আদিত্য ফিওনার হাত ধরে ছুটে চলছে, ভয় আর ক্লান্ত শরীরে। বারবার এদিক-সেদিক তাকিয়ে দেখছে ভালো করে। পরিচিত কেউ দেখে ফেলবে বিধায়।আদিত্য ও ফিওনা'র ভালোবাসা দু'বছর যাবত। ধনী পরিবারের না দু'জনেই সুখী পরিবারের সন্তান। আজ তারা একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে, বিয়ে করার।
মিঃ বিপ্লব সাহেব কাঁদছেন, কাঁদতে কাঁদতে মেয়ের খোঁজে বেরিয়ে পড়লেন। উনার সাথে মিসেস বিপ্লব (অর্পা)। আদিত্য নামের এক ছেলের সাথে উনার মেয়ে ফিওনা পালিয়ে গেছে। মিঃ বিপ্লব সাহেব বহু চেষ্টার পর আদিত্যদের বাসার ঠিকানা পেয়েছেন। উনারা দু'জনই রওনা হয়েছেন আদিত্যদের বাসার উদ্দেশ্যে।
আদিত্যদের বাসায়.....
একটা মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে এসেছে শুনে আদিত্যের বাবা-মা (মিঃ দীপু ও মিসেস দীপু) ভীষণ রেগে আছেন। বারবার আদিত্যকে বকাঝকা করছেন। আদিত্যের মা (মিসেস দীপু) বিষয়টা সামলানোর চেষ্টা করছেন।
আদিত্যের বাবা ফিওনাকে বললেন,
--মা শুনো তোমাকে একটা কথা বলি, তুমি বরং এক কাজ করো তোমাদের বাসায় ফিরে যাও। এভাবে পালিয়ে বিয়ে করা ঠিক না।
--বাবা, পালিয়ে এসেছে কি বাসায় যাওয়ার জন্য? আমরা দু'জনই বিয়ে করব। (আদিত্য)
--স্টুপিড! চুপ কর তুই।
বাবার এক দমকে আদিত্য চুপ হয়ে গেল। আদিত্যের মা বিষয়টা বারবার সামলিয়ে নিতে চাইছেন। সবাইকে ঠান্ডা মাথায় ভাবতে বললেন। এই বলে সবার জন্য খাবার নিয়ে আসতে গেলেন। সবাই চুপচাপ হয়ে সোফায় বসে আছে।
ঠিক এই মূহুর্তে শোনা গেল কলিংবেলের আওয়াজ। আদিত্যের বাবা দরজার নক খুলে দিলেন, আর দেখলেন দু'জন মানুষ। উনি তাদেরকে চিনেন না। তাই স্বাভাবিক ভাবেই জিজ্ঞাসা করলেন,
--কে আপনারা?
--জ্বী, এটা কি আদিত্যদের বাসা? (মিঃ বিপ্লব)
--হুমম, কিন্তু কেন?
--আমরা একটু আদিত্যের সাথে কথা বলতে চাই!
--আচ্ছা, ভেতরে আসুন।
মিঃ বিপ্লব ও মিসেস বিপ্লব ভেতরে প্রবেশ করলেন, ফিওনা বাবা-মা কে দেখতে পেয়ে চমকে উঠল। তৎক্ষণাৎ দাঁড়িয়ে গেল, আর অবাক হয়ে উনাদের দেখছে। আদিত্যের বাবা ফিওনার ছোট্ট করে বাবা ডাক শুনতে পেয়ে বুঝতে পারলেন উনারা ফিওনার বাবা-মা।
মেয়েকে দেখে কাঁদতে কাঁদতে বাবা বললেন,
--তুই আমাদের এত কষ্ট দিতে পারলি? আমাদের ছেড়ে চলে আসলি?
ফিওনা এই মূহুর্তে কিছু বুঝতে পারছেনা কি করবে। আদিত্যের কাছে থাকবে নাকি বাবা-মা কে জড়িয়ে ধরবে। আর তার মা মুখ গুজে অঝরে কাঁদছেন।
আদিত্যের বাবা ফিওনার বাবাকে বললেন,
--আপনি আপনার মেয়েকে নিয়ে যেতে পারেন। এখানে আমাদের কোন কথা নেই। আমরা কারো সম্মতি ছাড়া আমাদের ছেলেকে বিয়ে করাব না।
আদিত্যের মা সবার জন্য নাস্তা নিয়ে আসলেন। সবার ভালোবাসার কাছে ফিওনা আর আদিত্য দিব্যি হেরে গেল। তারা দু'জনেই নিজেকে শুধরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করল। ফিওনা নিজেকে বুঝতে পেরে বাবার কাছে ফিরে গেল। আদিত্য কোন বাধা দিলনা।
ফিওনা তার বাবা-মায়ের সাথে বাসায় ফিরে আসল। মেয়ে ফিরে এসেছে তবুও মা-বাবা দু'জনেরই মন খারাপ। কেউ কারো সাথে কথা বলছেনা, মা চুপচাপ এটা-ওটা করছেন। আর বাবা বারান্দায় বসে আনমনে হয়ে কিছু ভাবছেন। ফিওনা মায়ের কাছে গিয়ে বলল,
--মা কথা বলছোনা কেন? একবার আমাকে ক্ষমা করে দেওয়া যায় না!
