কালেক্টেড গল্প। আমার নিজের লেখা না। গসিপ সাইটের কোন এক নামকরা লেখকের গল্প। একজন অনুরোধ করেছেন, তাই পোস্ট দিলাম। পড়ে দেখুন, ভালো লাগতে ও পারে, যদি ও গল্পটা সম্পূর্ণ না।
বাথরুমে গিয়ে আর একবার চোখে মুখে জল দিয়ে এলাম। মাথা কান এখনো ঝা ঝা করছে। এসি টাকে ফুল করে চেয়ারে এলিয়ে বসলাম। টেকনোক্র্যাট এ মনু দেসাই এর অফিস থেকে ফিরেছি প্রায় দু ঘণ্টা হয়ে গেছে। দুপুরের লাঞ্চ খাওয়ার কোঠা মাথাতেই নেই। টেবিলের এক কোনায় পরে থাকা টিফিন ক্যারিয়ার টা দেখে মনে পড়লো দীপ্তি পোলাও বানিয়ে দিয়েছিলো, এখন আর খাওয়ার ইচ্ছে নেই।
মনের ভিতর থেকে বারবার মনে হচ্ছে কাজ টা খুব হঠকারী হয়ে গেছে। মনু দেসাই এর অফিসে গিয়ে ওর কলার চেপে শাসানো টা ও এত সহজে সঝ্য করবে বলে মনে হয়না। কিন্তু আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি। এই নিয়ে তিন নম্বর টেন্ডার একেবারে শেষ মুহূর্তে গিয়ে আমার হাতছাড়া হয়ে গেল এই মনু দেসাই এর জন্যে। রাজারহাটে সরকারি ইলেক্ট্রনিক্স ল্যাব এ প্রায় পাঁচ কোটি টাঁকার মালপত্রর দর দিয়েছিলাম। কালকে অবধি জানতাম ব্যাপার টা হয়ে গেছে। গত পরশু রাত আট টা অবধি রাম কিঙ্কর সান্যাল কে বেহালার উল্কা বার এ বারো হাজার টাঁকার মাল খাইয়ে নিজের গাড়িতে ওর বাড়ি নামিয়ে দিয়ে এলাম। ও আমাকে বার বার আশ্বাস দিয়েছিলো যে এটা আমি পাবোই। আমার দরপত্র বাছাই হয়ে ওর কর্তার টেবিল এ পৌঁছে গেছে, শুধু সই এর অপেক্ষা। হারামজাদা যখন কালকে সারাদিন ফোন তুলল না তখনি আমার বোঝা উচিত ছিল কিছু একটা গণ্ডগোল হয়েছে। শুয়োরের বাচ্চা টা আজকে ওর জুনিয়র কে দিয়ে ফোন করে বলে কিনা মনু দেসাই পেয়ে গেছে এটা। নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি। ব্যাঙ্ক এর লোণের ওপরে বড়বাজারের মারয়ারি সুরজলাল এর কাছে বাড়ি বন্ধক রেখে আড়াই কোটি টাঁকা ধার নিয়ে মালপত্র আগাম কিনে রেখেছিলাম। সরকারি টেন্ডার একবার পেলে পরের দু তিনটে আসতেই থাকে। আগামি দু বছরে খরচা পুষিয়ে এক সোয়া ঘরে চলে আসবে হিসেব করে নিয়েছিলাম। লাখ লাখ টাঁকার মাল এখন গদাউনে পচবে, সুরজলাল মাথার ওপরে নাচবে এসব ভেবে পাগল পাগল লাগছিল। রাম কিঙ্করের চ্যালা কে ফোন লাগাতেই খবর বেরিয়ে পরল। মনু দেসাই মেয়ে ছেলে খেলিয়েছে আর একটু ওপর মহলে আর তাতেই রাতারাতি আমার নাম সরে গিয়ে টেকনোক্র্যাত, মনু দেসাই এর কম্পানি চলে আসে। এর আগেও দুবার আমার মুখের খাবার কেড়ে নিয়েছে হারামজাদা। ওর অফিসের ভিতরে গিয়ে কলার ধরে টেনে তুলেছিলাম । ওর মুখের অবস্থা দেখার মতন হয়েছিলো। আরও হয়তো খারাপ কিছু হয়ে যেতে পারত কিন্তু বাকিরা এসে টেনে সরিয়ে দিয়েছিলো আমাকে। তারপরে গার্ড গুলো আমাকে প্রায় ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। মোটা ধুমসো মনু রুমাল দিয়ে টাক মুছতে মুছতে আমাকে তারস্বরে শাসাচ্ছিল তখন। এখন মনেহচ্ছে খুব বারাবারি করে ফেলেছি। ও চাইলে আমাকে ওখানেই পুলিশে দিতে পারত, আমার লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত হয়ে যেত তারপরে।
