---এই আকাশ, তোদের বাসায় কিছুক্ষন আসে যে
একটা মেয়ে আসলো,মেয়ে টা কে?।......(হৃদয়)
----আমার খালাতো বোন।.....(আকাশ)
---ওহ! তাই,মেয়েটার নাম কি রে?......(হৃদয়)
---ঐ তুই এসব জেনে কি করবি রে?......(আকাশ)
---বেশি কথা বলিস না! যা বলেছি তার উত্তর
দে?.......(হৃদয়)
---আরে তার নাম হলো ঐশী।......(আকাশ)
---ওওও তাই।মেয়েটা দেখতেও যেমন সুন্দর তার
নামটাও সেই রকম।....(হৃদয়)
---ঐ তাতে তর কি রে।.....(আকাশ)
---আমার অনেক কিছু রে!! এই কত দিন থাকবে
ঐশী তদের বাসায়।.....(হৃদয়)
--- ১ মাসের মতো থাকবে আমাদের বাসায়।......
(আকাশ)
---কি বলিস রে দুস্ত,তাহলে তো ভালোই
হলো।.... (হৃদয়)
--তর সাথে এসব ফালতু কথা বলার সময় আমার
কাছে নাই।আমি বাসাই যাবো অনেক রাত
হয়ে গেছে।.....(আকাশ)
---ওকে যা।.. (হৃদয়)
এই বলে আকাশ তার বাসায় চলে গেলো।আর হৃদয়
ও তার বাসায় চলে গেলোহৃদয় আর আকাশদের
বাসা পাশাপাশি।তারা দুজনেই এক ই
বিশ্ববিদ্যালয় এ পড়ে।তাদের দুজনের সেই ছোট
বেলা থেকেই ভালো বন্ধুত্ব।ধরতে গেলে যেন
দুই ভাই।যেখানেই যাবে দু জন দু জন কে সাথে
নিয়ে যায়।আর এই ঐশী নামের মেয়েটা হলো
আকাশের খালাতো বোন।এবার এইচ এস সি
পরিক্ষা দিয়েছে।আর আকাশ দের বাসায়
এসেছে ১ মাসের জন্য বেড়াতে।আর এই হৃদয় এর
খুব ভালো লেগে গেছে ঐশী কেমানে প্রথম
দেখায় হৃদয় ঐশীর প্রেমে পড়ে গেছে।
রাতে হৃদয় ঘুমাতে পারেনা।বার বার সেই
মেয়েটার মুখ তার সামনে ভেসে উঠে।আজ
সকালে ঘুম থেকে উঠেই হৃদয় আকাশ কে ফোন
দিলো।
---হ্যালো,,,,কি রে সকাল সকাল ফোন
দিয়েছিস কেন?......(আকাশ)
---দুস্ত কেমন আছো তুমি।......(হৃদয়)
---জীবনে প্রথম বার মনে হয় আজ জানতে
চাইলে আমি কেমন আছি।যাক শুনে ভালোই
লাগলো।......(আকাশ)
---দুস্ত তুমি ঠিক আছো তো,তোমার শরীর ঠিক
আছে।......(হৃদয়)
--এই দেখ নাটক করবি না।কি বলার জন্য ফোন
দিয়েছিস সেটা বল?......(আকাশ)
---দুস্ত আমি না তর বোনের প্রেমে পড়ে
গেছি।বিশ্বাস কর কাল রাতে আমি ঘুমাতে
পারিনি।বার বার তর বোনের মুখ টা আমার
চোখে ভেসে উঠেছে।প্লিজ দুস্ত আমায় হেল্প
কর একটু।.....(হৃদয়)
---তরে সামনে পাইলে কি যে করতাম।এই ঐশী
আমার ছোট বোন আর আমি তকে কিভাবে
সাহায্য করবো রে।আমি যদি তাকে এসব
ব্যাপারে বলি তাহলে কি ভাববে আমায়।......