--জানিনা (ফিওনার মা)
--তোমরা এমন করলে আমি কিভাবে থাকব বলো!
--তোকে আমরা কত ভালোবাসি তুই জানিস না! জানলে হয়তো এমন কাজ করতি না।
--সরি মা, একবার ক্ষমা করে দেও, প্লিজ!!
ফিওনার মা কাঁদছেন।
--তুই কি জানিস তোর নামটা রাখার জন্য তোর বাবা কি পরিমান ঝগড়া করছে আমার সাথে। আমি তোর বাবার ভালোবাসার কাছে হেরে গেছি। তোর বাবার দেওয়া নামটাই (ফিওনা) রয়ে গেল। আর এই নামটা রাখার জন্য শর্ত হিসেবে তোর বাবা আমার সব কথা শুনেছে। শুধুমাত্র তোকে অনেক ভালোবাসে বলে। এই লোকটা তোকে কতটুকু ভালোবাসে বলে বুঝানো সম্ভব না। তুই যখন ছোট ছিলি তখন তুই তোর বাবাকে ছাড়া কিছুই বুঝতিনা, সবসময় তোর বাবার সাথে লেগে থাকতি। সে যখন অফিস থেকে ফিরে আসতো তখন তুই দৌড়ে তাকে জড়িয়ে ধরতি। এই লোকটা তোর জন্য জীবন দিয়ে সবকিছু করার চেষ্টা করেছে। যে লোকটা তোর সামান্য একটু জ্বর আসলে সারারাত বুকে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে, ঘুম ঘুম চোখ নিয়ে সকালে অফিসে যেত। মা হয়ে যতটুকু পারিনি সে বাবা হয়ে তার চেয়ে অনেক বেশি আগলে রেখেছে তোকে সবসময়। আজ সেই লোকটাকে তুই কাঁদালি। অনেক কষ্ট পেয়েছে রে....অনেক কষ্ট পেয়েছে।
--স্বীকার করছি তো আমার অনেক বড় ভূল হয়ে গেছে।
--তুই কি দেখেছিলি, তোর বাবার চোখ দিয়ে পানির বন্যা বইছিল? আমি কোনদিন তাকে এভাবে কাঁদতে দেখিনি। সত্যিই তুই কাজটা ঠিক করিস নি।
--মা, আমাকে ক্ষমা করে দেও! আর কখনো এমন ভূল করবো না। প্রমিজ করছি, আর কখনো এমন করবো না। বিশ্বাস করো আমাকে!
--জানি, তোর বাবাকে গিয়ে বল! তার কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে নে। লোকটার ভিতরে এত মায়া, এত আবেগ আমার বিশ্বাস তোকে নিশ্চয়ই ক্ষমা করে দিবে।।
--মা, আমি কখনো তোমাদের ছেড়ে কোথাও যাবো না। আমি কখনই বিয়ে করবনা। সারাজীবন তোমাদের কাছে থাকব।
ফিওনা মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল। বাবার ভালোবাসা আজ পুরোপুরি বুঝতে পারল। এতদিন ফিওনা বিশ্বাস করতো সকল পিতা-মাতাই তার সন্তানদের এমন আদর করে। তবে তার বাবা-মা যে তাকে অনেক বেশিই ভালোবাসে সেটা তার জানা ছিলনা। এমনটা না ঘটলে হয়তোবা আর জানা হত না।
এই মূহুর্তে মিঃ বিপ্লব সাহেব বারান্দার চেয়ারে বসে আছেন, মন ভীষণ খারাপ। যার জন্য এতকিছু, যাকে এত ভালোবাসে সেই মেয়ে ফিওনা ভূল করতে চেয়েছিল। তার মেয়ে তাকে বিশ্বাস করলনা এর থেকে বড় দুঃখ আর কি হতে পারে।
ফিওনা আসছে, বাবা বুঝতে পারল। তারপর ফিওনা ধীরে ধীরে বাবার নিকটে গিয়ে বলল,
--সরি বাবা, আমার ভূল হয়ে গেছে।
বাবার নিরবতায় ফিওনাকে পায়ে পড়ে আবারো বলল,
--বাবা, আমি আর কখনো এমন কাজ করবোনা তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দেও প্লিজ!! প্লিজ বাবা আর করবো না!!