-"সঞ্জয় দা, দীপ্তি বৌদি লাইনে আছে দেবো ট্রান্সফার করে?", শিল্পী, আমার সেক্রেটারি দরজা দিয়ে উঁকি মেরে বলল। চোখের চাহুনি দিয়ে আমার মেজাজ আন্দাজ করার চেষ্টা করলো একবার। ঘণ্টা খানেক আগে ঘরে ঢুকে প্রচণ্ড জোরে দরজা বন্ধ করে দিয়েছি। তারপর থেকে আর কেউ নক করেনি সাহস করে। আমি মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললাম। দীপ্তি আবার এখন ফোন করছে কেন অফিসের লাইনে? আমার টেন্ডার নিয়ে তো খুব একটা মাথা ঘামায় না কখনো।
-"কি ব্যাপার, সেল এ না করে অফিসের লাইনে করলে যে?", আমি বেশ বিরক্ত হয়ে জিগাসা করলাম। অফিসের ফোনে পিরিতের কথা বোলা আমার একদম পছন্দ নয়।
-"লাস্ট আধ ঘণ্টা ধরে তো সেখানেই চেষ্টা করছি। কথায় রেখেছ ফোন টা?", দীপ্তির গলায় উদ্বেগ পরিষ্কার বোঝা গেল। কিছু একটা গণ্ডগোল হয়েছে। আমি চকিতে বুক আর প্যান্ট এর পকেট হাতড়ে দেখলাম, নাহ ফোন টা নেই। বোধহয় বাথরুম এ রেখে এসেছি।
-"শোনো, রুপাই স্কুল এ মারামারি করেছে। কাকে যেন ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে, মাথা ফেটে গেছে। সে আবার স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির চেয়ারম্যান এর আত্মীয়। আমাদের এখুনি যেতে বলেছে, তোমাকে আর আমাকে দুজনকেই। বলছে রুপাই কে বের করে দেবে স্কুল থেকে", দীপ্তি র গলায় কান্নার আভাস পেলাম।
আমি দীপ্তি কে ট্যাক্সি নিয়ে অবিলম্বে আমার অফিসে চলে আস্তে বললাম। এখান থেকে দুজনে একসাথে চলে যাব স্কুলে। বেচারা প্রচণ্ড ঘাবড়ে আছে। একা সোজাসুজি ওখানে চলে যেতে বলা টা ঠিক হবে না। ঘরের মধ্যে হাকপাক করে আমার মোবাইল ফোন টা খুঁজলাম। কিন্তু কোথাও দেখতে পেলাম না। শিল্পী কে দিয়ে দারোয়ান কে বলিয়ে দেখতে বললাম। ওর মোবাইল থেকে রিং ও করলাম। কিন্তু কোথাও নেই। রিং দিব্যি হচ্ছে কিন্তু কেউ তুলছে না, আমি কোনও আওয়াজ ও পাচ্ছিনা। আমার গাড়ির ভিতরেও নেই। এত দরকারি নাম্বার আছে ওখানে। খোঁজাখুঁজিতেই প্রায় আধ ঘণ্টা চল্লিশ মিনিট চলে গেছিলো, দীপ্তি ট্যাক্সি থেকে নেমে হন্তদন্ত হয়ে আমার কাছে এলো।
একটা ডিপ নিল হাফ স্লিভ ব্লাউসের ওপরে গোলাপি সুতির শাড়ি পড়েছে। দীপ্তি খুব একটা আটপৌরে ভাবে শাড়ি পরেনা। সরু হয়ে যাওয়া আঁচলের পাশ দিয়ে হাল্কা মেদ বহুল পেট এর ভাঁজ দেখা যাচ্ছে। আজ একটু বেশী নিচে পড়েছে বোধহয়, চলার ছন্দে সুগিভির নাভি কখনো কখনো উঁকি ঝুঁকি মারছে। ভরাট টইটম্বুর বুকের ওপরে একটা সরু মুক্তর মালা আর মাথায় গোঁজা সান গ্লাস। ফর্সা মুখ গ্রীষ্মের গরমে লাল হয়ে গেছে। এই অবস্থাতেও মনে মনে আমার বউ এর রুপ এর প্রসংশা না করে