(আকাশ---এই সালা আমি তর প্রেমিকার সাথে
প্রেম করতে চাইতাছি নাকি যে এতো ভাব
নিচ্ছিস।ঐ তুই যখন ফারিয়ার সাথে প্রেম করলি
তখন তকে কত হেল্প করেছি মনে নাই তর।.....(হৃদয়)
----দেখ ভাই আমি মাফ চাই।আমাকে এসব
ব্যাপারে কিছু বলিস না।.....(আকাশ)
----ওকে তকে কিছুই করতে হবে না।তুই শুধু তাকে
আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দে।বাকি টা
আমি দেখে নিবো।....(হৃদয়)
---ওকে আমি পরিচয় করিয়ে দিবো।আর শুন
আমার মনে হয় ঐশী এসব পছন্দ করেনা।.....(আকাশ)
---ঐ তুই বেশি কথা বলিস না।দেখিস তর বোন
কে পটিয়ে ফেলবো।.....(হৃদয়)
---ওকে আজ বিকেলে ঐশী কে নিয়ে একটু
ঘুরতে যাবো আর তখন তুই আসিস তার সাথে তর
পরিচয় করিয়ে দিবো।.....(আকাশ)
----ওকে দুস্ত।......(হৃদয়এই বলে হৃদয় ফোন কেটে
দিলো।
বিকেল হয়ে গেছে তাই হৃদয় তাড়াতাড়ি
রেডি হয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লো।আর
দেখতে পেলো আকাশ আর ঐশী কে।হৃদয় তাদের
সামনে গেলো আর এমন ভাব ধরলো যেন সে
কিছুই জানেনা।
---কি রে আকাশ কোথাই যাচ্ছিস আর এই মেয়ে
টা কে।......(হৃদয়)
আকাশ হৃদয় এর এমন ভাব দেখে মনে মনে রেগে
যাচ্ছে আর বলছে সালা এমন ভাব ধরতাছে যেন
কিছুই জানেনা।
---এই তো আমার খালাতো বোন আমাদের
বাসাই বেড়াতে এসেছে তাই তাকে নিয়ে
একটু ঘুরতে বেড়িয়েছি।.....(আকাশ)
---ওওও তাই।.....(হৃদয়)
----হুম তাই।এই তুই ও চল আমাদের সাথে।আর ঐশী এ
হলো আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড হৃদয়।......(আকাশ)
---না আমি যেতে পারবো না রে কাজ
আছে।......(হৃদয়)
আকাশ খুব মনে মনে খুব রেগে যাচ্ছে আর বলছে
কি ভাব নিচ্ছে সালা।পরে বুঝাবো তকে।
---এই আপনি ও আমাদের সাথে চলেন প্লিজ।.....
(ঐশী)
ঐশীর এই কথা শুনে হৃদয় এর মনে আরেকটা
ভালবাসার বেলুন ফাটলো।
---হুম চলেন যায় তাহলে।....(হৃদয়)
এবার তারা তিন জনে ঘুরতে গেলো।হৃদয় এর
সাথে ঐশীর পরিচয় হলো।এভাবে আরো কয়েক
দিন কেটে গেলো।প্রতিদিন ই তারা ঘুররে
যায় এক সাথে।হৃদয় ঐশীর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।
হৃদয় নানা উছিলায় বার বার আকাশের বাসায়
যায় ঐশী কে দেখার জন্য তার সাথে কথা
বলার জন্য।এভাবে প্রায় ২০ দিন কেটে গেলো।
আজ রাতে আকাশ আর হৃদয় বসে আছে।
---দুস্ত আমি আর পারছিনা রে এবার বলে দেই
ঐশী কে যে আমি তাকে ভালবাসি।....(হৃদয়)
--- যা বল আর দেখিস এখন তো কথা বলছে তর
সাথে কিন্তু এটা শুনার পর হয়তো আর কথায়
বলবে না তর সাথে।.....(আকাশ)
---হুম সেটাও ঠিক।কিন্তু আমার মনে হয় ঐশী ও
আমাকে পছন্দ করে।কারন সে আমার সাথে বার
বার কথা বলার জন্য আসে।আমার মনে হয় সে ও
আমায় ভালবাসতে শুরু করেছে।....(হৃদয়)
---হতেও পারে।এই অনেক রাত হয়ছে এবার আমি
যায়।....(আকাশ)
এই বলে আকাশ চলে গেলো।হৃদয় এর রাতে ঘুম
হয়না ঐশীর জন্য।হৃদয় শুয়ে আছে আর মনে মনে
ভাবছে কাল ঐশী কে বলে দিবে যে সে
তাকে ভালবাসেআজ বিকেলে হৃদয় দেখতে
পেলো ঐশী একা একা তার দিকে আসছে।
---এই যে কেমন আছেন।......(ঐশী)
---হুম ভালো,,,আপনি?....(হৃদয়)
---হুম ভালো।আপনি কদিন ধরেই আমায় মনে হয়
কিছু বলার চেষ্টা করছেন।....(ঐশী)
ঐশীর এই কথা শুনে হৃদয় কি বলবে বুঝতে
পারছিলো না।
---না মানে কিছু না।আপনি কবে চলে যাবেন
আপনার বাসায়।.....(হৃদয়)
---এই তো আর কয়েক দিন পর ই।.....(ঐশী)
---খুব মিস করবো আপনাকে।...(হৃদয়)
----শুধু মিস ই করবেন আর অন্য কিছু করবেন না।...
