What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected জানি দেখা হবে পর্ব দুই (1 Viewer)

Nil328

Member
Joined
Sep 13, 2018
Threads
101
Messages
101
Credits
3,429
-আরেকটু দেবো !
-না না আন্টি আর লাগবে না ।
-কেন রান্না ভাল হয় নি ?
-কি যে বলেন আন্টি ! রান্না খুব ভাল হয়েছে । আজকে যথেষ্ট খেয়েছি ! আর খাওয়ার উপায় নেই ।
-আরেকটু নাও !

আবীরের অবস্থা দেখে মিতুর হাসি পেয়ে গেল । সে হাসি ঠেকানোর চেষ্টা করলো না । বরং ফিক করে হেসে দিল ।
আবীর ওর দিকে তাকিয়ে বলল
-আপনি হাসছেন ?
-হাসবো না তো কি করবো ? আম্মুর জীবনের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে মানুষকে ধরে ধরে তার রান্না করে খাওয়ানো । কিন্তু আমি আর আব্বু কেউ এতো খাদক নয় । তাই যাকেই পায় তাকেই খাওয়াতে লেগে যায় ।

মিতুর আম্মু বলল
-তুই চুপ থাকতো । ছেলেটাকে একটু খেতে দে !

মিতুর বাবা চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছিলো । এক সময়ে আবীরকে বলল
-তা বললে যে তুমি এই এলাকাতেই থাকো ?
-জি আঙ্কেল ! এই তো আপনাদের পাশের হাউজিং এ ।
-মিতুর সাথে চাকরি করছো কতদিন ?
-বেশি দিন হয় নি এই ব্যাংকে জয়েন করেছি । আগে প্রাইম ব্যাংকে জব করতাম । সেখান থেকে এখানে এসেছি ।
-ভাল ভাল । তা তোমার বাবা কি করে ?
-উনি এখন কিছু করে না । আগে সরকারি চাকরী করতেন । আম্মু এখনও কলেজের শিক্ষকতা করেন ।
-তুমি কি একাই ?
-এক বড় বোন আছে । আমাদের সাথে থাকে না । এখন আমি বাবা মাকে নিয়ে এখানে থাকি ।

মিতুর কেন জানি ওর বাবার এই প্রশ্ন উত্তর শুনতে বেশ ভাল লাগছিলো । কেন লাগছিলো সেটা ও বলতে পারবে না । সেদিনের পর থেকে আবীর নামের মানুষটা যেন হঠাৎ করেই ওর কাছের মানুষ হয়ে গেছে । ঐদিন বাসায় পৌছে দেওয়ার পরে মিতুর মনে ঘুরে ফিরে কেবল আবীরের কথায় আচ্ছে ।

পরদিন অফিস গিয়েই প্রথমে মিতু আবীরের সাথে দেখা করেছিলো । তারপর সেদিনের লাঞ্চটাও করেছিলো এক সাথে । দুর থেকে আবীরকে যতখানি গম্ভীর মনে হয়েছিলো কাছ থকে দেখলে সেটা মোটেই মনে হয় না । বরং মিতুর মনে হচ্ছে আবীর খুবই চমৎকার একজন মানুষ । কেবল সঠিক মানুষটা খুজে পেলেই সে নিজেকে তার সামনে তুলে ধরে !

সেদিনের পর প্রায় প্রতিদিনই ও অফিসের পর আবীরের সাথে এসেছে । মাঝের একদিনে ওর সাথে গিয়েছিলো বেঙ্গল বইয়ে । সময় গুলো কেমন চট করে চলে যাচ্ছে । আজকে শুক্রবার আবীরকে ওদের বাসায় ডেকেছে খাওয়ার জন্য । সেদিনের ঘটনার পর থেকে ওর বাবাই ওকে আসতে বলেছিলো ।

আবীর বলল
-আঙ্কেল মিতুর ঐ ব্যাপারে কিছু করেছেন কি ? মিতু বলছিলো যে ওর আগেও মনে হয়েছে যে কেউ ওর পিছু নেয় ! কিন্তু এর আগে বিষয়টা পাত্তা দেয় নি । কিন্তু ব্যাপারটা তো সিরিয়াস !
মিতুর বাবা সাফায়েত আহমেদের মুখটা খানিকটা কঠিন হয়ে গেল । সে বলল
-আমি জানি এর পেছনে কে আছে ?
-জানেন ?

