What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

বাংলাদেশে ‘প্রহসনের নির্বাচন’ (1 Viewer)

Status
Not open for further replies.

Maxman

Member
Joined
Jan 10, 2019
Threads
102
Messages
194
Credits
13,739
বাংলাদেশের গরিবি হটানো এবং জীবনমানের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাফল্যের অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক পত্রিকা দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। তারা বলেছে, সরকারে পরপর দুই মেয়াদে এ ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার সরকারের সাফল্য গত নির্বাচনে তাঁদের নির্বাচনী সফলতার ইঙ্গিত দিচ্ছিল। কিন্তু নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের সদস্যদের নানাভাবে চাপে রাখা এবং তাঁর দলের একচেটিয়া জয় সে অর্জনকে মলিন করেছে। পত্রিকাটি আশঙ্কা করেছে, বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে কর্তৃত্ববাদী শাসনের শিকার হতে পারে। নিউইয়র্ক টাইমস তাদের এই অভিমতের সূচনায় জানিয়েছে, এটি তাদের বার্তাকক্ষ এবং মতামত বিভাগের চেয়ে ভিন্ন। এটি পত্রিকার পরিচালকমণ্ডলী, সম্পাদক ও প্রকাশকের সমন্বয়ে গঠিত সম্পাদকীয় পর্ষদের অভিমত। নিচে অভিমতটি প্রকাশ করা হলো।

টানা প্রায় ১০ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সময় বাংলাদেশের জন্য দারুণ কাজ করেছেন শেখ হাসিনা। বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশগুলোর একটি বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় বেড়েছে প্রায় ১৫০ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্যসীমায় বসবাসকারী জনসংখ্যার হারও ১৯ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে প্রায় ৯ শতাংশে। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, নির্বাচনে শেখ হাসিনার দল জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৮ টিতে জয় পায়, যা শতকরা হিসাবে প্রায় ৯৬ ভাগ, তাঁর অর্জন ম্লান করে দিচ্ছে।

৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগের সপ্তাহ ও মাসগুলোতে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বিরামহীন ভীতি প্রদর্শন, সহিংসতা, বিরোধীদলীয় প্রার্থীদের গ্রেপ্তারের ঘটনা থেকে শুরু করে নজরদারি ও কঠোর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ লক্ষ করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে 'আক্রমণাত্মক বা ভীতি উদ্রেককারী' লেখা প্রকাশের জন্য কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১৭ জন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের একটি প্রতিবেদনে 'সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশের' উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু 'ভীত' বিচার বিভাগ বা নির্বাচন কমিশনকে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

উন্নয়নশীল দেশের প্রবৃদ্ধির জন্য স্বৈরশাসকেরা মানবাধিকারের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন না। গত ডিসেম্বরে দ্য টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একই মনোভাব পোষণ করেন। তিনি বলেন, 'আমি খাদ্য, কর্মসংস্থান ও স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারলে সেটাই মানবাধিকার।' তিনি আরও বলেন, 'এ নিয়ে বিরোধীরা কী বলছে বা নাগরিক সমাজ বা আপনাদের এনজিওদের আমি পাত্তা দিই না। আমি আমার দেশকে জানি। আমার দেশের উন্নয়ন কীভাবে সম্ভব, তাও জানি।'

শেখ হাসিনা যে তাঁর দেশকে জানেন, সে বিষয়ে কেউ প্রশ্ন তুলবেন না। তাঁর বাবা শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তাঁকে যখন হত্যা করা হয়, তখন তিনি বিদেশে ছিলেন। আওয়ামী লীগের হাল ধরতে ১৯৮১ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। এখনো তা ধরে রেখেছেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তাঁর দল এবং আরেক ক্ষমতাধর নারী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল পালাক্রমে ক্ষমতায় এসেছে। নির্বাচনপদ্ধতি পরিবর্তনের প্রতিবাদে ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিল বিরোধীরা। এতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আরেক দফা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার সুযোগ পান শেখ হাসিনা। দুর্নীতির দায়ে গত বছর খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড হয়েছে এবং শেখ হাসিনা আরেক দফায় ক্ষমতায় এসেছেন। এতে (বাংলাদেশ) একদলীয় রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার এবং নিয়ন্ত্রণ আরও পাকাপোক্ত হওয়ার পথে।

কিন্তু কেন এই অযৌক্তিক নির্বাচনী ফলাফল তৈরির প্রয়াস? জরিপের ফলাফলেই এমন আভাস তো ছিল যে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে শেখ হাসিনা সহজ জয় পাবেন। শেখ হাসিনার অর্জনগুলো এখন কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থায় মলিন হবে। তাঁর সমালোচকেরা দেশ ছাড়ুক বা আত্মগোপনে যাক, তাঁরা আরও গলা ফাটাবে এবং তাঁর বিদেশি সহযোগীরা সতর্ক হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বিনিয়োগকারী ও বৃহত্তম একক বাজারের দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রচার–প্রচারণাকালে 'হয়রানি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও সহিংসতার বিশ্বাসযোগ্য খবরাখবরে' উদ্বেগ জানিয়েছিল। এসব বিবেচনায় নিয়ে সমাধানের জন্য সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানায় পররাষ্ট্র দপ্তর। অনুরূপভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নও নির্বাচনী সহিংসতা ও 'গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবন্ধকতাসমূহ' যা নির্বাচনী প্রচার ও নির্বাচনকে 'ম্লান' করেছে, তা তদন্ত করে দেখার আহ্বান জানিয়েছে।

শেখ হাসিনা এসব সমালোচনা সম্ভবত আমলে নেবেন না। কিন্তু যেসব দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা–বাণিজ্য করছে এবং দেশটি দারিদ্র্য থেকে উঠে আসায় আনন্দিত, তাঁকে ও তাঁর মিত্রদের তাদের বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া উচিত যে মানবাধিকার উন্নয়ন ও অগ্রগতির এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
 
Status
Not open for further replies.

Users who are viewing this thread

Back
Top