(ঐশী)
এই বলে ঐশী চলে গেলো।হৃদয় এর মাথা কাজ
করছিলো না যে কি বলবে সে।দেখতে দেখতে
আরো কয়েক দিন চলে গেলো।এর মধ্যে হৃদয়
অনেক বার চেষ্টা করেছিলো ঐশী কে বলতে
কিন্তু ঐশীর সামনে গেলেই হৃদয় সব ভুলে যায়
কিছুই বলতে পারেনাআজ রাতে হৃদয় শুয়ে আছে
আর ভাবছে কাল ঐশী কে যেভাবেই হোক বলে
দিবে যে সে তাকে ভালবাসে।এসব ভাবতে
ভাবতে হৃদয় খেয়াল করলো রাত ৩ টা বেজে
গেছে। তাই ঘুমিয়ে পড়লোহৃদয় ঘুমিয়ে আছে এমন
সময় শুনতে পেলো যে আকাশ তাকে ডাকছে।
---এই উঠ,কয়টা বাজে খেয়াল আছে তর?.......
(আকাশ)
---এই তুই সকাল ডাকছিস কেন রে।.....(হৃদয়)
---এই এখন সকাল না প্রায় ২ টা বাজে।....
(আকাশ)
আকাশ এর কথা শুনে হৃদয় লাফ দিয়ে উঠে ---
বলিস তুই ২ টা বাজে মানে।......(হৃদয়)
----হুম আর ঐশীর বাবা এসেছিলো ঐশী কে
নিতে ঐশী তার বাবার সাথে তাদের বাসায়
চলে গেছে।আর ঐশীর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।
আগামী শুক্রবারেই তার বিয়ে।.....(আকাশ)
----এই দেখ মজা করবি না এসব বিষয় নিয়ে।.....
(হৃদয়)
--- আমি তর সাথে কোনো মজা করছি না যা
সত্য তাই বলছি।আর ঐশী তকে যেতে বলেছে
তার বিয়েতে।....(হৃদয়)
কথা গুলো বলে আকাশ চলে গেলো।হৃদয় এসব
বিশ্বাস করতে পারছেনা।হৃদয় এর খুব কান্না
পাচ্ছিলো।বুঝতে পারছিলো না কি করবে।
দেখতে দেখতে কয়েক দিন চলে গেলো।হৃদয়
ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করেনা বাসার
বাইরেই বের হয়না বেশি।সারা দিন ঘরে বসে
থাকে।হৃদয় রাতে ছাদে বসে আছে এমন সময়
আকাশ আসলো।
---কি রে একা একা বসে কি করিস।....(আকাশ)
--কিছু না রে।....(হৃদয়)
----ঐশীর জন্য কষ্ট হচ্ছে তর তাই। ...... (আকাশ)
আকাশের এই কথা শুনে হৃদয় আকাশ জড়িয়ে ধরে
কাদতে লাগলো।
---জানিস দুস্ত খুব ভালবেসেছিলাম ঐশী কে।
কিন্তু বলতেই পারলাম না তার আগেই সব শেষ।...
(হৃদয়----আরে কাদছিস কেন।আরে একটা গেছে
তো কি হয়ছে।মেয়ের অভাব আছে নাকি।.....
(আকাশ)
---- আমি কিছু বুঝতে পারছিনা বার বার তার
কথা মনে পড়ছে আমার।.....(হৃদয়)
---এই শুক্রবারে ঐশীর বিয়ে।তকেও আমার
সাথে তার বিয়েতে যেতে হবে।.....(আকাশ)
---- আমি পারবো না রে। আমার চোখের
সামনে সে অন্য কারো হয়ে যাবে সেটা আমি
দেখতে পারবো না।.....(হৃদয়)
--ঐশী তকে যেতে বলেছে। তুই না গেলে সে
কি ভাববে বল।প্লিজ আমার সাথে যেতে হবে
তকে।.....(আকাশ)
---ওকে যাবো আমি।ঐশী কে বউ সাজলে অনেক
সুন্দর দেখাবে তাই না।....(হৃদয়)
---এই মন খারাপ করিস না।....(আকাশ)
এই বলে আকাশ চলে গেলো।আজ আকাশ আর হৃদয়
এসেছে ঐশীদের বাসাতে।আজ ঐশীর বিয়ে।
সারা টা বাসা অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছে।
হৃদয় এর খুব কষ্ট হচ্ছে।কিন্তু কাউ কে বুঝতে দিচ্ছে
না।হৃদয় বার বার চেষ্টা করছে ঐশী কে এক নজর
দেখতে।কিন্তু ঐশী কে কোথাও পেলো না।হৃদয়
মনে মনে ভাবছে ঐশী কে হইতো বউ সাজাচ্ছে
তারা। তাই হয়তো তাকে বাহিরে দেখা
যাচ্ছে। দেখতে দেখতে রাত হয়ে গেলো।হৃদয়
দেখতে পেলো বর এর গাড়ি এসে গেছে।
আরেকটু পর ই ঐশী সারাজীবন এর জন্য অন্য কারো
হয়ে যাবে এটা ভাবতে ভাবতে হৃদয় এর কান্না
পাচ্ছে।বর বসে আছে এখন বিয়ে পড়াবে। হৃদয় এর