পারলাম না। হাঁ করে গেলার মতনই চেহারা। আমার চোখের লোলুপতা দীপ্তির নজর এরাল না। একরাশ বিরক্তি আর উদ্বেগ নিয়ে ঝপ করে গাড়ির ভিতরে গিয়ে বসে পড়ল। আমিও আর দেরি না করে স্কুলের দিকে রওনা দিয়ে দিলাম। যাওয়ার পথে দীপ্তির মোবাইল থেকে আমার বন্ধু মনজ কে ফোন করে জানার চেষ্টা করলাম স্কুল এর ম্যানেজিং কমিটির চেয়ারম্যান টা আসলে কে। মনজ এর ছেলেও ওই একই স্কুল এ পরে। ও বলল একটু পরে ফোন করে জানাচ্ছে।
গাড়িতে যেতে যেতে দীপ্তি কে আজকের টেন্ডার এর ঘটনা গুলো বললাম। ও আরও একটু ভেঙ্গে পড়ল, যোধপুর পার্ক এর বুকে আমাদের এত বড় বাড়ীটা বন্ধকি তে গেলে রীতিমতো রাস্তায় এসে দাড়াতে হবে। মাঝেমধ্যেই দেখলাম সান গ্লাস এর তলা দিয়ে জলের ফোঁটা গড়িয়ে আসছে ওর গালে। খুবই নরম স্বভাবের মেয়ে দীপ্তি আমার কাজের জগতের ঝড় ঝাপটা থেকে আমি ওকে যতটা সম্ভব আড়ালে রাখি। এই বোধহয় প্রথমবার এতটা ডিটেলস এ শোনালাম আমার অবস্থা।
"কেন করতে গেলে মারামারি? তোমাকে পুলিশে দিলে কোথায় দাঁড়াতাম আমরা?", চাপা গলায় অনুযোগ করলো ও।
স্কুলের পারকিং লট এ গাড়ি রাখতে রাখতেই মনজ কল ব্যাক করলো। ওর কাছে শুনলাম তাতে নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারলাম না। এতটাও কপাল খারাপ কারোর এক দিনে হয় নাকি? দুহাতে দেদার টাকা ঢেলে কোলকাতার সবছেয়ে নামি সেন্ট্রাল স্কুলে আমাদের ছেলে কে ভরতি করিয়েছি। প্রতি বছর প্রায় লাখ টাঁকার ডোনেশন দিতে হয় আমাকে। সেই স্কুল এর ম্যানেজিং কমিটির চেয়ারম্যান কিনা মনু দেসাই!!!! যাকে আমি আজকে কলার চেপে সাশিয়ে এলাম! আর তারই মেয়ের ঘরের নাতি কে ঠ্যালা ঠেলি করে ফেলে দিয়েছে আমার ছেলে। বাপ কা বেটা, সিপাহি কা ঘোড়া। প্রিন্সিপ্যাল এর ঘরে ধুক্তেই রুপাই ছুটে এসে ওর মার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ল। বেচারা অনেক বকা ঝকা খেয়েছে এতক্ষণ ধরে।
প্রিন্সিপ্যাল লোক টা খুবই শান্ত স্বভাবের। আমার থেকে বেশী দীপ্তি র সাথেই বেশী কথা বোলতে আগ্রহি মনে হল। দীপ্তি টেবিলের ওপরে একটু ঝুঁকে প্রাণপণে অনুরোধ উপরোধ করে যেতে লাগলো। প্রিন্সিপ্যাল এর চোখ দেখলাম দীপ্তির উত্তেজিত বুকের ওঠা নামার ওপরে নিবদ্ধ হয়ে আছে। রুপাই কে টয়লেট এ নিয়ে যাওয়ার অজুহাতে বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম। আমার বউ যদি এখন প্রিন্সিপ্যাল এর মাথা ঘোরাতে পারে ওর নিজের অজান্তে, আঙ্গুল তো অনেক রকম ভাবেই ব্যাকা হয়। স্কুল এর নার্স এর সাথে কথা বলে জানলাম যে ছেলেটির খুবই সামান্য ছড়ে গেছে কপালে। হাঁ, বড় কিছু হতে পারতো, ভাগ্য বশত হয়নি। এখানে এরা ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিয়েছিলো কিন্তু চেয়ারম্যান এর নাতি বলে কথা তাই কাছের নাম করা নারসিং হোম এ এডমিট করিয়ে দিয়েছে। ছেলেটির বাড়ির লোক ওখানেই আছে। রুপাই এর ক্লাস টিচার এদিকেই আসছিলেন , ওকে আমার কাছ থেকে নিয়ে ক্লাস এ চলে গেলেন।
