What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

নিয়ম ভেঙে সীমান্ত ঘেঁষে স্থাপনা করছে মিয়ানমার (1 Viewer)

Status
Not open for further replies.

Maxman

Member
Joined
Jan 10, 2019
Threads
102
Messages
194
Credits
13,739
আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের শূন্য রেখার ১৫০ গজের মধ্যে তমব্রু খালে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছে মিয়ানমার। একইসঙ্গে সীমান্তের কাছাকাছি রাখাইন রাজ্যে নজিরবিহীনভাবে সেনা মোতায়েন বাড়িয়ে চলেছে দেশটি। ফলে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় জনগণের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। বিশেষ করে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে আটকা পড়া কয়েক হাজার রোহিঙ্গা। ফলে নতুন করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও'কে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে রাখাইনের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে দাবি করে জাতিসংঘের শীর্ষ দুই কর্মকর্তাকে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।

গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট মহাপরিচালক মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেন। রাষ্ট্রদূত উ লুইন বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মন্ত্রণালয়ে আসেন। তার কাছে সীমান্তে শূন্য রেখার কাছে মিয়ানমারের স্থাপনা নির্মাণের কারণ জানতে চাওয়া হয়। একইসঙ্গে নেপিদোর কাছে এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা চেয়ে ঢাকা একটি কূটনৈতিক চিঠি দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত জানান, ওই স্থাপনা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের শূন্য রেখার ৩০০ গজের বাইরে হচ্ছে বলেই জানেন তিনি। আর সেটা কোনো পাকা স্থাপনা নয়। একই জায়গায় আগে থেকেই অস্থায়ী স্থাপনা রয়েছে। ওই অস্থায়ী স্থাপনার খুঁটিগুলো স্থায়ী করা হচ্ছে। ঢাকার উদ্বেগ তিনি নেপিদোকে অবহিত করবেন বলে জানান। এর আগে আরাকান আর্মি ও আরসা নিয়ে বাংলাদেশকে জড়িয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের মুখপাত্রের দেওয়া বিবৃতির কড়া প্রতিবাদ জানায় ঢাকা।

এদিকে, সীমান্তের শূন্য রেখার মধ্যে পাকা স্থাপনা নির্মাণের কারণ জানতে চেয়ে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপিকে চিঠি দিয়েছে বিজিবি। সোমবার বিজিবির কক্সবাজার সেক্টর কমান্ডার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তমব্রু খালে পাকা স্থাপনা নির্মাণের কারণ জানতে চেয়ে বিজিপিকে চিঠি দেন।

রাখাইনে নজিরবিহীন সেনা মোতায়েন বাড়ছে

আবারো অশান্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষা মিয়ান-মারের রাখাইন রাজ্য। গত ৪ জানুয়ারি আরাকান আর্মি'র হামলায় ১৩ পুলিশ সদস্য নিহতের পর সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তা ঘাঁটি ও বাঙ্কার বসিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে বাড়ানো হচ্ছে সেনা সংখ্যাও। ইতোমধ্যে অং সান সু চি'র সরকার আরাকান আর্মিকে গুঁড়িয়ে দিতে অভিযান চালানোর জন্য সেনাবাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছে। এরই প্রস্তুতি হিসেবে বাড়ানো হচ্ছে সেনা। আনা হচ্ছে ভারি ভারি অস্ত্র ও সরঞ্জাম।

মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতী সম্প্রতি জানিয়েছে, সরকারি সেনারা আকাশ ও সড়ক পথে রাখাইনে আসছে। আরাকান আর্মির মুখপাত্র বুথিয়াডাউংয়ের সে তাউং গ্রামে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একটি দলের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করে জানিয়েছেন, উত্তর রাখাইনে সেনারা বেসামরিক নাগরিকদের গণহারে গ্রেফতার করছে এবং গ্রামগুলোতে মর্টার ছুঁড়ছে। একইসঙ্গে সেনারা যুদ্ধক্ষেত্রে গ্রামবাসীদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। আরাকান আর্মি জানায়, বিদ্রোহীদের ওপর হামলায় মিয়ানমার সেনারা হেলিকপ্টার ব্যবহার করেছে। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী 'ফোর কাটস' নীতি অবলম্বন করছে।

রাখাইনে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের বিষয়ে সরকারের মুখপাত্র বলেছেন, প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে হামলার এলাকায় মোতায়েনকৃত সেনাদের সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রয়োজনে সামরিক হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে। সেনাবাহিনী এ সব নির্দেশ পালন করছে এবং আরাকান আর্মির বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে।

রাখাইনে সশস্ত্র বৌদ্ধ সংগঠন আরাকান আর্মি'র সঙ্গে সরকারি বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে আটকে থাকা হাজার হাজার রোহিঙ্গা। দুই পক্ষের সংঘর্ষে আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের। রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ সম্প্রতি বার্তা সংস্থা এএফপি'কে বলেন, সরকারি বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে তীব্র লড়াই হচ্ছে। পরিস্থিতি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ। গুলি ও বোমার শব্দে আমরা ভীত-সন্ত্রস্ত। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিধন অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। তাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। কিন্তু প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ মিয়ানমার সৃষ্টি করতে না পারায় প্রত্যাবাসন এখনো শুরু করা যায়নি।

জাতিসংঘের দুই কর্মকর্তার প্রবেশে মিয়ানমারের না

মিয়ানমারে ঢুকতে পারছেন না জাতিসংঘের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা। শেষ মুহূর্তে রাখাইনে নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এর প্রধান ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির নির্ধারিত সফর স্থগিত করেছে মিয়ানমার। অন্যদিকে জাতিসংঘ নিযুক্ত মিয়ানমারের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াংহি লি'কে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সম্প্র্রতি মিয়ানমারে প্রবেশের অনুমতি চেয়ে তিনি আবেদন করলে সরকার তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

সোমবার ইউএনএইচসিআর এর মুখপাত্র আন্দ্রেজ মাহেসিক বলেন, গত সপ্তাহে মিয়ানমার সফরের কথা ছিল ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির। কিন্তু রাখাইনের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে মূল্যায়নের ভিত্তিতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ এ সফর স্থগিত করেছে। তবে নিরাপত্তা পরিষদের একজন কূটনীতিক একে অজুহাত হিসেবেই দেখছেন। তার মতে, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট নিরসনে তাদের নিষ্পৃহ ভূমিকা আড়াল করতেই এমনটা করা হয়েছে। কূটনীতিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে এএফপি জানিয়েছে, রাখাইনে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতের বিষয়টি এ সপ্তাহের শেষের দিকে নিরাপত্তা পরিষদে উপস্থাপন করবে ব্রিটেন।

অন্যদিকে জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক স্পেশাল র?্যাপোর্টিয়ার ইয়াংহি লিকে দেশটিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেনি মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সোমবার মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইয়াংহি লি বর্তমানে থাইল্যান্ড সফর করছেন। আগামী ১৯ জানুয়ারি তিনি বাংলাদেশে আসবেন। তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করবেন।

২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ইয়াংহি লির প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে মিয়ানমার। দেশটির দাবি, স্থানীয় বাসিন্দা ও এনজিওগুলো অভিযোগ করেছে যে, মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তার পর্যালোচনা পক্ষপাতমূলক। এ জন্য মিয়ানমারে তার প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে তার বদলে অন্য কাউকে নিয়োগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
 
Status
Not open for further replies.

Users who are viewing this thread

Back
Top