খুব কষ্ট হচ্ছিলো সে কিভাবে দেখতে তার
ঐশী কে অন্যের হতে।তাই সে বাসার ছাদে
চলে গেলো।ছাদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হৃদয়
ঐশীর কথা ভাবছে আর কাদছে।এমন সময় হৃদয় এর
কাদে কে যেন হাত রাখলো আর বললো।
---কি ব্যাপার এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে
কান্না করলেই কি হবে।.....(ঐশী)
হৃদয় পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো ঐশী।হৃদয়
চমকে গেলো।
---আরে আপনি এখানে কেন।......(হৃদয়)
---হুম আপনি হয়তো ভাবছেন আমার তো বিয়ের
আসরে থাকার কথা তাইনা।.....(ঐশী---হুম।.....(হৃ
দয়)
---আসলে আজ আমার বিয়ে না আমার বড় আপুর
বিয়ে।.....(ঐশী)
---ওওও তাই তাহলে আকাশ যে বললো আপনার
বিয়ে।......(হৃদয়---মিথ্যা বলেছে।......(ঐশী)
---ওওও তাই।....(হৃদয়)
----হুম তাই।কি ছেলে আপনি হে।একটা মেয়ে
কে ভালবাসেন আর এটা বলতে পারেন তাকে।
আজ যদি না বলেন তাহলে সত্যি সত্যি কিন্তু
অন্য কারো হয়ে যাবো।.....(ঐশী)
এই বলে ঐশী চলে যেতে লাগলো কিন্তু হৃদয়
তার হাত টেনে ধরলো পেছন থেকে আর বললো।
---আমি না হয় বলতে পারিনি।কিন্তু আপনি
তো বুঝে নিতে পারতেন।....(হৃদয়)
---হুম আমি বুঝেছিলাম অনেক আগেই আর তাই
আমার বিয়ের নাটক টা করে ছিলাম।এখন বলবেন
নাকি চলে যাবো সবাই আমাকে
খুজতাছে।.......(ঐশী)
হৃদয় এবার ঐশী কে জড়িয়ে ধরলো আর বললো।
---আমি আপনাকে আমার আম্মুর বউমা বানাতে
চাই।আপনি কি হবেন।.....(হৃদয়)
---হুম হবো তবে আপনি করে বললে কিন্তু হবো
না।......(ঐশী)
---আমি তোমাকে ভালবাসি অনেক
ভালবাসি।.....(হৃদয়)
---আমি ও তোমায় ভালবাসি।.....(ঐশী)
এমন সময় আকাশ আসলো ছাদে আর বললো।
---হয়ছে এবার তোমাদের প্রেম কাহিনি বন্ধ
করো নিজে আপুর বিয়ে হচ্ছে সবাই তোমাদের
খুজছে।......(আকাশ)
আকাশের কথা শুনে হৃদয় ঐশী কে ছেড়ে দিলো।
----দুস্ত তুই আমাকে এতো দিন মিথ্যা
বলেছিস।.....(হৃদয়)
---মিথ্যা না বললে কি জানতে পারতাম কত
টা ভালবাসিস আমার বোন কে।আর হে আমাকে
আপনি করে বলবি আমি কিন্তু তর?????আর আমার
বোন টা কে কখনো কষ্ট দিস না।এবার চল নিচে
সবাই অপেক্ষা করছে।....(আকাশএই বলে তারা
চলে আসলো নিচে।অবশেষে হৃদয় এর মনের মানুষ
কে সে কাছে পেলো।দুটি মন এক হলো।
প্রতিটা প্রেমের শুরুটা খুব কষ্টের ই হয়।কিভাবে
যে মনের মানুষ টিকে মনের কথা বলবে এটাই
অনেক জন ভেবে পাইনা।তবে কাউ কে যদি
ভালবেসে থাকেন তাহলে বলে দিবেন তা
না হলে কিন্তু অন্য জনের হয়ে যাবে আপনার
প্রিয় মানুষ টি।আশা করি গল্প টি ভালো
লেগেছে আপনাদের ভালো থাকবেন সবাই।
একটা মেয়ে আসলো,মেয়ে টা কে?।......(হৃদয়)
----আমার খালাতো বোন।.....(আকাশ)
---ওহ! তাই,মেয়েটার নাম কি রে?......(হৃদয়)
---ঐ তুই এসব জেনে কি করবি রে?......(আকাশ)
---বেশি কথা বলিস না! যা বলেছি তার উত্তর
দে?.......(হৃদয়)
---আরে তার নাম হলো ঐশী।......(আকাশ)
---ওওও তাই।মেয়েটা দেখতেও যেমন সুন্দর তার
নামটাও সেই রকম।....(হৃদয়)
---ঐ তাতে তর কি রে।.....(আকাশ)
---আমার অনেক কিছু রে!! এই কত দিন থাকবে
ঐশী তদের বাসায়।.....(হৃদয়)
--- ১ মাসের মতো থাকবে আমাদের বাসায়।......