বাথরুমে গিয়ে আর একবার চোখে মুখে জল দিয়ে এলাম। মাথা কান এখনো ঝা ঝা করছে। এসি টাকে ফুল করে চেয়ারে এলিয়ে বসলাম। টেকনোক্র্যাট এ মনু দেসাই এর অফিস থেকে ফিরেছি প্রায় দু ঘণ্টা হয়ে গেছে। দুপুরের লাঞ্চ খাওয়ার কোঠা মাথাতেই নেই। টেবিলের এক কোনায় পরে থাকা টিফিন ক্যারিয়ার টা দেখে মনে পড়লো দীপ্তি পোলাও বানিয়ে দিয়েছিলো, এখন আর খাওয়ার ইচ্ছে নেই।
মনের ভিতর থেকে বারবার মনে হচ্ছে কাজ টা খুব হঠকারী হয়ে গেছে। মনু দেসাই এর অফিসে গিয়ে ওর কলার চেপে শাসানো টা ও এত সহজে সঝ্য করবে বলে মনে হয়না। কিন্তু আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি। এই নিয়ে তিন নম্বর টেন্ডার একেবারে শেষ মুহূর্তে গিয়ে আমার হাতছাড়া হয়ে গেল এই মনু দেসাই এর জন্যে। রাজারহাটে সরকারি ইলেক্ট্রনিক্স ল্যাব এ প্রায় পাঁচ কোটি টাঁকার মালপত্রর দর দিয়েছিলাম। কালকে অবধি জানতাম ব্যাপার টা হয়ে গেছে। গত পরশু রাত আট টা অবধি রাম কিঙ্কর সান্যাল কে বেহালার উল্কা বার এ বারো হাজার টাঁকার মাল খাইয়ে নিজের গাড়িতে ওর বাড়ি নামিয়ে দিয়ে এলাম। ও আমাকে বার বার আশ্বাস দিয়েছিলো যে এটা আমি পাবোই। আমার দরপত্র বাছাই হয়ে ওর কর্তার টেবিল এ পৌঁছে গেছে, শুধু সই এর অপেক্ষা। হারামজাদা যখন কালকে সারাদিন ফোন তুলল না তখনি আমার বোঝা উচিত ছিল কিছু একটা গণ্ডগোল হয়েছে। শুয়োরের বাচ্চা টা আজকে ওর জুনিয়র কে দিয়ে ফোন করে বলে কিনা মনু দেসাই পেয়ে গেছে এটা। নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি। ব্যাঙ্ক এর লোণের ওপরে বড়বাজারের মারয়ারি সুরজলাল এর কাছে বাড়ি বন্ধক রেখে আড়াই কোটি টাঁকা ধার নিয়ে মালপত্র আগাম কিনে রেখেছিলাম। সরকারি টেন্ডার একবার পেলে পরের দু তিনটে আসতেই থাকে। আগামি দু বছরে খরচা পুষিয়ে এক সোয়া ঘরে চলে আসবে হিসেব করে নিয়েছিলাম। লাখ লাখ টাঁকার মাল এখন গদাউনে পচবে, সুরজলাল মাথার ওপরে নাচবে এসব ভেবে পাগল পাগল লাগছিল। রাম কিঙ্করের চ্যালা কে ফোন লাগাতেই খবর বেরিয়ে পরল। মনু দেসাই মেয়ে ছেলে খেলিয়েছে আর একটু ওপর মহলে আর তাতেই রাতারাতি আমার নাম সরে গিয়ে টেকনোক্র্যাত, মনু দেসাই এর কম্পানি চলে আসে। এর আগেও দুবার আমার মুখের খাবার কেড়ে নিয়েছে হারামজাদা। ওর অফিসের ভিতরে গিয়ে কলার ধরে টেনে তুলেছিলাম । ওর মুখের অবস্থা দেখার মতন হয়েছিলো। আরও হয়তো খারাপ কিছু হয়ে যেতে পারত কিন্তু বাকিরা এসে টেনে সরিয়ে দিয়েছিলো আমাকে। তারপরে গার্ড গুলো আমাকে প্রায় ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। মোটা ধুমসো মনু রুমাল দিয়ে টাক মুছতে মুছতে আমাকে তারস্বরে শাসাচ্ছিল তখন। এখন মনেহচ্ছে খুব বারাবারি করে ফেলেছি। ও চাইলে আমাকে ওখানেই পুলিশে দিতে পারত, আমার লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত হয়ে যেত তারপরে।