ফিওনা কাঁদছে, এত আদরের মেয়েকে কাঁদতে দেখে বাবা ঠিক থাকতে পারলনা।
--ঠিক আছে মা, কাঁদিস না। সন্তান যতই ভূল করুক না কেন বাবা-মা তাদের ক্ষমা করে দেয়। তবে খুব কষ্ট পেয়েছি জানিস? (মিঃ বিপ্লব)
--প্লিজ বাবা, আর করবোনা।
--তোকে অনেক ভালোবাসি, তুই তো আমার একমাত্র সন্তান। তুই যদি আমাদের ছেড়ে এভাবে চলে যাস আমরা কিভাবে থাকবো বল। একদিন না একদিন তোকে তো বাবা-মা কে ছেড়ে যেতেই হবে, কিন্তু তাই বলে এভাবে যেতে হবে??
--সরি বাবা!! আমাকে তোমরা একবার ক্ষমা করে দেও!
--হুমমমমমম, (মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলল, তারপর দু'হাত তুলে মেয়েকে বুকে আসতে বলল)
ফিওনা কাঁদতে কাঁদতে বাবাকে জড়িয়ে ধরল।
--আমি তোমাদের অনেক ভালোবাসি বাবা।
বাবা ফিওনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে...
--আমার পাগলী মেয়ে। আর কখনো বাবাকে কষ্ট দিবিনা।
দু'দিন পর ফিওনার বাবা আদিত্যদের বাসায় যান তার মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে। আদিত্যের বাবা-মা বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হয়, ছেলে-মেয়ের পছন্দ বলে কথা।
আজ ফিওনাদের বাসার সকলেই ব্যস্ত। ক'জন আত্মীয়-স্বজনও এসেছে তাদের বাড়িতে। আদিত্যরা আসবে এখানে, বিয়ের আশীর্বাদ করতে। ফিওনা এবং আদিত্য দু'জনই বেশ খুশি। পরিবার থেকেই তাদের বিবাহ ঠিক করা হয়েছে।
মিঃ বিপ্লব সাহেব কাঁদছেন, কাঁদতে কাঁদতে মেয়ের খোঁজে বেরিয়ে পড়লেন। উনার সাথে মিসেস বিপ্লব (অর্পা)। আদিত্য নামের এক ছেলের সাথে উনার মেয়ে ফিওনা পালিয়ে গেছে। মিঃ বিপ্লব সাহেব বহু চেষ্টার পর আদিত্যদের বাসার ঠিকানা পেয়েছেন। উনারা দু'জনই রওনা হয়েছেন আদিত্যদের বাসার উদ্দেশ্যে।
আদিত্যদের বাসায়.....
একটা মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে এসেছে শুনে আদিত্যের বাবা-মা (মিঃ দীপু ও মিসেস দীপু) ভীষণ রেগে আছেন। বারবার আদিত্যকে বকাঝকা করছেন। আদিত্যের মা (মিসেস দীপু) বিষয়টা সামলানোর চেষ্টা করছেন।
আদিত্যের বাবা ফিওনাকে বললেন,
--মা শুনো তোমাকে একটা কথা বলি, তুমি বরং এক কাজ করো তোমাদের বাসায় ফিরে যাও। এভাবে পালিয়ে বিয়ে করা ঠিক না।
--বাবা, পালিয়ে এসেছে কি বাসায় যাওয়ার জন্য? আমরা দু'জনই বিয়ে করব। (আদিত্য)
--স্টুপিড! চুপ কর তুই।
বাবার এক দমকে আদিত্য চুপ হয়ে গেল। আদিত্যের মা বিষয়টা বারবার সামলিয়ে নিতে চাইছেন। সবাইকে ঠান্ডা মাথায় ভাবতে বললেন। এই বলে সবার জন্য খাবার নিয়ে আসতে গেলেন। সবাই চুপচাপ হয়ে সোফায় বসে আছে।
ঠিক এই মূহুর্তে শোনা গেল কলিংবেলের আওয়াজ। আদিত্যের বাবা দরজার নক খুলে দিলেন, আর দেখলেন দু'জন মানুষ। উনি তাদেরকে চিনেন না। তাই স্বাভাবিক ভাবেই জিজ্ঞাসা করলেন,
--কে আপনারা?