(আকাশ)
---কি বলিস রে দুস্ত,তাহলে তো ভালোই
হলো।.... (হৃদয়)
--তর সাথে এসব ফালতু কথা বলার সময় আমার
কাছে নাই।আমি বাসাই যাবো অনেক রাত
হয়ে গেছে।.....(আকাশ)
---ওকে যা।.. (হৃদয়)
এই বলে আকাশ তার বাসায় চলে গেলো।আর হৃদয়
ও তার বাসায় চলে গেলোহৃদয় আর আকাশদের
বাসা পাশাপাশি।তারা দুজনেই এক ই
বিশ্ববিদ্যালয় এ পড়ে।তাদের দুজনের সেই ছোট
বেলা থেকেই ভালো বন্ধুত্ব।ধরতে গেলে যেন
দুই ভাই।যেখানেই যাবে দু জন দু জন কে সাথে
নিয়ে যায়।আর এই ঐশী নামের মেয়েটা হলো
আকাশের খালাতো বোন।এবার এইচ এস সি
পরিক্ষা দিয়েছে।আর আকাশ দের বাসায়
এসেছে ১ মাসের জন্য বেড়াতে।আর এই হৃদয় এর
খুব ভালো লেগে গেছে ঐশী কেমানে প্রথম
দেখায় হৃদয় ঐশীর প্রেমে পড়ে গেছে।
রাতে হৃদয় ঘুমাতে পারেনা।বার বার সেই
মেয়েটার মুখ তার সামনে ভেসে উঠে।আজ
সকালে ঘুম থেকে উঠেই হৃদয় আকাশ কে ফোন
দিলো।
---হ্যালো,,,,কি রে সকাল সকাল ফোন
দিয়েছিস কেন?......(আকাশ)
---দুস্ত কেমন আছো তুমি।......(হৃদয়)
---জীবনে প্রথম বার মনে হয় আজ জানতে
চাইলে আমি কেমন আছি।যাক শুনে ভালোই
লাগলো।......(আকাশ)
---দুস্ত তুমি ঠিক আছো তো,তোমার শরীর ঠিক
আছে।......(হৃদয়)
--এই দেখ নাটক করবি না।কি বলার জন্য ফোন
দিয়েছিস সেটা বল?......(আকাশ)
---দুস্ত আমি না তর বোনের প্রেমে পড়ে
গেছি।বিশ্বাস কর কাল রাতে আমি ঘুমাতে
পারিনি।বার বার তর বোনের মুখ টা আমার
চোখে ভেসে উঠেছে।প্লিজ দুস্ত আমায় হেল্প
কর একটু।.....(হৃদয়)
---তরে সামনে পাইলে কি যে করতাম।এই ঐশী
আমার ছোট বোন আর আমি তকে কিভাবে
সাহায্য করবো রে।আমি যদি তাকে এসব
ব্যাপারে বলি তাহলে কি ভাববে আমায়।......