আবীর মিতুর দিকে তাকিয়ে দেখলো ও খানিকটা কালো মুখে তাকিয়ে আছে ওর দিকে । ও নিজেও জানে সম্ভত ওকে কে ফলো করে ! সাফায়েত আহমেদ বললেন
-মিতু যখন ইন্টার মিডিয়েট পড়তো তখন আমরা কুমিল্লা থাকতাম । ওখানে ওকে একটা ছেলে ওর পিছু নিয়েছিলো । ভাল পরিবারের ছেলে হলেও ছেলেটা ভাল ছিল না । পড়াশুনা করতো না । বাপের টাকা ছিল বলে সারা দিন টইটই করে ঘুরে বেড়াতো । মিতুকে বিয়েও করতে চেয়েছিলো । আমি রাজি হই নি ।
-তারপর ?
-তারপর আর কি ? ক্ষমতা থাকলে আর যা হয় ! আমাদের পিছু লাগা শুরু করলো । শেষ বাধ্য হয়ে ওর পরীক্ষার পরেই ঢাকাতে চলে এলাম । এতোদিন ভেবেছিলো সে ভুলে গেছে । এখন দেখছি সে ভুলে নি !
-আপনি ব্যবস্থা নেবেন না ?
-অনেক ছাড় দিয়েছি । আর না । এবার কিছু একটা করতেই হবে !

সাফায়েত আহমেদ আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলো তখনই তার ফোন বেজে উঠলো । ফোনের দিকে তাকিয়ে কিছু সময় ভুরু কুচকে রইলেন তিনি । তারপর ফোনটা রিসিভ করলেন । মিতু লক্ষ্য করলেন কেবল হ্যালো বলে আর কোন কথা বলল তার বাবা । মুখটা আরও গম্ভীর হয়ে গেল । তারপর ফোন রেখে দিলেন ।

টেবিল ছেড়ে উঠতে দেখে মিতুর মা বলল
-সে কি খাওয়া হয়ে গেল ?
-হ্যা । আমাকে একটু যেতে হবে !
-কি হয়েছে !
-কল্যান এক্সিডেন্ট করেছে !

কল্যান ঘোস সাফায়েত আহমেদের অনেক দিনের বন্ধু । মিতু সেটা জানে । আগে যখন কুমিল্লাতে ছিল তখন মাঝে মাঝেই ওদের বাসায় আসতো । ঢাকাতে চলে আসার পরে অবশ্য আর আসে নি সে । মাঝে মাঝে ফোনে কথা হত এই যা ! মিতুর মা বলল
-সেকি ! কখন ?
-কাল সকালে । মর্নিং ওয়াকে বেরিয়েছিলো । পেছনে একটা ট্রাক এসে চাপা দিয়ে চলে গেছে ! এখন ঢাকা মেডিক্যালে আছে । আমি একটু দেখে আসি ওকে !
মিতুর মা বলল
-এখনই যাবে ? খাওয়া শেষ করে যাও !
-নাহ ! আর খাওয়া হবে না । আমি গেলাম !
তারপর আবীরের দিকে তাকালো বলল
-তুমি কিছু মনে কর না প্লিজ !
-না না মনে করার কিছু নেই ।
-আমি আসি !

মিতুর বাবা তখনই বের হয়ে গেল । তবে আবীর আর মিতু আরও ধীরে সুস্থে খাওয়া শেষ করলো । খাওয়া শেষ করে মিতু ওকে নিজের ঘরে নিয়ে গেল । মিতুর মা তখন নিজের কাছে ব্যস্ত ! মিতুর ঘরে বসতে বসতে আবীর বলল
-আমি আসলে ভাবি নি এতো জলদি আমাদের পরিচয় হয়ে যাবে !
মিতু হেসে বলল
-আমিও না । কেবল মনে হচ্ছে আপনার সাথে আমার কোথায় যেন একটা মিল আছে । দেখছেন না পড়লাম তো পড়লাম একেবারে আপনার গায়ের উপর ! আর আপনিও থাকেন একেবারে আমার বাসার পাশে !
-তাই তো দেখছি ।
-সবই কি কাকতালীয় ব্যাপার !
আবীর এই প্রশ্নটার উত্তর না দিয়ে কিছু সময় তাকিয়ে রইলো মিতুর দিকে । মিতু হঠাৎ করেই লজ্জা পেয়ে গেল । কিন্তু চোখ সরালো না । মিতুর আবীরের দিকে তাকিয়ে থাকতে অদ্ভুদ ভাল লাগছে !
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top