-"সঞ্জয় দা, দীপ্তি বৌদি লাইনে আছে দেবো ট্রান্সফার করে?", শিল্পী, আমার সেক্রেটারি দরজা দিয়ে উঁকি মেরে বলল। চোখের চাহুনি দিয়ে আমার মেজাজ আন্দাজ করার চেষ্টা করলো একবার। ঘণ্টা খানেক আগে ঘরে ঢুকে প্রচণ্ড জোরে দরজা বন্ধ করে দিয়েছি। তারপর থেকে আর কেউ নক করেনি সাহস করে। আমি মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললাম। দীপ্তি আবার এখন ফোন করছে কেন অফিসের লাইনে? আমার টেন্ডার নিয়ে তো খুব একটা মাথা ঘামায় না কখনো।
-"কি ব্যাপার, সেল এ না করে অফিসের লাইনে করলে যে?", আমি বেশ বিরক্ত হয়ে জিগাসা করলাম। অফিসের ফোনে পিরিতের কথা বোলা আমার একদম পছন্দ নয়।
-"লাস্ট আধ ঘণ্টা ধরে তো সেখানেই চেষ্টা করছি। কথায় রেখেছ ফোন টা?", দীপ্তির গলায় উদ্বেগ পরিষ্কার বোঝা গেল। কিছু একটা গণ্ডগোল হয়েছে। আমি চকিতে বুক আর প্যান্ট এর পকেট হাতড়ে দেখলাম, নাহ ফোন টা নেই। বোধহয় বাথরুম এ রেখে এসেছি।
-"শোনো, রুপাই স্কুল এ মারামারি করেছে। কাকে যেন ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে, মাথা ফেটে গেছে। সে আবার স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির চেয়ারম্যান এর আত্মীয়। আমাদের এখুনি যেতে বলেছে, তোমাকে আর আমাকে দুজনকেই। বলছে রুপাই কে বের করে দেবে স্কুল থেকে", দীপ্তি র গলায় কান্নার আভাস পেলাম।
আমি দীপ্তি কে ট্যাক্সি নিয়ে অবিলম্বে আমার অফিসে চলে আস্তে বললাম। এখান থেকে দুজনে একসাথে চলে যাব স্কুলে। বেচারা প্রচণ্ড ঘাবড়ে আছে। একা সোজাসুজি ওখানে চলে যেতে বলা টা ঠিক হবে না। ঘরের মধ্যে হাকপাক করে আমার মোবাইল ফোন টা খুঁজলাম। কিন্তু কোথাও দেখতে পেলাম না। শিল্পী কে দিয়ে দারোয়ান কে বলিয়ে দেখতে বললাম। ওর মোবাইল থেকে রিং ও করলাম। কিন্তু কোথাও নেই। রিং দিব্যি হচ্ছে কিন্তু কেউ তুলছে না, আমি কোনও আওয়াজ ও পাচ্ছিনা। আমার গাড়ির ভিতরেও নেই। এত দরকারি নাম্বার আছে ওখানে। খোঁজাখুঁজিতেই প্রায় আধ ঘণ্টা চল্লিশ মিনিট চলে গেছিলো, দীপ্তি ট্যাক্সি থেকে নেমে হন্তদন্ত হয়ে আমার কাছে এলো।
একটা ডিপ নিল হাফ স্লিভ ব্লাউসের ওপরে গোলাপি সুতির শাড়ি পড়েছে। দীপ্তি খুব একটা আটপৌরে ভাবে শাড়ি পরেনা। সরু হয়ে যাওয়া আঁচলের পাশ দিয়ে হাল্কা মেদ বহুল পেট এর ভাঁজ দেখা যাচ্ছে। আজ একটু বেশী নিচে পড়েছে বোধহয়, চলার ছন্দে সুগিভির নাভি কখনো কখনো উঁকি ঝুঁকি মারছে। ভরাট টইটম্বুর বুকের ওপরে একটা সরু মুক্তর মালা আর মাথায় গোঁজা সান গ্লাস। ফর্সা মুখ গ্রীষ্মের গরমে লাল হয়ে গেছে। এই অবস্থাতেও মনে মনে আমার বউ এর রুপ এর প্রসংশা না করে পারলাম না। হাঁ করে গেলার মতনই চেহারা। আমার চোখের লোলুপতা দীপ্তির নজর এরাল না। একরাশ বিরক্তি আর উদ্বেগ নিয়ে ঝপ করে গাড়ির ভিতরে গিয়ে বসে পড়ল। আমিও আর দেরি না করে স্কুলের দিকে রওনা দিয়ে দিলাম। যাওয়ার পথে দীপ্তির মোবাইল থেকে আমার বন্ধু মনজ কে ফোন করে জানার চেষ্টা করলাম স্কুল এর ম্যানেজিং কমিটির চেয়ারম্যান টা আসলে কে। মনজ এর ছেলেও ওই একই স্কুল এ পরে। ও বলল একটু পরে ফোন করে জানাচ্ছে।