(আকাশ---এই সালা আমি তর প্রেমিকার সাথে
প্রেম করতে চাইতাছি নাকি যে এতো ভাব
নিচ্ছিস।ঐ তুই যখন ফারিয়ার সাথে প্রেম করলি
তখন তকে কত হেল্প করেছি মনে নাই তর।.....(হৃদয়)
----দেখ ভাই আমি মাফ চাই।আমাকে এসব
ব্যাপারে কিছু বলিস না।.....(আকাশ)
----ওকে তকে কিছুই করতে হবে না।তুই শুধু তাকে
আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দে।বাকি টা
আমি দেখে নিবো।....(হৃদয়)
---ওকে আমি পরিচয় করিয়ে দিবো।আর শুন
আমার মনে হয় ঐশী এসব পছন্দ করেনা।.....(আকাশ)
---ঐ তুই বেশি কথা বলিস না।দেখিস তর বোন
কে পটিয়ে ফেলবো।.....(হৃদয়)
---ওকে আজ বিকেলে ঐশী কে নিয়ে একটু
ঘুরতে যাবো আর তখন তুই আসিস তার সাথে তর
পরিচয় করিয়ে দিবো।.....(আকাশ)
----ওকে দুস্ত।......(হৃদয়এই বলে হৃদয় ফোন কেটে
দিলো।
বিকেল হয়ে গেছে তাই হৃদয় তাড়াতাড়ি
রেডি হয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লো।আর
দেখতে পেলো আকাশ আর ঐশী কে।হৃদয় তাদের
সামনে গেলো আর এমন ভাব ধরলো যেন সে
কিছুই জানেনা।
---কি রে আকাশ কোথাই যাচ্ছিস আর এই মেয়ে
টা কে।......(হৃদয়)
আকাশ হৃদয় এর এমন ভাব দেখে মনে মনে রেগে
যাচ্ছে আর বলছে সালা এমন ভাব ধরতাছে যেন
কিছুই জানেনা।
---এই তো আমার খালাতো বোন আমাদের
বাসাই বেড়াতে এসেছে তাই তাকে নিয়ে
একটু ঘুরতে বেড়িয়েছি।.....(আকাশ)
---ওওও তাই।.....(হৃদয়)
----হুম তাই।এই তুই ও চল আমাদের সাথে।আর ঐশী এ
হলো আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড হৃদয়।......(আকাশ)
---না আমি যেতে পারবো না রে কাজ
আছে।......(হৃদয়)
আকাশ খুব মনে মনে খুব রেগে যাচ্ছে আর বলছে
কি ভাব নিচ্ছে সালা।পরে বুঝাবো তকে।
---এই আপনি ও আমাদের সাথে চলেন প্লিজ।.....
(ঐশী)
ঐশীর এই কথা শুনে হৃদয় এর মনে আরেকটা
ভালবাসার বেলুন ফাটলো।
---হুম চলেন যায় তাহলে।....(হৃদয়)
এবার তারা তিন জনে ঘুরতে গেলো।হৃদয় এর
সাথে ঐশীর পরিচয় হলো।এভাবে আরো কয়েক
দিন কেটে গেলো।প্রতিদিন ই তারা ঘুররে
যায় এক সাথে।হৃদয় ঐশীর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।
হৃদয় নানা উছিলায় বার বার আকাশের বাসায়
যায় ঐশী কে দেখার জন্য তার সাথে কথা
বলার জন্য।এভাবে প্রায় ২০ দিন কেটে গেলো।
আজ রাতে আকাশ আর হৃদয় বসে আছে।
---দুস্ত আমি আর পারছিনা রে এবার বলে দেই
ঐশী কে যে আমি তাকে ভালবাসি।....(হৃদয়)
--- যা বল আর দেখিস এখন তো কথা বলছে তর
সাথে কিন্তু এটা শুনার পর হয়তো আর কথায়
বলবে না তর সাথে।.....(আকাশ)
---হুম সেটাও ঠিক।কিন্তু আমার মনে হয় ঐশী ও
আমাকে পছন্দ করে।কারন সে আমার সাথে বার
বার কথা বলার জন্য আসে।আমার মনে হয় সে ও
আমায় ভালবাসতে শুরু করেছে।....(হৃদয়)
---হতেও পারে।এই অনেক রাত হয়ছে এবার আমি
যায়।....(আকাশ)
এই বলে আকাশ চলে গেলো।হৃদয় এর রাতে ঘুম
হয়না ঐশীর জন্য।হৃদয় শুয়ে আছে আর মনে মনে
ভাবছে কাল ঐশী কে বলে দিবে যে সে
তাকে ভালবাসেআজ বিকেলে হৃদয় দেখতে
পেলো ঐশী একা একা তার দিকে আসছে।
---এই যে কেমন আছেন।......(ঐশী)
---হুম ভালো,,,আপনি?....(হৃদয়)
---হুম ভালো।আপনি কদিন ধরেই আমায় মনে হয়
কিছু বলার চেষ্টা করছেন।....(ঐশী)
ঐশীর এই কথা শুনে হৃদয় কি বলবে বুঝতে
পারছিলো না।
---না মানে কিছু না।আপনি কবে চলে যাবেন
আপনার বাসায়।.....(হৃদয়)
---এই তো আর কয়েক দিন পর ই।.....(ঐশী)
---খুব মিস করবো আপনাকে।...(হৃদয়)
----শুধু মিস ই করবেন আর অন্য কিছু করবেন না।...