--জ্বী, এটা কি আদিত্যদের বাসা? (মিঃ বিপ্লব)
--হুমম, কিন্তু কেন?
--আমরা একটু আদিত্যের সাথে কথা বলতে চাই!
--আচ্ছা, ভেতরে আসুন।
মিঃ বিপ্লব ও মিসেস বিপ্লব ভেতরে প্রবেশ করলেন, ফিওনা বাবা-মা কে দেখতে পেয়ে চমকে উঠল। তৎক্ষণাৎ দাঁড়িয়ে গেল, আর অবাক হয়ে উনাদের দেখছে। আদিত্যের বাবা ফিওনার ছোট্ট করে বাবা ডাক শুনতে পেয়ে বুঝতে পারলেন উনারা ফিওনার বাবা-মা।
মেয়েকে দেখে কাঁদতে কাঁদতে বাবা বললেন,
--তুই আমাদের এত কষ্ট দিতে পারলি? আমাদের ছেড়ে চলে আসলি?
ফিওনা এই মূহুর্তে কিছু বুঝতে পারছেনা কি করবে। আদিত্যের কাছে থাকবে নাকি বাবা-মা কে জড়িয়ে ধরবে। আর তার মা মুখ গুজে অঝরে কাঁদছেন।
আদিত্যের বাবা ফিওনার বাবাকে বললেন,
--আপনি আপনার মেয়েকে নিয়ে যেতে পারেন। এখানে আমাদের কোন কথা নেই। আমরা কারো সম্মতি ছাড়া আমাদের ছেলেকে বিয়ে করাব না।
আদিত্যের মা সবার জন্য নাস্তা নিয়ে আসলেন। সবার ভালোবাসার কাছে ফিওনা আর আদিত্য দিব্যি হেরে গেল। তারা দু'জনেই নিজেকে শুধরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করল। ফিওনা নিজেকে বুঝতে পেরে বাবার কাছে ফিরে গেল। আদিত্য কোন বাধা দিলনা।
ফিওনা তার বাবা-মায়ের সাথে বাসায় ফিরে আসল। মেয়ে ফিরে এসেছে তবুও মা-বাবা দু'জনেরই মন খারাপ। কেউ কারো সাথে কথা বলছেনা, মা চুপচাপ এটা-ওটা করছেন। আর বাবা বারান্দায় বসে আনমনে হয়ে কিছু ভাবছেন। ফিওনা মায়ের কাছে গিয়ে বলল,
--মা কথা বলছোনা কেন? একবার আমাকে ক্ষমা করে দেওয়া যায় না!
--জানিনা (ফিওনার মা)
--তোমরা এমন করলে আমি কিভাবে থাকব বলো!
--তোকে আমরা কত ভালোবাসি তুই জানিস না! জানলে হয়তো এমন কাজ করতি না।
--সরি মা, একবার ক্ষমা করে দেও, প্লিজ!!
ফিওনার মা কাঁদছেন।
--তুই কি জানিস তোর নামটা রাখার জন্য তোর বাবা কি পরিমান ঝগড়া করছে আমার সাথে। আমি তোর বাবার ভালোবাসার কাছে হেরে গেছি। তোর বাবার দেওয়া নামটাই (ফিওনা) রয়ে গেল। আর এই নামটা রাখার জন্য শর্ত হিসেবে তোর বাবা আমার সব কথা শুনেছে। শুধুমাত্র তোকে অনেক ভালোবাসে বলে। এই লোকটা তোকে কতটুকু ভালোবাসে বলে বুঝানো সম্ভব না। তুই যখন ছোট ছিলি তখন তুই তোর বাবাকে ছাড়া কিছুই বুঝতিনা, সবসময় তোর বাবার সাথে লেগে থাকতি। সে যখন অফিস থেকে ফিরে আসতো তখন তুই দৌড়ে তাকে জড়িয়ে ধরতি। এই লোকটা তোর জন্য জীবন দিয়ে সবকিছু করার চেষ্টা করেছে। যে লোকটা তোর সামান্য একটু জ্বর আসলে সারারাত বুকে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে, ঘুম ঘুম চোখ নিয়ে সকালে অফিসে যেত। মা হয়ে যতটুকু পারিনি সে বাবা হয়ে তার চেয়ে অনেক বেশি আগলে রেখেছে তোকে সবসময়। আজ সেই লোকটাকে তুই কাঁদালি। অনেক কষ্ট পেয়েছে রে....অনেক কষ্ট পেয়েছে।
--স্বীকার করছি তো আমার অনেক বড় ভূল হয়ে গেছে।
--তুই কি দেখেছিলি, তোর বাবার চোখ দিয়ে পানির বন্যা বইছিল? আমি কোনদিন তাকে এভাবে কাঁদতে দেখিনি। সত্যিই তুই কাজটা ঠিক করিস নি।
--মা, আমাকে ক্ষমা করে দেও! আর কখনো এমন ভূল করবো না। প্রমিজ করছি, আর কখনো এমন করবো না। বিশ্বাস করো আমাকে!
