বাড়িতে থেকে বুঝলাম যে দীপ আমাকে বেশ পছন্দ করে।"
"কেন কিছু বলেছে নাকি?"
"পিউয়ের কান বাঁচিয়ে আমার রূপের স্তাবকতা করছিল। আমি যেখানে সেখানে ঘুর-ঘুর করছিল। বেশি কথা, বেশি উচ্ছ্বাস, বিগলিত হাসি। এই আর কি। আর..."
"আর কি?"
"একদিন রাতে ঘুম ভেঙে দেখি ওই ঘরে দাঁড়িয়ে আছে আমার দিকে তাকিয়ে...
কথাটা শুনেই ঘুমন্ত শিখার চেহারা আমার চোখের সামনে ভেসে উঠলো। শুয়ে থাকলে ওকে ভীষণ লাস্যময়ী লাগে, জড়িয়ে ধরে আদর করতে ইচ্ছে করে। ওর রাতের নাইটিগুলো বেশ খোলামেলা, কাঁধে পাতলা ফিতে, গলায় নিচু করে কাটা লেসের কাজ আর সবকটার দৈর্ঘ্যই হাঁটুর উপরে। নিদ্রিতা শিখাকে দেখে দীপ যে বিমূঢ় হয়ে যাবে সেটা প্রত্যাশিত, তাই রাগলাম না। এমন সুন্দরী বউকে পুরুষরা দেখবে না সেটা কখনই আশা করি না কিন্তু আমার অভিলাষিণী বউকে রাতের অন্ধকারে অন্য এক পুরুষ তার নিজের বাড়িতে দেখে যৌন আখাঙ্কা করেছে এই ভাবনাটাও বিচলিত করল।
"তারপর?"
 

Users who are viewing this thread

Back
Top