(ঐশী)
এই বলে ঐশী চলে গেলো।হৃদয় এর মাথা কাজ
করছিলো না যে কি বলবে সে।দেখতে দেখতে
আরো কয়েক দিন চলে গেলো।এর মধ্যে হৃদয়
অনেক বার চেষ্টা করেছিলো ঐশী কে বলতে
কিন্তু ঐশীর সামনে গেলেই হৃদয় সব ভুলে যায়
কিছুই বলতে পারেনাআজ রাতে হৃদয় শুয়ে আছে
আর ভাবছে কাল ঐশী কে যেভাবেই হোক বলে
দিবে যে সে তাকে ভালবাসে।এসব ভাবতে
ভাবতে হৃদয় খেয়াল করলো রাত ৩ টা বেজে
গেছে। তাই ঘুমিয়ে পড়লোহৃদয় ঘুমিয়ে আছে এমন
সময় শুনতে পেলো যে আকাশ তাকে ডাকছে।
---এই উঠ,কয়টা বাজে খেয়াল আছে তর?.......
(আকাশ)
---এই তুই সকাল ডাকছিস কেন রে।.....(হৃদয়)
---এই এখন সকাল না প্রায় ২ টা বাজে।....
(আকাশ)
আকাশ এর কথা শুনে হৃদয় লাফ দিয়ে উঠে ---
বলিস তুই ২ টা বাজে মানে।......(হৃদয়)
----হুম আর ঐশীর বাবা এসেছিলো ঐশী কে
নিতে ঐশী তার বাবার সাথে তাদের বাসায়
চলে গেছে।আর ঐশীর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।
আগামী শুক্রবারেই তার বিয়ে।.....(আকাশ)
----এই দেখ মজা করবি না এসব বিষয় নিয়ে।.....
(হৃদয়)
--- আমি তর সাথে কোনো মজা করছি না যা
সত্য তাই বলছি।আর ঐশী তকে যেতে বলেছে
তার বিয়েতে।....(হৃদয়)
কথা গুলো বলে আকাশ চলে গেলো।হৃদয় এসব
বিশ্বাস করতে পারছেনা।হৃদয় এর খুব কান্না
পাচ্ছিলো।বুঝতে পারছিলো না কি করবে।
দেখতে দেখতে কয়েক দিন চলে গেলো।হৃদয়
ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করেনা বাসার
বাইরেই বের হয়না বেশি।সারা দিন ঘরে বসে
থাকে।হৃদয় রাতে ছাদে বসে আছে এমন সময়
আকাশ আসলো।
---কি রে একা একা বসে কি করিস।....(আকাশ)
--কিছু না রে।....(হৃদয়)
----ঐশীর জন্য কষ্ট হচ্ছে তর তাই। ...... (আকাশ)
আকাশের এই কথা শুনে হৃদয় আকাশ জড়িয়ে ধরে
কাদতে লাগলো।
---জানিস দুস্ত খুব ভালবেসেছিলাম ঐশী কে।
কিন্তু বলতেই পারলাম না তার আগেই সব শেষ।...
(হৃদয়----আরে কাদছিস কেন।আরে একটা গেছে
তো কি হয়ছে।মেয়ের অভাব আছে নাকি।.....
(আকাশ)
---- আমি কিছু বুঝতে পারছিনা বার বার তার
কথা মনে পড়ছে আমার।.....(হৃদয়)
---এই শুক্রবারে ঐশীর বিয়ে।তকেও আমার
সাথে তার বিয়েতে যেতে হবে।.....(আকাশ)
---- আমি পারবো না রে। আমার চোখের
সামনে সে অন্য কারো হয়ে যাবে সেটা আমি
দেখতে পারবো না।.....(হৃদয়)
--ঐশী তকে যেতে বলেছে। তুই না গেলে সে
কি ভাববে বল।প্লিজ আমার সাথে যেতে হবে
তকে।.....(আকাশ)
---ওকে যাবো আমি।ঐশী কে বউ সাজলে অনেক
সুন্দর দেখাবে তাই না।....(হৃদয়)
---এই মন খারাপ করিস না।....(আকাশ)
এই বলে আকাশ চলে গেলো।আজ আকাশ আর হৃদয়
এসেছে ঐশীদের বাসাতে।আজ ঐশীর বিয়ে।
সারা টা বাসা অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছে।
হৃদয় এর খুব কষ্ট হচ্ছে।কিন্তু কাউ কে বুঝতে দিচ্ছে
না।হৃদয় বার বার চেষ্টা করছে ঐশী কে এক নজর
দেখতে।কিন্তু ঐশী কে কোথাও পেলো না।হৃদয়
মনে মনে ভাবছে ঐশী কে হইতো বউ সাজাচ্ছে