গাড়িতে যেতে যেতে দীপ্তি কে আজকের টেন্ডার এর ঘটনা গুলো বললাম। ও আরও একটু ভেঙ্গে পড়ল, যোধপুর পার্ক এর বুকে আমাদের এত বড় বাড়ীটা বন্ধকি তে গেলে রীতিমতো রাস্তায় এসে দাড়াতে হবে। মাঝেমধ্যেই দেখলাম সান গ্লাস এর তলা দিয়ে জলের ফোঁটা গড়িয়ে আসছে ওর গালে। খুবই নরম স্বভাবের মেয়ে দীপ্তি আমার কাজের জগতের ঝড় ঝাপটা থেকে আমি ওকে যতটা সম্ভব আড়ালে রাখি। এই বোধহয় প্রথমবার এতটা ডিটেলস এ শোনালাম আমার অবস্থা।
"কেন করতে গেলে মারামারি? তোমাকে পুলিশে দিলে কোথায় দাঁড়াতাম আমরা?", চাপা গলায় অনুযোগ করলো ও।
স্কুলের পারকিং লট এ গাড়ি রাখতে রাখতেই মনজ কল ব্যাক করলো। ওর কাছে শুনলাম তাতে নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারলাম না। এতটাও কপাল খারাপ কারোর এক দিনে হয় নাকি? দুহাতে দেদার টাকা ঢেলে কোলকাতার সবছেয়ে নামি সেন্ট্রাল স্কুলে আমাদের ছেলে কে ভরতি করিয়েছি। প্রতি বছর প্রায় লাখ টাঁকার ডোনেশন দিতে হয় আমাকে। সেই স্কুল এর ম্যানেজিং কমিটির চেয়ারম্যান কিনা মনু দেসাই!!!! যাকে আমি আজকে কলার চেপে সাশিয়ে এলাম! আর তারই মেয়ের ঘরের নাতি কে ঠ্যালা ঠেলি করে ফেলে দিয়েছে আমার ছেলে। বাপ কা বেটা, সিপাহি কা ঘোড়া। প্রিন্সিপ্যাল এর ঘরে ধুক্তেই রুপাই ছুটে এসে ওর মার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ল। বেচারা অনেক বকা ঝকা খেয়েছে এতক্ষণ ধরে।
প্রিন্সিপ্যাল লোক টা খুবই শান্ত স্বভাবের। আমার থেকে বেশী দীপ্তি র সাথেই বেশী কথা বোলতে আগ্রহি মনে হল। দীপ্তি টেবিলের ওপরে একটু ঝুঁকে প্রাণপণে অনুরোধ উপরোধ করে যেতে লাগলো। প্রিন্সিপ্যাল এর চোখ দেখলাম দীপ্তির উত্তেজিত বুকের ওঠা নামার ওপরে নিবদ্ধ হয়ে আছে। রুপাই কে টয়লেট এ নিয়ে যাওয়ার অজুহাতে বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম। আমার বউ যদি এখন প্রিন্সিপ্যাল এর মাথা ঘোরাতে পারে ওর নিজের অজান্তে, আঙ্গুল তো অনেক রকম ভাবেই ব্যাকা হয়। স্কুল এর নার্স এর সাথে কথা বলে জানলাম যে ছেলেটির খুবই সামান্য ছড়ে গেছে কপালে। হাঁ, বড় কিছু হতে পারতো, ভাগ্য বশত হয়নি। এখানে এরা ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিয়েছিলো কিন্তু চেয়ারম্যান এর নাতি বলে কথা তাই কাছের নাম করা নারসিং হোম এ এডমিট করিয়ে দিয়েছে। ছেলেটির বাড়ির লোক ওখানেই আছে। রুপাই এর ক্লাস টিচার এদিকেই আসছিলেন , ওকে আমার কাছ থেকে নিয়ে ক্লাস এ চলে গেলেন।