--জানি, তোর বাবাকে গিয়ে বল! তার কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে নে। লোকটার ভিতরে এত মায়া, এত আবেগ আমার বিশ্বাস তোকে নিশ্চয়ই ক্ষমা করে দিবে।।
--মা, আমি কখনো তোমাদের ছেড়ে কোথাও যাবো না। আমি কখনই বিয়ে করবনা। সারাজীবন তোমাদের কাছে থাকব।
ফিওনা মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল। বাবার ভালোবাসা আজ পুরোপুরি বুঝতে পারল। এতদিন ফিওনা বিশ্বাস করতো সকল পিতা-মাতাই তার সন্তানদের এমন আদর করে। তবে তার বাবা-মা যে তাকে অনেক বেশিই ভালোবাসে সেটা তার জানা ছিলনা। এমনটা না ঘটলে হয়তোবা আর জানা হত না।
এই মূহুর্তে মিঃ বিপ্লব সাহেব বারান্দার চেয়ারে বসে আছেন, মন ভীষণ খারাপ। যার জন্য এতকিছু, যাকে এত ভালোবাসে সেই মেয়ে ফিওনা ভূল করতে চেয়েছিল। তার মেয়ে তাকে বিশ্বাস করলনা এর থেকে বড় দুঃখ আর কি হতে পারে।
ফিওনা আসছে, বাবা বুঝতে পারল। তারপর ফিওনা ধীরে ধীরে বাবার নিকটে গিয়ে বলল,
--সরি বাবা, আমার ভূল হয়ে গেছে।
বাবার নিরবতায় ফিওনাকে পায়ে পড়ে আবারো বলল,
--বাবা, আমি আর কখনো এমন কাজ করবোনা তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দেও প্লিজ!! প্লিজ বাবা আর করবো না!!
ফিওনা কাঁদছে, এত আদরের মেয়েকে কাঁদতে দেখে বাবা ঠিক থাকতে পারলনা।
--ঠিক আছে মা, কাঁদিস না। সন্তান যতই ভূল করুক না কেন বাবা-মা তাদের ক্ষমা করে দেয়। তবে খুব কষ্ট পেয়েছি জানিস? (মিঃ বিপ্লব)
--প্লিজ বাবা, আর করবোনা।
--তোকে অনেক ভালোবাসি, তুই তো আমার একমাত্র সন্তান। তুই যদি আমাদের ছেড়ে এভাবে চলে যাস আমরা কিভাবে থাকবো বল। একদিন না একদিন তোকে তো বাবা-মা কে ছেড়ে যেতেই হবে, কিন্তু তাই বলে এভাবে যেতে হবে??
--সরি বাবা!! আমাকে তোমরা একবার ক্ষমা করে দেও!
--হুমমমমমম, (মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলল, তারপর দু'হাত তুলে মেয়েকে বুকে আসতে বলল)
ফিওনা কাঁদতে কাঁদতে বাবাকে জড়িয়ে ধরল।
--আমি তোমাদের অনেক ভালোবাসি বাবা।
বাবা ফিওনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে...
--আমার পাগলী মেয়ে। আর কখনো বাবাকে কষ্ট দিবিনা।
দু'দিন পর ফিওনার বাবা আদিত্যদের বাসায় যান তার মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে। আদিত্যের বাবা-মা বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হয়, ছেলে-মেয়ের পছন্দ বলে কথা।
আজ ফিওনাদের বাসার সকলেই ব্যস্ত। ক'জন আত্মীয়-স্বজনও এসেছে তাদের বাড়িতে। আদিত্যরা আসবে এখানে, বিয়ের আশীর্বাদ করতে। ফিওনা এবং আদিত্য দু'জনই বেশ খুশি। পরিবার থেকেই তাদের বিবাহ ঠিক করা হয়েছে।