তারা। তাই হয়তো তাকে বাহিরে দেখা
যাচ্ছে। দেখতে দেখতে রাত হয়ে গেলো।হৃদয়
দেখতে পেলো বর এর গাড়ি এসে গেছে।
আরেকটু পর ই ঐশী সারাজীবন এর জন্য অন্য কারো
হয়ে যাবে এটা ভাবতে ভাবতে হৃদয় এর কান্না
পাচ্ছে।বর বসে আছে এখন বিয়ে পড়াবে। হৃদয় এর
খুব কষ্ট হচ্ছিলো সে কিভাবে দেখতে তার
ঐশী কে অন্যের হতে।তাই সে বাসার ছাদে
চলে গেলো।ছাদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হৃদয়
ঐশীর কথা ভাবছে আর কাদছে।এমন সময় হৃদয় এর
কাদে কে যেন হাত রাখলো আর বললো।
---কি ব্যাপার এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে
কান্না করলেই কি হবে।.....(ঐশী)
হৃদয় পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো ঐশী।হৃদয়
চমকে গেলো।
---আরে আপনি এখানে কেন।......(হৃদয়)
---হুম আপনি হয়তো ভাবছেন আমার তো বিয়ের
আসরে থাকার কথা তাইনা।.....(ঐশী---হুম।.....(হৃ
দয়)
---আসলে আজ আমার বিয়ে না আমার বড় আপুর
বিয়ে।.....(ঐশী)
---ওওও তাই তাহলে আকাশ যে বললো আপনার
বিয়ে।......(হৃদয়---মিথ্যা বলেছে।......(ঐশী)
---ওওও তাই।....(হৃদয়)
----হুম তাই।কি ছেলে আপনি হে।একটা মেয়ে
কে ভালবাসেন আর এটা বলতে পারেন তাকে।
আজ যদি না বলেন তাহলে সত্যি সত্যি কিন্তু
অন্য কারো হয়ে যাবো।.....(ঐশী)
এই বলে ঐশী চলে যেতে লাগলো কিন্তু হৃদয়
তার হাত টেনে ধরলো পেছন থেকে আর বললো।
---আমি না হয় বলতে পারিনি।কিন্তু আপনি
তো বুঝে নিতে পারতেন।....(হৃদয়)
---হুম আমি বুঝেছিলাম অনেক আগেই আর তাই
আমার বিয়ের নাটক টা করে ছিলাম।এখন বলবেন
নাকি চলে যাবো সবাই আমাকে
খুজতাছে।.......(ঐশী)
হৃদয় এবার ঐশী কে জড়িয়ে ধরলো আর বললো।
---আমি আপনাকে আমার আম্মুর বউমা বানাতে
চাই।আপনি কি হবেন।.....(হৃদয়)
---হুম হবো তবে আপনি করে বললে কিন্তু হবো
না।......(ঐশী)
---আমি তোমাকে ভালবাসি অনেক
ভালবাসি।.....(হৃদয়)
---আমি ও তোমায় ভালবাসি।.....(ঐশী)
এমন সময় আকাশ আসলো ছাদে আর বললো।
---হয়ছে এবার তোমাদের প্রেম কাহিনি বন্ধ
করো নিজে আপুর বিয়ে হচ্ছে সবাই তোমাদের
খুজছে।......(আকাশ)
আকাশের কথা শুনে হৃদয় ঐশী কে ছেড়ে দিলো।
----দুস্ত তুই আমাকে এতো দিন মিথ্যা
বলেছিস।.....(হৃদয়)
---মিথ্যা না বললে কি জানতে পারতাম কত
টা ভালবাসিস আমার বোন কে।আর হে আমাকে
আপনি করে বলবি আমি কিন্তু তর?????আর আমার
বোন টা কে কখনো কষ্ট দিস না।এবার চল নিচে
সবাই অপেক্ষা করছে।....(আকাশএই বলে তারা
চলে আসলো নিচে।অবশেষে হৃদয় এর মনের মানুষ
কে সে কাছে পেলো।দুটি মন এক হলো।
প্রতিটা প্রেমের শুরুটা খুব কষ্টের ই হয়।কিভাবে
যে মনের মানুষ টিকে মনের কথা বলবে এটাই
অনেক জন ভেবে পাইনা।তবে কাউ কে যদি
ভালবেসে থাকেন তাহলে বলে দিবেন তা
না হলে কিন্তু অন্য জনের হয়ে যাবে আপনার
প্রিয় মানুষ টি।আশা করি গল্প টি ভালো
লেগেছে আপনাদের ভালো থাকবেন সবাই।
